মন্দিরে সাক্ষ্যসিন্দুক
১. এরপর রাজা শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ, এরপর পরিবার গোলার প্রধান ও নেতাদের তাঁর কাছে জেরুশালেমে ডেকে পাঠালেন। শলোমন দায়ূদ নগরী থেকে সাক্ষ্যসিন্দুকটি মন্দিরে আনার সময় তাঁর সঙ্গে যোগ দেবার জন্য এইসব ব্যক্তিদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন।
২. অতঃপর এথানীম মাসে অর্থাৎ সপ্তম মাসে ফসল সঞ্চয়ের উৎসবের সময় ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা এসে রাজা শলোমনের সঙ্গে যোগদান করল।
৩. সমস্ত প্রবীণরা এসে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানোর পর যাজকরা
৪. সেই প্রভুর পবিত্র সিন্দুক, ঈশ্বরের উপাসনার জন্য ব্যবহৃত পবিত্র তাঁবুটি ও তাঁবুর জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে চলল। লেবীয়রা এই কাজে যাজকদের সাহায্য করেছিল।
৫. রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দারা সেই পবিত্র সিন্দুকের সামনে একত্রিত হবার পর অগণিত পশু বলি দেওয়া হল। “তারপর যাজকরা প্রভুর এই পবিত্র সিন্দুকটিকে মন্দিরের পবিত্রতম স্থানে যেখানে সিন্দুক রাখার জায়গা সেখানে স্থাপন করলো।
৭. সিন্দুকটিকে করব দূতদের মূর্ত্তির ডানার তলায় এমনভাবে রাখা হল, যাতে দেবদূতদের ছড়ানো ডানা সেই সিন্দুকটা ও সিন্দুকটার বহনদণ্ডের ওপর মেলা থাকে।
৮. বহনদণ্ডগুলে৷ খুবই লম্ব৷ ছিল। পবিত্রতম স্থানের পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে যদিও বহনদণ্ডগুলি দেখা যেত, বাইরে থেকে এই দণ্ডগুলি দেখা যেতো না। এমনকি দণ্ডগুলি এখনো সেই একই জায়গায় রাখা আছে।
৯. সিন্দুকের মধ্যে কেবল দুটি পবিত্র প্রস্তর-ফলক রাখা ছিল। প্রস্তর ফলক দুটোই মোশি, হোরেব বলে একটা জায়গায় এই সিন্দুকের মধ্যে ভরে রেখেছিলেন। মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর ইস্রায়েলের বাসিন্দারা ঈশ্বরের সঙ্গে একটি চুক্তির ফলস্বরূপ হোরেব নামে জায়গাটিতে থাকতে বাধ্য হয়েছিল।
১০. যাজকরা পবিত্র সিন্দুকটিকে পবিত্রতম স্থানের পবিত্র জায়গায় রেখে বেরিয়ে আসার পর, প্রভুর মন্দিরটি অলৌকিক মেঘে* ভরে গেল।
১১. মন্দিরটি প্রভুর মহিমায়* ভরে যাওয়ায় যাজকরা তাঁদের কাজ শেষ করতে পারলেন না।
১২. তখন শলোমন বললেনঃ “প্রভু আকাশের ঐ জাজ্বল্যমান সূর্য নিজেই গড়েছেন, কিন্তু তিনি থাকবার জন্য ঘন মেঘকে বেছে নিয়েছেন।*
১৩. হে প্রভু চিরদিন তোমার থাকার জন্য আমি এই সুন্দর মন্দিরটি বানিয়েছি।”
১৪. ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা তখন সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাই রাজা শলোমন তাদের দিকে ফিরে, ঈশ্বরকে তাদের আশীর্বাদ করতে অনুরোধ করলেন।
১৫. তারপর শলোমন এক সুদীর্ঘ মন্ত্রোচ্চারণে প্রভুর প্রার্থনা করলেন। তিনি বললেন, “ধন্য প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর মহামহিম। আমার পিত৷ দায়ূদকে তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সবই তিনি পালন করেছেন। প্রভু আমার পিতাকে বলেছিলেন,
