শ্লোকঃ ২৮
শুভাশুভফলৈরেবং মোক্ষ্যসে কর্মবন্ধনৈঃ ।
সন্ন্যাসযোগযুক্তাত্মা বিমুক্তো মামুপৈয্যসি ॥ ২৮ ॥
শুভ—মঙ্গলজনক; অশুভ — অমঙ্গলজনক, ফলৈঃ—ফলবিশিষ্ট; এব—এভাবে; মোক্ষ্যসে—মুক্ত হবে, কর্ম— কর্ম; বন্ধনৈঃ –বন্ধন হতে, সন্ন্যাস — সন্ন্যাস, যোগ— যোগ, যুক্তাত্মা—যুক্তচিত্ত : বিমুক্ত:- মুক্ত; মাম— আমাকে উপেযাসি – প্রাপ্ত হবে।
গীতার গান
শুভাশুভ ফল যাহা হয় তাহা দ্বারা ।
তাহার বন্ধন হতে মুক্ত তুমি সারা ।।
সেই সে সন্ন্যাসযোগ করিতে যুয়ায় ।
যাহার ফলেতে লোক মোরে প্রাপ্ত হয় ৷।
অনুবাদঃ এভাবেই আমাতে সমস্ত কর্ম অর্পণ দ্বারা শুভ ও অশুভ ফলবিশিষ্ট কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত হবে। এভাবেই সন্ন্যাস যোগে যুক্ত হয়ে তুমি মুক্ত হবে এবং আমাকেই প্রাপ্ত হবে।
তাৎপর্যঃ যিনি গুরুদেবের নির্দেশে কৃষ্ণভাবনাময় কর্মের অনুষ্ঠান করেন, তাকে যুক্ত বলা হয়। একে পরিভাষায় বলা হয় ‘যুক্তবৈরাগ্য’। শ্রীল রূপ গোস্বামীপান এই অবস্থাকে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে—
অনাসক্তস্য বিষয়ান যথার্হমুপযুদ্ধতঃ ।
নির্বন্ধঃ কৃষ্ণসম্বন্ধে যুক্তং বৈরাগ্যমুচাতে ॥
(ভঃ রঃ সিঃ পূর্ব ২/২০৫ )
শ্রীল রূপ গোস্বামী বলেছেন যে, যতক্ষণ আমরা এই সংসারে আছি, ততক্ষণ আমাদের কর্ম করতেই হবে; আমরা কখনই কাজ না করে থাকতে পারি না। তাই, আমরা যদি কর্ম করে তার ফল শ্রীকৃষ্ণকে অর্পণ করি, তখন তাকে বলা হয় ‘যুক্তবৈরাগ্য’। এই সন্ন্যাস যোগযুক্ত ক্রিয়া চিত্তরূপী দর্পণকে পরিমার্জিত করে এবং তার ফলে অনুশীলনকারী ক্রমশ পারমার্থিক উপলব্ধিতে উন্নতি সাধন করেন। এবং তখন তিনি পূর্ণরূপে পরম পুরুষোত্তম ভগবানের শরণাগত হন। সুতরাং অবশেষে তিনি বিশিষ্ট মুক্তি লাভ করেন। এই মুক্তির ফলে তিনি ব্রহ্মজ্যোতিতে বিলীন হয়ে যান না, পক্ষান্তরে তিনি পরমেশ্বর ভগবানের ধানে প্রবেশ করেন। ভগবান এখানে স্পষ্টই বলেছেন, মামুপৈশ্যসি “সে আমার কাছে চলে আসে,” অর্থাৎ সে তার যথার্থ আবাস ভগবৎ-ধামে ফিরে যায়। মুক্তি পাঁচ প্রকারের হয় এবং এখানে বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে, সারা জীবন ভগবৎ-আজ্ঞা পালনকারী ভক্ত এমন পর্যায়ে উন্নীত হন, যেখান থেকে তিনি দেহত্যাগ করার পরে ভগবৎ- ধামে প্রবিষ্ট হয়ে প্রত্যক্ষভাবে ভগবানের সঙ্গ লাভ করতে পারেন।
অনন্য ভক্তি সহকারে যিনি ভগবানের সেবায় নিজের জীবন সমর্পণ করেছেন, তিনি যথার্থ সন্ন্যাসী। এই ধরনের মানুষ নিজেকে ভগবানের নিত্যদাস বলে মনে করেন এবং সর্বদাই ভগবৎ-সংকল্পে আশ্রিত থাকেন। তাই, তিনি যে কাজই করেন, তা কেবল ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্যই করেন। তাই, তাঁর প্রত্যেকটি ক্রিয়াকলাপ ভগবৎ সেবাময় হয়ে ওঠে। তিনি বেদ বিহিত সকাম কর্ম এবং স্বধর্মের প্রতি কোন গুরুত্ব দেন না। সাধারণ মানুষের জন্যই কেবল বৈদিক স্বধর্মের আচরণ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু পূর্ণরূপে ভগবানের সেবায় নিযুক্ত শুদ্ধ ভক্ত কখনও কখনও বৈদিক বিধানের বিপরীত আচরণ করেন বলে মনে হয়, প্রকৃতপক্ষে তা নয়।
