বাংলায় বিজ্ঞানের মৌলিক লেখা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত ভূরি ভূরি নেই। যা আছে তারও অধিকাংশকে সাহিত্যের বিচারে মানোত্তীর্ণ বলা যায় না। এই বইয়ের লেখক ড. মীজান রহমান আর ড. অভিজিৎ রায়, দুজনেই সুলেখক হিসেবে পাঠকনন্দিত। দুজনেরই একাধিক পাঠকপ্রিয় বই প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাভাষী পাঠকদের সৌভাগ্য, বাংলা ভাষায় দক্ষ দুজন সুলেখক এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বই লেখার কাজ নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। ফলে, আমরা শুধু একটা অমূল্য বিজ্ঞানের বই-ই পাইনি, পেয়েছি প্রাঞ্জল, সুখপাঠ্য, মজাদার একটা বই, একটা অত্যন্ত উঁচুমানের সাহিত্যগুণ-সমৃদ্ধ রচনা। এই বই নিঃসন্দেহে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান-সাহিত্যের সম্ভারকে সমৃদ্ধ করবে। এই বইটা বাংলার সাহিত্যানুরাগীদের জন্য একটা দুর্লভ উপহার, তার ওপরে বিষয়ের আধুনিকতা আর অভিনবত্ব তো আছেই। বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে এই বইটা শুধু একটা সংযোজনা নয়, অচিরেই একটা যুগান্তকারী মাইলফলক হিসেবে পরিচিত হবে— আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
লেখকদ্বয় শুধু লেখক হিসেবেই পরিচিত নন, দুজনেই প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানী—একজন গণিতজ্ঞ, আরেকজন প্রকৌশলী। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা তাঁরা মুক্তচিন্তক, মুক্তমনের অধিকারী। বিজ্ঞানমনস্কতা তাঁদের মননে, চিন্তায়, চেতনায়। নইলে যত বড় বিজ্ঞানীই হোন না কেন, এই বই তাঁদের পক্ষে লেখা সম্ভব হতো না। আর এজন্যই এই বইটা বিজ্ঞানের অন্য অনেক বই থেকে স্বতন্ত্র।
ভূমিকায় তাঁরা লিখেছেন, “মুক্তবুদ্ধি, বৈজ্ঞানিক চেতনা,যুক্তিবাদ ও মানবতাবাদকে আমরা এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে মূলমন্ত্র মনে করি”। তাঁরা এই মন্ত্র জপেছেন বইয়ের পাতায় পাতায়, আর পাঠকদেরও উদ্বুদ্ধ করেছেন মুক্তবুদ্ধির চেতনায় সমৃদ্ধ হতে। এই বইয়ের সবচেয়ে বড় অবদান চেতনার সেই সমৃদ্ধি।
অধ্যাপক ইরতিশাদ আহমদ
ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,ইউএসএ;
‘আমার চোখে একাত্তর’ গ্রন্থের লেখক।
এক কথায় অনবদ্য। বাংলা ভাষায় লেখা যতগুলো বিজ্ঞানের বই আমি পড়েছি তাদের মধ্যে অন্যতম সেরা বই প্রফেসর মীজান রহমান ও ড. অভিজিৎ রায়ের ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’। গাণিতিক শূন্য থেকে শুরু করে লেখকদ্বয় কী অবলীলায় ব্যাখ্যা করেছেন মহাশূন্যের পদার্থবিজ্ঞান। এ যেন বিজ্ঞানের এক মহাকাব্য, বিশাল তার ব্যাপ্তি, অথচ একটা এপিসোড থেকে অন্য এপিসোডের মাঝখানে নেই কোনো তাত্ত্বিক শূন্যতা। ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’ পড়ে মুগ্ধতায় যেমন পূর্ণ হয়েছি, তেমনি সমৃদ্ধ হয়েছি গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের যুগান্তকারী সব তথ্যে ও তত্ত্বে। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান রচনায় ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’ একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।
ড. প্রদীপ দেব
পদার্থবিজ্ঞানী, অস্ট্রেলিয়া;
