০৮. সূরাঃ আনফাল

আয়াতঅবতীর্ণঃ মদিনা
আয়াত সংখ্যাঃ ৭৫
রুকূঃ ১০
০১

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْأَنفَالِ ۖ قُلِ الْأَنفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ ۖ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَصْلِحُوا ذَاتَ بَيْنِكُمْ ۖ وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

(হে নবী সঃ!) লোকেরা তোমাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তুমি ঘোষণা করে দাওঃ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর জন্যে, অতএব তোমরা এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের নিজেদের পারস্পারিক সম্পর্ক সঠিকরূপে গড়ে নাও, আর যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক তবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্য কর।

০২

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ

নিশ্চয় মুমিনরা এইরূপ হয় যে, যখন (তাদের সামনে) আলাহকে স্মরণ করা হয়, তখন তাদের অন্তরসমূহ ভীত হয়ে পড়ে, আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন সেই আয়াতসমূহ তাদের ঈমানকে আরও বৃদ্ধি করে দেয়, আর তারা নিজেদের প্রতিপালকের উপর নির্ভর করে।

০৩

الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ

যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি যা কিছু তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে।

০৪

أُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُمْ دَرَجَاتٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ

এরাই সত্যিকারের ঈমানদার, এদের জন্যেই রয়েছে তাদের প্রতিপালকের নিকট উচ্চ মর্যাদা, আরও রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।

০৫

كَمَا أَخْرَجَكَ رَبُّكَ مِن بَيْتِكَ بِالْحَقِّ وَإِنَّ فَرِيقًا مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ لَكَارِهُونَ

যেরূপে তোমার প্রতিপালক তোমাকে তোমার গৃহ হতে (বদরের দিকে) যথাযথভাবে বের করলেন, আর মুসলমানের একটি দল একে অপছন্দ (ভারী) মনে করেছিল।

০৬

يُجَادِلُونَكَ فِي الْحَقِّ بَعْدَ مَا تَبَيَّنَ كَأَنَّمَا يُسَاقُونَ إِلَى الْمَوْتِ وَهُمْ يَنظُرُونَ

সেই হক বা যথার্থ বিষয় প্রকাশ হওয়ার পরেও তারা তোমার সাথে এরূপ ঝগড়া করছিল যেন কেউ তাদেরকে মৃত্যুর দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আর তারা তা প্রত্যক্ষ করছে।

০৭

وَإِذْ يَعِدُكُمُ اللَّهُ إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ أَنَّهَا لَكُمْ وَتَوَدُّونَ أَنَّ غَيْرَ ذَاتِ الشَّوْكَةِ تَكُونُ لَكُمْ وَيُرِيدُ اللَّهُ أَن يُحِقَّ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَيَقْطَعَ دَابِرَ الْكَافِرِينَ

আর তোমরা সেই সময়টিকে স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাদেরকে সেই দু’টি দলের মধ্যে হতে একটি সম্বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলেন যে, ওটা তোমাদের করতলগত হবে, আর তোমরা এই অভিপ্রায়ে ছিলে যেন নিরস্ত দলটি তোমাদের আয়ত্তে এসে পড়ে, আর আল্লাহর ইচ্ছা ছিল এই যে, তিনি স্বীয় নির্দেশবলী দ্বারা সত্যকে সত্য রূপে প্রতিপন্ন করে দেন এবং সেই কাফিরদের মূলকে কর্তন করে দেন।

০৮

لِيُحِقَّ الْحَقَّ وَيُبْطِلَ الْبَاطِلَ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ

যেন সত্যকে সত্যরূপে এবং অসত্যকে অসত্যরূপে প্রমাণিত করে দেন, যদিও এটা অপরাধীরা অপছন্দ করে।

০৯

إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُم بِأَلْفٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُرْدِفِينَ

স্মরণ কর সেই সংকট মুহূর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট কাতর কন্ঠে সাহায্যের আবেদন করেছিলে, আর তিনি সেই আবেদন কবূল করেছিলেন, (আর তিনি বলেছিলেন) আমি তোমাদেরকে এক হাজার ফেরেস্তা দ্বারা সাহায্য করবো, যারা ধারাবাহিকভাবে আসবে।

১০

وَمَا جَعَلَهُ اللَّهُ إِلَّا بُشْرَىٰ وَلِتَطْمَئِنَّ بِهِ قُلُوبُكُمْ ۚ وَمَا النَّصْرُ إِلَّا مِنْ عِندِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

আল্লাহ এটা শুধু তোমাদের সুসংবাদ দেয়ার জন্যে এবং এর দ্বারা তোমাদের মনে প্রশান্তি আনয়নের জন্যে করেছেন, সাহায্য শুধু আল্লাহর তরফ থেকেই আসে, আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।

১১

إِذْ يُغَشِّيكُمُ النُّعَاسَ أَمَنَةً مِّنْهُ وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُم مِّنَ السَّمَاءِ مَاءً لِّيُطَهِّرَكُم بِهِ وَيُذْهِبَ عَنكُمْ رِجْزَ الشَّيْطَانِ وَلِيَرْبِطَ عَلَىٰ قُلُوبِكُمْ وَيُثَبِّتَ بِهِ الْأَقْدَامَ

