০০২. সূরাঃ বাকারাহ

আয়াত নং অবতীর্ণঃ মদিনা
আয়াত সংখ্যাঃ ২৮৬
রুকূঃ ৪০
১৫১ كَمَا أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولًا مِّنكُمْ يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا تَعْلَمُونَ
আমি তোমাদের মধ্য হতে এরূপ রাসূল প্রেরণ করেছি যিনি তোমাদের নিকট আমার নিদর্শনাবলী পাঠ করেন ও তোমাদেরকে পবিত্র করেন এবং তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেন আর তোমরা যা অবগত ছিলে না তা শিক্ষা দান করেন।
১৫২ فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوا لِي وَلَا تَكْفُرُونِ
অতএব তোমরা আমাকেই স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো এবং তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও ও অবিশ্বাসী হয়ো না।
১৫৩ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে বিশ্বাসস্থাপনকারীগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলগণের সাথে আছেন।
১৫৪ وَلَا تَقُولُوا لِمَن يُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلَـٰكِن لَّا تَشْعُرُونَ
আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত বলো না বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা তা অনুধাবন করো না।
১৫৫ وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা এবং ধন ও প্রাণ এবং ফল শস্যের অভাবের কোন একটি দ্বারা পরীক্ষা করবো এবং ঐসব ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান করুন।
১৫৬ الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
যাদের উপর কোন বিপদ আপতিত হলে তারা বলেঃ নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই জন্যে এবং নিশ্চয় আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।
১৫৭ أُولَـٰئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ
এঁদের উপর তাঁদের প্রভুর পক্ষ হতে শান্তি ও করুণা বর্ষিত হবে এবং এরাই সুপথগামী।
১৫৮ إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ ۖ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا ۚ وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
নিশ্চয় ‘সাফা’ ও মারওয়া’ আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্তর্গত, অতএব যে ব্যক্তি এই গৃহের ‘হজ্জ’ অথবা ‘উমরা’ করে তাঁর জন্য এতদুভয়ের প্রদক্ষিণ করা দোষণীয় নয়, এবং কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎকর্ম করলে আল্লাহ গুণগ্রাহী, সর্বজ্ঞাত।
১৫৯ إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَىٰ مِن بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ ۙ أُولَـٰئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ
আমি যেসব উজ্জল নিদর্শন ও পথ-নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি, আমি ঐগুলোকে সর্বসাধারণের নিকট প্রকাশ করার পরও যারা ঐসব বিষয়কে গোপন করে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন এবং অভিসম্পাতকারীগণও তাদেরকে অভিসম্পাত করে থাকে।
১৬০ إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا وَأَصْلَحُوا وَبَيَّنُوا فَأُولَـٰئِكَ أَتُوبُ عَلَيْهِمْ ۚ وَأَنَا التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
কিন্তু যারা তওবা করে সংশোধন করে নেয় এবং সত্য প্রকাশ করে, বস্তুতঃ আমি তাঁদের প্রতি ক্ষমা দানকারী এবং আমি তওবা কবুলকারী, করুণাময়।
১৬১ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَـٰئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
যারা অবিশ্বাস করেছে এবং অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, নিশ্চয় তাঁদের উপর আল্লাহর, ফেরেশতাগণের ও মানবকুলের সবারই অভিসম্পাত।
১৬২ خَالِدِينَ فِيهَا ۖ لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنظَرُونَ
সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে, তাঁদের শাস্তি প্রশমিত হবে না এবং তাদেরকে অবকাশ দেয়া যাবে না।
