বেগম রোকেয়া
সে দিন গল্প করিতে করিতে আমাদের অধিক রাত্রি হইয়া গিয়াছিল। আমাদের আলোচ্য বিষয় ছিল, জিন, পরী, ভূত। কেহ শ্বেতশ্রাশ্রু জিনকে নামাজ পড়িতে দেখিয়াছেন; কেহ দেখিয়াছেন, সিতবসনা পরী এবং কেহ ভূতকে মাছভাজা খাইতে দেখিয়াছেন। মিস ননীবালা দত্ত ঘুমাইয়া পড়িলেন; আমি একটা সোফায় বসিয়াছিলাম। জাহেদা বেগম আমাকে শয়ন করিতে অনুরোধ করিয়া ল্যাম্প নিবাইয়া আপন কামরায় চলিয়া গেলেন। শিরীন বেগম আপন কামরায় না গিয়া আমারই পর্য্যঙ্কে শয়ন করিলেন। ল্যাম্প নিবিল, কিন্তু এক কোণে মোমবাতি জ্বলিতেছিল, তাহার আলোক গৃহসজ্জা বেশ স্পষ্ট দেখা যাইতেছিল। বলিতে পারি না, আমার বিশ্বাস আমি জাগ্রত ছিলাম। কিয়ৎক্ষণ পরে ভয়ানক একটা শব্দ হইল । তাহাতে ননীবালা চমকিয়া উঠিয়া বলিলেন, “কিসের শব্দ হলো?’
“বলতে পারি না। কিছুদিন হলো আমি সংবাদপত্রে ছবি দেখেছিলুম, বিলেতে একটা এরোপ্লেন ইঞ্জিন ভেঙে কোন বাড়ির ছাদের উপর পড়ে গিয়েছিল, আর এরোপ্লেনের আরোহী ভাঙা ছাদ গলিয়ে অক্ষত শরীরে একেবারে কামরার ভিতর পালঙ্কের উপর গিয়ে পড়েছিল। আমাদের এ উলু খাওয়া ছাদের উপরও কারুর এরোপ্লেন ট্রেন এসে পড়েনি ত? জানালা খুলে দেখুন না?”
মিসিস বীণাপণি ঘোষ যথাবিধি পর্যঙ্কে শয়ন করিয়া গাঢ়নিদ্ৰা সুখ ভোগ করিতেছিলেন, তাহার দিকে চাহিয়া আমি বলিলাম, “বিছানা ছেড়ে উঠুন শিগগির!”
আমার কথা শেষ হইতে না হইতে তিনি ধড়মড় করিয়া উঠিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, ব্যাপার কি? আমি ননীকে যাহা বলিয়াছিলাম, তাহা পুনরাবৃত্তি করিলাম । ননী বলিলেন, “যে ঝম ঝম বৃষ্টি পড়ছে, জানালা খুলব কি করে? তা ছাড়া আমার ভয় করে। আপনার যত সব ভূতের গল্প বলেছেন!”
“আচ্ছা আমি জানালা খুলে দেখছি” বলিয়া বীণা গবাক্ষ খুলিয়া ফেলিলেন ।
বাতায়ন খুলিবামাত্র এক ঝাপটা বাতাস ও বৃষ্টিজল আসিয়া আমাদের ভিজাইয়া দিল- তৎসঙ্গেই মস্ত এক উল্কাপিণ্ড প্রবেশ করিল । তদ্দর্শনে আমাদের ত চক্ষু স্থির। গোলমাল শুনিয়া শিরীন জাগিয়া উঠিয়াছেন, অন্য কক্ষ হইতে আফসার দুলহিন দৌড়িয়া আসিয়াছেন, তাঁহারাও নির্ব্বাক! আমরা চিৎকার করিয়া বাড়িময় সকলকে জাগাইয়া তুলিব, না, ঊর্ধ্বশ্বাসে পলায়ন করিব, কিছুই স্থির করিতে না পারিয়া বিস্ময় বিস্ফোরিত নেত্রে সেই অগ্নি স্তূপের দিকে চাহিয়া রহিলাম ।
অগ্নিস্তূপ ক্রমে এক জ্যোতির্ম্ময় মনুষ্য মুর্তিতে পরিণত হইল। আমার মনে হইল, এই মহাপুরুষকে কোথায় যেন কখন দেখিয়াছি । কিন্তু ঠিক চিনিতে পারিলাম না। কারণ, মানুষের মুখ চিনিয়া রাখা আমার অভ্যাস নয়, সে জন্য অনেক সময় অপ্রস্তুতও হইতে হইয়াছে। আগন্তুক অগ্নিমূৰ্ত্তি বলিলেন-
“বৎসে! তোমরা অত্যন্ত ভয় পাইয়াছ? আমি অভয় দিতেছি, কোন ভয় নাই ৷” শিরীন। সে দিন আমাদের এখানে একটা টিকটিকি বোবা ফকির সাজিয়া আসিয়াছিল, আপনি তাহাদেরই কেহ নাকি?
