০১৭. সূরাঃ বানী ইসরাইল

আয়াতঅবতীর্ণঃ মক্কা
আয়াত সংখ্যাঃ ১১১
রুকূঃ ১২
০৫১أَوْ خَلْقًا مِّمَّا يَكْبُرُ فِي صُدُورِكُمْ ۚ فَسَيَقُولُونَ مَن يُعِيدُنَا ۖ قُلِ الَّذِي فَطَرَكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ ۚ فَسَيُنْغِضُونَ إِلَيْكَ رُءُوسَهُمْ وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هُوَ ۖ قُلْ عَسَىٰ أَن يَكُونَ قَرِيبًا
অথবা এমন সৃষ্টি যা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন; তারা বলবেঃ কে আমাদেরকে পুনরুত্থিত করবে? বলঃ তিনিই যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন; অতপর তারা তোমার সামনে মাথা নাড়বে ও বলবে ওটা কবে? বলঃ সম্ভবত শীঘ্রই।
০৫২يَوْمَ يَدْعُوكُمْ فَتَسْتَجِيبُونَ بِحَمْدِهِ وَتَظُنُّونَ إِن لَّبِثْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا
যেদিন তিনি তোমাদেরকে আহ্বান করবেন এবং তোমরা প্রশংসার সাথে তাঁর আহ্বানে সাড়া দিবে এবং তোমরা মনে করবেঃ তোমরা অল্পকালই অবস্থান করেছিলে?
০৫৩وَقُل لِّعِبَادِي يَقُولُوا الَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنزَغُ بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلْإِنسَانِ عَدُوًّا مُّبِينًا
আমার বান্দাদেরকে যা উত্তম তা বলতে বলঃ শয়তান তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উস্কানি দেয়; নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।
০৫৪رَّبُّكُمْ أَعْلَمُ بِكُمْ ۖ إِن يَشَأْ يَرْحَمْكُمْ أَوْ إِن يَشَأْ يُعَذِّبْكُمْ ۚ وَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ وَكِيلًا
তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে ভালভাবে জানেন; ইচ্ছা করলে তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করেন এবং ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে শাস্তি দেন; আমি তোমাকে তাদের উপর অভিভাবক করে পাঠায় নি।
০৫৫وَرَبُّكَ أَعْلَمُ بِمَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۗ وَلَقَدْ فَضَّلْنَا بَعْضَ النَّبِيِّينَ عَلَىٰ بَعْضٍ ۖ وَآتَيْنَا دَاوُودَ زَبُورًا
যারা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে আছে তাদেরকে তোমার প্রতিপালক ভালভাবে জানেন; আমি তো নবীদের কতককে কতকের উপর মর্যাদা দিয়েছি; দাউদকে (আঃ) আমি যাবুর দিয়েছি।
০৫৬قُلِ ادْعُوا الَّذِينَ زَعَمْتُم مِّن دُونِهِ فَلَا يَمْلِكُونَ كَشْفَ الضُّرِّ عَنكُمْ وَلَا تَحْوِيلًا
বলঃ তোমরা তিনি (আল্লাহ) ব্যতীত যাদেরকে মা’বূদ মনে কর তাদেরকে আহ্বান কর; করলে দেখবে তোমাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করবার অথবা পরিবর্তন করবার শক্তি তাদের নেই।
০৫৭أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ يَدْعُونَ يَبْتَغُونَ إِلَىٰ رَبِّهِمُ الْوَسِيلَةَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ وَيَرْجُونَ رَحْمَتَهُ وَيَخَافُونَ عَذَابَهُ ۚ إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ كَانَ مَحْذُورًا
তারা যাদেরকে আহ্বান করে তারাই তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে যে তাদের মধ্যে কে কত নিকট হতে পারে, তাঁর দয়া প্রত্যাশা করে ও তাঁর শাস্তিকে ভয় করে; তোমার প্রতিপালকের শাস্তি ভয়াবহ।
