সত্য সাঁইবাবা
সত্য সাঁইবাবা ভারতের সবচেয়ে প্রচারিত অলৌকিক ক্ষমতাবান (?) ব্যক্তি। আর সব অবতারদের মতো সাঁইবাবাও ভক্তদের মধ্যে রয়েছে সমাজের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরাই অবতারদের পক্ষে অতি বিশিষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করেন। সাধারণ মানুষ ভাবে এত বড়-বড় নামি নাদী লোকেরা যখন অমুকের শিষ্য, তখন অমুক সাধকের নিশ্চয়ই অনেক ক্ষমতা।
সাঁইবাবার অলৌকিক ঘড়ি-রহস্য
সাঁইবাবার এমনি এক বিশিষ্ট ভক্ত ডঃ এস. ভগবন্থম। ইতি ভারত সরকারের প্রাক্তন বিজ্ঞান উপদেষ্টা। ভগবন্থম জানালেন, তিনি অলৌকিককে বিশ্বাস করতেন না, কিন্তু সাঁইবাবার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর তাঁর আগেকার ধারণাই পাল্টে গেছে। নিজের চোখে সাঁইবাবার যে-সব অলৌকিক কান্ডকারখানা দেখেছেন, তাতে অলৌকিককে বিশ্বাস না করে উপায় ছিল না। ভারতে এসে তিনি নিছক কৌতূহল মেটাতে সাঁইবাবার আশ্রমে তাঁকে দর্শন করতে আসেন। ভক্তদের মধ্যে ঐ জাপানি ভদ্রলোকটিকে দেখতে পেয়ে সত্য সাঁইবাবা শূন্য থেকে একটি ছোট পার্সেল তৈরি করে তাঁকে দেন। পার্সেলটি খুলে ভদ্রলোক হতবাক হয়ে যান। ভেতরে ছিল জাপানে রেখে আসা ঘড়ির মডেলটি। ঘড়ির সঙ্গে বাঁধা রেশমের ফিতে, সঙ্গে মডেলটির নতুন নাম লেখা লেবেলটিও রয়েছে। জাপানি ভদ্রলোকের সাঁইবাবার ঐশ্বরিক ক্ষমতা সম্পর্কে সন্দেহ গেল মিলিয়ে। এই ঘটনার পর থেকে তিনি সাঁইবাবার একজন একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে ওঠেন। জাপানে ফিরে তিনি আলমারি খুলে দেখেন ঘড়িটি নেই। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব যা বললেন তা আরও বিস্ময়কর। সচিব বললেন, ঝাঁকড়া চুলের দেবকান্তি একটি লোক একদিন হেঁটে অফিসে ঢুকলেন, তারপর আলমারি খুলে ঘড়িটি নিয়ে চলে গেলেন।
অলৌকিকে অবিশ্বাসী ডঃ কোভুর ঘটনাটির সত্যতা যাচাই করার জন্য ডঃ ভগবন্থমকে চিঠি লিখে জাপানি ভক্তটির নাম ও ঠিকানা জানতে চান। একাধিকবার চিঠি লিখেও ডঃ কোভুর কোন উত্তর পাওয়া পাননি। শেষ পর্যন্ত ডঃ কোভুর শ্রীলঙ্কার জাপানি দূতাবাস থেকে সিকো ঘড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার ঠিকানা সংগ্রহ করে ঐ কোম্পানির প্রেসিডেন্টকে এই বিষয়ে আলোকপাত করতে অনুরোধ করে ৩০ অক্টোবর ১৯৭৩-এ একটি চিঠি লেখেন। সিকো ঘড়ির প্রস্তুতকারক সংস্থার ঠিকানা সংগ্রহ করে ঐ কোম্পানির প্রেসিডেন্ট শোজি হাট্টোরি এর উত্তরে যা জানান তা তুলে দিলাম।
তাঁর কথায়- একবার জাপানের ‘সিকো’ ঘড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার এক কর্তা ব্যক্তি ভারতে আসেন। আসার সময় তিনি অফিসের আলমারিতে রেখে এসেছিলেন একটি বিশেষ সিকো ঘড়ি।