মনী । আপনারা মওলানা সাহেবের বাড়ির কাছে বাসা নিয়াছেন, তাই ত টিকটিকির উপদ্রুব।
অগ্নিমুর্তি। (সতেজে) না মা! আমি সেসব কিছু নই। আমি বিশ্বশ্রষ্টা ত্বস্তি । ‘ত্বস্তি’ নাম শ্রবণ করিবা মাত্র বীণা ও ননী তাহাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিলেন । তখন আমারও স্মরণ হইল, কলিকাতায় ‘নারী সৃষ্টি’ লিখিবার সময় আমি এই জ্যোতির্ম্ময় মহাত্মার দর্শনলাভ করিয়াছিলাম । আমরা সসম্মানে ত্বস্তিদেবকে আসন গ্রহণ করিতে অনুরোধ করিলাম। বীণা বলিলেন, “অসময়ে নরলোকে পদধূলি (বর্ষাকালে ‘ধুলি’ না বলিয়া ‘পদকদ্দম’ বলিতে হয়!) দিবার কারণ জিজ্ঞাসা করিতে পারি কি?”
ত্বস্তি । কারণ? (আমার দিকে অঙ্গুলী নির্দ্দেশ করিয়া) কারণ ঐ মেয়েটা! আমি সবিস্ময়ে, সভয়ে, সবিনয়ে বলিলাম, “মহাত্মা বলেন কি, আমি?” ত্বস্তি । হ্যাঁ, তুমি! আমার নারী সৃজনের ইতিহাস বঙ্গভাষায় অনুবাদ করিয়া এই গোলমাল বাধাইয়াছ। তা, তোমারই বা দোষ দিব কি; কতক দোষ ‘সওগাত’ আফিসের ।
ননী । সে কি রকম?
ত্বস্তি । তাহা এইঃ ইনি ‘নারী সৃষ্টি’ লেখাটা ‘সওগাত’ নামক মাসিক পত্রিকায় দিয়াছিলেন। সে সময় সম্পাদক মহাশয় কলিকাতায় উপস্থিত ছিলেন না; আফিসের গণ্ডমূর্খগুলা ইহার লিখিত পাদটীকা দুইটি বাদ দিয়া তাহা প্রকাশ করে । পাদটীকা অভাবে রচনাটি স্থলবিশেষে দুৰ্ব্বোধ হইয়াছে। সুতরাং সুবোধ পাঠকেরা উহা সম্পূর্ণ বুঝিতে না পারায় তৃপ্তিলাভ করিতে পারেন না! তখন তাহারা বলেন, “ডাক ব্যাটা ত্বস্তিকে, ইহার কোথায় কি ভ্রান্তি আছে, বুঝাইয়া দিয়া যাউক!” তাই দেখ না, সময় নাই, অসময় নাই, একটা প্ল্যানচেট পাইলেই ইহারা আমাকে সুরলোক হইতে ডাকিয়া আনিয়া বিরক্ত করে। অদ্যকার ঘটনা শুন;— কতকগুলি যুবক ‘সত্যগ্রহ’ ব্ৰত লইয়া মাতিয়াছে। রাজপুরুষেরা বলেন, “তোমরা ‘সত্যগ্রহ’ ছাড়ায়া ‘মিথ্যাগ্রহণ’ কর।” কিন্তু উহারা অবোধ বালক, হিতোপদেশ মানে না । ‘মিথ্যাগ্রহণ’ না করার ফলে পুলিশের তাহাহুড়া