১৬. আমি আমার সমস্ত লোকেদের, ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে নিয়ে এসেছি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমি আমার মন্দির বানানোর জন্য ইস্রায়েলের কোন নগর বেছে নিই নি। আর আমার লোকেদের ইস্রায়েলীয়দের পরিচালনার জন্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনীত করি নি। এবার আমি আমার উপাসনার জন্য জেরুশালেম শহরকে বেছে নিলাম, আর দায়ূদকে বেছে নিলাম আমার লোকেদের, ইস্রায়েলীয়দের শাসন করার জন্য।’
১৭. “আমার পিতা দায়ূদ প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটি মন্দির বানাতে খুবই উৎসুক ছিলেন।
১৮. কিন্তু প্রভু, আমার পিতা দায়ূদকে বললেন, “আমি জানি, আমার প্রতি তোমার আনুগত্য প্রকাশের জন্য তুমি একটা মন্দির বানাতে চাও। খুবই ভালে৷ কথা,
১৯. কিন্তু তোমাকে নয়, আমি এই মন্দির বানানোর জন্য তোমার পুত্রকে বেছে নিয়েছি। সে-ই এই মন্দির বানাবে।
২০. “প্রভু যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আজ তিনি সেই কথা রাখলেন। আমার পিতা দায়ূদের জায়গায় এখন আমি রাজা হয়েছি। প্রভুর প্রতিশ্রুতি মতো আমি এখন ইস্রায়েল শাসন করি এবং প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য আমিই এই মন্দির বানিয়েছি।
২১. পবিত্র এই সিন্দুকটি রাখার জন্য আমি মন্দিরের ভেতর একটা জায়গা রেখেছি। ঐ পবিত্র সিন্দুকের ভেতরে প্রভুর সঙ্গে আমাদের পূর্বপুরুষদের যে চুক্তি হয়, তা রাখা আছে। আমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে আসার সময়, প্রভু তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করেছিলেন।”
২২. তারপর শলোমন প্রভুর বেদীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন আর সবাই তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়াল। শলোমন তাঁর হাত প্রসারিত করলেন, আকাশের দিকে তাকালেন
২৩. এবং বললেনঃ “হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, পৃথিবীর এই আকাশে এবং এই পৃথিবীতে আপনার মতো আর কোন ঈশ্বরই নেই।
২৪. আপনি আপনার লোকেদের সঙ্গে করুণাবশতঃ চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন এবং আপনি আপনার প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। যে সমস্ত লোক আপনাকে অনুসরণ করে আপনি তাদের সহায় হয়ে থাকেন। “আপনি আপনার সেবক আমার পিতা দায়ূদকে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রেখেছেন। নিজের মুখে আপনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আপনার অসীম ক্ষমতার বলে আজ তাকে সত্য করেছেন।
২৫. ”এখন প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এবার আপনি আমার পিতা দায়ূদকে দেওয়৷ অন্য প্রতিশ্রুতিগুলোও পূরণ করুন। আপনি বলেছিলেন, ‘দায়ূদ, তোমারই মতো যেন তোমার ছেলেরাও সদাসতর্কভাবে আমাকে অনুসরণ করে, আর তা যদি করে তাহলে সবসময়েই তোমারই বংশের কেউ না কেউ ইস্রায়েলে রাজত্ব করবে।’
২৬. আবার প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি আপনাকে আমার পিতাকে দেওয়া এই প্রতিশ্রুতি অনুগ্রহ করে পালন করতে বলছি।