১৬৩ وَإِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌ وَاحِدٌ ۖ لَّا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَـٰنُ الرَّحِيمُ
এবং তোমাদের মা’বূদ একমাত্র আল্লাহ; সেই সর্বপ্রদাতা করুণাময় ব্যতীত অন্য কোন সত্য মা’বূদ নেই।
১৬৪ إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِن مَّاءٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَابَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
নিশ্চয় নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টিতে, দিন ও রাতের পরিবর্তনে, জাহাজসমূহের চলাচলে- যা মানুষের লাভজনক ও সম্ভার নিয়ে সমুদ্রে চলাচল করে, আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন তাতে, প্রত্যেক জীবজন্তুর বিস্তার করেন তাতে, বায়ুরাশির গতি পরিবর্তনে এবং আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যস্থ নিয়ন্ত্রিত মেঘমালায় সত্য জ্ঞানবান সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।
১৬৫ وَمِنَ النَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ اللَّهِ أَندَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِّلَّهِ ۗ وَلَوْ يَرَى الَّذِينَ ظَلَمُوا إِذْ يَرَوْنَ الْعَذَابَ أَنَّ الْقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا وَأَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعَذَابِ
এবং মানবমণ্ডলীর মধ্যে এরূপ কিছু লোক আছে- যারা আল্লাহর মোকাবেলায় অপরকে সমকক্ষ স্থীর করে, আল্লাহকে ভালোবাসার ন্যায় তারা তাদেরকে ভালোবেসে থাকে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে- আল্লাহর প্রতি তাঁদের ভালোবাসা দৃঢ়তর এবং যারা অত্যাচার করেছে তারা যদি শাস্তি অবলোকন করতো, তবে বুঝতো যে, সমুদয় শক্তি আল্লাহর জন্যে এবং নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।
১৬৬ إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوا مِنَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا وَرَأَوُا الْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الْأَسْبَابُ
যখন অনুসরনীয় নেতারা অনুসারীদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে এবং তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে ও তাদের সমস্ত স্মবন্ধ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
১৬৭ وَقَالَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا لَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّأَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّءُوا مِنَّا ۗ كَذَٰلِكَ يُرِيهِمُ اللَّهُ أَعْمَالَهُمْ حَسَرَاتٍ عَلَيْهِمْ ۖ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنَ النَّارِ
অনিসরণকারীরা বলবেঃ যদি আমরা ফিরে যেতে পারতাম তবে তারা যেরূপ আমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে আমরাও তদ্রুপ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করতাম; এভাবে আল্লাহ তাদের কৃতকর্মসমূহ তৎপ্রতি দুঃখজনকভাবে প্রদর্শন করাবেন এবং তারা জাহান্নাম হতে উদ্ধার পাবে না।
১৬৮ يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে মানবগণ! পৃথিবীর মধ্যে যা বৈধ-পবিত্র, তা হতে ভক্ষণ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
১৬৯ إِنَّمَا يَأْمُرُكُم بِالسُّوءِ وَالْفَحْشَاءِ وَأَن تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
সে তো কেবল তোমাদেরকে মন্দ ও অশ্লীল কার্যের এবং আল্লাহ সম্বন্ধে তোমরা জান না এমন সব বিষয় বলার নির্দেশ দেয়।
১৭০ وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا ۗ أَوَلَوْ كَانَ آبَاؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ
এবং যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর; তখন তারা বলে- বরং আমরা তারই অনুসরণ করবো যার উপর আমাদের পিতৃপুরুষগণকে পেয়েছি; যদিও তাদের পিতৃপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিল না এবং তারা সুপথগামী ছিল না তবুও?
