১. “অতএব বৎসলেল, অহলীয়াব ও অন্যান্য সব দক্ষ কারিগরদের অবশ্যই প্রভুর আদেশ অনুসারে কাজটি করতে হবে। প্রভু এদের জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়েছেন যাতে এরা পারদর্শিতার সঙ্গে পবিত্র স্থান তৈরীর কাজ করতে পারে।”

২-৩. তারপর মোশি বৎসলেল, অহলীয়াব এবং যেসব লোকদের প্রভু বিশেষ দক্ষতা দিয়েছিলেন তাদের ডেকে ইস্রায়েলবাসীদের আনা উপহার সামগ্রীগুলি তাদের হাতে তুলে দিল। এই সব লোকরা পবিত্র স্থান তৈরীর কাজে সাহায্য করার জন্যই এসেছিল এবং তারা এই উপহারগুলি ঈশ্বরের পবিত্র স্থান তৈরীর কাজে লাগাল। লোকরা প্রত্যেক দিন সকালেই উপহার নিয়ে আসত।

৪. শেষকালে ঐসব কারিগররা পবিত্র স্থানের কাজ ছেড়ে মোশির কাছে এল। তারা বলল,

৫. “আমাদের তাঁবুর কাজ শেষ করার জন্য যা প্রযোজন তার চেযে লোকরা অনেক বেশী জিনিস এনেছে।”

৬. তখন মোশি শিবিরের চারদিকে খবর পাঠাল: “কোনও নারী বা পুরুষ পবিত্র স্থানের জন্য আর কোনও উপহার তৈরী করবে না।” তাই লোকদের উপহার না দিতে বাধ্য করা হল।

৭. তারা প্রয়োজনের চেযে অনেক বেশী জিনিস এনেছিল।

৮. তারপর দক্ষ কারিগররা পবিত্র তাঁবু তৈরী করবার কাজ আরম্ভ করল। তারা মিহি শনের কাপড়, বেগুনী, নীল ও লাল সুতো দিয়ে দশটি পর্দা তৈরী করল। তারা তার ওপর সূতো দিয়ে ঈশ্বরের বিশেষ ডানাযুক্ত করূব দূতের ছবি বসাল।

৯. প্রত্যেকটি পর্দাই ছিল সমান মাপের – ২৮ হাত লম্বা ও ৪ হাত চওড়া।

১০. তারপর কারিগররা সেই পর্দাগুলি জুড়ে দুভাগে ভাগ করল। পাঁচটি করে পর্দা নিয়ে একেকটি ভাগ হলো।

১১. তারা নীল কাপড় দিয়ে প্রত্যেক ভাগের পর্দার কিনারায় একটি ফাঁস তৈরী করল।

১২. প্রতিটি ভাগের পর্দার ধারে ৫০টি করে ফাঁস দিল। ফাঁসগুলি ছিল একে অপরের বিপরীতে।

১৩. তারা দুটি পর্দাকে জোড়া দেবার জন্য ৫০টি সোনার আংটা তৈরী করল। এইভাবে পবিত্র তাঁবুটিকে একসঙ্গে একটি খণ্ডে যুক্ত করা হল।

১৪. তারপর কারিগররা সেই পবিত্র তাঁবুর আচ্ছাদনের জন্য আরেকটি তাঁবু তৈরী করল। তারা ছাগলের লোম দিয়ে এগারোটি পর্দা বানাল।

১৫. সবগুলি পর্দাই ছিল সমান মাপের – ৩০হাত লম্বাও ৪ হাত চওড়া।

১৬. তারপর পাঁচটি পর্দা জুড়ে একটি ও ছয়টি পর্দা জুড়ে আরেকটি ভাগ করা হল।

১৭. দুই ভাগের পর্দার মাঝেই ৫০টি করে ফাঁস লাগানো হল।

১৮. দুই ভাগের পর্দাগুলি জুড়ে একটি তাঁবু বানানোর জন্য তারা ৫০টি পিতলের আংটা তৈরী করল।