(আর ঐ সময়ের কথা স্মরণ কর) যখন তিনি (আল্লাহ) তাঁর পক্ষ থেকে প্রশান্তির জন্যে তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেন এবং আকাশ থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করেন, এর দ্বারা তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্যে এবং তোমাদের হতে শয়তানের কুমন্ত্রণা দূরীভূত করবেন আর তোমাদের হৃদয়কে সুদৃঢ় করবেন এবং তোমাদের পা স্থির ও সুদৃঢ় করবেন।

১২

إِذْ يُوحِي رَبُّكَ إِلَى الْمَلَائِكَةِ أَنِّي مَعَكُمْ فَثَبِّتُوا الَّذِينَ آمَنُوا ۚ سَأُلْقِي فِي قُلُوبِ الَّذِينَ كَفَرُوا الرُّعْبَ فَاضْرِبُوا فَوْقَ الْأَعْنَاقِ وَاضْرِبُوا مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ

(আর ঐ সময়ের কথাও স্মরণ কর) যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেস্তাদের নিকট প্রত্যাদেশ করলেনঃ আমি তোমাদের সাথে আছি, সুতরাং তোমরা ঈমানদারদের সঙ্গে থেকে শক্তি বৃদ্ধি করে তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত ও অবিচল রাখো, আর যারা কাফির, আমি তাদের হৃদয়ে ভীতি সৃষ্টি করে দেবো, অতএব তোমরা তাদের ঘাড়ে আঘাত হানো, আর আঘাত হানো তাদের অঙ্গুলিসমূহের প্রতিটি জোড়ায় জোড়ায়।

১৩

ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ شَاقُّوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ وَمَن يُشَاقِقِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

এটা এই কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর বিরোধিতা করে, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর বিরোধীতা করে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর হস্ত।

১৪

ذَٰلِكُمْ فَذُوقُوهُ وَأَنَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابَ النَّارِ

এটাই তোমাদের শাস্তি, সুতরাং তোমরা এর স্বাদ গ্রহণ কর, (তোমাদের জানা উচিত যে,) কাফেরদের জন্যে রয়েছে অগ্নির শাস্তি।

১৫

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمُ الْأَدْبَارَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন যুদ্ধের ময়দানে কাফের সৈন্য বাহিনীর সম্মুখীন হবে, তখন তোমরা তাদের মুকাবিলা করা হতে কখনোই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে না।

১৬

وَمَن يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهُ إِلَّا مُتَحَرِّفًا لِّقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إِلَىٰ فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِّنَ اللَّهِ وَمَأْوَاهُ جَهَنَّمُ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ

আর সেদিন যুদ্ধ কৌশল বা স্বীয় বাহিনীর কেন্দ্রস্থলে স্থান করে নেয়া ব্যতীত কেউ তাদেরকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করলে অর্থাৎ পালিয়ে গেলে সে আল্লাহর নিপতিত হবে এবং তার আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম, আর জাহান্নাম কতই না নিকৃষ্ট স্থান!

১৭

فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ وَلَـٰكِنَّ اللَّهَ قَتَلَهُمْ ۚ وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَـٰكِنَّ اللَّهَ رَمَىٰ ۚ وَلِيُبْلِيَ الْمُؤْمِنِينَ مِنْهُ بَلَاءً حَسَنًا ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন, আর (হে নবী সঃ) যখন তুমি (ধূলোবালি) নিক্ষেপ করেছিলে তখন তা মূলতঃ তুমি তা নিক্ষেপ করনি; বরং আল্লাহই তা নিক্ষেপ করেছিলেন, এবং এটা করা হয়েছিল মু’মিনদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে তাদের কষ্টের উত্তম পুরস্কার দান করার জন্যে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও সব কিছু জানেন।

১৮

ذَٰلِكُمْ وَأَنَّ اللَّهَ مُوهِنُ كَيْدِ الْكَافِرِينَ

আর এমনিভাবেই আল্লাহ কাফিরদের চক্রান্ত দুর্বল ও নস্যাৎ করে থাকেন।

১৯

إِن تَسْتَفْتِحُوا فَقَدْ جَاءَكُمُ الْفَتْحُ ۖ وَإِن تَنتَهُوا فَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ ۖ وَإِن تَعُودُوا نَعُدْ وَلَن تُغْنِيَ عَنكُمْ فِئَتُكُمْ شَيْئًا وَلَوْ كَثُرَتْ وَأَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ

(হে কাফিরগণ!) তোমরা যদি সত্যের বিজয় চাও, বিজয় তো তোমাদের সামনেই এসেছে, তোমরা যদি এখনো (মুসলমানদের অনিষ্টকরণ হতে) বিরত থাকো, তবে তা তোমাদের পক্ষেই কল্যাণকর, আর যদি পুনরায় তোমরা এ হেন কাজ কর, তবে আমিও তোমাদেরকে পুনরায় শাস্তি দিবো, আর তোমাদের বিরাট বাহিনী তোমাদের কোনই উপকারে আসবে না, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মু’মিনদের সাথে রয়েছেন।

২০

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَوَلَّوْا عَنْهُ وَأَنتُمْ تَسْمَعُونَ

হে মু’মিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্য কর, তোমরা যখন তাঁর কথা শুনছো তখন তোমরা তাঁর আনুগত্য হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না।

২১

وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ قَالُوا سَمِعْنَا وَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ

তোমরা ঐ সব লোকের মত হয়ো না, যারা বলেঃ আমরা আপনার কথা শুনলাম, কার্যতঃ তারা কিছুই শোনে না।

২২

إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ عِندَ اللَّهِ الصُّمُّ الْبُكْمُ الَّذِينَ لَا يَعْقِلُونَ

আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে ঐ সব বোবা ও বধির লোক, যারা কিছুই বুঝে না (অর্থাৎ বিবেক-বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না)।

২৩

وَلَوْ عَلِمَ اللَّهُ فِيهِمْ خَيْرًا لَّأَسْمَعَهُمْ ۖ وَلَوْ أَسْمَعَهُمْ لَتَوَلَّوا وَّهُم مُّعْرِضُونَ

আল্লাহ যদি জানতেন যে, তাদের মধ্যে কল্যাণকর কিছু নিহিত আছে তবে অবশ্যই তিনি তাদেরকে শুনবার তাওফীক দিতেন, তিনি যদি তাদেরকে শুনাতেনও তবুও তারা উপেক্ষা করতঃ মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে চ্চলে যেতো।

২৪

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ ۖ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রাসূল (সঃ)-এর (আহ্বানে সাড়া দাও) যখন রাসূল তোমাদেরকে তোমাদের জীবন সঞ্চারক বস্তুর দিকে আহ্বান করেন, আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ মানুষ ও তার অন্তরের মধ্যস্থলে অন্তরায় হয়ে থাকেন, পরিশেষে তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।

২৫

وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَّا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنكُمْ خَاصَّةً ۖ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

তোমরা সেই ফিৎনাকে ভয় কর যা তোমাদের মধ্যকার যালিম ও পাপিষ্ঠদেরকেই বিশেষভাবে আক্রান্ত করবে না (বরং সবারই মধ্যে এটা সংক্রমিত হয়ে পড়বে এবং সবকেই বিপদগ্রস্থ করবে), তোমরা জেনে রেখো যে, আল্লাহ শাস্তি দানে খুব কঠোর।

২৬

وَاذْكُرُوا إِذْ أَنتُمْ قَلِيلٌ مُّسْتَضْعَفُونَ فِي الْأَرْضِ تَخَافُونَ أَن يَتَخَطَّفَكُمُ النَّاسُ فَآوَاكُمْ وَأَيَّدَكُم بِنَصْرِهِ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

(সেই মর্মান্তিক মুহূর্তটির কথা) তোমরা স্মরণ কর, যখন তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে অল্প ছিলে ফলে দুর্বলরূপে পরিগণিত হতে, আর তোমরা এই শঙ্কায় নিপতিত থাকতে যে, লোকেরা অকস্মাৎ তোমাদেরকে ধরে (ছিনিয়ে) নিয়ে যাবে, সুতরাং (এই অবস্থায়) আল্লাহই তোমাদেরকে (মদীনায়) আশ্রয় দেন এবং স্বীয় সাহায্য দ্বারা তোমাদেরকে শক্তিশালী করেন, আর পবিত্র বস্তু দ্বারা তোমাদের জীবিকা দান করেন, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

২৭

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَخُونُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ

হে মু’মিনগণ! তোমরা জেনে শুনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর সাথে খিয়ানত করবে না, আর তোমাদের পরস্পরের আমানত সমূহেরও (গচ্ছিত দ্রব্যের সম্পর্কেও) খিয়ানত করবে না।

২৮

وَاعْلَمُوا أَنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَأَنَّ اللَّهَ عِندَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ

আর তোমরা জেনে রেখো যে, তোমাদের ধন-সম্পত্তি ও সন্তান-সন্ততি প্রকৃতপক্ষে পরীক্ষার সামগ্রী মাত্র, আর আল্লাহর নিকট (প্রতিফলের জন্যে) মহা পুরস্কার রয়েছে।

২৯

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تَتَّقُوا اللَّهَ يَجْعَل لَّكُمْ فُرْقَانًا وَيُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ

হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর তবে যিনি তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার একটি মানদন্ড ও শক্তি দান করবেন, আর তোমাদের গোনাহখাতা মিটিয়ে দেবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন, আল্লাহ বড় অনুগ্রহশীল ও মঙ্গলময়।

৩০

وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَ ۚ وَيَمْكُرُونَ وَيَمْكُرُ اللَّهُ ۖ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ

আর (সেই সময়টিও স্মরণীয়) যখন কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যে, তোমাকে বন্দী করবে অথবা হত্যা করবে কিংবা নির্বাসিত করবে, তারাও ষড়যন্ত্র করতে থাকে এবং আল্লাহও ষড়যন্ত্র করতে থাকেন, আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম ষড়যন্ত্রকারী।

৩১

وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا قَالُوا قَدْ سَمِعْنَا لَوْ نَشَاءُ لَقُلْنَا مِثْلَ هَـٰذَا ۙ إِنْ هَـٰذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ

তাদেরকে যখন আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনানো হয় তখন তারা বলেঃ আমরা শুনেছি, ইচ্ছা করলে আমরাও এর অনুরূপ বলতে পারি, নিঃসন্দেহে এটা পূর্ববর্তীদের মিথ্যা রচনা (উপকথা) ছাড়া আর কিছু নয়।

