শস্য মাড়াইয়ের ক্ষেত্র

১. একদিন নয়মী রূতকে বলল, “ওগো মেয়ে, হয়তো তোমার জন্য আমার একটি বর এবং একটি সুন্দর বাড়ী খোঁজা উচিৎ।

২. তোমার ভালই হবে।” হয়তো বোয়সই উপযুক্ত পাত্র। সে আমাদের খুব কাছের লোক। তুমি তার দাসীদের সঙ্গে কাজ করো। আজ রাত্রে বোয়স শস্য মাড়াই করার জায়গায় যব মাড়াই করবে।

৩. যাও গা ধুয়ে সাজগোজ করো। বেশ ভাল জামাকাপড় পরো। তারপর তুমি যেখানে শস্য ঝাড়াই হয় সেখানে অবশ্যই যাবে। কিন্তু বোয়সের রাতের খাওয়া না হওয়া পর্যন্ত সে যেন তোমায় দেখতে না পায়।

৪. খাওয়ার পর সে বিশ্রাম করবে। দেখবে কোথায় সে শোয়। তারপর সেখানে গিয়ে তার পা থেকে ঢাকাটা তুলে সেখানে শুয়ে পড়বে। সে তোমাকে বলে দেবে বিয়ের ব্যাপারে তুমি কি করবে।”

৫. রূৎ বলল, “তাই করব।”

৬. শস্য মাড়াইয়ের জায়গায় রূৎ চলে গেল। শাশুড়ী যা বলেছে সেইমতো সবই করল।

৭. খাওয়া-দাওয়ার পর বোয়স বেশ খুশি হয়ে শস্যের গাদার পাশে শুতে গেল। তারপর রূৎ চুপিচুপি তার কাছে গিয়ে পায়ের চাদরটা তুলে সেখানে শুয়ে পড়লো।

৮. পরে, মধ্যরাত্রে ঘুমের মধ্যে বোয়স পাশ ফিরতে গেল আর তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। এবং তার পায়ের কাছে শুয়ে থাকা একজন নারীকে দেখে খুব আশ্চর্য হয়ে গেল।

৯. বোয়স জিজ্ঞাসা করল, “কে তুমি?” নারী বলল, “আমি রূৎ, আপনার দাসী। আপনার চাদর আমার গায়ে বিছিয়ে দিন। আপনি আমার রক্ষাকর্তা।”

১০. বোয়স বলল, “প্রভু তোমার মঙ্গল করুন। আমার ওপর তুমি যথেষ্ট দয়া করেছ। আগে নয়মীকে তুমি যা দয়া করতে আমাকে তার চেয়ে বেশি দয়া করছ। তুমি একজন গরীব কিংবা ধনী যুবককে বিয়ে করতে পারতে। কিন্তু তুমি তা কর নি।

১১. শোনো যুবতী, ভয় পেও না। তুমি যা চাইছ সেরকমই আমি করব। আমার শহরের সকলেই জানে তুমি খুব ভাল মেয়ে। 

১২. এটাও সত্যি যে, আমি তোমার একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। কিন্তু আমার চেয়েও ঘনিষ্ঠলোক তোমার আছে।

১৩. আজ রাতট৷ এখানে থাকো। সকাল হলে দেখব সেই লোকটি তোমাকে সাহায্য করতে পারে কি না। যদি করে, খুবই ভাল। আর যদি না করে তাহলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমিই তোমাকে বিয়ে করবো। ইলীমেলকের জমি- জায়গ৷ ছাড়িয়ে নিয়ে তোমার হাতে তুলে দেব। সকাল অবধি তুমি এখানে থেকে যাও।”

১৪. সুতরাং সকাল হওয়া পর্যন্ত বোয়সের পায়ের কাছে রূৎ শুয়ে থাকল। অন্ধকার থাকতে থাকতেই সে যাবার জন্য উঠে পড়লো যাতে লোকে তাকে চিনতে না পারে। বোয়স তাকে বলল, “কাল রাত্রে যে তুমি আমার কাছে এসেছিলে সে কথা আমরা গোপন রাখবো।”

১৫. তারপর বোয়স বলল, “তোমার শালটা আমায় দাও তো। ওটাকে খুলে ধরো।” রূৎ তাই করলো। বোয়স নয়মীকে দেবে বলে আন্দাজে এক বুশেল বার্লি ওজন করল। তারপর রূতের শালে বার্লি মুড়ে তার পিঠে চাপিয়ে দিলো। বোয়স শহরের বেরিয়ে গেল।

১৬. রূৎ তার শাশুড়ী নয়মীর বাড়ী চলে গেল। নয়মী দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কে ওখানে?” রূৎ ভেতরে গিয়ে বোয়স কি কি করেছে সব নয়মীকে বলল।

১৭. সে বলল, “বোয়স তোমার জন্যে এই বার্লি উপহার দিয়েছে। সে বলেছে উপহার না নিয়ে যেন তোমার কাছে না আসি।”

১৮. নয়মী বলল, “বাছা, ধৈর্য্য ধরো। বোয়স যা করবে বলে মনে করে তা না করা পর্যন্ত ওর মনে শান্তি নেই। দিন ফুরোবার আগে কি ঘটে আমর৷ জানতে পারব।”

error: Content is protected !!