১৭১ وَمَثَلُ الَّذِينَ كَفَرُوا كَمَثَلِ الَّذِي يَنْعِقُ بِمَا لَا يَسْمَعُ إِلَّا دُعَاءً وَنِدَاءً ۚ صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَعْقِلُونَ
আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের দৃষ্টান্ত ওদের ন্যায়। যেমন কেউ আহ্বান করলে শুধু চিৎকার ও ধ্বনি ব্যতীত আর কিছুই শুনে না; তারা বধির, মূক, অন্ধ, কাজেই তারা বুঝতে পারে না।
১৭২ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَاشْكُرُوا لِلَّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
হে বিশ্বাসস্থাপনকারীগণ! আমি তোমাদেরকে যা উপজীবিকা স্বরূপ দান করেছি সেই পবিত্র বস্তুসমূহ ভক্ষণ কর এবং আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যদি তোমরা তারই উপাসনা করে থাকো।
১৭৩ إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنزِيرِ وَمَا أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ ۖ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তিনি শুধু তোমাদের জন্য মৃত জীব, রক্ত (প্রবাহিত রক্ত), শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহ ব্যতীত অপরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত তা হারাম করেছেন; কিন্তু যে ব্যক্তি নিরূপায়; (হারামের প্রতি) ইচ্ছুক নয় এবং তা ভক্ষণের ক্ষেত্রে) সীমালঙ্ঘনকারী নয়, তার জন্যে পাপ নেই এবং নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
১৭৪ إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُونَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۙ أُولَـٰئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ إِلَّا النَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
নিশ্চয় আল্লাহ যা গ্রন্থে অবতীর্ণ করেছেন তা যারা গোপন করে ও তৎপরিবর্তে নগণ্য মূল্য গ্রহণ করে, নিশ্চয় তারা স্ব-স্ব উদরে অগ্নি ছাড়া অন্য কিছু ভক্ষণ করে না এবং কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।
১৭৫ أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْهُدَىٰ وَالْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ ۚ فَمَا أَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّارِ
তারাই সুপথের বিনিময়ে কুপথ এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করেছে, অতঃপর জাহান্নাম (এর আযাব) কিরূপে সহ্য করবে?
১৭৬ ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ نَزَّلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ اخْتَلَفُوا فِي الْكِتَابِ لَفِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ
এ জন্যেই আল্লাহ সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন এবং যারা গ্রন্থ সম্বন্ধে বিরোধ করে, বাস্তবিকই তারাই বিরুদ্ধাচরণে সুদূরগামী।
১৭৭ لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَـٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا ۖ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ ۗ أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا ۖ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ
তোমরা তোমাদের মুখমুন্ডল পূর্ব বা পশ্চিম দিকে প্রত্যাবর্তিত কর তাতে পুণ্য নেই; বরং পুণ্য তাঁর, যে ব্যক্তি আল্লাহ, পরকাল, ফেরেস্তাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁরই ভালোবাসা অর্জনের জন্য আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীনগণ, দরিদ্রগণ, পথিকগণ ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্যে ধন-সম্পদ দান করে, আর নামাজ প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে যারা সেই অঙ্গীকার পূর্ণকারী হয় এবং যারা অভাবে ও ক্লেশে এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যশীল তারাই সত্যপরায়ণ এবং তারাই আল্লাহ ভীরূ।
১৭৮ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى ۖ الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالْأُنثَىٰ بِالْأُنثَىٰ ۚ فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ ۗ ذَٰلِكَ تَخْفِيفٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ ۗ فَمَنِ اعْتَدَىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَلَهُ عَذَابٌ أَلِيمٌ
হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! নিহতগণের সম্বন্ধে তোমাদের জন্যে প্রতিশোধ গ্রহণ বিধিবদ্ধ হল; স্বাধীনের পরিবর্তে স্বাধীন, দাসের পরিবর্তে দাস, এবং নারীর পরিবর্তে নারী; কিন্তু যদি কেউ তার ভাই কর্তৃক কোন বিষয়ে ক্ষমা প্রাপ্ত হয়, তবে যেন ন্যায়সঙ্গত ভাবে তাগাদা করে এবং সদ্ভাবে তা পরিশোধ করে; এটা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে লঘু বিধান ও করুণা; অতঃপর যে কেউ সীমালঙ্ঘন করবে তার জন্যে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
১৭৯ وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে জ্ঞানবান লোকেরা! কিসাস (প্রতিশোধ) গ্রহণে তোমাদের জন্যে জীবন আছে- যেন তোমরা আল্লাহ ভীরূ হও।
১৮০ كُتِبَ عَلَيْكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ إِن تَرَكَ خَيْرًا الْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِينَ بِالْمَعْرُوفِ ۖ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِينَ
যখন তোমাদের কারো মৃত্যু নিকটবর্তী বলে মনে হয়, তখন সে যদি ধন-সম্পত্তি ছেড়ে যায় তবে পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের জন্যে বৈধভাবে অসিয়ত করা তোমাদের জন্যে বিধিবদ্ধ হল, আল্লাহ ভিরূদের জন্য এটা অবশ্যকরণীয়।
১৮১ فَمَن بَدَّلَهُ بَعْدَ مَا سَمِعَهُ فَإِنَّمَا إِثْمُهُ عَلَى الَّذِينَ يُبَدِّلُونَهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
অতঃপর যে ব্যক্তি শুনার পর তা পরিবর্তন করে, তবে এর পাপ তাদেরই হবে, যারা একে পরিবর্তন করবে; নিশ্চয় আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।
১৮২ فَمَنْ خَافَ مِن مُّوصٍ جَنَفًا أَوْ إِثْمًا فَأَصْلَحَ بَيْنَهُمْ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অনন্তর যদি কেউ অসিয়তকারীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব বা পাপের আশংকা করে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তবে তার পাপ নেই; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল করুণাময়।
১৮৩ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও রোযাকে অপরিহার্য কর্তব্যরূপে নির্ধারিত করা হল যেন তোমরা আল্লাহভীতি অর্জন করতে পারো।
১৮৪ أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ ۚ وَأَن تَصُومُوا خَيْرٌ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
এটা নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে কেউ অসুস্থ কিংবা মুসাফির হয়, তার জন্যে অপর কোন দিবস হতে গণনা করবে; আর যারা অক্ষম তারা তৎপরিবর্তে একজন দরিদ্রকে খাদ্য দান করবে; তবে যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎকর্ম করে তার জন্যে কল্যাণ এবং তোমরা যদি বুঝে থাকো তবে রোজা রাখাই তোমাদের জন্যে কল্যাণকর।
১৮৫ شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ ۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
রমযান মাস, যার মধ্যে বিশ্বমানবের জন্য পথ প্রদর্শক এবং সুপথের উজ্জ্বল নিদর্শন ও (হক ও বাতিলের) প্রভেদকারী কুর’আন অবতীর্ণ করা হয়েছে, অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন রোজা রাখে এবং যে ব্যক্তি অসুস্থ বা মুসাফির তার জন্যে অপর কোন দিন হতে গণনা করবে; তোমাদের পক্ষে যা সহজ আল্লাহ তাই চান ও তোমাদের পক্ষে যা কষ্টকর তা তিনি চান না এবং তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করে নিতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা আল্লাহর বড়ত্ব বর্ণনা কর এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
১৮৬ وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
এবং যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন তাদেরকে বলে দাওঃ নিশ্চয় আমি সন্নিকটবর্তী; কোন আহ্বানকারী যখনই আমাকে আহ্বান করে তখনই আমি তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে থাকি; সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করে, তা হলেই তারা সঠিক পথে চলতে পারবে।
১৮৭ أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ ۚ وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
