কী অদ্ভুত সময়ে বাস করি।
যা কিছু আমি ভালোবাসি তাদের কথাও বলতে পারি না।
বলতে গেলেই মনে হয় আমি যেনো চারপাশের
সমস্ত শোষণ, পীড়ন, অন্যায়, ও প্রতিক্রিয়াশীলতাকে
সমর্থন করি।
রজনীগন্ধার নাম উচ্চারণ করতে গেলেই মনে হয়
আমি যেনো চাই রাস্তায় উলঙ্গ যে-শিশুটি অনাহারে চিৎকার করছে
সে চিরকাল এভাবেই চিৎকার করুক।
কৃষ্ণচূড়ার লাল মেঘের দিকে মুগ্ধচোখে তাকাতে গেলেই
মনে হয় আমি যেনো পৃথিবীব্যাপী সামরিক শাসন ও সমরবাদকে
সমর্থন করি।
আমার মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধ’রে চুমো খেতে গেলেই মনে হয়
আমি যেনো ভুলে গেছি পৃথিবীর কোনো চুল্লিতে
এ-মুহূর্তে তৈরি হচ্ছে পৃথিবীধ্বংসী একটা পারমাণবিক বোমা।
কবিতার কোনো পংক্তি অন্যমনস্কভাবে আবৃত্তি করার সাথে সাথে
মনে হয় আমি যেনো সাম্রাজ্যবাদকে দৃঢ়ভাবে
সমর্থন করছি।
ওই মেঘের দিকে তাকানোর সময় মনে হয়
আমি যেনো রাষ্ট্রযন্ত্রের সমস্ত
বদমাশিকে সমর্থন করি।
যখন আত্মার ভেতরে গুঞ্জরণ করে গীতবিতানের কোনো পংক্তি
তখন মনে হয় আমি যেনো ইস্কুলে যাওয়ার পথে
অপমৃত শিশুদের কথা ভুলে গেছি।
একটি ইন্দ্রিয়কাঁপানো চিত্রকল্প সৃষ্টির মুহূর্তে মনে হয়
আমি যেনো কৃষ্ণ বিদ্রোহী কবির মৃত্যুদণ্ডকে
সমর্থন করি।
আর ‘তোমাকে ভালোবাসি’
বলার সময় মনে হয় আমি যেনো ত্রিশ লক্ষ মানুষের
মৃত্যু আর বাঙলার স্বাধীনতার সঙ্গে
বিশ্বাসঘাতকতা করছি।
“যতোই গভীরে যাই মধু, যতোই ওপরে যাই নীল” কবিতা সমগ্র সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ
♦ নষ্ট হৃৎপিণ্ডের মতো বাংলাদেশ
♦ পুত্রকন্যাদের প্রতি, মনে মনে
♦ যদি ওর মতো আমারও সব কিছু ভালো লাগতো