বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার বার্ষিক কারুশিল্প পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণ
উপস্থিত সুধীবৃন্দ ও আমার প্রিয় তরুণ-তরুণীগণ। আপনারা এ মহতী অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ ও শুভ উদ্বোধন পর্বে পৌরহিত্য করার সুযোগ দান করায় নিজেকে মনে করছি ধন্য ও ভাগ্যবান। আমি নিজে ভাগ্যবাদী নই, তবে জানি যে, যা কল্পনা করা যায় এমন কোনো কিছু পেলে তাকে কর্মফল বলা হয়, আর অকল্পনীয় কিছু পেলে তাকে বলা হয় ভাগ্য। সুদূর অজ পাড়াগাঁয়ের একজন অজ্ঞ চাষী হয়ে আজ আমি যে আপনাদের এ মহতী অনুষ্ঠানে যোগদান করার সুযোগ পাবো, তা ছিল আমার কল্পনার অতীত, তাই বলতে হয় এটা আমার নিছক ভাগ্য, কর্মফল নয়।
আপনাদের এ মহৎ অনুষ্ঠানটি হচ্ছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার বার্ষিক অনুষ্ঠান। যদিও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার অস্তিত্ব সম্বন্ধে আমি অজ্ঞাত নই, তথাপি এ সংস্থার কর্মপদ্ধতি ও অগ্রগতি সম্বন্ধে কিছুই জানতাম না গতকাল সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে এসে আপনাদের কতিপয় সুধীজনের সংস্পর্শ না পাওয়া পর্যন্ত। কাজেই আপনাদের মহান কর্মতৎপরতা সম্বন্ধে আমি সম্পূর্ণ অজ্ঞ। তবে এটুকু জ্ঞাত আছি যে, এ যন্ত্রযুগের প্রবল প্রবাহে বাঙ্গালীর জাতীয় সংস্কৃতি বা ঐতিহ্যকে ভেসে যেতে দেওয়া যায় না। আর এ কাজে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন, তাঁরা অভিনন্দনযোগ্য।
বর্তমানে আধুনিক গানের সুরে ও ছন্দে দেশ ভেসে যাচ্ছে, অথচ কেউ কেউ সংগ্রহ করছেন পল্লীগীতি, বাউলগান, ভাটিয়ালি ও লালনগীতি। আধুনিক কবিতার মাহাত্ম যেখানে আকাশচুম্বী, সেখানে কেউ কেউ সংগ্রহ করছেন পুঁথিসাহিত্য। আবার নভেল নাটকে ভরপুর দেশের কেউ কেউ সংগ্রহ করছেন পল্লীবাংলার প্রবাদবাক্যগুলো। এভাবে বাংলার ঐতিহ্য রক্ষার প্চেরষ্টায় যারা আত্মনিয়োগ করেছেন বা করছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই অভিনন্দিত ও পুরস্কৃত হবার পাত্র। এবং তাই হচ্ছে আজকের এ অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা এরূপ শুধু অভিনন্দনযোগ্যই নয়, প্রাপ্য তাদের আরো অনেক কিছু। কেননা এ সংস্থা শুধু বাংলার ঐতিহ্য রক্ষাকারী সংস্থাই নয়, এর আছে বহুমুখী মাহাত্ম। বর্তমানে অর্থসঙ্কটের দিনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দ্বারা যেমন কিছুটা অর্থসঙ্কট দূর হতে পারে, তেমনি দূরীভূত হতে পারে বেকার সমস্যা। নানা কারণে যারা পুঁথিগত বিদ্যা শিক্ষায় অগ্রগ্রতি লাভ করতে পারে না, ফলে কর্মজীবনে যারা বিভ্রান্ত, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প তাদের কাছে য এন অন্ধের যষ্টি।
মূল্যহীন কথা বলে আমি আর আপনাদের কষ্ট দিতে চাইনা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার কর্মীবৃন্দের নিরলস প্রচেষ্টা সফল ও তার অগ্রগতি হোক – এই কামনা করে ও আজকের এ অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে আমার বক্তব্য ও সভার কাজ শেষ করছি।
১.১.১৩৯১
অপ্রকাশিত
৮.১ মুসলিম সাহিত্য সমাজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ভাষণ
৮.২ বাংলাদেশ সোসিও-ফিলসফিক হিউম্যানিস্ট গিল্ড সেমিনারে ভাষণ
৮.৩ আরজ মঞ্জিল লাইব্রেরীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ
৮.৪ নজরুল জয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভাষণ
৮.৫ গুণী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণ
৮.৬ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে ভাষণ
৮.৭ আরজ মঞ্জিল লাইব্রেরীর বার্ষিক বিবরণী ভাষণ
৮.৮ মানবিক উন্নয়নে যুব সমাজের ভূমিকা সেমিনারে ভাষণ
৮.৯ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় ভাষণ
৮.১০ আরজ মঞ্জিল লাইব্রেরীর বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণ
৮.১১ বার্ষিক বৃত্তিপ্রদান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ
৮.১২ বাংলাদেশ কুটির শিল্প সংস্থায় ভাষণ
৮.১৩ আরজ মঞ্জিল লাইব্রেরীর বার্ষিক বিবরণী ভাষণ
৮.১৪ বাংলাদেশ দর্শন সমিতিতে ভাষণ
৮.১৫ বার্ষিক বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষণ
৮.১৬ আরজ মঞ্জিল লাইব্রেরীতে ভাষণ
৮.১৭ বাংলা একাডেমীর সংবর্ধনা ভাষণ