রোযার রজনীতে আপন স্ত্রীদের সহিত সহবাস করা তোমাদের জন্যে বৈধ করা হয়েছে; তারা তোমাদের জন্যে আবরণ এবং তোমরা তাদের জন্যে আবরণ, তোমরা যে আত্মপ্রতারণা করেছিলে, আল্লাহ তা পরিজ্ঞাত আছেন, এ জন্যে তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের (অব্যাহতি দিয়েছেন); অতএব এক্ষণে তোমরা (রোযার রাত্রেও) তাদের সাথে সহবাস কর এবং আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তা অনুসন্ধান কর এবং সকালে কালো সুতা হতে সাদা সুতা প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত তোমরা খাও ও পান কর; অতঃপর রাত্রি সমাগম পর্যন্ত তোমরা রোযা পূর্ণ কর’ তোমরা মসজিদে ই’তেকাফ করবার সময় তাদের (স্ত্রীদের) সাথে মিলন কর না; এটাই আল্লাহর সীমা, অতএব তোমরা তার নিকটেও যাবে না; এভাবে আল্লাহ মানবমণ্ডলীর জন্যে তাঁর নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেন, যেন তারা আল্লাহ ভীরূ হয়।
১৮৮ وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا فَرِيقًا مِّنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
এবং তোমরা নিজেদের মধ্যে পরস্পরের ধনসম্পত্তি অন্যায়রূপে গ্রাস কর না এবং তা বিচারকের নিকট এ জন্যে উপস্থাপিত করো না, যাতে তোমরা জ্ঞাতসারে লোকের ধনের অংশ অন্যায়ভাবে গ্রাস করতে পারো।
১৮৯ يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْأَهِلَّةِ ۖ قُلْ هِيَ مَوَاقِيتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ ۗ وَلَيْسَ الْبِرُّ بِأَن تَأْتُوا الْبُيُوتَ مِن ظُهُورِهَا وَلَـٰكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقَىٰ ۗ وَأْتُوا الْبُيُوتَ مِنْ أَبْوَابِهَا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে, তুমি বলঃ এগুলো হচ্ছে জনসমাজের ও হজ্জের জন্য সময় নিরূপক; আর (ঐ হজ্জের চাঁদে) তোমরা যে পশ্চাৎদিক দিয়ে গৃহে সমাগত হয়, এটা পুণ্য কর্ম নয়, পুণ্য কর্ম হল যে, কোন ব্যক্তি আল্লাহ ভীরূ হয় এবং তোমরা গৃহসমূহের দরজা দিয়ে প্রবেশ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, তোমরা অবশ্যই সুফলপ্রাপ্ত হবে।
১৯০ وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ
এবং যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তোমরাও তাদের সাথে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর এবং সীমা অতিক্রম করো না; নিশ্চয় আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না।
১৯১ وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ ۚ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ ۚ وَلَا تُقَاتِلُوهُمْ عِندَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتَّىٰ يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ ۖ فَإِن قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ ۗ كَذَٰلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِينَ
তাদেরকে যেখানেই পাও, হত্যা কর এবং তারা তোমাদেরকে যেখান হতে বহিষ্কৃত করেছে, তোমরাও তাদেরকে সেখান হতে বহিষ্কৃত কর এবং হত্যা অপেক্ষা ফেতনা-ফাসাদ (কুফর ও শিরক) গুরুতর অপরাধ এবং তোমরা তাদের সাথে মসজিদুল হারামের নিকট যুদ্ধ করো না, যে পর্যন্ত না তারা তোমাদের সাথে তন্মধ্যে যুদ্ধ করে; কিন্তু যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তবে তোমরাও তাদেরকে হত্যা কর; অবিশ্বাসীদের জন্যে এটাই প্রতিফল।
১৯২ فَإِنِ انتَهَوْا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অতঃপর যদি তারা নিবৃত হয় তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
১৯৩ وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِلَّهِ ۖ فَإِنِ انتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ إِلَّا عَلَى الظَّالِمِينَ
ফেতনা-ফাসাদ দূরীভুত হয়ে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর; অতঃপর যদি তারা নিবৃত্ত হয়, তবে অত্যাচারীদের উপর ব্যতীত বাড়াবাড়ি নেই।
১৯৪ الشَّهْرُ الْحَرَامُ بِالشَّهْرِ الْحَرَامِ وَالْحُرُمَاتُ قِصَاصٌ ۚ فَمَنِ اعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُوا عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
নিষিদ্ধ মাসের পরিবর্তে নিষিদ্ধ মাস এবং নিষিদ্ধ মাসেও বদলার ব্যবস্থা বের হবে ঐ অবস্থায় যদি কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করে, তবে সে তোমাদের প্রতি যেরূপ অত্যাচার করবে, তোমরাও তার প্রতি সেরূপ অত্যাচার কর এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখো যে, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
১৯৫ وَأَنفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ۛ وَأَحْسِنُوا ۛ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
এবং তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং স্বীয় হাত ধ্বংসের দিকে প্রসারিত করো না এবং হিত সাধন করতে থাকো, নিশ্চয় আল্লাহ হিতসাধন-কারীদেরকে ভালোবাসেন।
