দায়ূদের শেষ বাক্য
১. এইগুলি হল যিশয়ের পুত্র দায়ূদের শেষ বাক্যঃ এই বার্তা এসেছে সেই লোকটি থেকে যাকে ঈশ্বর মহান করেছেন, যিনি যাকোবের ঈশ্বরের মনোনীত রাজা, ইস্রায়েলের সুমধুর গায়ক। এইগুলি তাঁর বাণী।
২. প্রভুর আত্মা আমার মধ্য দিয়ে কথা বলেছেন। আমার মুখ দিয়ে তাঁর বাক্য উচ্চারিত হয়েছে।
৩. ইস্রায়েলের ঈশ্বর কথা বলেছেন। ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমায় বলেছেন, “সেই ব্যক্তি যিনি সৎভাবে শাসন করেন।
৪. সেই ব্যক্তি যে ঈশ্বরে শ্রদ্ধা রেখে শাসন করে। সেই ব্যক্তি ঊষাকালের প্রভাত কিরণের মত, পরিষ্কার আকাশের মত, বৃষ্টির পর সূর্যকিরণের মত, সেই বৃষ্টির মত যার ছোঁয়ায় মাটির ওপর নতুন ঘাস জন্ম নেয়।”
৫. ঈশ্বর আমার পরিবারকে শক্তিশালী এবং সুরক্ষিত করেছেন। আমার সঙ্গে তিনি চিরদিনের জন্য একটি চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিকে ঈশ্বর সবদিক থেকে সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত করেছেন। তাই, নিশ্চিতভাবে তিনি আমায় সকল জয় ও সাফল্য দেবেন। আমি যা চাই তার সবই তিনি আমায় দেবেন।
৬. কিন্তু মন্দ লোকেরা কাঁটার মত। লোকে কাঁটা রাখে না ; তারা কাঁটাগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
৭. লোকে যখন সেই কাঁটাগুলি স্পর্শ করে, তারা কাঠের বর্শার মত অথবা লোহার ডাণ্ডার মত নিজেদের আহত করে। হ্যাঁ, সেইসব লোক কাঁটার মত। তাদের আগুনে নিক্ষেপ কর৷ হবে, তারা সম্পূর্ণরূপে ভষ্মীভূত হবে !
তিনজন বীর যোদ্ধা
৮. এইগুলি হল দায়ূদের বীর সৈনিকের নাম: তখমোনীয় যোশেব-বশেবৎ। যোশেব-বশেবৎ তিনজন শৌর্য্যপূর্ণ সেনার অধিনায়ক ছিল। তাকে ইস্ত্রীয় আদীনো বলে ডাকা হত। যোশেব-বশেবৎ একসঙ্গে ৮০০ লোককে হত্যা করেছিল।
৯. পরবর্তী বীর হল, অহোহীয়ের অধিবাসী, দোদয়ের পুত্র ইলিয়াসর। ইলিয়াসর সেই তিনজন যোদ্ধাদের একজন যারা পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় দায়ূদের সঙ্গে ছিল। তারা যুদ্ধের জন্য জমায়েত হয়েছিল কিন্তু ইস্রায়েলীয় সেনারা দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
১০. ইলিয়াসর প্রচণ্ড অবসন্ন হওয়ার আগে পর্যন্ত পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সে দৃঢ়ভাবে তরবারি ধরে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিল। সেই দিন প্রভু ইস্রায়েলকে একটা বড় জয় এনে দিলেন। ইলিয়াসর যুদ্ধে জয়ী হলে লোকেরা সকলে ফিরে এল। কিন্তু তারা শুধুমাত্র মৃত শত্রুদের থেকে জিনিসপত্র নিতে এসেছিল।
১১. পরবর্তী বীর শম্ম। সে হরারীয় আগির সন্তান। পলেষ্টীয়রা একসঙ্গে যুদ্ধ করতে এল। একটি মুসুর ক্ষেতে তাদের লড়াই হল। পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে লোকেরা ছুটে পালিয়ে গেল।
১২. কিন্তু শম্ম যুদ্ধক্ষেত্রের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করল। সে পলেষ্টীয়দের পরাজিত করল। সেই দিন, প্রভু ইস্রায়েলকে এক মহান বিজয় এনে দিলেন।
১৩. একদিন, দায়ূদ অদুল্লম গুহাতে অবস্থান করছিলেন এবং পলেষ্টীয়রা রফায়ীম উপত্যকায় ছিল। দায়ূদের খুব ঘনিষ্ঠ ত্রিশ জন বীর যোদ্ধার* মধ্যে থেকে এই তিনজন মাটিতে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ে সরীসৃপের মত বুকে ভর দিয়ে দায়ূদের গুহায় পৌঁছে গিয়েছিল এবং দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।
১৪. অন্য আর এক সময়, দায়ূদ এক দুর্গের মধ্যে ছিলেন এবং সেই সময় একদল পলেষ্টীয় সেনা বৈৎলেহমে ছিল।