২৭. “কিন্তু হে প্ৰভু, আপনি কি সত্যিই আমাদের সঙ্গে এই পৃথিবীতে বাস করবেন? ঐ বিশাল আকাশ আর স্বর্গের উচ্চতম স্থান, এমন কি স্বর্গের শিখর স্থান আপনাকে ধরে রাখতে পারে না। স্বভাবতঃই আমার বানানো এই মন্দিরও আপনার পক্ষে যথেষ্ট নয়।
২৮. কিন্তু দয়া করে আপনি আমার প্রার্থনা ও মিনতি মনে রাখবেন। আমি আপনার দাস, আর আপনি আমার প্রভু ঈশ্বর। আজ আমি আপনার কাছে যে প্রার্থনা করলাম তা আপনি স্মরণে রাখবেন।
২৯. অতীতে আপনিই বলেছিলেন, ‘আমি ওখানে সম্মানিত হবো’ আপনি দিবারাত্র এই মন্দিরের প্রতি আপনার কৃপাদৃষ্টি রাখবেন। এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে আমি আপনার উদ্দেশ্যে যে প্রার্থনা করবো তা যেন আপনার কানে পৌঁছায়।
৩০. প্রভু আমি ও আপনার ইস্রায়েলের অনুচররা এখানে এসে আপনার কাছে যা প্রার্থনা করবো তার প্রতি আপনি সজাগ থাকবেন। আমরা জানি স্বর্গেই আপনার বাস। আমাদের বিনতি সেখান থেকে আপনি আমাদের প্রার্থনা শুনে আমাদের ক্ষমা করবেন।
৩১. “কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তির প্রতি অন্যায় আচরণ করে তাহলে তাকে এই বেদীতে নিয়ে আসা হবে। যদি সে সত্যিই অপরাধী না হয় তাহলে তাকে শপথ করে বলতে হবে যে সে নির্দোষ।
৩২. আপনি স্বর্গ থেকে সেকথা শুনে তার যথাযথ বিচার করবেন। যদি সে ব্যক্তি অপরাধী হয় তবে আমাদের তার প্রমাণ দেবেন। যদি সে ব্যক্তি নির্দোষ হয় তাহলে তার প্রমাণও দেবেন।
৩৩. “হয়তো কখনো কখনো আপনার ইস্রায়েলের ভক্তরা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করবে, শত্রুরা তাদের পরাজিত করবে। তখন তারা আপনার কাছেই ফিরে এসে এই মন্দিরে আপনার প্রশংসা করবে এবং আপনার সাহায্য চেয়ে আপনার কাছে প্রার্থনা করবে।
৩৪. আপনি অনুগ্রহ করে স্বর্গ থেকে সেই প্রার্থনা শুনে আপনার ইস্রায়েলের ভক্তদের অপরাধ মার্জনা করে, তাদের হৃত বাসভূমিতে তাদের ফিরিয়ে আনবেন। এই ভূমি আপনিই তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন।
৩৫. “যদি তারা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচার করে, আপনি তাদের জমিতে খরা আনবেন। তাহলে তারা এখানে এসে আপনার কাছে প্রার্থনা করবে এবং আপনার প্রশংসা করবে। আপনি তাদের কষ্ট দেবেন আর তারা তাদের পাপ থেকে সরে আসবে।
৩৬. তখন আপনি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনায় সাড়া দেবেন আর আমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। মানুষকে সৎ পথে চলার শিক্ষা দিয়ে, হে প্রভু, আবার আপনি তাদের রুক্ষ জমি বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দেবেন।
৩৭. “হয়তো এই জমি এতোই শুকিয়ে যাবে যে এখানে আর কোন ফসল জন্মাবে না। অথবা হয়তো লোকেরা কোন মহামারীর দ্বারা আক্রান্ত হবে, অথব৷ হয়তো সমস্ত শস্য কীট-পতঙ্গের দ্বারা ধ্বংস হবে, কিংবা আপনার ভক্তরা তাদের বাসস্থানে শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হবে, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
৩৮. কখনো যদি এরকম কিছু ঘটে আর তখন যদি অন্তত একজনও তার পাপের কথা স্মরণ করে অনুতপ্ত চিত্তে এই মন্দিরের দিকে দুহাত বাড়িয়ে প্রার্থনা করে,