তাই, বৈষ্ণব আচার্যের বলে গেছেন যে, এমন কি অতি বুদ্ধিমান লোকও শুদ্ধ ভক্তের পরিকল্পনা ও ক্রিয়াকর্ম বুঝতে পারে না। অবিকল কথাটি হচ্ছে— তাঁর বাকা, ক্রিয়া, মুদ্রা বিদ্রোহ না বুঝয় (চৈতন্য-চরিতামৃত, মধ্য ২৩/৩৯) এভাবেই যে মানুষ ভগবানের সেবায় নিত্যযুক্ত অথবা ভগবানের চিন্তায় এবং ভগবানের সেবা-সংকল্পে নিত্য মগ্ন থাকেন, তাকে মনে করতে হবে তিনি বর্তমানে সর্বতোভাবে মুক্ত এবং ভবিষ্যতে তিনি যে ভগবৎ-ধামে ফিরে যাবেন, সেই সম্বন্ধে সুনিশ্চিত। তিনিও শ্রীকৃষ্ণের মতো সব রকম জাগতিক সমালোচনার অতীত।
শ্লোকঃ ২৯
সমোহহং সর্বভূতেষু ন নে দ্বেষ্যোহস্তি ন প্রিয়ঃ ।
যে ভজন্তি তু মাং ভক্ত্যা ময়ি তে তেষু চাপ্যহম্ ॥ ২৯ ৷৷
সমঃ—সমভাবাপন্ন; অহম্ — আমি; সর্বভূতেষু — সমস্ত জীবের প্রতি; ন নয়; মে- আমার, দ্বেয্যঃ–বিদ্বেষ ভাবাপন্ন; অস্তি – হয়; ন নয়, প্রিয়:-প্রিয়, যে-যারা ভজন্তি—ভজনা করেন; তু— কিন্তু মাম্ – আমাকে; ভক্ত্যা – ভক্তির দ্বারা মরি- আমাতে; তে—তাঁরা; তেষু — তাঁদের; চও; অপি – অবশ্যই; অহম্ আমি।
গীতার গান
আমি ত’ সকল ভূতে দেখি সমভাব ।
নহে কেহ প্রিয় মোর দেষ্য বা প্রভাব ।।
কিন্তু সেই ভজে মোরে ভক্তিযুক্ত হই ।
সে আমাতে আমি তাতে আসক্ত যে রই ৷।
অনুবাদঃ আমি সকলের প্রতি সমভাবাপন্ন। কেউই আমার বিদ্বেষ ভাবাপন্ন নয় এবং প্রিয়ও নয়। কিন্তু যাঁরা ভক্তিপূর্বক আমাকে ভজনা করেন, তাঁরা আমাতে অবস্থান করেন এবং আমিও তাঁদের মধ্যে বাস করি।
তাৎপর্যঃ এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে যে, শ্রীকৃষ্ণ যদি প্রতিটি জীবের প্রতিই সমভাবাপন্ন হন এবং কেউই যদি তাঁর বিশেষ প্রিয় না হয়, তা হলে তিনি তাঁর সেবায় নিত্যযুক্ত অনন্য ভক্তের প্রতি কেন বিশেষভাবে অনুরক্ত? কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাতে কোন ভেদভাব নেই, উপরন্তু এটিই স্বাভাবিক। এই জড় জগতে কোন মানুষ মহাদানী হতে পারে, তবুও সে তার নিজের সন্তানদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরক্ত। ভগবান দাবি করছেন যে, প্রতিটি জীবই তাঁর সন্তান, তা সে যে যোনিতেই জন্ম গ্রহণ করুক। তাই, তিনি সমস্ত প্রাণীর জীবনের সব রকম প্রয়োজন উদারভাবে পূর্ণ করেন। পাষাণ, স্থল ও জলে কোন রকম ভেদবুদ্ধি না করে মেঘ যেমন সর্বত্রই সমানভাবে বর্ষণ করে, ভগবানের করুণাও তেমনই সকলের উপর সমভাবে বর্ষিত হয়। কিন্তু তাঁর ভক্তের ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ মনোযোগ প্রদান করেন। এই ধরনের ভক্তের