১৯. তারপর তারা পবিত্র তাঁবুর জন্য আরো দুটি আচ্ছাদন তৈরী করল। একটি বানানো হলো লাল রঙ করা ভেড়ার চামড়া দিয়ে আর অন্যটি বানানো হল মসৃণ চামড়া দিয়ে।

২০. তারপর কারিগররা পবিত্র তাঁবুকে দাঁড় করানোর জন্য বাবলা কাঠের কাঠামো বানালো।

২১. প্রতিটি কাঠামো ছিল ১০ হাত লম্বা ও ১.৫ হাত চওড়া।

২২. প্রতিটি কাঠামো পাশাপাশি দুটি তক্তা জোড়া দিয়ে তৈরী হয়েছিল। প্রতিটি কাঠামো ছিল একই রকম।

২৩. এইভাবে তারা পবিত্র তাঁবুর কাঠামোগুলো তৈরী করল। তারা পবিত্র তাঁবুর দক্ষিণ দিকের জন্য ২০টি কাঠামো তৈরী করল।

২৪. তারপর ঐ কাঠামোর জন্য ৪০টি রূপোর পায়া তৈরী করল। প্রত্যেকটি কাঠামোতে দুটি করে পায়া ছিল। প্রতিটি তক্তার ধারে একটি করে পায়া।

২৫. তাঁবুর উত্তর দিকের জন্যও তারা ২০টি কাঠামো তৈরী করল।

২৬. তারা ৪০টি রূপোর ভিত্তি তৈরী করল, প্রত্যেক কাঠামোর জন্য দুটি করে ভিত্তি।

২৭. তাঁবুর পিছনে পশ্চিম দিকের জন্য তারা আরো দুটি কাঠামো তৈরী করল।

২৮. পবিত্র তাঁবুর পিছনে কোনার দিকের জন্যও তারা দুটি কাঠামো তৈরী করল।

২৯. এই কাঠামোগুলিকে একত্র করে নীচের দিকে জোড়া দেওয়া হল এবং ওপর দিকে একটা আংটা দিয়ে দুদিকের কোনার কাঠামোগুলি জোড়া হল।

৩০. পবিত্র তাঁবুর পশ্চিম দিকের জন্য মোট আটটি কাঠামো ছিল। সেখানে ১৬টি রূপোর পায়াও ছিল যা প্রতিটি কাঠামোতে দুটি করে লাগানো হল।

৩১. তারপর কারিগররা বাবলা কাঠ দিয়ে কাঠামোর আগল তৈরী করল। তাঁবুর প্রথম পাশে পাঁচটি আগল,

৩২. অন্য দিকে পাঁচটি আগল লাগালো এবং পেছনদিকে অর্থাৎ পশ্চিম দিকে পাঁচটি আগল লাগালো।

৩৩. মাঝের আগলটিকে রাখা হল কাঠামোর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত জুড়ে।

৩৪. কাঠামোগুলিকে সোনায মুড়ে দেওয়া হল। তারপর তারা সোনার আংটা তৈরী করল আগলগুলি ধরে রাখার জন্য এবং আগলগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল।

৩৫. তারা মিহি শনের কাপড় দিয়ে পর্দাসমূহ তৈরী করল এবং তারা বিশেষ পর্দাটি তৈরী করবার জন্য নীল, বেগুনী ও লাল সূতো তৈরী করল। তারা সেগুলোর ওপর করূব দূতদের চেহারা সেলাই করল।

৩৬. চারটি বাবলা কাঠের খুঁটি বানিয়ে সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। তারা খুঁটির জন্য সোনার আংটা তৈরী করল এবং চারটি করে রূপোর পায়া তৈরী করল।

৩৭. তারপর তারা তাঁবুতে ঢোকার জন্য দরজার পর্দা বানাল মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতা ব্যবহার করে। এর ওপর তারা সুতার কাজও করল।

৩৮. তারপর তারা এই ঢোকার দরজার পর্দার জন্য পাঁচটি খুঁটি ও আংটা তৈরী করল। তারপর এই খুঁটির ও পর্দার আংটার মাথাগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। তারপর খুঁটির জন্য পাঁচটি করে পিতলের পায়া প্রস্তুত করা হল।

error: Content is protected !!