০৫৮وَإِن مِّن قَرْيَةٍ إِلَّا نَحْنُ مُهْلِكُوهَا قَبْلَ يَوْمِ الْقِيَامَةِ أَوْ مُعَذِّبُوهَا عَذَابًا شَدِيدًا ۚ كَانَ ذَٰلِكَ فِي الْكِتَابِ مَسْطُورًا
এমন কোন জনপদ নেই যা আমি কিয়ামতের দিনের পূর্বে ধ্বংস করবো না অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দিবো না; এটা তো কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে।
০৫৯وَمَا مَنَعَنَا أَن نُّرْسِلَ بِالْآيَاتِ إِلَّا أَن كَذَّبَ بِهَا الْأَوَّلُونَ ۚ وَآتَيْنَا ثَمُودَ النَّاقَةَ مُبْصِرَةً فَظَلَمُوا بِهَا ۚ وَمَا نُرْسِلُ بِالْآيَاتِ إِلَّا تَخْوِيفًا
পূর্ববর্তীগণ কর্তৃক নিদর্শন অস্বীকার করাই আমাকে নিদর্শন প্রেরণ করা হতে বিরত রাখে; আমি স্পষ্ট নিদর্শনস্বরূপ সামূদের নিকট উষ্ট্রী পাঠিয়েছিয়াম অতঃপর ওর প্রতি তারা যুলুম করেছিল; আমি ভয় প্রদর্শনের জন্যেই নিদর্শন প্রেরণ করি।
০৬০وَإِذْ قُلْنَا لَكَ إِنَّ رَبَّكَ أَحَاطَ بِالنَّاسِ ۚ وَمَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إِلَّا فِتْنَةً لِّلنَّاسِ وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُونَةَ فِي الْقُرْآنِ ۚ وَنُخَوِّفُهُمْ فَمَا يَزِيدُهُمْ إِلَّا طُغْيَانًا كَبِيرًا
(স্মরণ কর,) আর যখন আমি তোমাকে বলেছিলাম যে, তোমার প্রতিপালক মানুষকে পরিবেষ্টন করে আছেন; আমি যে দৃশ্য (মি’রাজের রাতে) তোমাকে দেখিয়েছি তা, ও কুরআনে উল্লিখিত অভিশপ্ত বৃক্ষ শুধু মানুষের পরীক্ষার জন্যে; আমি তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করি; কিন্তু এটা তাদের তীব্র অবাধ্যতাই বৃদ্ধি করে।
০৬১وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ قَالَ أَأَسْجُدُ لِمَنْ خَلَقْتَ طِينًا
স্মরণ কর, যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ আদমের (আঃ) প্রতি সিজদাবনত হও; তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সিজদাবনত হল; সে বললঃ আমি কি তাকে সিজদা করবো যাকে আপনি কাদা মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন?
০৬২قَالَ أَرَأَيْتَكَ هَـٰذَا الَّذِي كَرَّمْتَ عَلَيَّ لَئِنْ أَخَّرْتَنِ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَأَحْتَنِكَنَّ ذُرِّيَّتَهُ إِلَّا قَلِيلًا
সে (আরো) বললঃ দেখুন! তাকে যে আপনি আমার উপর মর্যাদা দান করলেন? কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দেন তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ছাড়া তার বংশধরদের সমূলে নষ্ট করে ফেলবো।
০৬৩قَالَ اذْهَبْ فَمَن تَبِعَكَ مِنْهُمْ فَإِنَّ جَهَنَّمَ جَزَاؤُكُمْ جَزَاءً مَّوْفُورًا
আল্লাহ বললেনঃ যাও, ,জাহান্নামই সম্মুখ শাস্তি তোমার এবং তাদের যারা তোমার অনুসরণ করবে।
০৬৪وَاسْتَفْزِزْ مَنِ اسْتَطَعْتَ مِنْهُم بِصَوْتِكَ وَأَجْلِبْ عَلَيْهِم بِخَيْلِكَ وَرَجِلِكَ وَشَارِكْهُمْ فِي الْأَمْوَالِ وَالْأَوْلَادِ وَعِدْهُمْ ۚ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلَّا غُرُورًا
তোমার আহ্বানে তাদের মধ্যে যাকে পার সত্যচ্যুত কর, তোমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী দ্বারা তাদেরকে আক্রমন কর এবং তাদের ধনে ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হয়ে যাও, ও তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেও; শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ছলনা মাত্র।
০৬৫إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ ۚ وَكَفَىٰ بِرَبِّكَ وَكِيلًا
