শৌলের প্রথম ভুল

১. সেইসময় শৌল সবে এক বছর রাজা হয়েছেন। ইস্রায়েলের ওপর দু-বছর রাজত্ব করবার পর,

২. তিনি ইস্রায়েল থেকে ৩,০০০ পুরুষকে মনোনীত করলেন। বৈথেলের পাহাড়ে মিক্‌মস দেশে শৌলের সঙ্গে রইল ২,০০০ জন। ১,০০০ জন রইল যোনাথনের কাছে। তারা ছিল বিন্যামীনের গিবিয়া শহরে। সৈন্যদলের বাকি লোকেদের তিনি বাড়ী পাঠিয়ে দিলেন।

৩. যোনাথন গেবা শিবিরে পলেষ্টীয়দের প্রধান সেনাপতিকে হত্যা করল। এখবর শুনে পলেষ্টীয়রা বলল, “ইব্রীয়েরা বিদ্রোহ করেছে।” শৌল বলল, “কি হয়েছে ইব্রীয়েরা শুনুক।” শৌল তার লোকেদের বলল সমস্ত ইস্রায়েলে তারা শিঙা বাজিয়ে দিক। 

৪. ইস্রায়েলীয়রা খবরটা শুনল। তারা বলল, “শৌল পলেষ্টীয় নেতাকে হত্যা করেছে। এবার পলেষ্টীয়রা সত্যিই ইস্রায়েলীয়দের ঘৃণা করবে !” ইস্রায়েলীয়দের বলা হল, তারা যেন গিল্‌গলে শৌলের সঙ্গে যোগ দেয়।

৫. পলেষ্টীয়রা জড়ো হয়ে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল। পলেষ্টীয়দের ছিল ৩,০০০ রথ আর ৬,০০০ অশ্বারোহী সৈন্য। সমুদ্রের বালির মত পলেষ্টীয়দের অসংখ্য সৈন্য ছিল। এদের শিবির পড়ল মিক্‌মসে। মিক্‌স হচ্ছে বৈৎ-আবনের পূর্বদিকে।

৬. ইস্রায়েলীয়রা দেখল তারা বিপদের মুখে। ফাঁদে পড়েছে বলে মনে হল তাদের। তারা পালিয়ে গিয়ে গুহায়, পাহাড়ের ফাকে ফোকরে লুকিয়ে রইল। লুকিয়ে রইল কুয়োয়, মাটির ভেতরে যে কোন গর্তের মধ্যে।

৭. কিছু ইব্রীয় যৰ্দ্দন নদী পেরিয়ে গাদ আর গিলিয়দের দিকেও চলে গেল। শৌল তখনও গিলগলে। তার সৈন্যরা সবাই ভয়ে কাঁপছে।

৮. শমূয়েল বলল যে সে গিলগলে শৌলের সঙ্গে দেখা করবে। শৌল তার জন্যে সাতদিন অপেক্ষা করে রইল। কিন্তু শমূয়েল তবুও গিলে এল না। সৈন্যরা শৌলকে ছেড়ে চলে যেতে লাগল।

৯. তখন শৌল বলল, “আমার কাছে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্যগুলি এনে দাও।” তারপর শৌল সেই হোমবলি উৎসর্গ করল।

১০. শৌলের হোমবলি উৎসর্গ করা শেষ করতেই শমূয়েল এল। শৌল তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।

১১. শমূয়েল বলল “এ কি করেছ?” শৌল বললেন, “দেখলাম সৈন্যরা আমায় ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তুমিও সময় মতো আসো নি। ওদিকে পলেষ্টীয়রা মিক্‌মসে জড়ো হয়েছে।

১২. তখন আমি মনে মনে বললাম, ‘পলেষ্টীয়রা এখানে আসবে। ওরা গিলগলে আমাকে আক্রমণ করবে। এখনও আমি প্রভুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করিনি। তাই অবশেষে আমি নিজেই জোর করে হোমবলি উৎসর্গ করেছি।”*

১৩. শমূয়েল বলল, “খুব বোকামি করেছ ! তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের কথা শোননি। তাঁর আদেশ শুনলে তিনি তোমাদের পরিবারকে চিরকাল ইস্রায়েলকে শাসন করতে দিতেন।

১৪. কিন্তু এখন আর তোমার রাজত্ব স্থির থাকবেনা। প্রভু এমনই একজনকে খুঁজছিলেন যে তাঁর কথা শুনবে। তিনি সেই লোক পেয়ে গেছেন। তিনি তাঁর প্রজাদের উপরে নতুন নেতা হিসেবে তাকেই মনোনীত করেছেন। তুমি প্রভুর কথার বাধ্য হওনি বলেই তিনি নতুন নেতা নির্বাচন করেছেন।”

১৫. এই বলে শয়েল উঠে দাঁড়াল এবং গিল থেকে চলে গেল ।

মিকমশে যুদ্ধ

বাকি সৈন্যদের নিয়ে শৌল গিল ছেড়ে বিন্যামীনের গিবিয়ায় চলে গেলেন। শৌল মাথা গুনে দেখলেন তাঁর সঙ্গে রয়েছে প্রায় ৬০০ জন।

১৬. শৌল, তাঁর পুত্র যোনাথন এবং সৈন্যরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গেল। পলেষ্টীয়রা মিক্‌মসে তাঁবু গেড়েছিল।

১৭. সেখানে যত ইস্রায়েলীয় ছিল তাদের পলেষ্টীয়রা শায়েস্তা করতে চাইল। তাদের সেরা সৈন্যরা আক্রমণের জন্য তৈরি হল। তারা তিনটি দলে ভাগ হয়ে গেল। একটা দল গেল উত্তরে, শূয়ালের কাছে অফ্রার রাস্তায়।

১৮. দ্বিতীয় দল গেল দক্ষিণপূর্ব দিকে, বৈৎ-হোরোণের রাস্তায়। তৃতীয় দল পূর্বদিকে, সীমান্তের পথে। সেই পথে মরুভূমির দিকে সিবোয়িম উপত্যকা চোখে পড়ে।

১৯. ইস্রায়েলের কেউই লোহার জিনিসপত্র তৈরি করতে পারত না। ইস্রায়েলে কোন কামার ছিল না। পলেষ্টীয়রা ওদের এসব বানাতে শেখায় নি। কারণ তাদের ভয় ছিল, ইস্রায়েলীয়রা তাহলে লোহার তরবারি আর বর্ণ। তৈরি করে ফেলবে।

২০. পলেষ্টীয়রাই শুধু লোহার জিনিসপত্র ধার দিতে পারত। সেই জন্য যদি ইস্রায়েলীয়দের লাঙল, নিড়ানি, কুড়ুল, কাস্তে শান দিতে হত, তাহলে তাদের পলেষ্টীয়দের কাছেই যেতে হত।

২১. একটা লাঙল আর নিড়ানির জন্যে পলেষ্টীয়রা মজুরি নিত ১/৩ আউন্স রূপো, গাঁইতি, কুড়ুল, আর ষাঁড় খোঁচানো শাবল ধার করার জন্য নিত ১/৬ আউন্স রূপো।

২২. তাই যুদ্ধের দিন শৌলের কোন ইস্রায়েলীয় সৈন্যই লোহার তরবারি বা বর্শা নিয়ে যায় নি। শুধুমাত্র শৌল ও তাঁর পুত্র যোনাথনের কাছেই লোহার অস্ত্র ছিল।

২৩. একদল পলেষ্টীয় সৈন্য মিক্‌মসের গিরিপথ পাহারা দিচ্ছিল।

error: Content is protected !!