খাইয়া দুইজন উকিল বাবু পলাইয়া রাঁচি আসিয়াছেন। তোমাদের বাড়ির অদূরেই তাহাদের বাসা। কিন্তু জান, “চোর না শুনে ধরম কাহিনী।” রাঁচির এই অবিরাম বৃষ্টি কাদাতেও তাহাদের শান্তি নাই। তাহারা আদা জল খাইয়া, দিনের বেলা বালি কাঁকর কাদা জল মাখিয়া ‘মিথ্যাগ্রহণ’-এর বিরুদ্ধে সত্য প্রচার প্রয়াসে লেকচার দিয়া দিয়া দেশের শান্তি নষ্ট করিয়া বেড়ান; আর রাত্রিকালে দুই বন্ধুতে প্ল্যানচেট লইয়া বেদলোকের শান্তিভঙ্গ করেন। রাত্রি ১২টা/১টা পর্যন্ত উকিল বাবুদের ডাকাডাকির জ্বালায় অস্থির থাকিতে হয়। তোমাদের নরলোকে যা হোক শান্তিনেশে যুবকদের শাস্তি দিবার জন্য সিআইডি আছে; কিন্তু সুরলোকে তাহাদের জব্দ করিবার জন্য কোন ব্যবস্থা নাই। তাই দেখ না, এত রাত্রে উকিল বাবুদের বাসা হইতে ফিরিয়া যাইবার সময় আমার বাষ্পরথ তোমাদের ছাদের কলসে আটকাইয়া পড়ে, আমিও সশব্দে পড়িতে পড়িতে বাঁচিয়া গিয়াছি। বৃদ্ধ বয়সে বৃষ্টি ভেজা সহ্য হয় না, তাই যেমনই বীরবালা বীণা বাতায়ন খুলিয়াছেন, অমনি আমি গৃহাভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়াছি ।
ননী। কিন্তু দেব! বাতায়নে লোহার গরাদে আছে যে ।
ত্বস্তি । আরে, রাখ তোমার উইদষ্ট গরাদে! বিশেষতঃ আমাকে আটকায় কে? ননী। দেব! আপনি কি কি উপাদানে পুরুষ সৃষ্টি করিয়াছেন, তাহা জানিতে বড় কৌতূহল হয়।
ত্বত্ত্বি । না বাছা! আমরা সময় নাই। এখন আমি আসি। তোমরা ঘুমাও ৷ কিন্তু আমরা সকলেই তাহাকে বেশ করিয়া ধরিয়া বসিলাম। পুরুষ সৃষ্টির রহস্য না শুনিয়া তাহাকে কিছুতেই যাইতে দিব না ।
শিরীন। আপনি অনেকক্ষণ বৃষ্টিজলে ভিজিয়াছেন, এক পেয়ালা গরম চা খাবেন। আপনি গল্প বলুন, আমি চা প্রস্তুত করিতে বলি। (অতঃপর তিনি উচ্চৈঃস্বরে ডাকিলেন,) মারো-
ত্বস্তি (সচকিতে) সে কি? কাহাকে মারিবে?
শিরীন হাস্য সম্বরণ করিতে না পারিয়া আঁচলে মুখ ঢাকিয়া দ্রুত প্রস্থান করিলেন। ত্বস্তি। উনি লাঠিয়াল ডাকিতে গেলেন না কি?