কথা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে— তাঁরা কৃষ্ণভাবনায় নিয়তই মা, তাই তাঁরা সর্বদাই কৃষ্ণের মধ্যে অপ্রাকৃত স্তরে স্থিত থাকেন। ‘কৃষ্ণভাবনা’ এই শব্দটির অভিব্যক্তি এই যে, এই প্রকার চেতনা সম্পন্ন মানুষ শ্রীভগবানের মধ্যে স্থিত জীবন্মুক্ত যোগী। ভগবান এখানে স্পষ্টভাবে বলেছেন, মরিতে “তারা আমাতে স্থিত।” স্বভাবতই ভগবানও তাঁদের মধ্যে স্থিত থাকেন। এই সম্পর্ক পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত। এটিকে ব্যাখ্যা করা যায় এভাবেও যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাংতথৈব ভজাম্যহম্—“আমার প্রতি শরণাগতির মাত্রা অনুসারে আমি তাঁর তত্ত্বাবধান করি।” এই অপ্রাকৃত বিনিময় বর্তমান, কারণ ভগবান ও ভক্তবৃন্দ উভয়েই চৈতন্যময়। একটি সোনার আংটিতে যখন হীরে বসানো হয়, তখন সেটি দেখতে অতি সুন্দর লাগে। একত্রিত হবার ফলে সোনা ও হীরে উভয়েরই শোভা বর্ধিত হয়। ভগবান ও জীব নিত্যকাল প্রভাযুক্ত। জীব যখন ভগবৎ-সেবার উন্মুখ হয়, তখন সে সোনার মতো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ভগবান হচ্ছেন হীরে এবং তাই এই দুইয়ের সমন্বয় অত্যন্ত সুন্দর। শুদ্ধ অন্তঃকরণ-বিশিষ্ট জীবকে বলা হয় ভক্ত। ভগবানও আবার তাঁর ভক্তের ভক্ত হয়ে যান। ভক্ত ও ভগবানের মধ্যে যদি এই বিনিময়ের সম্বন্ধ না থাকে, তা হলে সবিশেষ দর্শনের অস্তিত্বই থাকে না। নির্বিশেষবাদে পরমতত্ত্ব ও জীবের মধ্যে কোনও বিনিময় হয় না, কিন্তু সবিশেষবাদে অবশ্যই তা হয়।
এই উদাহরণটির প্রায়ই অবতারণা করা হয় যে, ভগবান কল্পবৃক্ষের মতো এবং এই কল্পবৃক্ষ থেকে যে যা চায়, ভগবান তাই দান করেন। কিন্তু এখানকার ব্যাখ্যাটি আরও পূর্ণাঙ্গ। এখানে ভগবানকে তাঁর ভক্তের প্রতি বিশেষভাবে পক্ষপাতী বলা হয়েছে। এটি ভক্তদের প্রতি ভগবানের বিশেষ কৃপার অভিব্যক্তি। ভক্ত ও ভগবানের এই ভাব বিনিময়কে কর্মফলের অধীন বলে মনে করা উচিত নয়। সেটি দিব্যস্তরে অবস্থিত, যেখানে ভগবান ও তাঁর ভক্তেরা নিত্য ক্রিয়াশীল। ভগবদ্ভক্তি এই জড় জগতের ক্রিয়া নয়; তা চিন্ময় জগতের ক্রিয়াকলাপ, যেখানে সচ্চিদানন্দময় দিব্য ভক্তিরস বিরাজ করে।
শ্লোকঃ ৩০
অপি চেৎ সুদুরাচারো ভজতে মামনন্যভাক্ ।
সাধুরেব স মন্তব্যঃ সমাগ ব্যবসিতো হি সঃ ॥ ৩০ ॥
অপি—এমন কি; চেৎ—যদি; সুদুরাচারঃ – অত্যন্ত দুরাচারী ব্যক্তি; ভজতে – ভজনা করেন, মাম্—আমাকে; অনন্যভাক্—অনন্য ভক্তি সহকারে সাধুঃ — সাধু: এব- অবশ্যই; সঃ—তিনি; মন্তব্যঃ–মনে করা উচিত; সম্যক — পূর্ণরূপে; ব্যবসিতঃ- দৃঢ়ভাবে অবস্থিত; হি— অবশ্যই; সঃ – তিনি।
গীতার গান
অনন্য যে ভক্ত যদি কভু দুরাচার ।
ভজন করয়ে মোরে একনিষ্ঠতার ॥
সে সাধু মন্তব্য হয় সম্যগ ব্যবসিত ।
দোষ তার কিছু নয় সে যে দৃঢ়ব্রত ৷৷