১৯৬ وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ ۚ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ ۖ وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتَّىٰ يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ بِهِ أَذًى مِّن رَّأْسِهِ فَفِدْيَةٌ مِّن صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ ۚ فَإِذَا أَمِنتُمْ فَمَن تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ ۚ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ وَسَبْعَةٍ إِذَا رَجَعْتُمْ ۗ تِلْكَ عَشَرَةٌ كَامِلَةٌ ۗ ذَٰلِكَ لِمَن لَّمْ يَكُنْ أَهْلُهُ حَاضِرِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমরাহ সম্পূর্ণ কর; কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তবে যা সহজপ্রাপ্য তাই কুরবানী কর এবং কুরবানীর জন্তুগুলো স্বস্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত তোমাদের মস্তক মুন্ডন করা না; কিন্তু কেউ যদি তোমাদের মধ্যে রোগাক্রান্ত হয় বা তার মস্তক যন্ত্রনাগ্রস্থ হয়, তবে সে রোযা, কিংবা সাদকা অথবা কুরবানী দ্বারা ওর বিনিময় করবে, অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ অবস্থায় থাকো, তখন যে ব্যক্তি হজ্জের সাথে উমরারও ফলভোগ কামনা করে তবে যা সহজ প্রাপ্য তাই কুরাবনী করবে; কিন্তু কেউ যদি তা না পায় তবে হজ্জের সময় তিন দিন এবং যখন তোমরা প্রত্যাবর্তিত হও তখন সাত দিন এই পূর্ণ দশ দিন রোযা রাখবে; এটা তারই জন্যে যার পরিজন মসজিদুল হারামে উপস্থিত না থাকে এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখো যে আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা।
১৯৭ الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَّعْلُومَاتٌ ۚ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوقَ وَلَا جِدَالَ فِي الْحَجِّ ۗ وَمَا تَفْعَلُوا مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللَّهُ ۗ وَتَزَوَّدُوا فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَىٰ ۚ وَاتَّقُونِ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ
হজ্জের মাসগুলো নির্ধারিত; অতএব কেউ যদি ঐ মাসগুলোর মধ্যে হজ্জের সঙ্কল্প করে, তবে সে হজ্জের মধ্যে সহবাস, দুষ্কার্য ও কলহ করতে পারবে না এবং তোমরা যে কোন সৎকর্ম কর না কেন, আল্লাহ তা পরিজ্ঞাত আছেন; আর তোমরা (নিজেদের) পাথেয় সঞ্চয় করে নাও; বস্তুতঃ নিশ্চিত উৎকৃষ্টতম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহভীতি এবং হে জ্ঞানবানগণ! তোমরা আমাকে ভয় কর।
১৯৮ لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَبْتَغُوا فَضْلًا مِّن رَّبِّكُمْ ۚ فَإِذَا أَفَضْتُم مِّنْ عَرَفَاتٍ فَاذْكُرُوا اللَّهَ عِندَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ ۖ وَاذْكُرُوهُ كَمَا هَدَاكُمْ وَإِن كُنتُم مِّن قَبْلِهِ لَمِنَ الضَّالِّينَ
তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করলে তাতে তোমাদের পক্ষে কোন অপরাধ নেই; অতঃপর যখন তোমরা আরাফাত হতে প্রত্যাবর্তিত হও তখন পবিত্র (মাশয়ারে হারাম) স্মৃতি-স্থানের নিকট আল্লাহকে স্মরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যেরূপ নির্দেশ দিয়েছেন তদ্রুপ তাঁকে স্মরণ করো এবং নিশ্চয় তোমরা এর পূর্বে বিভ্রান্তদের অন্তর্গত ছিলে।
১৯৯ ثُمَّ أَفِيضُوا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অতঃপর যেখান হতে লোক প্রত্যাবর্তন করে, তোমরাও সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন কর এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা কর; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।
২০০ فَإِذَا قَضَيْتُم مَّنَاسِكَكُمْ فَاذْكُرُوا اللَّهَ كَذِكْرِكُمْ آبَاءَكُمْ أَوْ أَشَدَّ ذِكْرًا ۗ فَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا وَمَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ
অনন্তর যখন তোমরা তোমাদের (হজ্জের) অনুষ্ঠানগুলো সম্পন্ন করে ফেলো তখন যেরূপ তোমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে স্মরণ করতে, তদ্রুপ আল্লাহকে স্মরণ কর বরং তদপেক্ষা দৃঢ়তর ভাবে স্মরণ কর; কিন্তু মানবমণ্ডলীর মধ্যে কেউ কেউ এরূপ আছে যারা বলে থাকেঃ হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে ইহকালেই দান করুন তাদের জন্যে পরকালে কোন অংশ নেই।
error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x