স্বামী বিবেকানন্দ বলছেন, “আত্মা নামক একটি সত্য বস্তু আছে এবং তা দেহ থেকে ভিন্ন ও অমর।“

(বিবেকানন্দ রচনা সমগ্র অখন্ড বাংলা সংস্করণ – প্রকাশক নবপত্র। পৃষ্ঠা – ২৫৮)

চৈতন্য, আত্মা ও ঈশ্বর প্রসঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দ আরও বলেছেন, “কিন্তু ঈশ্বর চৈতন্য-স্বরূপ”। তাই প্রকৃত ভাব ও বিশ্বাস নিয়েই ঈশ্বরের উপাসনা করতে হবে। এখন প্রশ্ন হল চৈতন্য কোথায় থাকেন? গাছে? মেঘে? না, অন্য কোথাও? ‘আমাদের ঈশ্বর’ – এই কথার অর্থই বা কি? এর উত্তর – “আপনিই চৈতন্য। এই মৌলিক বিশ্বাসটিকে কখনোই ত্যাগ করবেন না। আমি চৈতন্যস্বরূপ। আর এই বিশ্বাসই হল যোগের সমস্ত কৌশল। এবং ধ্যান-প্রণালী হল – আত্মার মধ্যে ঈশ্বরকে উপলব্ধি করার উপায়।“ (ঐ বইয়ে, পৃষ্ঠা – ৫৩৫)

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “কোন অণু-পরমাণুর দ্বারা গঠিত নয় বলে আত্মা অবিনশ্বর… আত্মা কোন রূপ উপাদানের সমবায়ে গঠিত নয়,”

(ঐ বইয়ে, পৃষ্ঠা ২৬২-২৬৩)

স্বামী বিবেকানন্দের বিশ্বাসে বিশ্বাস স্থাপন করলে স্বামী অভেদানন্দসহ বিভিন্ন ধর্মমতের আত্মার রূপ ধারণ বা দেহ গঠন নিয়ে ধারণাটাই বাতিল করতে হয়।

স্বামীবিবেকানন্দ আবার অভেদানন্দের ‘মনই আত্মা’ কথাটাকে মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, চৈতন্য বা চেতনাই আত্মা। চৈতন্য বা চেতনা মন থেকে পৃথক কিছু। মনের সূক্ষ্ম শরীর আছে। (ঐ বইয়ে, পৃষ্ঠা – ১৬২)

এখানেও দেখতে পাচ্ছি অভেদানন্দের সঙ্গে বিবেকানন্দের বিশ্বাসের লড়াই। অথচ দুজনেইনাকি আবার বেদান্তে বিশ্বাসী। পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে বিজ্ঞান সিদ্ধান্তে এসেছে মন, চিন্তা, চৈতন্য ইত্যাদি যে নামেই ডাকি, এসবই মস্তিষ্ক স্নায়ুকোষের ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফল – সে বিষয়ে আগেই আলোচনা করেছি।

এর আগে ‘মন’ নিয়ে যে কথাটা বলা হয়নি সে কথাটাই বলি। “মন জড়ে রূপান্তরিত হয়, আবার জড়ও মনে রূপান্তরিত হয়, এটা শুধু কম্পনের তারতম্য।

একটি ইস্পাতের পাত গড়ে, তাকে কম্পিত করতে পারে এ রকম একটা শক্তি এতে প্রয়োগ কর। তারপর কি ঘটবে? যদি একটি অন্ধকার ঘরে এই পরীক্ষাটি করা হয়, তবে প্রথম তুমি শুনতে পাবে একটি শব্দ – একটি গুনগুন শব্দ। শক্তিপ্রবাহ বর্ধিত করো, দেখবে ইস্পাতের পাতটি আলোকময় হয়ে উঠেছে। শক্তি আরও বাড়িয়ে দাও, ইস্পাতটি একেবারে অদৃশ্য হয়ে যাবে। ইস্পাতটি মনে রূপান্তরিত হয়ে গেছে।“

এই কথাগুলো মেনে নিতে পারছেন না? একটা ইস্পাতের পাত নিয়ে পরীক্ষা শুরু করলেই তো পারেন। মনে রূপান্তরিত হয়েছে কি না কি করে বুঝবেন? কেন, ই.ই.জি মেশিনের সাহায্যে।

পরীক্ষায় ইস্পাতের পাতটি আলোকময় হচ্ছে না? অদৃশ্য হচ্ছে না? উল্টো-পাল্টা বিজ্ঞানীবিরোধী আষাঢ়ে গল্প ফেঁদেছি বলছেন? আমাকে এই জন্য ধিক্কার দেবেন না কি? একটু থামুন। শুনুন এমন একটা তথ্যের বা তত্ত্বের জন্য প্রশংসা বা নিন্দা কোনও কিছুই আমার প্রাপ্য নয়, প্রাপ্য বিবেকানন্দের। বিবেকানন্দ রচনা সমগ্রর উল্লিখিত বইটির ২৬৪ পৃষ্ঠায় বিবেকানন্দের বক্তব্য হিসেবেই এমন সব উদ্ভট কথা লেখা রয়েছে।

ভূমিকা

কিছু কথা

নতুন ‘কিছু কথা’

১. অধ্যায়ঃ এক

২. অধ্যায়ঃ দুই

৩. অধ্যায়ঃ তিন

৪. অধ্যায়ঃ চার

৫. অধ্যায়ঃ পাঁচ

৬. অধ্যায়ঃ ছয়

৭. অধ্যায়ঃ সাত

৮. অধ্যায়ঃ আট

৯. অধ্যায়ঃ নয়

১০. অধ্যায়ঃ দশ

১১. অধ্যায়ঃ এগারো

১২. অধ্যায়ঃ বার

১৩. অধ্যায়ঃ তেরো

১৪. অধ্যায়ঃ চোদ্দ

১৫. অধ্যায়ঃ পনের

১৬. অধ্যায়ঃ ষোল

১৬.১ মুক্ত চিন্তার বিরোধী ‘মনু সংহিতা’

১৬.২ আধ্যাত্মবাদ ও যুক্তিবাদের চোখের আত্মা

১৬.৩ আত্মা, পরলোক ও জন্মান্তর বিষয়ে স্বামী অভেদানন্দ

১৬.৪ স্বামী বিবেকানন্দের চোখে আত্মা

১৬.৫ আত্মা নিয়ে আরও কিছু বিশিষ্ট ভাববাদীর মত

১৬.৬ আত্মা প্রসঙ্গে চার্বাক বা লোকায়ত দর্শন

১৭. অধ্যায়ঃ সতেরো

১৮. অধ্যায়ঃ আঠারো

১৯. অধ্যায়ঃ ঊনিশ

২০. অধ্যায়ঃ কুড়ি

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x