৭৬. সূরাঃ দাহর

আয়াত নংঅবতীর্ণঃ মক্কা
আয়াত সংখ্যাঃ ৩১
রুকু ২
০১هَلْ أَتَىٰ عَلَى الْإِنسَانِ حِينٌ مِّنَ الدَّهْرِ لَمْ يَكُن شَيْئًا مَّذْكُورًا
মানুষের উপর অন্তহীন মহাকালের এমন এক সময় কি এসেছিল যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না?
০২إِنَّا خَلَقْنَا الْإِنسَانَ مِن نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَاهُ سَمِيعًا بَصِيرًا
আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি সংমিশ্রিত শুক্র বিন্দু হতে, তাকে পরীক্ষা করবো, এই জন্য আমি তাকে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি দিয়েছি।
০৩إِنَّا هَدَيْنَاهُ السَّبِيلَ إِمَّا شَاكِرًا وَإِمَّا كَفُورًا
আমি তাকে পথ দেখিয়েছি এরপর হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, নয়তো হবে অকৃতজ্ঞ।
০৪إِنَّا أَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ سَلَاسِلَ وَأَغْلَالًا وَسَعِيرًا
আমি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি শৃঙ্খল, বেড়ি ও লেলিহান অগ্নি।
০৫إِنَّ الْأَبْرَارَ يَشْرَبُونَ مِن كَأْسٍ كَانَ مِزَاجُهَا كَافُورًا
নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানীয় যার মিশ্রণ হবে কাফূর (কর্পূর)
০৬عَيْنًا يَشْرَبُ بِهَا عِبَادُ اللَّهِ يُفَجِّرُونَهَا تَفْجِيرًا
এমন একটি ঝর্ণা যা হতে আল্লাহর বান্দারা পান করবে, তারা এই ঝর্ণাকে যথা ইচ্ছা প্রবাহিত করবে।
০৭يُوفُونَ بِالنَّذْرِ وَيَخَافُونَ يَوْمًا كَانَ شَرُّهُ مُسْتَطِيرًا
তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিনের অনিষ্টতা হবে ব্যাপক।
০৮وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا
এবং খাদ্যের প্রতি আসক্ত সত্ত্বেও অভাবগ্রস্থ, ইয়াতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে,
০৯إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللَّهِ لَا نُرِيدُ مِنكُمْ جَزَاءً وَلَا شُكُورًا
(এবং বলেঃ) শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমরা তোমাদের নিকট হতে কোন প্রতিদান চাই না, কৃতজ্ঞতাও নয়।
১০إِنَّا نَخَافُ مِن رَّبِّنَا يَوْمًا عَبُوسًا قَمْطَرِيرًا
আমরা আশঙ্কা করি আমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে এক ভীতিপ্রদ ভয়ঙ্কর দিনের।
১১فَوَقَاهُمُ اللَّهُ شَرَّ ذَٰلِكَ الْيَوْمِ وَلَقَّاهُمْ نَضْرَةً وَسُرُورًا
পরিণামে আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করবেন সে দিবসের অনিষ্ট হতে এবং তাদেরকে উৎফুল্লতা ও আনন্দ দান করবেন।
১২وَجَزَاهُم بِمَا صَبَرُوا جَنَّةً وَحَرِيرًا
আর তাদের ধৈর্যশীলতার পুরস্কার স্বরূপ তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী পোশাক দান করবেন।
১৩مُّتَّكِئِينَ فِيهَا عَلَى الْأَرَائِكِ ۖ لَا يَرَوْنَ فِيهَا شَمْسًا وَلَا زَمْهَرِيرًا
সেখানে তারা সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসবে তারা সেখানে অতিশয় গরম অথবা অতিশয় শীত কোনটিই দেখবে না।
১৪وَدَانِيَةً عَلَيْهِمْ ظِلَالُهَا وَذُلِّلَتْ قُطُوفُهَا تَذْلِيلًا
জান্নাতের বৃক্ষছায়া তাদের উপর ঝুঁকে থাকবে এবং ওর ফলমূল সম্পূর্ণরূপে তাদের আয়ত্বাধীন থাকবে।
১৫وَيُطَافُ عَلَيْهِم بِآنِيَةٍ مِّن فِضَّةٍ وَأَكْوَابٍ كَانَتْ قَوَارِيرَا
তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রৌপ্যপাত্রে এবং কাঁচের মত স্বচ্ছ পান পাত্রে –
