হ্যাকারের কার্যকলাপ ও তাদের কাজের উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে হ্যাকারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। বলে রাখা ভাল, এদেরকে Hat বা টুপির মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়।

১. White Hat Hacker: একটা সমাজ রা রাষ্ট্রে যেমন ভালো ও মন্দ দুই ধরনের লোক-ই বিদ্যমান। অনুরূপ হ্যাকারদের মধ্যেও ভালো ও মন্দ উভয় রকম রয়েছে। তন্মধ্যে White Hat Hacker উল্লেখযোগ্য। এই গ্রুপের একজন হ্যাকার একটি সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বের করে, তা সিস্টেমের মালিককে দ্রুত জানিয়ে দেয়, যাতে সেই সিস্টেমের মালিক সেই ত্রুটির সংশোধন করতে পারে। সিস্টেমটি হতে পারে একটি কম্পিউটার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, স্মার্ট ফোন, ওয়েবসাইট, সফটওয়্যার বা ওয়াইফাই রাউটার ইত্যাদি।

২. Grey Hat Hacker: এদেরকে মূলত দু’মুখো সাপও বলা যায়। কেননা, এরা একটি সিস্টেমের ত্রুটি বের করে, তা সেই সিস্টেমের মালিককে জানাতেও পারে, আবার ইচ্ছা হলে সেই সিস্টেমের ক্ষতিও করতে পারে, আবার সিস্টেম হতে জরুরি বা পার্সোনাল ডকুমেন্ট চুরি করে আপনার থেকে অর্থও দাবি করতে পারে, কিংবা বিভিন্ন ভাবে ব্ল্যাক মেইল করতে পারে। এরা আসলে কি করবে, তা তাদের ঐ মুহূর্তের মন মানসিকতার উপর নির্ভর করে। হ্যাকারদের একটা বড় অংশই এই গ্রুপের আওতাধীন।

৩. Black Hat Hacker: এই গ্রুপের হ্যাকাররা হচ্ছে খুবই ভয়ংকর। এরা একটি সিস্টেমের ত্রুটি বের করতে পারলে, দ্রুত সেই ত্রুটিকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগায়। সিস্টেমের নিজের তৈরি ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়, নয়তো সিস্টেমের ফাইল নষ্ট করে দেয়। অন্যথা ব্ল্যাক মেইল করতেও এরা বেশ পটু। যেমন, একটি সিস্টেমের ত্রুটি বের করে, সেই সিস্টেমে প্রবেশ করে একটি ভাইরাস ইন্সটল করে দিল, এর ফলে উক্ত সিস্টেমটি হ্যাকারের নিয়ন্ত্রনে চলে পারে, কিংবা ঐ সিস্টেমের মাধ্যমে আপনি কি কি করছেন, তা সে লাইভ পর্যবেক্ষণ করতে পারে, কিংবা সিস্টেম থেকে গুরুত্বপূর্ণ ডাটা চুরি করে ব্ল্যাক মেইল করতে পারে। শুধু তাই নয়, ঐ সিস্টেমে পুনরায় প্রবেশের জন্য একটি গোপন দরজাও খুলে রাখতে পারে, হ্যাকারের ভাষায় যাকে বলা হয় Back Door বা পেছনের দরজা।

উক্ত তিন শ্রেণীর হ্যাকার ছাড়াও আরো কয়েক শ্রেণীর হ্যাকার খুঁজে পাওয়া যায়ঃ যেমন,

(i). Anarchists: এরা ঐ সকল হ্যাকার, যারা যে কোন সিস্টেমের নিরাপত্তা বলয়কে ভাংতে পছন্দ করে। এরা প্রথমে একটি সিস্টেম টার্গেট করে এবং এরপর তাদের হ্যাকিং বিদ্যার প্রয়োগ শুরু করে।

(ii). Crackers: ক্ষতিকর হ্যাকারদেরই মূলত ক্র্যাকার বলা হয়। সেক্ষেত্রে আমরা ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদেরও ক্র্যাকার গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি। এরা শখ করে কিংবা পেশাগত ভাবেই বিভিন্ন সিস্টেমের পাসওয়ার্ড ভাঙ্গা, কিংবা ট্রোজেন হর্স তৈরি করা, কিংবা বিভিন্ন ক্ষতিকর ভাইরাস কিংবা সফটওয়্যার তৈরি করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে কিংবা অর্থের বিনিময়ে বিক্রয় করে। আপনি চাইলে এই ধরনের হ্যাকারদের সাহায্যে অর্থের বিনিময়ে যে কোন ধরনের ক্রাইম করিয়ে নিতে পারেন। 

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x