ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ঘরে ফিরিয়ে দেওয়া হল
১. সাত মাস পলেষ্টীয়রা তাদের দেশে পবিত্র সিন্দুকটিকে রেখে দিয়েছিল।
২. তারা যাজক আর যাদুকরদের ডাকল। তাদের জিজ্ঞাস করল, “প্রভুর এই সিন্দুক নিয়ে আমাদের কি করা উচিৎ? কি করে আমরা সেটা যথাস্থানে ফিরিয়ে দিতে পারি?”
৩. যাজক আর যাদুকরেরা বলল, “যদি তোমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ফিরিয়ে দাও তাহলে কখনো তা খালি পাঠাবে না। অবশ্যই তোমরা নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবে। তাহলেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাদের পাপমুক্ত করবেন। তোমরা সুস্থ হবে। যা বললাম তাই করো, তাহলে ঈশ্বর তোমাদের আর শাস্তি দেবেন না।”
৪. পলেষ্টীয়রা জিজ্ঞেস করল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মার্জনা পেতে হলে কি ধরণের উপহার দিতে হবে?” যাজক আর যাদুকরেরা বলল, “পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসক রয়েছে। এরা প্রত্যেকে এক একটি শহরের নেতা। তোমাদের সমস্ত লোকের ও নেতাদের সমস্যা একই রকম। তাই এক কাজ করো, পাঁচটা সোনার ইঁদুর আর পাঁচটা টিউমার তৈরি করো।
৫. টিউমারগুলির এবং ইঁদুরদের সোনার মূর্ত্তি তৈরী কর যা তোমাদের দেশকে ধ্বংস করছে এবং তাদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করো। তাহলে হয়তো তিনি তোমাদের আর তোমাদের দেবতাদের আর সেইসঙ্গে তোমাদের দেশের ওপর সমস্ত শাস্তি রদ করতে পারেন।
৬. ফরৌণ আর মিশরীয়দের মতো কখনও হৃদয় অনমনীয় কোর না। ঈশ্বর মিশরীয়দের শাস্তি দিয়েছিলেন, আর সেই জন্যেই মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের মিশর ছেড়ে চলে যেতে দিয়েছিল।
৭. তোমরা অবশ্যই একটা নতুন টানাগাড়ি তৈরী করো আর সদ্য-বিয়োনো দুটে৷ গাভী জোগাড় করো। গাভী দুটে৷ যেন মাঠে কখনও কাজ না করে থাকে। ওদের গাড়ীর সঙ্গে জুড়ে দাও। তারপর বাছুরগুলোকে গোয়ালে পুরে দাও। কিছুতেই যেন তারা মায়েদের পিছু না নেয়।
৮. গাড়ীর মধ্যে এবার প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি রাখো। আর সিন্দুকের পাশে থলিতে সোনার ছাঁচগুলো রাখবে। সোনার ছাঁচগুলো হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের উপহার, যাতে তিনি তোমাদের ক্ষমা করেন। তারপর গাড়ীটা ছেড়ে দাও।
৯. গাড়ীটার দিকে লক্ষ্য রাখবে। যদি সেটা ইস্রায়েলের বৈৎ-শেমশের দিকে যায় তাহলেই বুঝবে প্রভু আমাদের এই ভয়ানক রোগ দিয়েছেন। আর যদি সোজাসুজি বৈৎ-শেমশের দিকে না যায় তবে জানবে যে ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের শাস্তি দেন নি। তাহলে আমরা জানব আমাদের এমন রোগ এমনিই হয়েছে।”