আমার বান্দাহদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই; কর্ম বিধায়ক হিসেবে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট।
০৬৬رَّبُّكُمُ الَّذِي يُزْجِي لَكُمُ الْفُلْكَ فِي الْبَحْرِ لِتَبْتَغُوا مِن فَضْلِهِ ۚ إِنَّهُ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًاতোমাদের প্রতিপালক তিনিই যিনি তোমাদের জন্যে সমুদ্রে জলযান পরিচালিত করেন, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার; তিনি তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
০৬৭وَإِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فِي الْبَحْرِ ضَلَّ مَن تَدْعُونَ إِلَّا إِيَّاهُ ۖ فَلَمَّا نَجَّاكُمْ إِلَى الْبَرِّ أَعْرَضْتُمْ ۚ وَكَانَ الْإِنسَانُ كَفُورًا
সমুদ্রে যখন তোমাদেরকে বিপদ স্পর্শ করে তখন শুধু তিনি ছাড়া অপর যাদেরকে তোমরা আহ্বান করে থাকো তারা তোমাদের মন হতে সরে যায়; অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তোমাদেরকে উদ্ধার করেন তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও; মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।
০৬৮أَفَأَمِنتُمْ أَن يَخْسِفَ بِكُمْ جَانِبَ الْبَرِّ أَوْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا ثُمَّ لَا تَجِدُوا لَكُمْ وَكِيلًا
তোমরা কি নিশ্চিন্ত আছ যে, তিনি তোমাদেরকে স্থলে কোথাও ভূ-গর্ভস্থ করবেন না অথবা তোমাদের উপর কঙ্কর বর্ষণ করবেন না? তখন তোমরা তোমাদের কোন কর্ম বিধায়ক পাবে না।
০৬৯أَمْ أَمِنتُمْ أَن يُعِيدَكُمْ فِيهِ تَارَةً أُخْرَىٰ فَيُرْسِلَ عَلَيْكُمْ قَاصِفًا مِّنَ الرِّيحِ فَيُغْرِقَكُم بِمَا كَفَرْتُمْ ۙ ثُمَّ لَا تَجِدُوا لَكُمْ عَلَيْنَا بِهِ تَبِيعًا
অথবা তোমরা কি নিশ্চিন্ত আছ যে, তোমাদেরকে আর একবার সমুদ্রে নিয়ে যাবেন না এবং তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ঝটিকা পাঠাবেন না এবং প্রত্যাখ্যান করার জন্যে তোমাদেরকে নিমজ্জিত করবেন না? তখন তোমরা এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পাবে না।
০৭০وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا
আমি তো আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি; তাদের উত্তম রুযী দান করেছি এবং যাদের আমি সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।
০৭১يَوْمَ نَدْعُو كُلَّ أُنَاسٍ بِإِمَامِهِمْ ۖ فَمَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَأُولَـٰئِكَ يَقْرَءُونَ كِتَابَهُمْ وَلَا يُظْلَمُونَ فَتِيلًا
সেদিন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাদের নেতাসহ আহ্বান করবো; অনন্তর যাদেরকে ডান হাতে তাদের আমলনামা পাঠ করবে এবং তাদের উপর সামান্য পরিমাণও যুলুম করা হবে না।
০৭২وَمَن كَانَ فِي هَـٰذِهِ أَعْمَىٰ فَهُوَ فِي الْآخِرَةِ أَعْمَىٰ وَأَضَلُّ سَبِيلًا
যে ইহলোকে অন্ধ পরলোকেও সে অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রষ্ট।
০৭৩وَإِن كَادُوا لَيَفْتِنُونَكَ عَنِ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ لِتَفْتَرِيَ عَلَيْنَا غَيْرَهُ ۖ وَإِذًا لَّاتَّخَذُوكَ خَلِيلًا
আমি তোমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করেছি তা হতে তোমার পদস্ফলন ঘটাবার জন্যে তারা চূড়ান্ত চেষ্টা করেছে, যাতে তুমি আমার সম্বন্ধে ওর বিপরীত কিছু মিথ্যা উদ্ভাবন কর; সফলকাম হলে তারা অবশ্যই তোমাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতো।