৩২

وَإِذْ قَالُوا اللَّهُمَّ إِن كَانَ هَـٰذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِندِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِّنَ السَّمَاءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ

আর (সেই সময়টিও স্মরণকর) যখন তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! এটা (কুর’আন ও নবুয়াত) যদি আপনার পক্ষ হতে সত্য হয় তবে আমাদের উপর আকাশ থেকে প্রস্তর বর্ষণ করুন অথবা আমাদের কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি দিন।

৩৩

وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنتَ فِيهِمْ ۚ وَمَا كَانَ اللَّهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ

(হে নবী সঃ) তুমি তাদের মধ্যে থাকা অবস্থায় তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে এটা আল্লাহর অভিপ্রায় নয়, আর আল্লাহ এটাও চান না যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন।

৩৪

وَمَا لَهُمْ أَلَّا يُعَذِّبَهُمُ اللَّهُ وَهُمْ يَصُدُّونَ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَا كَانُوا أَوْلِيَاءَهُ ۚ إِنْ أَوْلِيَاؤُهُ إِلَّا الْمُتَّقُونَ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

কিন্তু এখন তাদের কি বলবার আছে যে, আল্লাহ তাদের শাস্তি দিবেন না, যখন তারা মসজিদুল হারামের পথ রোধ করছে, অথচ তারা মসজিদুল হারামের তত্ত্বাবধায়ক নয়, মুত্তাকী লোকেরাই হল এর তত্ত্বাবধায়ক; কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই এটা অবগত নয়।

৩৫

وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ عِندَ الْبَيْتِ إِلَّا مُكَاءً وَتَصْدِيَةً ۚ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ

কা’বা ঘরের কাছে তাদের নামায (উপাসনা) শিষ দেয়া এবং তালি বাজানো ছাড়া অন্য কিছু ছিল না, সুতরাং তোমরা কুফরী করার কারণে এখন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর।

৩৬

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ لِيَصُدُّوا عَن سَبِيلِ اللَّهِ ۚ فَسَيُنفِقُونَهَا ثُمَّ تَكُونُ عَلَيْهِمْ حَسْرَةً ثُمَّ يُغْلَبُونَ ۗ وَالَّذِينَ كَفَرُوا إِلَىٰ جَهَنَّمَ يُحْشَرُونَ

নিশ্চয়ই কাফির লোকেরা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তারা তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করতেই থাকবে, অতঃপর ওটাই শেষ পর্যন্ত তাদের জন্যে দুঃখ ও আফসোসের কারণ হবে এবং তারা পরাভূতও হবে, আর যারা কুফরী করে তাদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করা হবে।

৩৭

لِيَمِيزَ اللَّهُ الْخَبِيثَ مِنَ الطَّيِّبِ وَيَجْعَلَ الْخَبِيثَ بَعْضَهُ عَلَىٰ بَعْضٍ فَيَرْكُمَهُ جَمِيعًا فَيَجْعَلَهُ فِي جَهَنَّمَ ۚ أُولَـٰئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ

এটা এই কারণে যে, আল্লাহ ভাল হতে মন্দকে পৃথক করবেন আর মন্দদের এককে অপরের উপর রাখবেন, অতঃপর সকলকে একত্রিত করে জড়ো করবেন এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন, এইসব লোকই চরম ক্ষতিগ্রস্থ লোক।

৩৮

قُل لِّلَّذِينَ كَفَرُوا إِن يَنتَهُوا يُغْفَرْ لَهُم مَّا قَدْ سَلَفَ وَإِن يَعُودُوا فَقَدْ مَضَتْ سُنَّتُ الْأَوَّلِينَ

(হে নবী সঃ)! তুমি কাফিরদেরকে বলঃ তারা যদি কুফুরি থেকে বিরত থাকে (এবং আল্লাহর দ্বীনে ফিরে আসে) তবে পূর্বে যা হয়েছে তা আল্লাহ ক্ষমা করবেন, কিন্তু তারা যদি অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করে, তবে পূর্ববর্তী (কাফের) জাতিসমূহের সাথে যে আচরণ করা হয়েছিল তা তো অতীত ঘটনা। (অর্থাৎ শাস্তি অনিবার্য)

৩৯

وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ ۚ فَإِنِ انتَهَوْا فَإِنَّ اللَّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

তোমরা সদা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিৎনার অবসান হয় এবং দ্বীন সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্যেই হয়ে যায় (অর্থাৎ আল্লাহর তাওহীদ সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়), আর তারা যদি ফিৎনা ও বিপর্যয় সৃষ্টি হতে বিরত থাকে তবে তারা যা করছে তা আল্লাহই দেখছেন।

৪০

وَإِن تَوَلَّوْا فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَوْلَاكُمْ ۚ نِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ

আর যদি তোমাকে না-ই মানে ও দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে জেনে রেখো যে, আল্লাহই তোমাদের (মুসলমানদের) অভিভাবক ও বন্ধু, তিনি কতইনা উত্তম অভিভাবক ও কতইনা উত্তম সাহায্যকারী!

