যাজকের বিশেষ বস্ত্র
১. যাজকরা যখন প্রভুর পবিত্র স্থানে সেবা করবে তখন তারা যে বিশেষ পোশাক পরবে, সেটা নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে কারিগররা তৈরী করল। তারা মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুযায়ী হারোণের জন্য বিশেষ পোশাক তৈরী করল।
এফোদ
২. তারা মিহি শনের কাপড়, সোনার জরি, নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে এফোদ তৈরী করল।
৩. তারা সোনা পিটিয়ে সরু পাত তৈরী করে তারপর তা থেকে সোনার জরি বানাল। তারপর তারা সেই সোনার জরি নীল, বেগুনী, লাল সুতো ও শনের কাপড়ের সাথে একসাথে বুনল। এটা খুবই দক্ষ কারিগরের কাজ।
৪. তারা এফোদের জন্য কাঁধের কাপড় বানাল যেটা এফোদের দুই কোনে বেঁধে দেওয়া হল।
৫. তারা কোমর বন্ধনী বুনে এফোদের সাথে জুড়ে দিল। মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুযায়ী এটাও এফোদের মতই মিহি শনের কাপড় নীল, বেগুনী ও লাল সুতো এবং সোনার জরি দিয়ে বোনা হল।
৬. কারিগররা এফোদের জন্য সোনার ওপর গোমেদ বসালো। তারা ঐ পাথরগুলোর ওপর ইস্রায়েলের পুত্রদের নাম খোদাই করল।
৭. তারপর তারা এই মণিগুলো এফোদের ওপর বসিয়ে দিল। এই অলংকারগুলি ইস্রায়েলের লোকদের জন্য একটি স্মারক হয়ে থাকবে। এসবই করা হয়েছিল মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুসারে।
বক্ষাবরণ
৮. তারপর তারা বক্ষাবরণ তৈরী করল। ঠিক এফোদের মতোই এটাও ছিল একজন দক্ষ কারিগরের কাজ। এটা তৈরী করা হল সোনার জরি, মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল কাপড় দিয়ে।
৯. বক্ষাবরণটিকে অর্ধেক করে ভাঁজ করে চারকোণা একটি পকেটের আকার দেওয়া হল। এটা ছিল ৯ ইঞ্চি লম্বা আর ৯ ইঞ্চি চওড়া।
১০. তারপর কারিগররা বক্ষাবরণটির ওপর চার সারি মণিমাণিক্য বসালো। প্রথম সারিতে ছিল চূনী, পীতমণি ও মরকত।
১১. দ্বিতীয় সারিতে ছিল পদ্মরাগ, নীলকান্ত ও পান্না,
১২. তৃতীয় সারিতে ছিল পোখরাজ, যিস্ম ও কটাহেলা।
১৩. চতুর্থ সারিতে ছিল বৈদুর্য্য, গোমেদ ও সূর্যকান্তমণি। এইসব মণি সোনার ওপর বসানো হল।
১৪. বক্ষাবরণটির ওপর মোট বারোটি মণি ছিল। ইস্রায়েলের প্রত্যেক পুত্রের জন্য ছিল একটি করে মণি। প্রত্যেক অলঙ্কারের ওপর শীলমোহরের মতো ইস্রায়েলের বারোটি পরিবারগোষ্টীর একটি করে নাম খোদাই করা ছিল।
১৫. কারিগররা বক্ষাবরণের জন্য খাঁটি সোনার শেকলসমূহ বানালো। এই শেকলগুলি দড়ির মত পাকানো ছিল।
১৬. কারিগররা দুটি সোনার আংটা বানিয়ে বক্ষাবরণের দুই কোণে আটকে দিল। তার কাঁধের জন্য দুটি সোনার স্থালীও তৈরী করল।
১৭. তারা সোনার চেন দুটিকে বক্ষাবরণের কোণের আংটার সাথে বেঁধে দিল।
১৮. তারা আরো দুটি সোনার আংটা বানিয়ে বক্ষাবরণের অপর দুটি কোণে আটকে দিল। এটা ছিল বক্ষাবরণের ভিতরের দিকে এফোদের ঠিক পরেই। তারা সোনার শেকলের অপর প্রান্তগুলি সামনের দিক দিয়ে এফোদের কাঁধের পট্টির সোনার অলঙ্কারের সঙ্গে যুক্ত করেছিল।
১৯. তারপর তারা আরো দুটি সোনার আংটা তৈরী করল এবং সেগুলি এফোদের পাশে বক্ষাবরণের ভেতরদিকের ধারে আটকে দিল।
২০. তারা আরো দুটি সোনার আংটা বসাল কাঁধের পট্টির নীচে এফোদের সামনে। এই আংটাগুলি ছিল বন্ধনীর কাছে, কোমরবন্ধনীর ওপর।
২১. তারপর তারা একটি নীল ফিতের সাহায্যে বক্ষাবরণীর আংটার সাথে এফোদের আংটা বেঁধে দিল। এইভাবে প্রভুর আদেশ অনুযায়ী বক্ষাবরণটি এফোদের সাথে শক্তভাবে বাঁধা থাকল।
যাজকদের অপর পোশাক
