৫৭. সূরাঃ হাদীদ

আয়াত নংঅবতীর্ণঃ মদিনা
আয়াত সংখ্যাঃ ২৯
রুকু ৪
০১سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
০২لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ يُحْيِي وَيُمِيتُ ۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর কর্তৃত্ব তাঁরই ; তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান ; তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
০৩هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
তিনিই আদি, তিনিই অন্ত, তিনিই জাহের, তিনিই বাতেন এবং তিনি সর্ববিষয়ে অধিক অবহিত।
০৪هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۚ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا ۖ وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
তিনিই ছয় দিবসে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমুন্নীত হয়েছেন। তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা কিছু তা হতে বের হয় এবং আকাশ হতে যা কিছু নামে ও আকাশে যা কিছু উত্থিত হয়। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তিনি (জানার দিক দিয়ে) তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।
০৫لَّهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الْأُمُورُ
আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর কর্তৃত্ব তাঁরই, আর আল্লাহরই দিকে সব বিষয় প্রত্যাবর্তিত হবে।
০৬يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ ۚ وَهُوَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
তিনিই রাত্রিকে প্রবেশ করান দিবসে এবং দিবসকে প্রবেশ করান রাত্রিতে এবং তিনি হৃদয় সমূহের গোপন রহস্যও জানেন।
০৭آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَأَنفِقُوا مِمَّا جَعَلَكُم مُّسْتَخْلَفِينَ فِيهِ ۖ فَالَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَأَنفَقُوا لَهُمْ أَجْرٌ كَبِيرٌ
আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমান আন এবং তোমাদেরকে যা কিছুর উত্তরাধিকারী তিনি করেছেন তা হতে ব্যয় কর। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও ব্যয় করে, তাদের জন্যে আছে মহা পুরস্কার।
০৮وَمَا لَكُمْ لَا تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ۙ وَالرَّسُولُ يَدْعُوكُمْ لِتُؤْمِنُوا بِرَبِّكُمْ وَقَدْ أَخَذَ مِيثَاقَكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহতে ঈমান আনতো না? অথচ রাসূল (সঃ) তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনতে আহ্বান করছে এবং তিনি (আল্লাহ) তোমাদের নিকট হতে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন, তোমরা যদি বিশ্বাস করতে।
০৯هُوَ الَّذِي يُنَزِّلُ عَلَىٰ عَبْدِهِ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ لِّيُخْرِجَكُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ ۚ وَإِنَّ اللَّهَ بِكُمْ لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ
তিনিই তাঁর বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করেন, তোমাদেরকে সকল প্রকার অন্ধকার হতে আলোর দিকে আনার জন্যে ; নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি করুণাময়, পরম দয়ালু।
১০وَمَا لَكُمْ أَلَّا تُنفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ لَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ ۚ أُولَـٰئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا ۚ وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করছ না? অথচ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর মালিকানা আল্লাহরই। তোমাদের মধ্যে যারা (মক্কা) বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও সংগ্রাম করেছে, সমান নয় ; তারা মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ তাদের অপেক্ষা যারা পরবর্তীকালে ব্যয় করেছে ও সংগ্রাম করেছে। তবে আল্লাহ উভয়ের কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।
১১مَّن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ وَلَهُ أَجْرٌ كَرِيمٌ
কে আছে যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দিবে? তাহলে তিনি তা বহুগুণে তাঁর জন্য বৃদ্ধি করবেন এবং তার জন্যে উত্তম পুরস্কার রয়েছে।
১২يَوْمَ تَرَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ يَسْعَىٰ نُورُهُم بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِم بُشْرَاكُمُ الْيَوْمَ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
সেদিন (কিয়ামতের দিন) তুমি দেখবে মু’মিন নর-নারীদেরকে তাদের সম্মুখ ভাগে ও ডান পার্শ্বে তাদের জ্যোতি প্রবাহিত হবে। (বলা হবেঃ) আজ তোমাদের জন্যে সুসংবাদ জান্নাতের যার পাদদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত হবে, সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে, এটাই মহাসাফল্য।
১৩يَوْمَ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ لِلَّذِينَ آمَنُوا انظُرُونَا نَقْتَبِسْ مِن نُّورِكُمْ قِيلَ ارْجِعُوا وَرَاءَكُمْ فَالْتَمِسُوا نُورًا فَضُرِبَ بَيْنَهُم بِسُورٍ لَّهُ بَابٌ بَاطِنُهُ فِيهِ الرَّحْمَةُ وَظَاهِرُهُ مِن قِبَلِهِ الْعَذَابُ