ডঃ এ.টি. কোভুর সিকো
পামানকাডা লেন কে হাট্টোরি অ্যান্ড কোং লিঃ
কলম্বো-৬, শ্রীলঙ্কা ৫, কোয়াবাসি ২ কোমে,
চুওকু, টোকিও-১০৪
৮ নভেম্বর, ১৯৭৩
প্রিয় ডঃ কোভুর,
আপনার ৩০ অক্টোবরের চিঠিটার জন্য ধন্যবাদ। অলৌকিক ক্ষমতার দাবি বিষয়ে আপনার গবেষণার আগ্রহের আমি প্রশংসা করি। আপনি চিঠিতে মিস্টার সাঁইবাবার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে আমি বেশি কিছু জানাতে পারছি না। আমার বা আমাদের কোনো পদস্ত কর্মীর সঙ্গে ঐ ভদ্রলোকের পরিচয় ঘটেনি। আমিনিশ্চিত, যে ঘটনার কথা আপনি বলেছেন, তার কোনোও ভিত্তি নেই। তাই ঐ ঘটনাকে ভিত্তি করে আপনি যেসব প্রশ্ন রেখেছেন, তার উত্তরে ‘না’ বলা ছাড়া আমার আর কোনও উপায় নেই।
আপনার একান্ত
কে, হাট্টোরি অ্যান্ড কোং লিঃ
স্বাক্ষর শোজি হাট্টোরি
প্রেসিডেন্ট
চিঠির উত্তর পড়ে বুঝতে অসুবিধা হয় না, সিকোর বড়-মেঝ কোনো কর্তার সঙ্গে সাঁইবাবার এই ধরণের কোনো মুলাকাত হয়নি।
উত্তরটি পাওয়ার পর ডঃ কোভুর আবার ডঃ ভগবন্থমকে চিঠি লিখে শোজি হাট্টোরির কাছ থেকে পাওয়া উত্তরটির কথা জানান। ডঃ কোভুর আরও জানতে চান ডঃ ভগবন্থম যে জাপানি ভক্তের কথা বলেছেন, তিনি কি অন্য কোনও ব্যক্তি? তাঁর নাম, ঠিকানা ও সিকো’তে কি পদে কাজ করেন জানান। এবারও ডঃ ভগবন্থম আশ্চর্যজনকভাবে নীরব থাকেন। ডঃ ভগবন্থমের নীরবতা এবং ডঃ কোভুরের সত্যকে জানার প্রচেষ্টা এটাই প্রমাণ করে যে, সিকো ঘড়ির অলৌকিক ঘটনা নেহাতই মিথ্যে প্রচার।
১. অধ্যায়ঃ এক
১.৩ যুক্তিবাদী, মুক্তচিন্তার সেইসব মানুষ
২. অধ্যায়ঃ দুই
২.১ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞান
২.২ শাসক শ্রেণির স্বার্থে কুসংস্কার পুষ্ট হচ্ছে
৩. অধ্যায়ঃ তিন
৩.২ বিখ্যাত মহারাজের শূন্যে ভাসা
৩.৩ ব্ল্যাক আর্ট ছাড়া সাধিকার শূন্যে ভাসা
৩.৪ লাঠিতে হাতকে বিশ্রাম দিয়ে শূন্যে ভাসা
৩.৫ বেদে-বেদেনীদের শূন্যে ভাসা
৩.৭ সাঁই বাবাঃ সাঁইবাবার অলৌকিক ঘড়ি-রহস্য
৩.১১ শূন্য থেকে হার আনলেন ও হার মানলেন সাঁই
৩.১২ সাঁইবাবার চ্যালেঞ্জঃ পেটে হবে মোহর!
৩.১৬ যে সাধকরা একই সময়ে একাধিক স্থানে হাজির ছিলেন
৩.১৭ অতিন্দ্রীয় ক্ষমতার তান্ত্রিক ও সন্ন্যাসীরা
৩.২০ অবতারদের নিজদেহে রোগ গ্রহণ
৩.২৬ বকনা গরুর অলৌকিক দুধ ও মেহবেব আলি
৩.২৭ বাবা তারক ভোলার মন্দির ও শ্রীশ্রীবাসুদেব
৩.২৮ যোগে বৃষ্টি আনলেন শিববাল যোগী
৩.২৯ চন্দননগরে সাধুর মৃতকে প্রাণ-দান
৩.৩০ ভগবান শ্রীসদানন্দ দেবঠাকুর
৪. অধ্যায়ঃ চার
৫. অধ্যায় পাঁচ
৬. অধ্যায়ঃ ছয়
৬.১ হিস্টিরিয়া, গণ-হিস্টিরিয়া, আত্ম-সম্মোহন, নির্দেশ
৭. অধ্যায়ঃ সাত
৭.২ সম্মোহনে আত্মা এলো ‘সানন্দা’য়
