৪৮. সূরাঃ আল ফাতহ

আয়াত অবতীর্ণঃ মদিনা
আয়াত সংখ্যাঃ ২৯
রুকূঃ ৪
০১ إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِينًا
নিশ্চয়ই (হে রাসূল) আমি তোমাকে দান করেছি সুস্পষ্ট বিজয়।
০২ لِّيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا
আল্লাহ তোমার অতীত ও ভবিষ্যৎ ত্রুটিসমূহ যেন মার্জনা করেন এবং তাঁর অনুগ্রহ তোমার জন্য পূর্ণ করেন এবং তোমাকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
০৩ وَيَنصُرَكَ اللَّهُ نَصْرًا عَزِيزًا
এবং তোমাকে আল্লাহ বলিষ্ঠভাব সাহায্য দান করেন।
০৪ هُوَ الَّذِي أَنزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا إِيمَانًا مَّعَ إِيمَانِهِمْ ۗ وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
তিনিই মু’মিনদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন যেন তারা নিজেদের ঈমানের সহিত ঈমান আরও বাড়িয়ে নেয়, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাবান-
০৫ لِّيُدْخِلَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَيُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ ۚ وَكَانَ ذَٰلِكَ عِندَ اللَّهِ فَوْزًا عَظِيمًا
এটা এজন্যে যে, তিনি মু’মিন পুরুষদেরকে ও মু’মিন নারীদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং তিনি তাদের অপকর্ম সমূহ দূর করবেন ; এটাই আল্লাহর নিকট মহা বিজয়।
০৬ وَيُعَذِّبَ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْمُشْرِكِينَ وَالْمُشْرِكَاتِ الظَّانِّينَ بِاللَّهِ ظَنَّ السَّوْءِ ۚ عَلَيْهِمْ دَائِرَةُ السَّوْءِ ۖ وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَلَعَنَهُمْ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيرًا
এবং তিনি মুনাফিক পুরুষ মুনাফিক নারী, মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক নারীকে শাস্তি দিবেন যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মন্দ ধারণা পোষণ করে। তাদের উপর অকল্যাণের চক্র (আযাব), আল্লাহ তাদের প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন এবং তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেন আর তাদের জন্যে জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন ; ওটা কত নিকৃষ্ট আবাস !
০৭ وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
আল্লাহরই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ এবং আল্লাহই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
০৮ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে।
০৯ لِّتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমান আন এবং তাকে রাসূল (সঃ)-কে সাহায্য কর ও সম্মান কর ; সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর (আল্লাহর) পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
১০ إِنَّ الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّهَ يَدُ اللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ ۚ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا يَنكُثُ عَلَىٰ نَفْسِهِ ۖ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا
যারা তোমার বায়’আত গ্রহণ করে তারা তো আল্লাহরই বায়’আত গ্রহণ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর। সুতরাং যে ওটা ভঙ্গ করে ওটা ভঙ্গ করবার পরিণাম তারই উপর বর্তাবে এবং যে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ করে তিনি তাকে মহা প্রতিদান দিবেন।
১১ سَيَقُولُ لَكَ الْمُخَلَّفُونَ مِنَ الْأَعْرَابِ شَغَلَتْنَا أَمْوَالُنَا وَأَهْلُونَا فَاسْتَغْفِرْ لَنَا ۚ يَقُولُونَ بِأَلْسِنَتِهِم مَّا لَيْسَ فِي قُلُوبِهِمْ ۚ قُلْ فَمَن يَمْلِكُ لَكُم مِّنَ اللَّهِ شَيْئًا إِنْ أَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ نَفْعًا ۚ بَلْ كَانَ اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
যেসব আরব বেদুঈনকে পশ্চাতে রেখে দেয়া হয়েছে, তারা তোমাকে বলবেঃ আমাদের ধন-সম্পদ ও পরিবার-পরিজন আমাদেরকে ব্যস্ত করে রেখেছিল, অতএব আমাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তারা মুখে যা বলে তা তাদের অন্তরে নেই। তাদেরকে বলঃ আল্লাহ তোমাদের কারও কোন ক্ষতি কিংবা উপকার সাধনের ইচ্ছা করলে কে ক্ষমতা রাখে যে, তাঁকে বাধা দান করতে পারে? বস্তুতঃ তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ ভালোভাবে অবহিত।
১২ بَلْ ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَنقَلِبَ الرَّسُولُ وَالْمُؤْمِنُونَ إِلَىٰ أَهْلِيهِمْ أَبَدًا وَزُيِّنَ ذَٰلِكَ فِي قُلُوبِكُمْ وَظَنَنتُمْ ظَنَّ السَّوْءِ وَكُنتُمْ قَوْمًا بُورًا
বরং, তোমরা মনে করেছিলে যে, রাসূল (সঃ) ও মু’মিনগণ তাদের পরিবার-পরিজনের নিকট কখনোই ফিরে আসতে পারবে না এবং এ ধারণাটা তোমাদের অন্তরে খুব চমৎকার মনে হয়েছিল ; তোমরা মন্দ ধারণা করেছিলে, তোমরা তো ধ্বংসমুখী এক সম্প্রদায়।