সেদিন মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারী মু’মিনদেরকে বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্যে একটু অপেক্ষা কর, যাতে তোমরা তোমাদের নূর হতে কিছু গ্রহণ করতে পারি। বলা হবেঃ তোমরা তোমাদের পিছনে ফিরে যাও ও আলোর সন্ধান কর। অতঃপর উভয়ের মাঝামাঝি স্থাপিত হবে একটি প্রাচীর সেখানে একটি দরজা থাকবে, যার অভ্যন্তরে রহমত এবং বহির্ভাগে আযাব।
১৪يُنَادُونَهُمْ أَلَمْ نَكُن مَّعَكُمْ ۖ قَالُوا بَلَىٰ وَلَـٰكِنَّكُمْ فَتَنتُمْ أَنفُسَكُمْ وَتَرَبَّصْتُمْ وَارْتَبْتُمْ وَغَرَّتْكُمُ الْأَمَانِيُّ حَتَّىٰ جَاءَ أَمْرُ اللَّهِ وَغَرَّكُم بِاللَّهِ الْغَرُورُ
তারা তাদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করবেঃ আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না? তারা বলবেঃ হ্যাঁ, কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদগ্রস্থ করেছো ; তোমরা প্রতীক্ষা করেছিলে, সন্দেহ পোষণ করেছিলে এবং মিথ্যা আশা-আকাঙ্ক্ষা তোমাদেরকে প্রতারিত করেছে, অবশেষে আল্লাহর হুকুম (মৃত্যু) এসেছে ; আর মহাপ্রতারক (শয়তান) তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারিত করেছিল।
১৫فَالْيَوْمَ لَا يُؤْخَذُ مِنكُمْ فِدْيَةٌ وَلَا مِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ مَأْوَاكُمُ النَّارُ ۖ هِيَ مَوْلَاكُمْ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
আজ তোমাদের নিকট হতে কোন মুক্তিপণ নেওয়া হবে না এবং কাফিরদের নিকট হতেও নয়। জাহান্নামই তোমাদের আবাসস্থল, এটাই তোমাদের চিরসঙ্গী, কত নিকৃষ্ট এই পরিণাম !
১৬أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِينَ آمَنُوا أَن تَخْشَعَ قُلُوبُهُمْ لِذِكْرِ اللَّهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ وَلَا يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ ۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ
মু’মিন লোকদের জন্য এখনও কি সময় আসেনি যে, আল্লাহর স্মরণ এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তার সম্মুখে অবনত হবে? এবং পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের মত যেন তারা না হয়, বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে যাদের হৃদয় কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাদের অধিকাংশই ফাসেক।
১৭اعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يُحْيِي الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا ۚ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
জেনে রেখো যে, আল্লাহই পৃথিবীকে তার মৃত্যুর পর জীবন দান করেন। আমি নিদর্শনগুলো তোমাদের জন্যে বিশদভাবে ব্যক্ত করেছি যাতে তোমরা বুঝতে পার।
১৮إِنَّ الْمُصَّدِّقِينَ وَالْمُصَّدِّقَاتِ وَأَقْرَضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا يُضَاعَفُ لَهُمْ وَلَهُمْ أَجْرٌ كَرِيمٌ
দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী এবং যারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে তাদেরকে দেয়া হবে বহুগুণ বেশি এবং তাদের জন্যে রয়েছে সম্মানজনক বিনিময়।
১৯وَالَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ أُولَـٰئِكَ هُمُ الصِّدِّيقُونَ ۖ وَالشُّهَدَاءُ عِندَ رَبِّهِمْ لَهُمْ أَجْرُهُمْ وَنُورُهُمْ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَـٰئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের (সঃ) প্রতি ঈমান আনে, তারাই তাদের প্রতিপালকের নিকট সত্যনিষ্ঠ ও সাক্ষী। তাদের জন্যে রয়েছে তাদের প্রাপ্য পুরস্কার ও জ্যোতি এবং যারা কুফরি করেছে ও আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করেছে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী হবে।
২০اعْلَمُوا أَنَّمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَزِينَةٌ وَتَفَاخُرٌ بَيْنَكُمْ وَتَكَاثُرٌ فِي الْأَمْوَالِ وَالْأَوْلَادِ ۖ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ الْكُفَّارَ نَبَاتُهُ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَاهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَكُونُ حُطَامًا ۖ وَفِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَمَغْفِرَةٌ مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانٌ ۚ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ
তোমরা ভালোভাবে জেনে রেখো, দুনিয়ার জীবন তো খেল-তামাশা, জাকজমক, পারস্পারিক অহংকার প্রকাশ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছুই নয় ; এর উপমা বৃষ্টি, যার দ্বারা উৎপন্ন শস্য সম্ভার কৃষকদের চমৎকৃত করে, অতঃপর ওটা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি ওটা হলুদ বর্ণ দেখতে পাও, অবশেষ তা খড়কুটায় পরিণত হয়। পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। দুনিয়ার জীবন ছলনাময় ধোঁকা ব্যতিত কিছুই নয়।