৩৯. তাহলে আপনি আপনার স্বর্গের বাসভূমি থেকে তার সেই ডাকে সাড়া দেবেন। সমস্ত লোককে ক্ষমা করে তাদের সাহায্য করবেন। একমাত্র আপনিই অন্তর্যামী তাই প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে নিরপেক্ষভাবে আপনি বিচার করেন,
৪০. যাতে যতদিন তারা এখানে তাদের পূর্বপুরুষদের, আপনার দেওয়া এই ভূখণ্ডে বাস করে ততদিন আপনাকে ভয় ও ভক্তি করে চলে।
৪১-৪২. দূরদূরান্তরের লোক আপনার মহিমা ও ক্ষমতার কথা জানতে পেরে এখানে এই মন্দিরে এসে প্রার্থনা করবে।
৪৩. আপনি আপনার স্বর্গের বাসভূমি থেকে তাদের প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে, তাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবেন। তাহলে এইসব ব্যক্তিরা আপনার ইস্রায়েলের লোকেদের মতোই আপনাকে ভয় ও ভক্তি করবে। আর সকলে সব জায়গায় জানবে আপনার প্রতি সন্মান প্রকাশ করে আমি এই মন্দির বানিয়েছিলাম।
৪৪. কখনো কখনো আপনাকে আপনার অনুচরদের শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিতে হবে। তখন আপনার লোকেরা আপনার মনোনীত করা এই স্থানে আমার বানানো শহরে আসবে এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করবে।
৪৫. স্বর্গ থেকে আপনি তাদেরও প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে তাদের সাহায্য করবেন।
৪৬. আপনার লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করবে। একথা আমি জানি কারণ মানুষ মাত্রেই পাপ করে। আর আপনি তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের শত্রুদের হাতে পরাজিত হতে দেবেন। শত্রুরা তাদের বন্দী করে কোনো দূর দেশে নিয়ে যাবে।
৪৭. সেই দূরের দেশে বসে আপনার লোকেরা কি হয়েছে ভেবে তাদের পাপ কর্মের জন্য অনুত হয়ে আবার আপনারই কাছে প্রার্থনা করে বলবে, ‘আমরা পাপ করেছি। আমরা ভুল করেছি।’
৪৮. সেই দূর দেশে থেকেও তারা এই দেশের দিকে ঘুরে দাঁড়াবে যে দেশটি আপনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন এবং এই শহর যেটি আপনার মনোনীত এবং এই মন্দির যেটি আপনার সন্মানে আমি নির্মাণ করেছি, সেটির দিকে ঘুরে দাঁড়াবে এবং তারা আপনার কাছে প্রার্থনা করবে।
৪৯. তাহলে স্বর্গ থেকে আপনি তাদের ডাকে সাড়া দেবেন।
৫০. আপনার লোকেদের তাদের পাপ থেকে মুক্তি দেবেন এবং আপনার প্রতি তাদের পাপাচরণকে ক্ষমা করবেন। তাদের শত্রুদের তখন তাদের প্রতি নরম মনোভাব করে তুলবেন।
৫১. মনে রাখবেন, ওরা আপনারই ভক্ত। আপনিই ওদের মিশর থেকে, গরমচুল্লী থেকে বের করার মতো করে বাঁচিয়েছিলেন।
৫২. প্রভু ঈশ্বর, দয়া করে যখনই আমি এবং আপনার ইস্রায়েলের লোকেরা আপনার কাছে প্রার্থনা করবো, তখনই সেই প্রার্থনায় সাড়া দেবেন।
৫৩. পৃথিবীর সমস্ত লোকেদের মধ্যে থেকে তাদের আপনি নিজে আপনার একান্ত ভক্ত হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রভু, মোশির মাধ্যমে আমাদের মিশর থেকে বের করে আনার সময় আপনি পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আমাদের জন্যও আপনি ওরকম করবেন।
৫৪. শলোমন বেদীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে দুহাত আকাশে তুলে ঈশ্বরের কাছে এই সুদীর্ঘ প্রার্থনা করলেন। প্রার্থনা শেষ হলে তিনি উঠে দাঁড়ালেন।
