মিশরে যাকোবের পরিবার

১. যাকোব তাঁর পুত্রদের নিয়ে মিশরের পথে চললেন। পুত্রদের সঙ্গে তাদের নিজ নিজ পরিবারও ছিল। ইস্রায়েলের পুত্ররা হল:

২. রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা

৩. ইষাখর, সবূলূন, বিন্যামীন,

৪. দান, নপ্তালি, গাদ এবং আশের।

৫. যাকোবের সবশুদ্ধ ৭০ জন উত্তরপুরুষ ছিল। যোষেফ তাঁর বারোজন পুত্রের একজন, কিন্তু সে আগে থেকে মিশরে ছিল।

৬. পরে যোষেফ তাঁর ভাইরা এবং ঐ প্রজন্মের প্রত্যেকেই মারা গেলেও

৭. ইস্রায়েলের লোকদের অসংখ্য সন্তান ছিল। তাদের লোকসংখ্যা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে গিয়েছিল। ফলস্বরূপ মিশর দেশটি ইস্রায়েলীয়তে ভরে গিয়েছিল।

ইস্রায়েল লোকেদের সমস্যা

৮. সেই সময় একজন নতুন রাজা মিশর শাসন করতে লাগলেন। এই রাজা যোষেফকে চিনতেন না।

৯. রাজা তাঁর প্রজাদের উদ্দেশ্যে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের দিকে চেয়ে দেখ, ওরা সংখ্যায় অসংখ্য এবং আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী!

১০. তাদের শক্তিবৃদ্ধি বন্ধ করবার জন্য আমাদের কিছু একটা চতুরতার সাহায্য নিতেই হবে। কারণ, এখন যদি যুদ্ধ লাগে তাহলে ওরা আমাদের পরাজিত করবার জন্য ও আমাদের দেশ থেকে বের করে দেবার জন্য আমাদের শত্রুদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে।”

১১. মিশরের লোকরা তাই ইস্রায়েলের লোকদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার ফন্দি আঁটল। অতএব ইস্রায়েলীয়দের তত্ত্বাবধান করবার জন্য মিশরীয়রা ক্রীতদাস মনিবদের নিয়োগ করল। এই দাস শাসকরা ইহুদীদের দিয়ে জোর করে রাজার জন্য পিথোম ও রামিষেষ নামে দুটি শহর নির্মাণ করাল। এই দুই শহরে রাজা শস্য এবং অন্যান্য জিনিসপত্র মজুত করে রাখলেন।

১২. মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল। কিন্তু তাদের যত বেশী কঠিন পরিশ্রম করানো হতে থাকল ততই ইস্রায়েলের লোকদের সংখ্যাবৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটতে থাকল। ফলে মিশরীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের আরও বেশী ভয় পেতে শুরু করল।

১৩. আর সেইজন্য তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি আরও বেশী নির্দয হয়ে উঠল। ফলস্বরূপ মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের আরো কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল।

১৪. মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের জীবন দুর্বিসহ করে তুলল। তারা ইস্রায়েলীয়দের ইঁট তৈরি করবার জন্য গাদা গাদা ভারী ঢালাই এর মিশ্রণ বহন করতে এবং মাঠে লাঙল চালাতে বাধ্য করেছিল। তারা ইস্রায়েলীয়দের সব রকমের কঠিন কাজ করতে বাধ্য করেছিল।

ঈশ্বরকে অনুসরণকারী ধাইমাগণ

১৫. ইস্রায়েলীয় মহিলাদের সন্তান প্রসবে সাহায্য করবার জন্য দুজন ধাইমা ছিল। তাদের দুজনের নাম ছিল শিফ্রা ও পূয়া।

১৬. স্বয়ং রাজা এসে সেই দুই ধাইমাকে বললেন, “দেখছি তোমরা বরাবর হিব্রু মহিলাদের সন্তান প্রসবের সময় সাহায্য করে চলেছে। দেখ, যদি কেউ কন্যা সন্তান প্রসব করে তাহলে ঠিক আছে, তাকে বাঁচিয়ে রেখ, কিন্তু পুত্র সন্তান হলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে হত্যা করবে।”

১৭. কিন্তু ধাইমা দুজন ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে রাজার আদেশ অমান্য করে পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখল।

১৮. রাজা এবার তাদের ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা এটা কি করলে? কেন তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ এবং পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রেখেছ?”

১৯. ধাইমারা রাজাকে বলল, “হে রাজা, ইস্রায়েলীয় মহিলারা মিশরের মহিলাদের থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী। আমরা তাদের সাহায্যের জন্য পৌঁছাবার আগেই ইস্রায়েলীয় মহিলারা সন্তান প্রসব করে ফেলে।”

২০-২১. ঈশ্বর ঐ ধাইমাদের এই আচরণে খুশী হলেন। তাই ঈশ্বর ধাইমাদের আশীর্বাদ করলেন এবং তাদের নিজেদের পরিবার বানাতে দিলেন। ইস্রায়েলীয়রা সংখ্যায় আরও বাড়তে থাকল এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল।

২২. পরে ফরৌণ নিজস্ব লোকদের আদেশ দিলেন, “তোমরা কন্যা সন্তান বাঁচিয়ে রাখতে পারো। কিন্তু পুত্র সন্তান হলে তাকে নীলনদে ছুঁড়ে ফেলতে হবে।”

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x