০৭৪وَلَوْلَا أَن ثَبَّتْنَاكَ لَقَدْ كِدتَّ تَرْكَنُ إِلَيْهِمْ شَيْئًا قَلِيلًا
আমি তোমাকে অবিচলিত না রাখলে তুমি তাদের দিকে প্রায় কিছুটা ঝুঁকেই পড়তে।
০৭৫إِذًا لَّأَذَقْنَاكَ ضِعْفَ الْحَيَاةِ وَضِعْفَ الْمَمَاتِ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ عَلَيْنَا نَصِيرًا
(তুমি ঝুঁকে পড়লে) অবশ্যই তোমাকে ইহ জীবনে ও পরজীবনে দ্বিগুণ (শাস্তি) আস্বাদন করাতাম, তখন আমার বিরুদ্ধে তোমার জন্যে কোন সাহায্যকারী পেতে না।
০৭৬وَإِن كَادُوا لَيَسْتَفِزُّونَكَ مِنَ الْأَرْضِ لِيُخْرِجُوكَ مِنْهَا ۖ وَإِذًا لَّا يَلْبَثُونَ خِلَافَكَ إِلَّا قَلِيلًا
তারা তোমাকে দেশ হতে উৎখাত করবার চূড়ান্ত চেষ্টা করেছিল তোমাকে সেথা হতে বহিষ্কার করার জন্যে; তাহলে তোমার পর তারাও সেথায় অল্পকালই টিকে থাকতো।
০৭৭سُنَّةَ مَن قَدْ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِن رُّسُلِنَا ۖ وَلَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِيلًا
আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন পাবে না।
০৭৮أَقِمِ الصَّلَاةَ لِدُلُوكِ الشَّمْسِ إِلَىٰ غَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْآنَ الْفَجْرِ ۖ إِنَّ قُرْآنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا
সূর্য হলে পড়বার পর হতে রাত্রির ঘন অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম করবে এবং কায়েম করবে ফজরের নামায; ফজরের নামায পরিলক্ষিত হয় বিশেষভাবে।
০৭৯وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَّكَ عَسَىٰ أَن يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُودًا
আর রাত্রের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ কায়েম করবে; এটা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য; আশা করা যায়, তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে (মহা শাফায়াতের মর্যাদায়)।
০৮০وَقُل رَّبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَل لِّي مِن لَّدُنكَ سُلْطَانًا نَّصِيرًا
আর দু’আ করঃ হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে সেখানে নিয়ে যান সত্যতা সহকারে এবং সেখান হতে আমাকে সত্য সহকারে বের করে নিন এবং আপনার নিকট হতে আমাকে দান করুন বিজয় ও সাহায্য (অকাট্য দলীল)।
০৮১وَقُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ ۚ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا
আর বলঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে; মিথ্যা তো বিলুপ্ত হয়েই থাকে।
০৮২وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ ۙ وَلَا يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إِلَّا خَسَارًا
আমি অবতীর্ণ করি কুরআন, যা বিশ্বাসীদের জন্যে আরোগ্য ও দয়া, কিন্তু তা সীমালঙ্ঘনকারীদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।
০৮৩وَإِذَا أَنْعَمْنَا عَلَى الْإِنسَانِ أَعْرَضَ وَنَأَىٰ بِجَانِبِهِ ۖ وَإِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ كَانَ يَئُوسًا
যখন আমি মানুষের উপর অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও অহংকারে দূরে সরে যায় এবং তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করলে সে একেবারে হতাশ হয়ে পড়ে।