বীণা। (কষ্টে হাস্য সম্বরণ করিয়া) না, তিনি চাকরাণী ডাকিতে গেলেন । উহার চাকরাণীর নাম ‘মারো’! আপনি এখন গল্প বলুন। ঐ দেখুন, শিরীন বেগম সাহেবাও ফিরিয়া আসিয়াছেন ।
ত্বস্তি। তোমরা নেহাৎ ছাড়িবে না, তবে আর কি করা! তোমরা মেয়েরাও দেখিতেছি, উকিল বাবুদের চেয়ে কম নও! তাহারা তবু আইন কানুনের দোহাই মানেন, তোমরা কিছুই মান না । শুনিলে ত তোমাদের মন থাকিবে না । তবে ননি, তুমি কাগজ কলম লইয়া বস। আমি বলিয়া যাই, তুমি তাড়াতাড়ি লিখ । দেখ, খুব দ্রুতগতি লিখিবে।
ননী কতক্ষণ কলম দোয়াত অন্বেষণ করিতেছিলেন, ততক্ষণে বীনা কাগজ পেন্সিল হস্তে অগ্রসর হইয়া বলিলেন, “দেব! সময়ের অল্পতার জন্য আপনি চিন্তা করিবেন না। আপনি বলুন, আমি শর্টহ্যান্ডে লিখিয়া ফেলিতেছি। আমি মিনিটে শটহ্যান্ডের তিন শত শব্দ লিখিতে পারি।” ইহা শুনিয়া মহাত্মা ত্বস্তি অতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন। তিনি বলেন, বীণা লিখেন, আর আমরা নীরবে শ্রবণ ও দর্শন করিতে লাগিলাম ৷
দেখিলাম, বেচারা ত্বস্তিদেব নিদ্রায় অত্যন্ত কাতর হইয়াছেন। তিনি কখনও বা হাই তুলিয়া ঘুমে ঢুলু ঢুলু নয়নে অনুচ্চস্বরে বলিতেছিলেন; আবার কখনও চক্ষুমৰ্দ্দন করিয়া উচ্চৈঃস্বরে বলিতেছিলেন এবং বীণা ঠিক লিখিয়াছেন কিনা তাহা পরীক্ষা করিয়া দেখিতেছিলেন। ভুল থাকিলে তাহা কাটিয়া পুনরায় লিখাইতেছিলেন। তিনি যে নিদ্রা-কাতর নহেন, এতখানি বাগাড়ম্বর দ্বারা যেন তাহাই প্রমাণ করিতে প্রয়াস পাইতেছিলেন। একবার তিনি গৰ্জ্জনস্বরে বলিলেন,
“জান বৎসেগণ! কন্যা রচনার সময় আমার হস্তে কোন বস্তুই ছিল না; সুতরাং আমাকে কোন দ্রব্যের গন্ধ, কোন বস্তুর স্বাদ এবং কোন পদার্থের বাষ্প মাত্র সংগ্রহ করিতে হইয়াছিল। কিন্তু পুরুষ নির্মাণের সময় আমাকে কিছু মাত্র ভাবিতে হয় নাই। আমার ভাণ্ডারে সকল দ্রব্য প্রচুর পরিমাণে ছিল, হস্ত প্রসারণ করিলে যাহা হাতে ঠেকিয়াছে, তাহাই গ্রহণ করিয়াছি । যথা— দত্ত নির্মাণের সময় সর্পের বিষদন্তু আমূল লইয়াছি; হস্ত পদ নখ প্রস্তুত করিতে শার্দুলের সমস্ত নখর লইয়াছি; মস্তি ষ্কের কোষসমূহ (cells) পূর্ণ করিবার সময় গৰ্দ্দভের গোটা মস্তিষ্কটাই ব্যবহার করিয়াছি। নারী সৃজন কালে আমি শুধু অনলের উত্তাপ লইয়াছিলাম; পুরুষের বেলায় একেবারে জ্বলন্ত অঙ্গার লইয়াছি। বাছা! তুমি তাহাই লিখ ।”
বীণা লিখিলেন, (জ্বলন্ত অঙ্গার)।
১. বেচারী চাকরাণীর সুন্দর ‘মরিয়ম’ নামটি বিকৃত হইয়া ‘মারো’তে পরিণত হইয়াছে। আমি বেহার অঞ্চলে থাকাকালীন অতি সম্ভ্রান্ত পরিবারের কতিপয় মহিলার নাম শ্রবণের সৌভাগ্যলাভ করিয়াছিলাম। যথা- ‘হাশো’, ‘লাতো’, ‘দলু’, ‘উল্লু’, ‘জুব্বা’, ইত্যাদি। নামগুলির স্বরূপ না দেখাইলে উহাদের প্রতি অবিচার করা হইবে এবং পাঠিকা ভগিনী ও ত্বস্তিদেবের মত ভীত হইতে পারেন। তবে শুনুন, ‘হাশমত আরা’ ‘লতিফন্নেসা’, ‘অলিউন্নেসা’ এবং ‘জোবেদা’।
ত্বস্তি। বৎসে! মনোযোগ পূর্ব্বক শ্রবণ কর, রমণীর বেলায় আমি তুহিনের শৈত্যটুকু মাত্ৰ লইয়াছিলাম, পুরুষের বেলায় তুষার খণ্ড— এমনকি আস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা ব্যবহার করিয়াছি। তাহা কি তুমি লিখিয়াছ বীণা ?