অনুবাদঃ অতি দুরাচারী ব্যক্তিও যদি অনন্য ভক্তি সহকারে আমাকে ভজনা করেন, তাকে সাধু বলে মনে করবে, কারণ তাঁর দৃঢ় সংকল্পে তিনি যথার্থ মার্গে অবস্থিত।
তাৎপর্যঃ এই শ্লোকে সুদুরাচারঃ শব্দটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং এর যথার্থ অর্থ উপলব্ধি করা কর্তব্য। বদ্ধ জীবের ক্রিয়া দুই রকমের—নৈমিত্তিক ও নিত্য। দেহরক্ষা অথবা সমাজ ও রাষ্ট্রের বিধান পালনের জন্য বিভিন্ন কর্ম করা হয়। বদ্ধ জীবনে ভক্তকেও এই ধরনের কার্য করতে হয়। এই প্রকার কার্যকলাপকে বলা হয় নৈমিত্তিক। এ ছাড়া, যে জীব তাঁর চিন্ময় স্বরূপ সম্বন্ধে সম্পূর্ণরূপে সচেতন এবং যিনি কৃষ্ণভাবনায় অথবা ভগবদ্ভক্তিতে নিয়োজিত, তাঁর কার্যকলাপকে বলা হয় অপ্রাকৃত। তাঁর চিন্ময় স্বরূপে এই প্রকার কার্যকলাপ অনুষ্ঠিত হয় এবং পরিভাষায় সেগুলিকে বলা হয় ভগবদ্ভক্তি। এখন বদ্ধ অবস্থায় কখনও কখনও ভগবৎ-সেবা এবং দেহ সম্বন্ধীয় কর্ম একই সঙ্গে সমান্তরালভাবে সম্পাদিত হতে থাকে। কিন্তু তারপর আবার কখনও কখনও এই দুই ধরনের ক্রিয়ায় পরস্পর বিরোধও উৎপন্ন হতে পারে। ভক্ত সাধারণত যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করেন, যাতে তিনি এমন কোন কাজ না করেন যার ফলে তাঁর ভগবৎ সেবা বাধা প্রাপ্ত হতে পারে। তিনি জানেন যে, কৃষ্ণভাবনায় উত্তরোত্তর অগ্রগতির উপর তাঁর সমস্ত ক্রিয়াকলাপের সফলতা নির্ভর করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কখনও কখনও দেখা যায় যে, কৃষ্ণভাবনা পরায়ণ মানুষ এমন কাজ করে বসেন, যা সমাজ-ব্যবস্থা ও রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত গর্হিত বলে মনে হয়। কিন্তু এই প্রকার ক্ষণিক পতন হওয়া সত্ত্বেও তিনি ভক্তিযোগের অযোগ্য হন না। শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে যে, অনন্যভাবে ভগবদ্ভক্তি-পরায়ণ মানুষ যদি পতিতও হন, তা হলে অন্তর্যামী ভগবান শ্রীহরি তাঁকে নির্মল করে পাপমুক্ত করে দেন। মায়ার মোহময়ী প্রভাব এতই প্রবল যে, এমন কি পূর্ণরূপে ভগবভুক্তিনিষ্ঠ যোগীও কখনও কখনও তা বলে এটি কখনও মনে করা উচিত নয় যে, অপ্রাকৃত ভগবৎ পরায়ণ ভক্ত সব রকম নিম্পনীয় কর্মে প্রবৃত্ত হতে পারেন। এই শ্লোকে কেবল বিষয় সংসর্গ- জনিত দুর্ঘটনার কথাই বলা হয়েছে। ভগবদ্ভক্তি বস্তুতপক্ষে মায়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার সামিল। ভক্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না মারার সঙ্গে যুদ্ধ করতে সমর্থ হচ্ছে, ততক্ষণ এই ধরনের দুর্ঘটনা জনিত অধঃপতন হতে পারে। কিন্তু পূর্বেই বলা হয়েছে, পূর্ণরূপে শক্তিশালী হওয়ার পরে তাঁর আর কখনও পতন হয় না। এই শ্লোকের দোহাই দিয়ে পাপাচারে প্রবৃত্ত হয়ে নিজেকে ভক্ত বলে মনে করা কখনই উচিত নয়। ভগবস্তুতি সাধন করার পরেও যদি চরিত্র শুদ্ধ না হয়, তা হলে বুঝতে হবে যে, সে উত্তম ভক্ত নয়।