২১سَابِقُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا كَعَرْضِ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أُعِدَّتْ لِلَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
তোমরা অগ্রণী হও তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও সেই জান্নাত লাভের প্রয়াসে যা প্রশস্ততায় আকাশ ও পৃথিবীর মত, যা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণে বিশ্বাসীদের জন্যে। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি এটা দান করেন ; আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল।
২২مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِّن قَبْلِ أَن نَّبْرَأَهَا ۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
এমন কোন বিপদ নেই যা পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর আসে আর আমি তা সংঘটিত করার পূর্বে তা একটি কিতাবে লিপিবদ্ধ রাখিনি, আল্লাহর পক্ষে এটা খুবই সহজ।
২৩لِّكَيْلَا تَأْسَوْا عَلَىٰ مَا فَاتَكُمْ وَلَا تَفْرَحُوا بِمَا آتَاكُمْ ۗ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ
এটা এজন্যে যে, তোমরা যা হারিয়েছো তাতে যেন তোমরা হতাশাগ্রস্থ না হও এবং যা তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন তাঁর জন্যে গৌরবে ফেটে না পড়। আল্লাহ অপছন্দ করেন উদ্ধত ও অহংকারীদেরকে।
২৪الَّذِينَ يَبْخَلُونَ وَيَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبُخْلِ ۗ وَمَن يَتَوَلَّ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ
যারা কার্পণ্য করে এবং মানুষকে কার্পণ্যের নির্দেশ দেয় এবং যে মুখ ফিরিয়ে নেয় (সে জেনে রাখুক যে,) আল্লাহ তো অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
২৫لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتَابَ وَالْمِيزَانَ لِيَقُومَ النَّاسُ بِالْقِسْطِ ۖ وَأَنزَلْنَا الْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ وَرُسُلَهُ بِالْغَيْبِ ۚ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছি স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও তুলাদন্ড যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি লৌহ দিয়েছি যাতে রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি ও রয়েছে মানুষের জন্যে বহুবিধ কল্যাণ ; এটা এইজন্যে যে, আল্লাহ প্রকাশ করে দিবেন কে প্রত্যক্ষ না করেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।
২৬وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا وَإِبْرَاهِيمَ وَجَعَلْنَا فِي ذُرِّيَّتِهِمَا النُّبُوَّةَ وَالْكِتَابَ ۖ فَمِنْهُم مُّهْتَدٍ ۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ
আমি নূহ (আঃ) ও ইব্রাহীম (আঃ)-কে (রাসূলরূপে) প্রেরণ করেছিলাম এবং আমি তাদের দু’জনের বংশে নবুওয়াত ও কিতাবের ব্যবস্থা করেছিলাম ; কিন্তু তাদের অল্পই সৎপথ অবলম্বন করেছিল এবং অধিকাংশই ছিল ফাসেক।
২৭ثُمَّ قَفَّيْنَا عَلَىٰ آثَارِهِم بِرُسُلِنَا وَقَفَّيْنَا بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَآتَيْنَاهُ الْإِنجِيلَ وَجَعَلْنَا فِي قُلُوبِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ رَأْفَةً وَرَحْمَةً وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ابْتِغَاءَ رِضْوَانِ اللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا ۖ فَآتَيْنَا الَّذِينَ آمَنُوا مِنْهُمْ أَجْرَهُمْ ۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ
অতঃপর আমি একের পর এক আমার রাসূলগণ পাঠিয়েছি এবং মারইয়াম পুত্র ঈসা (আঃ)-কে পাঠিয়েছি। আর তাকে দিয়েছিলাম ইঞ্জিল এবং তাঁর অনুসারীদের অন্তরে দিয়েছিলাম করুণা ও দয়া ; কিন্তু সন্ন্যাসবাদ (সংসার ত্যাগী) এটা তো তারা নিজেরাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যে প্রবর্তন করেছিল ; আমি তাদেরকে এর বিধান দেইনি অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি। তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছিল, তাদেরকে আমি পুরস্কার দিয়েছিলাম এবং তাদের অধিকাংশই ফাসিক।
২৮يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَآمِنُوا بِرَسُولِهِ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِن رَّحْمَتِهِ وَيَجْعَل لَّكُمْ نُورًا تَمْشُونَ بِهِ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
হে মু’মিনগণ ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমান আন, তিনি তাঁর অনুগ্রহে তোমাদেরকে দ্বিগুণ পুরস্কার দিবেন এবং তিনি তোমাদেরকে দিবেন আলো, যার সাহায্যে তোমরা চলবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
২৯لِّئَلَّا يَعْلَمَ أَهْلُ الْكِتَابِ أَلَّا يَقْدِرُونَ عَلَىٰ شَيْءٍ مِّن فَضْلِ اللَّهِ ۙ وَأَنَّ الْفَضْلَ بِيَدِ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
এটা এজন্যে যে, কিতাবীগণ যেন জানতে পারে, আল্লাহর সামান্যতম অনুগ্রহের উপরও তাদের কোন অধিকার নেই, অনুগ্রহ আল্লাহরই হাতে, যাকে ইচ্ছা তা দান করেন এবং আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল।
error: Content is protected !!