৫৫. তারপর উচ্চ স্বরে ঈশ্বরকে ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষকে আশীর্বাদ করতে বললেন। শলোমন বললেনঃ
৫৬. প্রভুর প্রশংসা করো ! তিনি তাঁর লোকেদের, ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের বিশ্রাম দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কথা মতো তিনি আমাদের বিশ্রাম দিয়েছেন। প্রভু তাঁর অনুগত দাস মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সবকটিই তিনি পূর্ণ করেছেন।
৫৭. আমি প্রার্থনা করি, প্রভু, আমাদের ঈশ্বর যেভাবে আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন, ঠিক সেভাবেই যেন তিনি আমাদেরও পাশে থাকেন, কখনো আমাদের পরিত্যাগ না করেন।
৫৮. আমি প্রার্থনা করছি যে আমরা সকলে তাঁকেই অনুসরণ করবো। তাঁর বিধি নির্দেশ ও আদেশগুলি মেনে চলবো যেগুলো তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
৫৯. আমি আশা করছি আমাদের প্রভু ঈশ্বর সর্বদা এই প্রার্থনার কথা এবং আমার অনুরোধ মনে রাখবেন। আমি প্রার্থন৷ করছি, প্রভু যেন প্রতিদিন রাজা, তাঁর ভৃত্য ও তাঁর সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের জন্য এগুলো করেন।
৬০. প্রভু যদি তা করেন তাহলে সমস্ত পৃথিবীবাসী জানতে পারবে যে প্রভুই একমাত্র সত্য ঈশ্বর।
৬১. তোমরা সকলে আমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রতি অনুগত এবং সত্যবদ্ধ থাকবে এবং তাঁর বিধি ও আদেশগুলি এখনকার মতোই ভবিষ্যতেও মেনে চলবে।”
৬২. তারপর রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকেরা একসঙ্গে প্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করলেন।
৬৩. সেদিন শলোমন মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে ২২,০০০ গবাদি পশু ও ১,২০,০০০ মেষ বলি দিয়েছিলেন। এভাবে রাজা ও ইস্রায়েলের লোকেরা মিলে প্রভুর মন্দির উৎসর্গ করেছিল।
৬৪. এছাড়া রাজা শলোমন হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং বলিপ্রদও পশুর চর্বি নৈবেদ্য দিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণটি উৎসর্গ করলেন। তিনি এরকম করলেন কারণ প্রভুর পিতলের বেদীটি খুব বেশী বড় ছিল না যে এত সব নৈবেদ্য ধারণ করতে পারে।
৬৫. সেদিন মন্দিরে থেকে রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকেরা এইভাবে ছুটি উদযাপন করেছিল। উত্তরে হমাতের প্রবেশ দ্বার থেকে দক্ষিণে মিশর পর্যন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাই সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিল। তারা সাতদিন ধরে পানাহার, উৎসব ও স্ফুর্তির মধ্যে দিয়ে প্রভুর সঙ্গে সময় কাটাল। তারপর আরো সাতদিন সেখানে থাকল। অর্থাৎ একটানা ১৪ দিন ধরে তারা উৎসব করল।
৬৬. পরের দিন শলোমন সকলকে বাড়ীতে ফিরে যেতে বললেন। তারা সকলে রাজাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। তারা সকলেই প্রভু তাঁর দাস ও ইস্রায়েলের লোকেদের জন্য যেসব ভাল কাজ করেছিলেন সেইসব ভেবে খুবই উৎফুল্ল ছিল।