৪১

وَاعْلَمُوا أَنَّمَا غَنِمْتُم مِّن شَيْءٍ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ إِن كُنتُمْ آمَنتُم بِاللَّهِ وَمَا أَنزَلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا يَوْمَ الْفُرْقَانِ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

আর তোমরা জেনে রেখো যে, যুদ্ধে তোমরা যা কিছু গণীমতের মাল লাভ করেছো ওর এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ, তাঁর রাসূল, নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন এবং মুসাফিরের জন্যে, (এই নিয়ম তোমরা মেনে চলবে।) যদি তোমরা ঈমান এনে থাকো আল্লাহর প্রতি এবং তার প্রতি যা আমি অবতীর্ণ করেছি আমার বান্দার উপর সেই চূড়ান্ত ফায়সালার দিন, (বদরের যুদ্ধের দিন) যে দিন দু’দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল, আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান।

৪২

إِذْ أَنتُم بِالْعُدْوَةِ الدُّنْيَا وَهُم بِالْعُدْوَةِ الْقُصْوَىٰ وَالرَّكْبُ أَسْفَلَ مِنكُمْ ۚ وَلَوْ تَوَاعَدتُّمْ لَاخْتَلَفْتُمْ فِي الْمِيعَادِ ۙ وَلَـٰكِن لِّيَقْضِيَ اللَّهُ أَمْرًا كَانَ مَفْعُولًا لِّيَهْلِكَ مَنْ هَلَكَ عَن بَيِّنَةٍ وَيَحْيَىٰ مَنْ حَيَّ عَن بَيِّنَةٍ ۗ وَإِنَّ اللَّهَ لَسَمِيعٌ عَلِيمٌ

(আর স্মরণ কর সেই সময়টির কথা) যখন তোমরা (মদীনা) প্রান্তরের নিকট প্রান্তে ছিলে, আর তারা (কাফির বাহিনী) মদীনা প্রান্তরের দূরবর্তী স্থানে শিবির রচনা করেছিল, আর উষ্ট্রারোহী কাফেলা (আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে কুরাইশের মালসহ কাফেলা) তোমাদের অপেক্ষা নিম্নভূমিতে ছিল, যদি পূর্ব হতেই তোমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধ সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চাইতে তবে প্রতিশ্রুত সময়ের ব্যাপারে তোমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হতো; কিন্তু যা ঘটাবার ছিল তা আল্লাহ সম্পন্ন করবার জন্যে উভয় দলকে যুদ্ধক্ষেত্রে সমবেত করলেন, তাতে যে ধ্বংস হবে সে যেন সত্য সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ হওয়ার পর জীবিত থাকে, আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।

৪৩

إِذْ يُرِيكَهُمُ اللَّهُ فِي مَنَامِكَ قَلِيلًا ۖ وَلَوْ أَرَاكَهُمْ كَثِيرًا لَّفَشِلْتُمْ وَلَتَنَازَعْتُمْ فِي الْأَمْرِ وَلَـٰكِنَّ اللَّهَ سَلَّمَ ۗ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ

(আর স্মরণ কর সেই সময়ের কথা) যখন আল্লাহ তোমাকে স্বপ্নযোগে ওদের সংখ্যা অল্প দেখিয়েছিলেন, যদি তোমাকে তাদের সংখ্যা অধিক দেখাতেন তবে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলতে এবং যুদ্ধ সম্পর্কে তোমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হতো; কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন, অন্তরে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে তিনি সবিশেষ অবহিত।

৪৪

وَإِذْ يُرِيكُمُوهُمْ إِذِ الْتَقَيْتُمْ فِي أَعْيُنِكُمْ قَلِيلًا وَيُقَلِّلُكُمْ فِي أَعْيُنِهِمْ لِيَقْضِيَ اللَّهُ أَمْرًا كَانَ مَفْعُولًا ۗ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الْأُمُورُ

(আর স্মরণ কর) যখন তোমরা শত্রুর সম্মুখীন হয়েছিলে তখন তিনি (আল্লাহ) তোমাদের চোখে তাদের সংখ্যা কম দেখালেন আর তাদের চোখেও তোমাদের সংখ্যা কম দেখালেন যাতে যা ঘটার তা যেন তিনি ঘটিয়ে দেন। সকল প্রকার কার্য আল্লাহর পানেই প্রত্যাবর্তিত হয়।

৪৫

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা কোন বাহিনীর সাথে প্রত্যক্ষ মুকাবিলায় অবতীর্ণ হবে তখন দৃঢ় ও স্থির থাকবে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে, আশা করা যায় যে, তোমরাই সাফল্য লাভ করবে।

৪৬

وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ ۖ وَاصْبِرُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের তোমরা আনুগত্য করবে এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ করবে না, অন্যথায় তোমরা সাহস হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের মনের দৃঢ়তা ও শক্তি বিলুপ্ত হবে, আর তোমরা ধৈর্যসহকারে সব কাজ করবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।

৪৭

وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ خَرَجُوا مِن دِيَارِهِم بَطَرًا وَرِئَاءَ النَّاسِ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطٌ

তোমরা তাদের ন্যায় হয়ো না যারা নিজেদের গৃহ হতে সদর্পে এবং লোকদেরকে (নিজেদের শক্তি) প্রদর্শন করতঃ বের হয়েছিল আর মানুষকে আল্লাহর পথ হতে বাধা সৃষ্টি করছিলো, তারা যা করে আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।

