৪৯. সূরাঃ হুজুরাত
আয়াত | অবতীর্ণঃ মদিনা আয়াত সংখ্যাঃ ১৮ রুকূঃ ২ |
---|---|
০১ | يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ হে মু’মিনগণ ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর সামনে তোমরা কোন বিষয়ে অগ্রগামী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। |
০২ | يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ হে মু’মিনগণ ! তোমরা নবী (সঃ)-এর কন্ঠস্বরের উপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বল তার সাথে সেই রূপ উচ্চস্বরে কথা বল তার সাথে সেই রূপ উচ্চস্বরে কথা বলো না ; এতে তোমাদের কর্ম নষ্ট হয়ে যাবে তোমাদের অজান্তে। |
০৩ | إِنَّ الَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَاتَهُمْ عِندَ رَسُولِ اللَّهِ أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ امْتَحَنَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَىٰ ۚ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ যারা আল্লাহর রাসূলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্যে পরীক্ষা করেছেন। তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। |
০৪ | إِنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَاءِ الْحُجُرَاتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ যারা কক্ষসমূহের পিছন হতে তোমাকে উচ্চস্বরে ডাকে তাদের অধিকাংশই নির্বোধ। |
০৫ | وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا حَتَّىٰ تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ তুমি বের হয়ে তাদের নিকট আসবে যদি তারা ধৈর্যধারণ করতো তবে তাই তাদের জন্যে উত্তম হতো। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। |
০৬ | يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ হে মু’মিনগণ ! যদি ফাসিক তোমাদের নিকট কোন বার্তা আনয়ন করে, তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতা বশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়কে কষ্ট না পৌঁছাও যাতে পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্যে লজ্জিত হয়ে যাও। |
০৭ | وَاعْلَمُوا أَنَّ فِيكُمْ رَسُولَ اللَّهِ ۚ لَوْ يُطِيعُكُمْ فِي كَثِيرٍ مِّنَ الْأَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلَـٰكِنَّ اللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمُ الْإِيمَانَ وَزَيَّنَهُ فِي قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمُ الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ ۚ أُولَـٰئِكَ هُمُ الرَّاشِدُونَ তোমরা জেনে রেখো যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল (সঃ) রয়েছেন ; তিনি বহু বিষয়ে তোমাদ্র কথা শুনলে তোমরাই কষ্ট পাবে ; কিন্তু আল্লাহ তোমাদের নিকট ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং ওকে তোমাদের হৃদয়গ্রাহীও করেছেন ; কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের নিকট অপ্রিয়। এরাই সৎপথের পথিক। |
০৮ | فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَنِعْمَةً ۚ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ (এটা) আল্লাহর দান ও অনুগ্রহ ; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাবান। |
০৯ | وَإِن طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا ۖ فَإِن بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَىٰ فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّىٰ تَفِيءَ إِلَىٰ أَمْرِ اللَّهِ ۚ فَإِن فَاءَتْ فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَأَقْسِطُوا ۖ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ মু’মিনদের দুই দল যদি দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয় তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে ; যদি তাদের একদল অপর দলের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করে তবে তোমরা বাড়াবাড়িকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে, যদি তারা ফিরে আসে তবে তাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করবে এবং সুবিচার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন। |
১০ | إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ মু’মিনরা পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমাদের দুই ভাই-এর মধ্যে মীমাংসা করে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও। |
১১ | يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰ أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِّن نِّسَاءٍ عَسَىٰ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ۖ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ ۖ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُولَـٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ হে মু’মিনগণ ! কোন পুরুষ যেন অপর কোন পুরুষকে বিদ্রুপ না করে ; কেননা তারা তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর কোন নারীকেও যেন বিদ্রুপ না করে ; কেননা সে তাদের অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না ; ঈমানের পরে মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরনের আচরণ পরিত্যাগ করে না তারাই অত্যাচারী। |
১২ | يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ হে মু’মিনগণ ! তোমরা বহুবিধ ধারণা হতে বিরত থাকো ; কারণ কোন কোন ধারণা পাপ এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে ভালবাসবে? বস্তুতঃ তোমরাও এটাকে ঘৃণাই কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় করে। আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী, দয়ালু। |
১৩ | يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ হে লোকসকল ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকী। আল্লাহ সবকিছু জানেন, স্বকিছুর খবর রাখেন। |
১৪ | قَالَتِ الْأَعْرَابُ آمَنَّا ۖ قُل لَّمْ تُؤْمِنُوا وَلَـٰكِن قُولُوا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيمَانُ فِي قُلُوبِكُمْ ۖ وَإِن تُطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَا يَلِتْكُم مِّنْ أَعْمَالِكُمْ شَيْئًا ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ আরব বেদুঈনগণ বলেঃ আমরা ঈমান আনলাম ; তুমি বলঃ তোমরা ঈমান আননি, বরং তোমরা বলঃ আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি মাত্র। কারণ ঈমান এখনও তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্য কর তবে তোমাদের কর্মফল সামান্য পরিমাণও লাঘব করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। |
১৫ | إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ أُولَـٰئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ তারাই প্রকৃত মু’মিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ) –এর প্রতি ঈমান আনার পরে আর কোন সন্দেহ পোষণ করে না এবং জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে, তারাই সত্যনিষ্ঠ। |
১৬ | قُلْ أَتُعَلِّمُونَ اللَّهَ بِدِينِكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ বলঃ তোমরা কি তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছো? অথচ আল্লাহ যা কিছু আছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে তা জানেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। |
১৭ | يَمُنُّونَ عَلَيْكَ أَنْ أَسْلَمُوا ۖ قُل لَّا تَمُنُّوا عَلَيَّ إِسْلَامَكُم ۖ بَلِ اللَّهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ أَنْ هَدَاكُمْ لِلْإِيمَانِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ যারা ইসলাম গ্রহণ করে তারা তোমার উপকার করেছে বলে মনে করে। বলঃ তোমাদের ইসলাম গ্রহণ আমাকে উপকৃত করেছে এমনটি মনে করো না। বরং আল্লাহই তোমাদেরকে ঈমানের পথ দেখিয়ে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। |
১৮ | إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন। |
সূচীপত্র
মন্তব্য করুন
গ্রন্থাগার
সূচীপত্র
মন্তব্য করুন
“পবিত্র আল কুর’আন” -এর বাংলা অনুবাদ সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ
গ্রন্থাগার