০৮৪قُلْ كُلٌّ يَعْمَلُ عَلَىٰ شَاكِلَتِهِ فَرَبُّكُمْ أَعْلَمُ بِمَنْ هُوَ أَهْدَىٰ سَبِيلًا
বল, প্রত্যেকেই নিজ আকৃতি অনুযায়ী কাজ করে থাকে এবং চলার পথে কে সর্বাপেক্ষা নির্ভুল তোমার প্রতিপালক তা ভালোভাবে অবগত আছেন।
০৮৫وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ ۖ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُم مِّنَ الْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا
তোমাকে তারা রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে, তুমি বলঃ রূহ হল আমার প্রতিপালকের আদেশ (সম্পর্কিত একটি বিষয়।) এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দেয়া হয়েছে।
০৮৬وَلَئِن شِئْنَا لَنَذْهَبَنَّ بِالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ بِهِ عَلَيْنَا وَكِيلًا
ইচ্ছা করলে আমি তোমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করেছি তা অবশ্যই প্রত্যাহার করতে পারতাম; তাহলে তুমি এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন কর্ম বিধায়ক পেতে না।
০৮৭إِلَّا رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَ ۚ إِنَّ فَضْلَهُ كَانَ عَلَيْكَ كَبِيرًا
এটা প্রত্যাহার না করা তোমার প্রতিপালকের দয়া; তোমার প্রতি আছে তাঁর মহা অনুগ্রহ।
০৮৮قُل لَّئِنِ اجْتَمَعَتِ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَىٰ أَن يَأْتُوا بِمِثْلِ هَـٰذَا الْقُرْآنِ لَا يَأْتُونَ بِمِثْلِهِ وَلَوْ كَانَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ ظَهِيرًا
বলঃ যদি মানুষ ও জিন সমবেত হয় এই কুরআনের অনুরূপ কুরআন আনয়নের জন্যে যদিও তারা পরস্পরকে সাহায্য করে, (তবুও) তারা এর অনুরূপ কুরআন আনয়ন করতে পারবে না।
০৮৯وَلَقَدْ صَرَّفْنَا لِلنَّاسِ فِي هَـٰذَا الْقُرْآنِ مِن كُلِّ مَثَلٍ فَأَبَىٰ أَكْثَرُ النَّاسِ إِلَّا كُفُورًا
আমি মানুষের জন্যে এই কুরআনে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বিশদভাবে বর্ণনা করেছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সত্য প্রত্যাখ্যান ব্যতীত ক্ষান্ত হল না।
০৯০وَقَالُوا لَن نُّؤْمِنَ لَكَ حَتَّىٰ تَفْجُرَ لَنَا مِنَ الْأَرْضِ يَنبُوعًا
আর তারা বলেঃ কখনোই আমরা তোমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করবো না, যতক্ষন না তুমি আমাদের জন্যে ভূমি হতে এক প্রস্রবণ উৎসারিত করবে।
০৯১أَوْ تَكُونَ لَكَ جَنَّةٌ مِّن نَّخِيلٍ وَعِنَبٍ فَتُفَجِّرَ الْأَنْهَارَ خِلَالَهَا تَفْجِيرًا
অথবা তোমার খেজুরের কিংবা আঙ্গুরের এক বাগান হবে যার ফাঁকে ফাঁকে তুমি অজস্র ধারায় প্রবাহিত করে দেবে নদী-নালা।
০৯২أَوْ تُسْقِطَ السَّمَاءَ كَمَا زَعَمْتَ عَلَيْنَا كِسَفًا أَوْ تَأْتِيَ بِاللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ قَبِيلًا
অথবা তুমি যেমন বলে থাকো, তদানুযায়ী আকাশকে খন্ড-বিখন্ড করে আমাদের উপর ফেলবে অথবা আল্লাহ ও ফেরেশতাদেরকে আমাদের সামনে উপস্থিত করবে।
০৯৩أَوْ يَكُونَ لَكَ بَيْتٌ مِّن زُخْرُفٍ أَوْ تَرْقَىٰ فِي السَّمَاءِ وَلَن نُّؤْمِنَ لِرُقِيِّكَ حَتَّىٰ تُنَزِّلَ عَلَيْنَا كِتَابًا نَّقْرَؤُهُ ۗ قُلْ سُبْحَانَ رَبِّي هَلْ كُنتُ إِلَّا بَشَرًا رَّسُولًا