২২. তারপর তারা এফোদের জন্য সম্পূর্ণরূপে নীল কাপড় দিয়ে একটি পোশাক বুনল।
২৩. তারা আলখাল্লার মাঝখানে একটি ফুটো করল এবং এই ফুটোর চারধার দিয়ে এক টুকরো কাপড় সেলাই করে দিল, ফুটোটি যাতে না ছেঁড়ে তার জন্য।
২৪. তারপর তারা মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে বেদানা তৈরী করল। এই বেদানাগুলি তারা আলখাল্লার নীচের ধারে ঝুলিয়ে দিল।
২৫. তারা খাঁটি সোনার ঘন্টা তৈরী করল এবং সেগুলি আলখাল্লার নীচের ধারে বেদানার মাঝে মাঝে লাগিয়ে দিল।
২৬. আলখাল্লার নীচের ধারে প্রত্যেকটি বেদানার মাঝখানে একটি করে ঘন্টা লাগানো হল। মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশমতই প্রভুর সেবা করার সময় যাজকের পরার জন্য পোষাক তৈরী করা হল।
২৭. দক্ষ কারিগররা হারোণ ও তার পুত্রদের জন্য মিহি শনের কাপড়ের জামা তৈরী করল।
২৮. তারা মিহি শনের কাপড় দিয়ে একটি পাগড়ি, মাথায় বাঁধার ফিতে ও ভেতরে পরার পোশাক তৈরী করল।
২৯. মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশমতো তারা মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো দিয়ে কাপড়ের ওপর সুঁচের কাজ করে বন্ধনী তৈরী করল।
৩০. তারপর তারা খাঁটি সোনা থেকে সোনার পাত তৈরী করল পবিত্র মুকুটের জন্য। তারা সোনার ওপর এই কথাগুলি খোদাই করল; ‘পবিত্র প্রভুর কাছে।’
৩১. তারপর তারা এই সোনার পাতটিকে একটি নীল ফিতের সঙ্গে বেঁধে দিল। তারা মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ অনুসারে নীল ফিতেটিকে পাগড়ির সঙ্গে জড়িয়ে বেঁধে দিল।
মোশির দ্বারা পবিত্র তাঁবুর পর্যবেক্ষণ
৩২. অবশেষে পবিত্র তাঁবু বা সমাগম তাঁবুর কাজ শেষ হল। মোশিকে প্রভু যা যা আদেশ দিয়েছিলেন ইস্রায়েলবাসী ঠিক সেইভাবেই সবকিছু করল।
৩৩. তারপর তারা মোশিকে ডেকে পবিত্র তাঁবু ও তার ভেতরের সব জিনিস দেখাল। তারা মোশিকে আংটা, কাঠামো, আগল, খুঁটি এবং পায়া দেখাল।
৩৪. তারা তাকে তাঁবুর লাল রঙ করা মেষের চামড়ার তৈরী আবরণ দেখাল। তারা তাকে মসৃণ চামড়ার তৈরী আবরণও দেখাল। তাকে সর্বোচ্চ পবিত্রতম স্থানের প্রবেশ দরজার পর্দাও দেখানো হল।
৩৫. মোশিকে সাক্ষ্য সিন্দুকটিও দেখানো হল। সিন্দুকটি বহন করার জন্য খুঁটি ও সিন্দুকটির আবরণও তারা দেখাল।
৩৬. তারা তাকে টেবিল ও তার উপরে রাখা জিনিস এবং বিশেষ রুটিও দেখাল।
৩৭. তারা তাকে খাঁটি সোনার তৈরী দীপদান ও তার দীপগুলিও দেখাল। তারা দীপের জন্য ব্যবহৃত তেল ও দীপের আনুষঙ্গিক অংশগুলিও দেখাল।
৩৮. মোশিকে সোনার বেদী, অভিষেকের তেল, সুগন্ধী ধূপ-ধূনা এবং তাঁবুর প্রবেশ দরজার পর্দাও দেখানো হল।
৩৯. তারা পিতলের বেদী ও পিতলের খুরা দেখাল। তারা বেদী বহন করার খুঁটি ও বেদীতে ব্যবহার্য সব জিনিস দেখাল। পাত্র এবং পাত্রের পায়াও দেখাল।
৪০. তারা মোশিকে প্রাঙ্গণের চারিদিকের পর্দা, তার খুঁটি এবং পায়াও দেখাল। প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজার পর্দা, দড়ি, তাঁবুর খুঁটি এবং পবিত্র তাঁবু বা সমাগম তাঁবুর সমস্ত কিছুই মোশিকে দেখানো হল।
৪১. তারা পবিত্র স্থানে সেবার জন্য যাজকদের পোশাক, হারোণ এবং তার পুত্রদের জন্য তৈরী বিশেষ পোশাক মোশিকে দেখাল। এই পোশাক হারোণের পুত্ররা যাজকের কাজ করার সময় পরবে।
৪২. ইস্রায়েলবাসীরা মোশিকে দেওয়া প্রভুর আদেশ মতোই সমস্ত কাজ করেছিল।
৪৩. মোশি সবকিছু ভাল করে পর্যবেক্ষণ করে দেখল যে সবকিছুই হুবহু প্রভুর আদেশ মতোই হয়েছে। তাই মোশি তাদের আশীর্বাদ করল।