১৩ وَمَن لَّمْ يُؤْمِن بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ فَإِنَّا أَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ سَعِيرًا
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর প্রতি ঈমান আনে না, আমি সেসব কাফিরের জন্যে প্রজ্বলিত অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি।
১৪ وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ يَغْفِرُ لِمَن يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَاءُ ۚ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অধিপত্ব ; তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। আর আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
১৫ سَيَقُولُ الْمُخَلَّفُونَ إِذَا انطَلَقْتُمْ إِلَىٰ مَغَانِمَ لِتَأْخُذُوهَا ذَرُونَا نَتَّبِعْكُمْ ۖ يُرِيدُونَ أَن يُبَدِّلُوا كَلَامَ اللَّهِ ۚ قُل لَّن تَتَّبِعُونَا كَذَٰلِكُمْ قَالَ اللَّهُ مِن قَبْلُ ۖ فَسَيَقُولُونَ بَلْ تَحْسُدُونَنَا ۚ بَلْ كَانُوا لَا يَفْقَهُونَ إِلَّا قَلِيلًا
তোমরা যখন যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য যেতে থাকবে তখন যাদেরকে পশ্চাতে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল, তারা বলবেঃ আমাদেরকে তোমাদের সাথে যেতে দাও। তারা আল্লাহর কথা পরিবর্তন করতে চায়। বলঃ তোমরা কখনোই আমাদের সাথে যেতে পারবে না। আল্লাহ পূর্বেই এরূপ ঘোষণা করেছেন। তারা বলবেঃ তোমরা তো আমাদের প্রতিবিদ্বেষ পোষণ করছো। বস্তুতঃ অতি সামান্যই বুঝে।
১৬ قُل لِّلْمُخَلَّفِينَ مِنَ الْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَىٰ قَوْمٍ أُولِي بَأْسٍ شَدِيدٍ تُقَاتِلُونَهُمْ أَوْ يُسْلِمُونَ ۖ فَإِن تُطِيعُوا يُؤْتِكُمُ اللَّهُ أَجْرًا حَسَنًا ۖ وَإِن تَتَوَلَّوْا كَمَا تَوَلَّيْتُم مِّن قَبْلُ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
যেসব আরব বেদুঈনকে পশ্চাতে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল তাদেরকে বলঃ তোমাদেরকে শীঘ্রই ডাকা হবে এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেঃ তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে অথবা তারা আত্মসমর্পণ করবে। তোমরা এই নির্দেশ পালন করলে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরষ্কার দান করবেন। আর তোমরা যদু পূর্বানুরূপ পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর ; তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন।
১৭ لَّيْسَ عَلَى الْأَعْمَىٰ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْمَرِيضِ حَرَجٌ ۗ وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ وَمَن يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَابًا أَلِيمًا
অন্ধ, পঙ্গু এবং রূগ্নের জন্য এবং রুগ্নের জন্যে কোন অপরাধ হবে না। আর যে কেউই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্য করবে আল্লাহ তাঁকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত ; কিন্তু যে ব্যক্তি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে তিনি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিবেন।
১৮ لَّقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا
আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা বৃক্ষতলে তোমার নিকট বায়’আত গ্রহণ করেছেন, তিনি তাদের অন্তরে যা ছিল তা অবগত হলেন তাই তাদেরকে তিনি দান করলেন প্রশান্তি এবং তাদেরকে বিনিময় দিলেন আসন্ন বিজয়,
১৯ وَمَغَانِمَ كَثِيرَةً يَأْخُذُونَهَا ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
এবং বিপুল পরিমাণ গণীমতের সম্পদ যা তারা হস্তগত করবে ; আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান।
২০ وَعَدَكُمُ اللَّهُ مَغَانِمَ كَثِيرَةً تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَـٰذِهِ وَكَفَّ أَيْدِيَ النَّاسِ عَنكُمْ وَلِتَكُونَ آيَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا
আল্লাহ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গণিমতের বিপুল সম্পদের যার অধিকারী হবে তোমরা। তিনি এটা তোমাদের জন্যে তড়িঘড়ি করেছিলেন এবং তিনি তোমাদের হতে মানুষের হস্তকে প্রতিহত করেছেন এবং এটা যেন হয় মু’মিনদের জন্যে এক নিদর্শন এবং (আল্লাহ) তোমাদেরকে পরিচালিত করেন সরল পথে।
২১ وَأُخْرَىٰ لَمْ تَقْدِرُوا عَلَيْهَا قَدْ أَحَاطَ اللَّهُ بِهَا ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرًا
আরও বহু (গণিমত) সম্পদ রয়েছে যা এখনও তোমাদের অধিকারে আসেনি, ওটা তো আল্লাহর নিকটে রক্ষিত আছে। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান।
২২ وَلَوْ قَاتَلَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوَلَّوُا الْأَدْبَارَ ثُمَّ لَا يَجِدُونَ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
কাফিররা তোমাদের মুকাবিলা করলে (পরিণামে তারা) অবশ্যই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করতো, তখন তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পেতো না।