‘আইনস্টাইনের কাল’ গ্রন্থের লেখক।
অধ্যাপক মীজান রহমান ও ড.অভিজিৎ রায় লিখিত ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব” বইটি গণিতের শূন্যের মূর্ছনার ঘোড়ায় চড়িয়ে পাঠককে নিয়ে যাবে শূন্য থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে বর্তমান কালের সেরা বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিকতম ধারণার এক বৈজ্ঞানিক সংগীতানুষ্ঠানে। ‘সৃষ্টির সূচনা’ ধর্ম ও বিজ্ঞান দুটি প্রতিষ্ঠানেরই আগ্রহের বিষয়, যদিও দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া উত্তর সম্পূর্ণ আলাদা। আধুনিক বিজ্ঞান থেকে পাওয়া ফলাফল থেকে আমরা আজ বুঝতে পারছি মহাপরাক্রমশালী কোনো সত্ত্বার হাতে মহাবিশ্ব ‘সৃষ্টি’ হয়নি। বরং মহাবিশ্বের ‘উদ্ভব’ ঘটেছে শূন্য থেকে, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে। সভ্যতার এ পর্যায়ে এসে বিজ্ঞান তার সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মহাবিশ্বের উদ্ভব এবং আমাদের অস্তিত্বের রহস্য উন্মোচনে। বাংলাভাষী বিজ্ঞান ও দর্শনে কৌতূহলী পাঠকের অবশ্যপাঠ্য তাই এই বইটি।
রায়হান আবীর
গবেষক, বায়োমেডিক্যাল ফিজিক্সঅ্যান্ড টেকনোলজি, ঢা.বি:
‘মানুষিকতা’ গ্রন্থের লেখক।
“শূন্য থেকে মহাবিশ্ব” বইটি একদিকে সময় ও স্থান এবং অন্যদিকে সময়াতীত ও স্থানাতীত চিন্তার মাঝে এক রোমাঞ্চকর অভিযান। বিজ্ঞান যে গতকালের প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বকে স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে নেয় না, বরং নতুন দিগন্তপ্রসারী চিন্তার প্রবর্তনে ক্রমাগতই আমাদের মনোজগতের বিবর্তন ঘটায়, সেই ধারণাই মীজান রহমান ও অভিজিৎ রায় এক অনবদ্য ভাষায় প্রকাশ করেছেন। আপাতদৃষ্টিতে এক অবোধ্য মহাবিশ্বকে বোধগম্য করতে বিজ্ঞানের অক্লান্ত প্রচেষ্টার যে ইতিহাস লেখকদ্বয় তুলে ধরেছেন তা যেমন পাঠককে বিস্মিত ও অভিভূত করবে, তেমনই সেই প্রচেষ্টার পরবর্তী ধাপটি কী সেটি জানার জন্য কৌতূহলী করে তুলবে”।
ড. দীপেন ভট্টাচাৰ্য অধ্যাপক,
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
রিভারসাইড কলেজ, ক্যালিফোর্নিয়া
গামা-রশ্মি জ্যোতির্বিদ,
রিভারসাইড ক্যাম্পাস (ইউসিআর)
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া;
‘দিতার ঘড়ি’ গ্রন্থের লেখক।
♦ দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ শূণ্যের ভীতি
♦ তৃতীয় অধ্যায়ঃ পশ্চিমে নয়, পুবের দিকে
♦ চতুর্থ অধ্যায়ঃ শূন্য এল ইউরোপে
♦ পঞ্চম অধ্যায়ঃ প্রকৃতির শূন্যবিদ্বেষ ?
♦ ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ বিজ্ঞানে শূন্যের আভাস
♦ সপ্তম অধ্যায়ঃ আইনস্টাইনের বিশ্ব
♦ অষ্টম অধ্যায়ঃ শূন্যতার শক্তি
♦ নবম অধ্যায়ঃ মহাবিস্ফোরণের কথা
♦ দশম অধ্যায়ঃ বিগ ব্যাং-এর আগে কী ছিল?
♦ একাদশ অধ্যায়ঃ কোয়ান্টাম শূন্যতা ও মহাবিশ্বের উৎপত্তি
♦ দ্বাদশ অধ্যায়ঃ হিগস কণার খোঁজে
♦ ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ মহাবিশ্বের অন্তিম পরিণতি
♦ চতুর্দশ অধ্যায়ঃ অনন্ত মহাবিশ্বের সন্ধান শূন্য ও অসীমের মেলবন্ধন
♦ পঞ্চদশ অধ্যায়ঃ অন্তিম প্রশ্নের মুখোমুখি: কেন কোনো কিছু না থাকার বদলে কিছু আছে?
“শূন্য থেকে মহাবিশ্ব” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