বীণা কাগজ দেখাইলেন-(তুষার, কাঞ্চনজঙ্ঘা ) ।
শিরীন। আগ্নেয়গিরি বিসুবিয়াস (Vesuvius) এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা যে পাশাপাশি ব্যবহৃত হইয়াছে, তাহাতে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। তাই আমরা পুরুষের নিজের ভাষায়ই পুরুষের বর্ণনা এইরূপ দেখিতে পাই যে এখনই-
‘জ্বলিল ললাট বহ্নি প্ৰদীপ্ত শিখায় বহ্নিময় হৈল সেই শূন্যব্যাপী দেশ,
ধরিল সংহার মূর্ত্তি, রুদ্র ব্যোমকেশ
গর্জিয়া সংহার শূল করিলা ধারণ ।
আবার পর মুহূর্তেই (অবশ্য “পার্ব্বতী বাক্যেতে রুদ্র ত্যাজি উগ্রভাব”)-
‘সহাস্য বদনে ইন্দ্ৰে সম্ভাষি কহিলা,
আখণ্ডল, বৃত্রবধ অনুচিত মম ।’
শ্রুতলিপি শেষ হইলে মহাত্মা ত্বস্তি বলিলেন, “দেখ বাছা! তুমি ইহা সহজ ভাষায় লিখিবার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করিবে, যেন একটি শব্দ, এমনকি একটি ছেদ পর্যন্তও এদিক ওদিক না হয়।”
বীণা। তাহাই হইবে; আপনি ভাবিবেন না। আমি বেশ সাবধানে লিখিব। নচেৎ প্রভুর অত্যন্ত কষ্ট হইবে– এখন ত কেবল পুরুষেরা ডাকাডাকি করে, তখন মেয়েরাও জ্বালাতন করিয়া মারিবে!
অতঃপর ত্বস্তিদেব বিদায় হইলে সকলে যে যাহার শয্যা আশ্রয় করিলেন। কিন্তু আমি শয়ন করিতে যাইবার সময় কি জানি কিরূপে পড়িয়া গেলাম। সেই পতনে আমি চমকিয়া উঠিলাম। চক্ষু উন্মীলন করিয়া দেখি আমি তখনও সোফায় বসিয়া; গৃহকোণে মোমবাতিটা মিটিমিটি জ্বলিতেছে, আর শিরীন ও বীণা মড়ার সহিত বাজি রাখিয়া ঘুমাইতেছেন! দূরাগত কুক্কুটধ্বনি শ্রবণে বুঝিলাম, রজনীর অবসান হইয়াছে । তবে কি এতক্ষণ আমি স্বপ্ন দেখিতেছিলাম?
প্রথম অধ্যায়ঃ যুক্তিবাদ মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্কতা
♦ মন্দের যুক্তি ও ঈশ্বরের অস্তিত্ব
♦ বিজ্ঞান মনস্কতা ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজনির্মাণ
♦ ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইন নিয়ে কূটকচাল
♦ ব্রুনোর আত্মত্যাগ ও যুক্তিবাদ
♦ ইহজাগতিকতা ও আরজ আলী মাতুব্বর- একজন যুক্তিবাদী দার্শনিক
♦ বাংলাদেশে চেতনা-মুক্তির লড়াই
♦ ইসলাম যেভাবে নিজের পথ থেকে সরে গেছে
♦ বিজ্ঞান, বিজ্ঞানমনস্কতা বনাম কোরানিক বিজ্ঞান
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ ধর্ম ও নৈতিকতা
♦ জীবিত ইসলামের মৃত গৌরবের কথা
♦ রামায়ণ কাহিনীর ঐতিহাসিকতা একটি একাডেমিক আলোচনা
♦ মানবতাভিত্তিক সংবিধান এবং অমানবিক বিধান
♦ ধর্মের উপযোগিতাঃ জনৈক বিবর্তনবাদীর দৃষ্টিতে
♦ ধর্মরাষ্ট্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম
♦ মানুষের জন্য ধর্ম, না ধর্মের জন্য মানুষ?
♦ বিজ্ঞান কি উপাসনা-ধর্মের প্রতিদ্বন্দ্বী
তৃতীয় অধ্যায়ঃ অন্যান্য প্রসঙ্গ
♦ হাইপেশিয়াঃ এক বিস্মৃতপ্ৰায় গণিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান
♦ শাশ্বত এথেন্সের নারী ও তার বিপর্যস্ত ধারাবাহিকতা
“স্বতন্ত্র ভাবনাঃ মুক্তচিন্তা ও বুদ্ধির মুক্তি” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