১০. পলেষ্টীয়রা যাজক ও যাদুকরদের কথামত কাজ করল। সদ্যবিয়োনো গাভী তারা পেয়ে গেল। গাভী দুটো গাড়ীর সঙ্গে জুড়ে দিল আর বাছুরদের গোয়ালে ঢুকিয়ে দিল।
১১. তারপর পলেষ্টীয়রা ভেতরে রেখে দিল প্রভুর পবিত্র সিন্দুক। সোনার টিউমার আর ইঁদুরের ছাঁচগুলোর থলিটাও রেখে দিল।
১২. গাভীদুটো সোজা বৈৎ-শেমশের দিকে গেল, সমস্ত রাস্তা তারা হাম্বা হাম্বা শব্দ করে চলল। ডাইনে কি বাঁয়ে একবারও ঘুরল না। পলেষ্টীয় শাসকেরা বৈৎ-শেমশের সীমানা পর্যন্ত গাভী দুটোর পেছনে পেছনে গেল।
১৩. বৈৎ-শেমশের লোকেরা উপত্যকার ক্ষেত্র থেকে গম তুলছিল। তারা পবিত্র সিন্দুকটা দেখে খুব খুশি হয়ে সিন্দুকটা পাবার জন্য ছুটে গেল।
১৪-১৫. মাঠটা ছিল বৈৎ-শেমশের বাসিন্দা যিহোশূয়ের। সেই মাঠের ওপর একটা বড় পাথরের কাছে এসে গাড়ীটা থামল। বৈৎ- শেমশের লোকেরা গরুর গাড়ী থেকে গাড়ীটা আলাদা করে গাভী দুটোকে মেরে ফেলল এবং সেগুলো তারা প্রভুর কাছে নিবেদন করল। লেবীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আর সোনার ছাঁচের থলেটা নামিয়ে আনল। তারা প্রভুর সিন্দুক আর থলেটা পাথরের ওপর রাখল। সেদিন বৈৎ-শেমশের লোকের প্রভুকে হোমবলি নিবেদন করল।
১৬.পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসক বৈৎ-শেমশে এই সমস্ত ক্রিয়াকাণ্ড দেখে সেদিনই ইক্রোণে ফিরে গেল।
১৭. এভাবেই পলেষ্টীয়রা প্রভুর কাছে যে পাপ করেছিল তা স্থালনের জন্য টিউমারের সোনার ছাঁচগুলো উপহার হিসেবে পাঠিয়ে দিয়েছিল। তারা প্রত্যেক পলেষ্টীয় শহরে একটি করে টিউমারের সোনার ছাঁচ পাঠিয়ে দিয়েছিল। পলেষ্টীয়দের এই শহরগুলি হচ্ছেঃ অদোদ, ঘসা, অস্কিলোন, গাৎ এবং ইক্রোণ।
১৮. পলেষ্টীয়রা সোনার ইঁদুরের ছাঁচ পাঠিয়েছিল। পলেষ্টীয় শাসকদের যতগুলো শহর ছিল, সোনার তৈরি ইঁদুরও ছিল ততগুলো। শহরগুলো ছিল পাঁচিলে ঘেরা। আবার প্রত্যেক শহর ছিল গ্রাম দিয়ে ঘেরা। বৈৎ-শেমশের লোকেরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক পাথর খণ্ডের ওপর রেখে দিল। বৈৎ-শেমশের যিহোশূয়ের মাঠে আজও সেই পাথর দেখা যাবে।
১৯. কিন্তু বৈৎ- শেমশের লোকেরা যখন প্রভুর পবিত্র সিন্দুক দেখতে পেল তখন সেখানে কোন যাজক ছিল না। তাই ঈশ্বর বৈৎ-শেমশের ৭০ জন লোককে হত্যা করলেন। প্রভুর এই কঠোর শাস্তির জন্য বৈৎ-শেমশের লোকেরা খুব কাঁদল।
২০. লোকেরা বলল, “এই পবিত্র সিন্দুকটির দেখাশুনো করবার যাজক কোথায়? এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আমরা এটাকে কোথায় পাঠাব?”
২১. কিরিয়ৎ-যিয়ারীমে একজন যাজক ছিল। বৈৎ- শেমশের লোকেরা সেখানে দূত পাঠাল। দূতেরা বলল, “পলেষ্টীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক ফিরিয়ে দিয়েছে। এবার তোমরা নেমে এসো। সিন্দুকটি তোমাদের শহরে নিয়ে যাও।”