অথবা তোমার একটি স্বর্ণনির্মিত গৃহ হবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে; অবশ্য তোমার আকাশ আরোহণেও আমরা কখনো বিশ্বাস করবো না যতক্ষন তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ না করবে যা আমরা পাঠ করবো; বলঃ পবিত্র মহান আমার প্রতিপালক! আমি তো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল।
০৯৪وَمَا مَنَعَ النَّاسَ أَن يُؤْمِنُوا إِذْ جَاءَهُمُ الْهُدَىٰ إِلَّا أَن قَالُوا أَبَعَثَ اللَّهُ بَشَرًا رَّسُولًا
‘আল্লাহ কি মানুষকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন?’ মানুষকে এই উক্তিই বিশ্বাস স্থাপন হতে বিরত রাখে, যখন তাদের নিকট আসে পথ-নির্দেশ।
০৯৫قُل لَّوْ كَانَ فِي الْأَرْضِ مَلَائِكَةٌ يَمْشُونَ مُطْمَئِنِّينَ لَنَزَّلْنَا عَلَيْهِم مِّنَ السَّمَاءِ مَلَكًا رَّسُولًا
বলঃ ফেরেশতারা যদি নিশ্চিন্ত হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করতো তবে আমি আকাশ হতে ফেরেশতাকেই তাদের নিকট রাসূল করে পাঠাতাম।
০৯৬قُلْ كَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ ۚ إِنَّهُ كَانَ بِعِبَادِهِ خَبِيرًا بَصِيرًا
বলঃ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি তাঁর বান্দাদেরকে সবিশেষ জানেন ও দেখেন।
০৯৭وَمَن يَهْدِ اللَّهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ ۖ وَمَن يُضْلِلْ فَلَن تَجِدَ لَهُمْ أَوْلِيَاءَ مِن دُونِهِ ۖ وَنَحْشُرُهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمْ عُمْيًا وَبُكْمًا وَصُمًّا ۖ مَّأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ ۖ كُلَّمَا خَبَتْ زِدْنَاهُمْ سَعِيرًا
আল্লাহ যাদেরকে পথ নির্দেশ করেন তারা তো পথপ্রাপ্ত এবং যাদেরকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনোই তাঁকে ব্যতীত অন্য কাউকেও তাদের অভিভাবক পাবে না, কিয়ামতের দিন আমি তাদেরকে সমবেত করবো তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়; অন্ধ, বোবা ও বধির করে। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম; যখনই তা স্তিমিত হবে আমি তাদের জন্যে অগ্নি বৃদ্ধি করে দেবো।
০৯৮ذَٰلِكَ جَزَاؤُهُم بِأَنَّهُمْ كَفَرُوا بِآيَاتِنَا وَقَالُوا أَإِذَا كُنَّا عِظَامًا وَرُفَاتًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ خَلْقًا جَدِيدًا
এটাই তাদের প্রতিফল। কারণ, তারা আমার নিদর্শন অস্বীকার করেছিল ও বলেছিলঃ আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ-বিচূর্ণ হলেও কি নতুন সৃষ্টি রূপে পুনরুত্থিত হবো?
০৯৯أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ قَادِرٌ عَلَىٰ أَن يَخْلُقَ مِثْلَهُمْ وَجَعَلَ لَهُمْ أَجَلًا لَّا رَيْبَ فِيهِ فَأَبَى الظَّالِمُونَ إِلَّا كُفُورًا
তারা কি লক্ষ্য করে না যে, আল্লাহ, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম? তিনি তাদের জন্যে স্থির করেছেন এক নির্দিষ্ট কাল, যাতে কোন সন্দেহ নেই; তথাপি অত্যাচারীরা সত্য প্রত্যাখ্যান করা ব্যতীত ক্ষান্ত হল না।
১০০قُل لَّوْ أَنتُمْ تَمْلِكُونَ خَزَائِنَ رَحْمَةِ رَبِّي إِذًا لَّأَمْسَكْتُمْ خَشْيَةَ الْإِنفَاقِ ۚ وَكَانَ الْإِنسَانُ قَتُورًا
বলঃ যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের দয়ার ভান্ডারের অধিকারী হতে তবুও তোমরা ‘ব্যয় হয়ে যাবে’ এই আশঙ্কায় ওটা ধরে রাখতে, মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।
error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x