১৫. একটু জলের জন্য দায়ূদ তৃষ্ণার্ত ছিলেন। তিনি বললেন, “আমার ইচ্ছা, বৈৎলেহমের নগরদ্বারের কুয়ো থেকে কেউ আমায় খানিকটা জল এনে দিক !” আসলে দায়ূদ প্রকৃতই জল চান নি, তিনি এমনি সে কথা বলেছিলেন।
১৬. কিন্তু সেই তিনজন শৌর্য্যপূর্ণ যোদ্ধা পলেষ্টীয় সেনাদের মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ করল এবং গিয়ে বৈৎলেহম শহরের ফটকের কাছে কুয়ো থেকে জল এনেছিল। তারা সেই জল দায়ূদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু দায়ূদ সেই জল পান করতে অস্বীকার করলেন। তিনি সেই জল মাটিতে ঢেলে দিয়ে তা প্রভুর কাছে উৎসর্গ করলেন।
১৭. দায়ূদ বললেন, “হে প্রভু, এই জল আমি পান করতে পারি না। যদি আমি এই জল পান করি, তাহলে তা তাদের রক্ত পান করার মতই অন্যায় কাজ হবে, যারা আমার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই জল এনেছে।” এই কারণে দায়ূদ সেই জল পান করতে অস্বীকার করেন। এই তিন জন বীর এই রকম আরও অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে।
অন্যান্য বীর সৈন্যদের কথা
১৮. যোয়াবের ভাই এবং সরূয়ার পুত্রের নাম অবীশয় ৩০০ শত্রুর বিরুদ্ধে তার বর্শাকে ব্যবহার করেছে এবং তাদের হত্যা করেছে। সেও এই তিনজন বীর যোদ্ধার মতই বিখ্যাত হয়েছিল।
১৯. অবীশয় ঐ তিনজন বীরের মতই বিখ্যাত হয়েছিল। যদিও সে ঐ তিন জন বীরের একজন ও নয় তবু সে ঐ তিন বীরের নেতা হয়ে গিয়েছিল।
২০. এছাড়া যিহোয়াদার পুত্র বনায় ছিল আর এক বীর। সে এক পরাক্রমশালী পিতার সন্তান। সে কসেল থেকে এসেছিল। বনায় অনেকগুলি দুঃসাহসের কাজ করেছিল। মোয়াবীয় অরীয়েলের দুই পুত্রকে সে হত্যা করেছিল। একদিন যখন তুষারপাত হচ্ছে, বনায় মাটির একটা গর্তের মধ্যে ঢুকে এক সিংহকে বধ করে।
২১. বনায় এক মিশরীয় সৈন্যকেও হত্যা করে। মিশরীয় সৈন্যটির হাতে একটা বর্শা ছিল। কিন্তু বনায়ের হাতে একটি মাত্র মুগুর ছিল। বনায় মিশরীয় সৈন্যটির বর্শাটা মুঠো করে চেপে ধরে এবং তার কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নেয়। তারপর তার নিজের বর্শা দিয়ে সেই মিশরীয় সৈন্যকে হত্যা করে।
২২. যিহোয়াদার পুত্র বনায় এই রকম নানা দুঃসাহসিক কাজ করেছিল। সে সেই তিন বীরপুরুষের মতই বিখ্যাত ছিল।
২৩. বনায় সেই ত্রিশ জন বীরের থেকেও বিখ্যাত ছিল, কিন্তু সে সেই তিন জন বীরপুরুষের একজন ছিল না। দায়ূদ বনায়কে তার দেহরক্ষীদের নেতা রূপে মনোনীত করেন।
তিরিশ জন বীরের কথা
২৪. যোয়াবের ভাই অসাহেল ত্রিশ জন বীরের একজন, ঐ ত্রিশ জন যোদ্ধার অন্যান্য বীররা হলঃ বৈৎলেহমের দোদয়ের পুত্র ইল্হানন।
২৫. হরোদীয় শম্ম; সহরোদীয় ইলীকা ;
২৬. পল্টীয় হেলস; তকোয়ীয় ইক্কেশের পুত্র ঈরা ;
২৭. অনাথোতীয় অবীয়েষর; ক্রুশাতীয় মবুন্নয় ;
২৮. অহোহীয় সলমোন ; নটোফাতীয় মহরয় ;
২৯. নটোফৎ থেকে বানা এর পুত্র হেলব, গিবিয়ার বিন্যামীনের রীবয়ের পুত্র ইত্তয় ;
৩০. পিরিয়াথোনীয় বনায় ; গাশ উপত্যকা নিবাসী হিদ্দয়,
৩১. অর্বতীয় অবি-য়লবোন ; বরহুমীয় অস্মাবৎ ;
৩২. শাল্বোনীয় ইলিয়হবা ; যাশেনের পুত্ররা;
৩৩. হরার থেকে শম্মের পুত্র যোনাথন, হরার থেকে সাররের পুত্র অহীয়াম ;
৩৪. মাখাথীয় অহস্রয়ের পুত্র ইলীফেলট; গীলোনীয় অহীথোফলের পুত্র ইলীয়াম ;
৩৫. কর্মিলীয় হিষয় ; অব্বীয় পারয়,
৩৬. সোবা নিবাসী নাথনের পুত্র যিগাল, গাদীয় বানী,
৩৭. অন্মোনীয় সেলক, বেরোতীয় নহরয় যে সরূয়ার পুত্র যোয়াবের বর্ম বহন করেছিল ;
৩৮. যিত্রীয় ঈরা, যিত্রীয় গারেব ;
৩৯. এবং হিত্তীয় ঊরিয়। সেই দলে মোট ৩৭ জন ছিল।