২৩ سُنَّةَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلُ ۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَبْدِيلًا
এটা আল্লাহর বিধান, যা পূর্ব হতে চলে আসছে ; তুমি আল্লাহর এই বিধানে কোন পরিবর্তন পাবে না।
২৪ وَهُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُم بِبَطْنِ مَكَّةَ مِن بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ ۚ وَكَانَ اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرًا
তিনি সেই সত্ত্বা যিনি মক্কা উপত্যকায় তাদের হাত তোমাদের হতে এবং তোমাদের হাত তাদের হতে ফিরিয়ে রেখেছেন তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করবার পর। তোমরা যা করছিলে আল্লাহ তা দেখেছিলেন।
২৫ هُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْهَدْيَ مَعْكُوفًا أَن يَبْلُغَ مَحِلَّهُ ۚ وَلَوْلَا رِجَالٌ مُّؤْمِنُونَ وَنِسَاءٌ مُّؤْمِنَاتٌ لَّمْ تَعْلَمُوهُمْ أَن تَطَئُوهُمْ فَتُصِيبَكُم مِّنْهُم مَّعَرَّةٌ بِغَيْرِ عِلْمٍ ۖ لِّيُدْخِلَ اللَّهُ فِي رَحْمَتِهِ مَن يَشَاءُ ۚ لَوْ تَزَيَّلُوا لَعَذَّبْنَا الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
তারাই তো কুফরী করেছিল এবং বাধা দিয়েছিল তোমাদেরকে মসজিদুল হারাম হতে ও কুরবানীর জন্যে আবদ্ধ পশুগুলোকে যথাস্থানে পৌঁছতে। যদি (মক্কায়) না থাকতো এমন কতকগুলো মু’মিন নর ও নারী যাদেরকে তোমরা জানো না, তাদেরকে তোমরা জানো না, তাদেরকে তোমরা পদদলিত করতে অজ্ঞাতসারে ; ফলে তাদের কারণে তোমরা কষ্ট পেতে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে স্বীয় নেয়ামত দান করবেন। যদি তারা (উভয়ে) পৃথক হতো, আমি তাদের মধ্যে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিতাম।
২৬ إِذْ جَعَلَ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي قُلُوبِهِمُ الْحَمِيَّةَ حَمِيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ فَأَنزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَىٰ رَسُولِهِ وَعَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَىٰ وَكَانُوا أَحَقَّ بِهَا وَأَهْلَهَا ۚ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
যখন কাফিররা তাদের অন্তরে পোষণ করতো (গোত্রীয়) অহমিকা-জাহিল যুগের অহমিকা, তখন আল্লাহ তাঁর রাসূল (সঃ) ও মু’মিনদেরকে স্বীয় প্রশান্তি দান করলেন ; আর তাদেরকে তাকওয়ার কথা সুদৃঢ় করলেন, এবং এরাই ছিল এর অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ সমস্ত বিষয়ে পরিজ্ঞাত।
২৭ لَّقَدْ صَدَقَ اللَّهُ رَسُولَهُ الرُّؤْيَا بِالْحَقِّ ۖ لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِن شَاءَ اللَّهُ آمِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُءُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَ ۖ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَٰلِكَ فَتْحًا قَرِيبًا
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর রাসূল (সঃ)-এর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা অবশ্যই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে- কেউ কেউ মস্তক মুন্ডন করবে, কেউ কেউ চুল কাটবে ; তোমার কোন ভয় থাকবে না। আল্লাহ জানেন তোমরা যা জানো না। এটা ছাড়াও তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন এক আসন্ন বিজয়।
২৮ هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا
তিনিই তাঁর রাসূল (সঃ)-কে হিদায়েত ও সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, অপর সমস্ত দ্বীনের উপর তাকে জয়যুক্ত করবার জন্যে। সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
২৯ مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ ۚ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ ۖ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا ۖ سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ ۚ ذَٰلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ ۚ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَىٰ عَلَىٰ سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ ۗ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর রাসূল ; আর যারা এর সাথে আছে তারা কাফিরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের সহানুভূতিশীল ; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুই তাদেরকে রুকূ ও সিজদায় অবনত দেখবে। তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার চিহ্ন থাকবে, তাওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপই এবং ইঞ্জীলেও। তাদের দৃষ্টান্ত একটি শস্য ক্ষেত, যার চারা গাছগুলো অংকুরিত হয় পরে সেগুলো শক্ত ও পুষ্ট হয় পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীকে আনন্দিত করে। এভাবে (আল্লাহ মু’মিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা) কাফিরদের অন্তরজ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
error: Content is protected !!