গত কয়েক বছর হল Parasychology বা পরামনোবিদ্যার রমরমা বাজারত। ভূত নিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রচুর সিনেমা ও টিভি সিরিয়াল। জাতীয়স্তরের নিউজ চ্যানেলগুলোতে ভূত, জাতিস্মর, তন্ত্র প্ল্যানচেট নিয়ে গপ্পকে ‘খবর’ বলে প্রচার করা হচ্ছে। গত এক বছরে কত যে ভূতের ‘সত্যকাহিনী’ ওরা প্রচার করেছে তার হিসেব রাখা মুশকিল। উত্তরপ্রদেশের লালগঞ্জ থানা নাকি এখন পুলিশদের বদলে ভূতের আস্তানা। গুজরাটের ভালেজ গ্রামের মানুষদের উপর গান ভূত ভর করেছে। হিমেশের নাকি সুরের গান শুনলেই না কি ঘাড়ে ভূত চাপে। বিহারের ইন্সপেকটর জেনারেল অফ পুলিশ অনিল সিনহার পাটনার বাড়িতে ভূতের উপদ্রব ঠেকাতে যজ্ঞ হচ্ছে –আমরা LIVE অনুষ্ঠানে দেখালাম। উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলের মেয়েরা বার বার দৌড়ে চলে যাচ্ছিল একটি পুকুরের দিকে। ওদের নাকি ভূতে ধরেছিল, তাই এমন সর্বনাশা কান্ড। ওড়িশার ছাত্রীদের উপর তথাকথিত ভূতে ভরের ঘটনা আমরা দেখেছি। বর্ধমানের বেনাগ্রাম –এর প্রতিটি পরিবার ভূতের ভয়ে গ্রাম ছাড়া হয়েছিলেন। ‘লাইট ভূত’ মাস দু’য়েক ধরে বীরভূম ও বর্ধমানের মেয়েদের শরীরে আঁচড়ে দিয়েছে। ‘মোবাইল ভূত’ নাকি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্যানিক তুলেছে। একটি মেয়ে দাবী করেছে –গতজন্মে সে নাগিন ছিল। নাগও নাকি জন্মেছে। গ্রামের একটি তরুণ-ই নাকি গতজন্মের নাগ। কে নাকি ফটো সম্মোহন করে পছন্দের মানুষের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছ। কোন এক শ্রীগৌতম কামাক্ষাদেবীর কৃপায় মন্ত্রে গর্ভবতী করে দিচ্ছে। সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেল থেকে বাংলা নিউজ চ্যানেল সর্বত্র সপ্তাহে অন্তত একটা করে কাহিনী থাকছে, যাতে আছে ভূত, ব্ল্যাকম্যাজিক, তন্ত্র, প্ল্যানচেট, জ্যোতিষীদের নিয়ে এমনি নানা আজগুবি গপ্পো। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল, এই ‘গপ্পো’ গুলোকে সত্যি বলে হাজির করা হচ্ছে। টিভি নিউজ চ্যানেলগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে সংবাদপত্রও গুলগপ্পো কে কাহিনী করে প্রচার চালাচ্ছে। পাবলিক খাচ্ছে, সুতরাং পরামনোবিদ্যা এখন ভালো ‘সাবজেক্ট’। এইসব নিয়ে বেশ গা ছমছমে সাবজেক্ট। এর টিভি স্ক্রিপ্ট লেখার লেখক ভালোই রোজগার করছেন।