ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক জেরুশালেমে নিয়ে যাওয়া হল

১. দায়ূদ তাঁর মনোনীত সৈন্যদের আবার ইস্রায়েলে জড় করলেন। তাদের সংখ্যা ছিল ৩০,০০০।

২. তারপর দায়ূদ এবং তাঁর সৈন্যরা যিহুদার বালাতে গেলেন। এরপর তারা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুককে যিহুদার বালা থেকে জেরুশালেমে নিয়ে এলেন। লোকেরা প্রভুর উপাসনার জন্য পবিত্র সিন্দুকের কাছে যেত। পবিত্র সিন্দুকটি প্রভুর সিংহাসনস্বরূপ। এর মাথায় করূবদূতদের মূৰ্ত্তিগুলি আছে। প্রভু এই দূতদের মাঝখানে রাজার মত বসেন।

৩. দায়ূদের লোকেরা পবিত্র সিন্দুকটিকে পাহাড়ের উপরিস্থিত অবীনাদবের বাড়ী থেকে বের করে নিয়ে এল। ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকটিকে তারা একটা নতুন শকটে রাখল। অবীনাদবের দুই পুত্র উষ এবং অহিয়ো সেই শকট চালিয়েছিল।

৪. এইভাবে তারা পবিত্র সিন্দুক পাহাড়ের ওপরে অবীনাদবের বাড়ী থেকে বের করে নিয়ে এসেছিল। উষ পবিত্র সিন্দুকের সঙ্গে সেই শকটে ছিল এবং অহিয়ে৷ পবিত্র সিন্দুকের সামনে সামনে হাঁটছিল।

৫. দায়ূদ এবং সব ইস্রায়েলীয়, প্রভুর সামনে নাচছিল এবং নানা বাদ্যযন্ত্ৰ বাজাচ্ছিল। এদের মধ্যে বীণা, ঢাকঢোল, খঞ্জনী, ঝাঁঝ করতাল এবং দেবদারু কাঠের বাদ্যযন্ত্রাদি ছিল।

৬. দায়ূদের লোকেরা যখন নাখোনের শস্য মাড়াইয়ের উঠানের কাছে এল, তখন গরুগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ল এবং ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক শকট থেকে পড়ে যাবার উপক্রম হল। উষ পবিত্র সিন্দুকটি ধরে ফেলল।

৭. কিন্তু প্রভু উষের প্রতি ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাকে হত্যা করলেন। ঊষ যখন পবিত্র সিন্দুক ছুঁয়েছিলো তখন সে পবিত্র সিন্দুকের প্রতি যথোচিত সম্মান দেখায় নি। ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকের পাশে উষ মারা গেল।

৮. প্রভু উষকে মেরে ফেলেছিলেন বলে দায়ূদ ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। দায়ূদ সেই জায়গার নাম রাখলেন “পেরস-উষ।” সেই জায়গাকে আজও পেরস-উষ বলা হয়।

৯. দায়ূদ সেইদিন প্রভুকে ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন। দায়ূদ বললেন, “এখন আমি কি করে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক এখানে নিয়ে আসব?” 

১০. দায়ূদ পবিত্র সিন্দুকটিকে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন না। দায়ূদ পবিত্র সিন্দুকটিকে গাত থেকে ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে রাখলেন। দায়ূদ পবিত্র সিন্দুককে গাতীয় ওবেদ-ইদোমের বাড়ীতে নিয়ে এলেন।

১১. ওবেদ-ইদোমের বাড়ীতে প্রভুর পবিত্ৰ সিন্দুক তিন মাস ছিল। প্রভু ওবেদ ইদোম এবং তার পরিবারের সকলকে আশীর্বাদ করলেন।

১২. পরে লোকেরা দায়ূদকে বলল, “প্রভু ওবেদ-ইদোমের পরিবার এবং তার সব কিছুকেই আশীর্বাদধন্য করেছেন। কারণ পবিত্র সিন্দুকটি তার বাড়ীতে ছিল।” তখন দায়ূদ সেখানে গিয়ে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে এলেন। সেই দিন দায়ূদ প্রচণ্ড আনন্দিত ও উত্তেজিত ছিলেন।

১৩. যারা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তারা ছ-পা এগিয়ে গিয়ে থেমে গেল, তখন দায়ূদ একটি ষাঁড় ও স্বাস্থ্যবান বাছুরকে বলি দিলেন।

১৪. দায়ূদ প্রভুর সামনে তাঁর সর্বশক্তি দিয়ে নাচছিলেন। তিনি একটি রেশমের এফোদ পরেছিলেন।

১৫. দায়ূদ এবং সব ইস্রায়েলীয় সেদিন আনন্দে উত্তেজিত ছিলেন। তারা চীৎকার করতে করতে এবং শিঙা বাজাতে বাজাতে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক শহরে এনেছিল।

১৬. শৌলের কন্যা মীখল জানালা দিয়ে তা দেখছিলেন। যখন প্রভুর পবিত্র সিন্দুক শহরে আনা হচ্ছিল তখন দায়ূদ প্রভুর সামনে লাফাচ্ছিলেন ও নাচছিলেন। তা দেখে মীখল দায়ূদের প্রতি বিরক্ত হলেন। তিনি ভাবলেন দায়ূদ বোকার মত আচরণ করছেন।

১৭. পবিত্র সিন্দুকের জন্য দায়ূদ একটা তাঁবু ফেললেন। ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুককে তাঁবুর মধ্যে রাখল। তারপর দায়ূদ প্রভুর সামনে হোমবলি এবং মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন করলেন।

১৮. হোমবলি এবং মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন শেষ করে দায়ূদ সকলকে সর্বশক্তিমান প্রভুর নামে আশীর্বাদ করলেন।

১৯. তারপর তিনি ইস্রায়েলের প্রত্যেক মহিলা এবং পুরুষকে একটা গোটা রুটি, কিমিসের পিঠে এবং খেজুর পিঠে বিতরণ করলেন। তারপর সকলে বাড়ী ফিরে গেল।

মীখল দায়ূদকে তিরস্কার করলেন

২০. এরপর দায়ূদ বাড়ীর সকলকে আশীর্বাদ করতে গেলেন। শৌলের কন্যা মীখল তাঁর সামনে বেরিয়ে এলেন। মীখল বললেন, “ইস্রায়েলের রাজা আজ নিজের প্রতি যথোচিত সম্মান দেখান নি। আপনি আপনার দাসীদের সামনেই নিজের পোষাক খুলে ফেলেছেন। আপনি সেই বোকাদের মত আচরণ করলেন যারা নির্লজ্জভাবে নিজের পোষাক খুলে ফেলে।”

২১. তখন দায়ূদ মীখলকে বললেন, “প্রভু স্বয়ং আমাকে মনোনীত করেছেন, তোমার পিতাকে বা তাঁর পরিবারের কোন ব্যক্তিকে নয়। প্রভু ইস্রায়েলের লোকেদের জন্যে আমাকে নেতারূপে মনোনীত করেছেন। তাই আমি তাঁর সামনে নাচ করব এবং উৎসব পালন করব।

২২. আমি এমন কাজও করব যা আরও বিড়ম্বনাদায়ক ! হতে পারে তুমি আমায় সম্মান করবে না। কিন্তু যে মেয়েদের কথা তুমি বলছ, তারা আমার সম্পর্কে গর্বিত।”

২৩. শৌলের কন্যা মীখলের কোন সন্তান ছিল না। তিনি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেছেন।

error: Content is protected !!