৪৮

وَإِذْ زَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ أَعْمَالَهُمْ وَقَالَ لَا غَالِبَ لَكُمُ الْيَوْمَ مِنَ النَّاسِ وَإِنِّي جَارٌ لَّكُمْ ۖ فَلَمَّا تَرَاءَتِ الْفِئَتَانِ نَكَصَ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ وَقَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِّنكُمْ إِنِّي أَرَىٰ مَا لَا تَرَوْنَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ ۚ وَاللَّهُ شَدِيدُ الْعِقَابِ

(ঐ সময়ের কথা স্মরণ কর) যখন শয়তান তাদের কার্যাবলীকে তাদের দৃষ্টিতে খুব চাকচিক্যময় ও শোভনীয় করে দেখাচ্ছিল, তখন সে গর্ব করে বলেছিলঃ কোন মানুষই আজ তোমাদের উপর বিজয় লাভ করতে পারবে না, আমি সাহায্যার্থে তোমাদের নিকটই থাকবো; কিন্তু উভয় বাহিনীর মধ্যে যখন প্রত্যক্ষ যুদ্ধ শুরু হল তখন সে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে সরে পড়লো এবং বললঃ আমি তোমাদের থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত (তোমাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই,) আমি যা দেখছি তোমরা তা দেখ না, আমি আল্লাহকে ভয় করি, আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর।

৪৯

إِذْ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ غَرَّ هَـٰؤُلَاءِ دِينُهُمْ ۗ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

(ঐ মুহূর্তটির কথা স্মরণ কর) যখন মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা বলতে লাগলো এদের দ্বীন এদেরকে প্রতারিত করেছে (অর্থাৎ এরা ধর্মান্ধ হয়ে পড়েছে), যারা আল্লাহর প্রতি পূর্ণমাত্রায় নির্ভরশীল হয় (তাদের বেলায়) আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।

৫০

وَلَوْ تَرَىٰ إِذْ يَتَوَفَّى الَّذِينَ كَفَرُوا ۙ الْمَلَائِكَةُ يَضْرِبُونَ وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَارَهُمْ وَذُوقُوا عَذَابَ الْحَرِيقِ

(হে নবী সঃ)! তুমি যদি ঐ অবস্থা দেখতে যখন ফেরেস্তাগণ কাফেরদের রূহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডল ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত হানেন (আর বলেন) তোমরা প্রজ্বলিত জাহান্নামের শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর।

০৮. সূরাঃ আনফাল

আয়াতঅবতীর্ণঃ মদিনা
আয়াত সংখ্যাঃ ৭৫
রুকূঃ ১০
৫১

ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيكُمْ وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ

এই শাস্তি হল তোমাদের সেই কাজেরই পরিণাম ফল যা তোমাদের দু’হাত পূর্বাহ্ণেই প্রেরণ করেছিল, (নতুবা) আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর (কখনো) অত্যাচারী নন।

৫২

كَدَأْبِ آلِ فِرْعَوْنَ ۙ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَفَرُوا بِآيَاتِ اللَّهِ فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ بِذُنُوبِهِمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ شَدِيدُ الْعِقَابِ

এটা ফিরাউনের বংশ ও তাদের পূর্ববর্তী লোকদের অবস্থার ন্যায়, তারা আল্লাহর নিদর্শনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে অস্বীকার করলো, ফলে আল্লাহ তাদের পাপের কারণে তাদেরকে পাকড়াও করলেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহা শক্তিমান ও কঠিন শাস্তি দাতা।

৫৩

ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِّعْمَةً أَنْعَمَهَا عَلَىٰ قَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ ۙ وَأَنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

এই শাস্তির কারণ এই যে, আল্লাহ কোন জাতির উপর নিয়ামত দান করে সেই নিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না (উঠিয়ে নেন না), যতক্ষন পর্যন্ত সেই জাতি নিজেরাই নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।

৫৪

كَدَأْبِ آلِ فِرْعَوْنَ ۙ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَذَّبُوا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ فَأَهْلَكْنَاهُم بِذُنُوبِهِمْ وَأَغْرَقْنَا آلَ فِرْعَوْنَ ۚ وَكُلٌّ كَانُوا ظَالِمِينَ

তারা ফিরাউনের বংশধর ও তৎপূর্বের জাতিসমূহের ন্যায় তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনসমূহ মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। ফলে আমি তাদের পাপের কারণে তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি এবং ফিরাউনের বংশধরদেরকে (সমুদ্রে) ডুবিয়ে দিয়েছি, তারা প্রত্যেকেই ছিল সীমালঙ্ঘনকারী।

৫৫

إِنَّ شَرَّ الدَّوَابِّ عِندَ اللَّهِ الَّذِينَ كَفَرُوا فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ

নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট জীব তারাই যারা কুফরী করে, সুতরাং তারা ঈমান আনে না।

৫৬

الَّذِينَ عَاهَدتَّ مِنْهُمْ ثُمَّ يَنقُضُونَ عَهْدَهُمْ فِي كُلِّ مَرَّةٍ وَهُمْ لَا يَتَّقُونَ

ওদের মধ্যে যাদের সাথে তুমি চুক্তিবদ্ধ হয়েছো, অতঃপর তারা প্রতিবারই কৃত চুক্তি ভঙ্গ করছে তারা (আল্লাহকে কিছুমাত্র) ভয় করে না।