১৬قَوَارِيرَ مِن فِضَّةٍ قَدَّرُوهَا تَقْدِيرًا
রৌপ্য জাতীয় কাঁচের পাত্রে, পরিবেশনকারীরা যথাযথ পরিমাণে তা পূর্ণ করবে।
১৭وَيُسْقَوْنَ فِيهَا كَأْسًا كَانَ مِزَاجُهَا زَنجَبِيلًا
সেখানে তাদেরকে পান করতে দেয়া হবে যানজাবীল (আদা দিয়ে তৈরি) মিশ্রিত পানীয়,
১৮عَيْنًا فِيهَا تُسَمَّىٰ سَلْسَبِيلًا
জান্নাতের এক ঝর্ণা থাকবে যার নাম হবে সালসাবীল।
১৯وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُّخَلَّدُونَ إِذَا رَأَيْتَهُمْ حَسِبْتَهُمْ لُؤْلُؤًا مَّنثُورًا
তাদেরকে পরিবেশন করবে চির কিশোরগণ, যখন তাদেরকে দেখবে মনে করবে তারা যেন ছড়ানো ছিটানো মুক্তা,
২০وَإِذَا رَأَيْتَ ثَمَّ رَأَيْتَ نَعِيمًا وَمُلْكًا كَبِيرًا
তুমি যখন সেখানে দেখবে, দেখতে পাবে কত নিয়ামত এবং বিশাল রাজ্য।
২১عَالِيَهُمْ ثِيَابُ سُندُسٍ خُضْرٌ وَإِسْتَبْرَقٌ ۖ وَحُلُّوا أَسَاوِرَ مِن فِضَّةٍ وَسَقَاهُمْ رَبُّهُمْ شَرَابًا طَهُورًا
তাদের পরিধানে থাকবে মিহি রেশমের সবুজ পোশাক, তারা অলংকৃত হবে রৌপ্য নির্মিত কংকনে, আর তাদের প্রতিপালক তাদেরকে পান করাবেন বিশুদ্ধ পানীয়।
২২إِنَّ هَـٰذَا كَانَ لَكُمْ جَزَاءً وَكَانَ سَعْيُكُم مَّشْكُورًا
অবশ্যই, এটা তোমাদের পুরস্কার এবং তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা স্বীকৃত।
২৩إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْقُرْآنَ تَنزِيلًا
আমি তোমার ওপরে কুরআন ক্রমান্বয়ে অবতীর্ণ করেছি,
২৪فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تُطِعْ مِنْهُمْ آثِمًا أَوْ كَفُورًا
অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের নির্দেশের জন্য ধৈর্যধারণ কর এবং তাদের মধ্যকার পাপি অথবা কাফিরের আনুগত্য করো না।
২৫وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
এবং তোমাদের প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর সকাল-সন্ধ্যায়।
২৬وَمِنَ اللَّيْلِ فَاسْجُدْ لَهُ وَسَبِّحْهُ لَيْلًا طَوِيلًا
রাতে তাঁর জন্য সিজদায় নত হও এবং রাতে দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা কর।
২৭إِنَّ هَـٰؤُلَاءِ يُحِبُّونَ الْعَاجِلَةَ وَيَذَرُونَ وَرَاءَهُمْ يَوْمًا ثَقِيلًا
নিশ্চয়ই তারা ভালবাসে দ্রুত লাভ করাকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিবসকে উপেক্ষা করে চলে।
২৮نَّحْنُ خَلَقْنَاهُمْ وَشَدَدْنَا أَسْرَهُمْ ۖ وَإِذَا شِئْنَا بَدَّلْنَا أَمْثَالَهُمْ تَبْدِيلًا
আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি এবং আমি তাদের গঠন সুদৃঢ় করেছি। আমি যখন ইচ্ছা করবো তখন তাদের পরিবর্তে তাদের অনুরূপ এ জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবো।
২৯إِنَّ هَـٰذِهِ تَذْكِرَةٌ ۖ فَمَن شَاءَ اتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِ سَبِيلًا
এটা এক উপদেশ বাণী, অতএব যার ইচ্ছা সে তার প্রতিপালকের দিকে যাওয়ার পথ অবলম্বন করুক।
৩০وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
তোমার ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাবান।
৩১يُدْخِلُ مَن يَشَاءُ فِي رَحْمَتِهِ ۚ وَالظَّالِمِينَ أَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত করেন ; আর যালিমরা, তাদের জন্যে তিনি প্রস্তুত রেখেছেন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
error: Content is protected !!