৭.৩ সম্মোহন নিয়ে নানা ভুল ধারণা
৮. অধ্যায়ঃ আট
৮.১ Illusion (ভ্রান্ত অনুভূতি)
৮.২ Hallucination (অলীক বিশ্বাস)
৮.৩ Delusion মোহ, অন্ধ ভ্রান্ত ধারণা
৯. অধ্যায়ঃ নয়
৯.২ ধর্মের নামে লোক ঠকাবার উপদেশ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে
৯.৩ সোমনাথ মন্দিরের অলৌকিক রহস্য
৯.৪ প্রাচীন মিশরের ধর্মস্থান রহস্য
৯.৫ কলকাতায় জীবন্ত শীতলাদেবী ও মা দুর্গা
৯.৭ খেজুরতলার মাটি সারায় যত রোগ
৯.১৩ বার্মুডা ট্র্যাঙ্গেল রহস্য
১০. অধ্যায়ঃ দশ
১১. অধ্যায়ঃ এগারো
১১.২ ডুবোজাহাজে টেলিপ্যাথির পরীক্ষা
১১.৩ টেলিপ্যাথির সাহায্যে নোটের নম্বর বলা
১১.৪ টেলিফোনে টেলিপ্যাথিঃ আয়োজক লন্ডনের ‘সানডে মিরর’
১১.৭ টেলিফোন টেলিপ্যাথির আর এক আকর্ষণীয় ঘটনা
১১.৮ এমিল উদ্যা ও রবেয়ার উদ্যা’র টেলিপ্যাথি
১১.৯ অতীন্দ্রিয় ইউরি গেলারকে নিয়ে ‘নেচার’ (Nature)-এর রিপোর্ট
১১.১০ আই আই টি-তে টেলিপ্যাথি দেখালেন দীপক রাও
১১.১১ তবু প্রমাণ করা যায় তেলিপ্যাথি আছে
১২. অধ্যায়ঃ বার
১২.২ নায়াগ্রা জলপ্রপাত ভেঙ্গে পড়ার ভবিষ্যদ্বাণী
১৩. অধ্যায়ঃ তের
১৩.২ সাধু-সন্ন্যাসীদের অতীন্দ্রিয় দৃষ্টি
১৩.৩ ইউরি গেলারের অতীন্দ্রিয় দৃষ্টি
১৪. অধ্যায়ঃ চোদ্দ
১৪.২ মানসিক শক্তিতে রেলগাড়ি থামানো
১৪.৪ স্টীমার বন্ধ করেছিলেন পি.সি. সরকার
১৪.৬ লিফট ও কেবল-কার দাঁড় করিয়েছিলেন ইউরি গেলার
১৪.৭ মানসিক শক্তি দিয়ে গেলারের চামচ বাঁকানো
১৪.৯ ‘নিউ সায়েন্টিস্ট’ –এর পরীক্ষায় ইউরি এলেন না
১৫. অধ্যায়ঃ পনের
১৬. অধ্যায়ঃ ষোল
১৬.১ অধ্যায়ঃ ভাববাদ বনাম যুক্তিবাদ বা বস্তুবাদ
১৬.২ মুক্ত চিন্তার বিরোধী ‘মনু সংহিতা’
১৬.৩ আধ্যাত্মবাদ ও যুক্তিবাদের চোখের আত্মা
১৬.৪ আত্মা, পরলোক ও জন্মান্তর বিষয়ে স্বামী অভেদানন্দ
১৬.৫ স্বামী বিবেকানন্দের চোখে আত্মা
১৬.৬ আত্মা নিয়ে আরও কিছু বিশিষ্ট ভাববাদীর মত
১৬.৭ আত্মা প্রসঙ্গে চার্বাক বা লোকায়ত দর্শন
১৭. অধ্যায়ঃ সতের
১৭.১ জাতিস্মররা হয় মানসিক রোগী, নয় প্রতারক
১৮. অধ্যায়ঃ আঠারো
১৮.১ জাতিস্মর তদন্ত-১: দোলনচাঁপা
১৮.২ জাতিস্মর তদন্ত ২: জ্ঞানতিলক
১৮.৩ জাতিস্মর তদন্ত ৩: ফ্রান্সিস পুনর্জন্ম
১৮.৪ জাতিস্মর তদন্ত ৪: সুনীল দত্ত সাক্সেনা
১৮.৬ জাতিস্মর তদন্ত ৬: কলকাতায় জাতিস্মর
১৯. অধ্যায়ঃ ঊনিশ
১৯.২ উনিশ শতকের দুই সেরা মিডিয়া ও দুই জাদুকর
১৯.৩ প্ল্যানচেটের ওপর আঘাত হেনেছিল যে বই
১৯.৪ স্বামী অভেদানন্দ ও প্রেত-বৈঠক
১৯.৫ বন্ধনমুক্তির খেলায় ভারতীয় জাদুকর
১৯.৬ রবীন্দ্রনাথের প্ল্যানচেট-চর্চা
২০. অধ্যায়ঃ বিশ
“অলৌকিক নয়,লৌকিক- ১ম খন্ড ” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