৫৭

فَإِمَّا تَثْقَفَنَّهُمْ فِي الْحَرْبِ فَشَرِّدْ بِهِم مَّنْ خَلْفَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ

অতএব, তুমি যদি তাদেরকে যুদ্ধের ময়দানে আয়ত্তে আনতে পার তবে তাদের দ্বারা তুমি তাদেরকেও তাড়িয়ে দাও, যারা তাদের পিছনে রয়েছে, যাতে তারা শিক্ষা পায়।

৫৮

وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن قَوْمٍ خِيَانَةً فَانبِذْ إِلَيْهِمْ عَلَىٰ سَوَاءٍ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْخَائِنِينَ

(হে নবী সঃ)! তুমি যদি কোন সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ভঙ্গের (খেয়ানতের) আশঙ্কা কর, তবে তোমার চুক্তিকেও প্রকাশ্যভাবে তাদের সামনে নিক্ষেপ করবে, (বাতিল করবে), নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাস ভঙ্গকারীদেরকে পছন্দ করেন না।

৫৯

وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا سَبَقُوا ۚ إِنَّهُمْ لَا يُعْجِزُونَ

যারা কাফির তারা (বদর প্রান্তরে প্রাণ বাঁচাতে পেরে) যেন মনে না করে যে, তারা (ধরা ছোঁয়ার বাইরে) চলে গেছে, নিঃসন্দেহে তারা (আল্লাহকে) অপারগ করতে পারবে না।

৬০

وَأَعِدُّوا لَهُم مَّا اسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍ وَمِن رِّبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَآخَرِينَ مِن دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ يَعْلَمُهُمْ ۚ وَمَا تُنفِقُوا مِن شَيْءٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لَا تُظْلَمُونَ

তোমরা কাফিরদের মুকাবিলা করার জন্যে যথাসাধ্য শক্তি ও সদা সজ্জিত অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে, যা দ্বারা আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করবে, এ ছাড়া অন্যান্যদেরকেও, যাদেরকে তোমরা হান না; কিন্তু আল্লাহ জানেন; আর তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় কর তার প্রতিদান তোমাদেরকে পুরোপুরি দেয়া হবে, তোমাদের প্রতি (কম দিয়ে) অত্যাচার করা হবে না।

৬১

وَإِن جَنَحُوا لِلسَّلْمِ فَاجْنَحْ لَهَا وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ ۚ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

যদি তারা (কাফিররা) সন্ধির দিকে ঝুঁকে পড়ে তবে তুমিও সন্ধি করতে আগ্রহী হও, আর আল্লাহর উপর ভরসা করো, নিঃসন্দেহে তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞাতা।

৬২

وَإِن يُرِيدُوا أَن يَخْدَعُوكَ فَإِنَّ حَسْبَكَ اللَّهُ ۚ هُوَ الَّذِي أَيَّدَكَ بِنَصْرِهِ وَبِالْمُؤْمِنِينَ

আর তারা যদি তোমাকে প্রতারিত করার ইচ্ছা করে তবে তোমার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট, তিনিই তোমাকে স্বীয় সাহায্য দ্বারা এবং মু’মিনগণ দ্বারা শক্তিশালী করেছেন।

৬৩

وَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ ۚ لَوْ أَنفَقْتَ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا مَّا أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَـٰكِنَّ اللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

আর তিনি মু’মিনদের অন্তরে প্রীতি ও ঐক্য স্থাপন করেছেন, তুমি যদি পৃথিবীর সমুদয় সম্পদও ব্যয় করতে তবুও তাদের অন্তরে প্রীতি, সদ্ভাব ও ঐক্য স্থাপন করতে পারতে না; কিন্তু আল্লাহই ওদের পরস্পরের মধ্যে প্রীতি ও সদ্ভাব স্থাপন করে দিয়েছেন, নিঃসন্দেহে তিনি মহা শক্তিমান ও মহাকৌশলী।

৬৪

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَسْبُكَ اللَّهُ وَمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ

হে নবী সঃ! তোমার জন্যে ও তোমার অনুসারী মু’মিনদের জন্যে (সর্বক্ষেত্রে) আল্লাহই যথেষ্ট।

৬৫

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ ۚ إِن يَكُن مِّنكُمْ عِشْرُونَ صَابِرُونَ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ۚ وَإِن يَكُن مِّنكُم مِّائَةٌ يَغْلِبُوا أَلْفًا مِّنَ الَّذِينَ كَفَرُوا بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُونَ

হে নবী সঃ! মু’মিনদেরকে জিহাদের জন্যে উদ্বুদ্ধ কর, তোমাদের মধ্যে যদি বিশজন ধৈর্যশীল মুজাহিদ থাকে তবে তারা দু’শ জন কাফিরের উপর জয়যুক্ত হবে, আর তোমাদের মধ্যে একশ’ জন থাকলে তারা এক হাজার কাফিরের উপর বিজয়ী হবে, কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যাদের বোধশক্তি নেই, কিছুই বোঝে না।

৬৬

الْآنَ خَفَّفَ اللَّهُ عَنكُمْ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمْ ضَعْفًا ۚ فَإِن يَكُن مِّنكُم مِّائَةٌ صَابِرَةٌ يَغْلِبُوا مِائَتَيْنِ ۚ وَإِن يَكُن مِّنكُمْ أَلْفٌ يَغْلِبُوا أَلْفَيْنِ بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ

আল্লাহ এখন তোমাদের দায়িত্বভার লাঘব করে দিলেন, তোমাদের মধ্যে যে (দৈহিক) দুর্বলতা রয়েছে সে সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন, সুতরাং তোমাদের মধ্যে একশ’জন ধৈর্যশীল লোক থাকলে তারা দু’শ জন কাফিরের উপর জয়যুক্ত হবে, আর এক হাজার জন থাকলে তারা আল্লাহর হুকুমে দু’হাজার জন কাফিরের উপর বিজয় লাভ করবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।

৬৭

مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَن يَكُونَ لَهُ أَسْرَىٰ حَتَّىٰ يُثْخِنَ فِي الْأَرْضِ ۚ تُرِيدُونَ عَرَضَ الدُّنْيَا وَاللَّهُ يُرِيدُ الْآخِرَةَ ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

কোন নবীর পক্ষে ততক্ষণ পর্যন্ত বন্দী লোক রাখা শোভা পায় না, যতক্ষন পর্যন্ত ভূ-পৃষ্ঠ (দেশ) হতে শত্রু বাহিনী নির্মূল না হয়, তোমরা দুনিয়ার সম্পদ কামনা করছো, আর আল্লাহ চান পরকালের কল্যাণ, আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

৬৮

لَّوْلَا كِتَابٌ مِّنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ

আল্লাহর লিপি পূর্বেই লিখিত না হলে তোমরা যা কিছু গ্রহণ করেছো তজ্জন্যে তোমাদের উপর মহাশাস্তি আপতিত হতো।

৬৯

فَكُلُوا مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ

সুতরাং যুদ্ধে তোমরা যা কিছু গণীমতরূপে লাভ করেছো তা হালাল ও পবিত্ররূপে ভোগ কর, আর আল্লাহকে ভয় কর, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।

৭০

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّمَن فِي أَيْدِيكُم مِّنَ الْأَسْرَىٰ إِن يَعْلَمِ اللَّهُ فِي قُلُوبِكُمْ خَيْرًا يُؤْتِكُمْ خَيْرًا مِّمَّا أُخِذَ مِنكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ

হে নবী সঃ! তোমাদের হাতে যেসব বন্দী রয়েছে তাদেরকে বল, আল্লাহ যদি তোমাদের অন্তরে কল্যাণকর কিছু রয়েছে তা অবগত হন তবে তোমাদের হতে (মুক্তিপণরূপে) যা কিছু নেয়া হয়েছে তা অপেক্ষা উত্তম কিছু দান করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

৭১

وَإِن يُرِيدُوا خِيَانَتَكَ فَقَدْ خَانُوا اللَّهَ مِن قَبْلُ فَأَمْكَنَ مِنْهُمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

আর তারা যদি তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা রাখে, তবে এর পূর্বে আল্লাহর সাথেও তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সুতরাং (এর শাস্তি স্বরূপ) তিনি তাদের উপর তোমাকে শক্তিশালী করেছেন, আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।

৭২

إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوا وَّنَصَرُوا أُولَـٰئِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يُهَاجِرُوا مَا لَكُم مِّن وَلَايَتِهِم مِّن شَيْءٍ حَتَّىٰ يُهَاجِرُوا ۚ وَإِنِ اسْتَنصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ إِلَّا عَلَىٰ قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَاقٌ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, দ্বীনের জন্যে হিজরত করেছে, নিজেদের জানমাল দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, এবং যারা (মুহাজির মু’মিনদের) আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে, তারা পরস্পরের বন্ধু, আর যারা ঈমান এনেছে; কিন্তু হিজরত করেনি, তারা হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের নেই, আর তারা যদি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের নিকট সাহায্যপ্রার্থী হয় তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য; কিন্তু তোমাদের ও যে জাতির মধ্যে চুক্তি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নয়, তোমরা যা করছো আল্লাহ তা খুব ভালরূপেই দর্শন করছেন।

৭৩

وَالَّذِينَ كَفَرُوا بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ إِلَّا تَفْعَلُوهُ تَكُن فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ

আর যারা কুফরী করছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, তোমরা যদি (উপরোক্ত) বিধান কার্যকর না কর তবে ভূ-পৃষ্ঠে ফিৎনা ও মহাবিপর্যয় হবে।

৭৪

وَالَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوا وَّنَصَرُوا أُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ

যারা ঈমান এনেছে, (দ্বীনের জন্যে) হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, আর যারা (মু’মিনদেরকে আশ্রয় দিয়েছে এবং যাবতীয় সাহায্য-সহানুভূতি করেছে, তারাই হল প্রকৃত মুমিন, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।

৭৫

وَالَّذِينَ آمَنُوا مِن بَعْدُ وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا مَعَكُمْ فَأُولَـٰئِكَ مِنكُمْ ۚ وَأُولُو الْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَىٰ بِبَعْضٍ فِي كِتَابِ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

আর যারা পরে ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে এবং তোমাদের সাথে একত্র হয়ে জিহাদ করেছে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত, আল্লাহর বিধানে আত্মীয়গণ পরস্পরে একে অন্যের অপেক্ষা বেশি হকদার, নিঃসন্দেহে আল্লাহ প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে ভালরূপে অবহিত।

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x