কবীর চৌধুরী
সব ধর্মের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত মানবকল্যাণের ধারণা, শান্তি ও সম্প্রীতি, পরহিতব্রত। সেই আদিকাল থেকে পৃথিবীর তাবৎ ধর্মপ্রচারকরা জোর দিয়েছেন শান্তি, ভালবাসা, সেবা ও পরোপকারের উপর, আদেশ দিয়েছেন মানুষে মানুষে মিলন, সৌহার্দ্য ও সহিষ্ণুতার উপর, সঙ্কীর্ণতা ও বিভেদের উপর নয়, ঔদার্য ও মৈত্রীর উপর, আদেশ দিয়েছেন হিংসা ও দ্বেষ, লোভ ও সহিংসতা পরিহার করতে । তারা গুরুত্ব আরোপ করেছেন মানুষে মানুষে মিলন, সৌহার্দ্য ও সহিষ্ণুতার উপর, সঙ্কীর্ণতা ও বিভেদের উপর নয়, ঔদার্য ও মৈত্রীর উপর ।
সব ধর্মেই কিছু পালনীয় প্রথা ও আচার আছে, কিছু আনুষ্ঠানিকতা আছে । এগুলির সার্থকতা ধর্মের প্রাণকে উজ্জল ও শক্তিশালী করার মধ্যে নিহিত। আচার অনুষ্ঠানকে মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব দিলে, ধর্মের আচার অনুষ্ঠান পালনই সব চাইতে জরুরি এই ধারণাকে প্রাধান্য ও অগ্রাধিকার দিলে, ধর্মকর্ম নিষ্প্রাণ ও যান্ত্রিক হয়ে পড়ে ।
তখন আর ধর্ম সব মানুষের জন্য কাজ করে না, ধর্ম সীমিত হয়ে পড়ে একটা গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মধ্যে, মিলনের চাইতে বিভেদের কথাই তখন বড় হয়ে ওঠে, এবং সম্প্রীতির পরিবর্তে তখন সহিংসতাই মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সব চাইতে ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যখন রাষ্ট্রীয় শক্তি এর মধ্যে নাক গলায়, ব্যক্তি মানুষের ধর্ম পালন বা না পালন করার উপর খবরদারি করার অধিকার ও দায়িত্ব যখন রাষ্ট্র নিজের উপর টেনে নেয়। মধ্যযুগে এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটিই ঘটেছিল। অবশ্য পাশ্চাত্য জগতে তখন চার্চই ছিল সর্বশক্তিমান, চার্চের সংজ্ঞার মধ্যেই রাষ্ট্র অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং জাগতিক ও আধ্যাত্মিক উভয় অঙ্গনেই চার্চের ক্ষমতা ছিল সর্বব্যাপী ও চূড়ান্ত ।
ধর্মীয় অন্ধত্ব, অসহিষ্ণুতা ও গোঁড়ামি মধ্যযুগের ইউরোপে এক বিভীষিকাময় পরিবেশের জন্ম দিয়েছিল। সপ্তদশ শতাব্দীতে সেখানে খ্রিষ্টিয় ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই প্রোটেস্টান্ট ও ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের মানুষ একে অন্যের বিরুদ্ধে ত্রিশ বৎসরব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল। মধ্যযুগে সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ধর্মকে শাসনের অন্যতম হাতিয়ার রূপে ব্যবহার করা হয়। রোমান ক্যাথলিক চার্চের সমর্থনে সকল রকম মুক্ত চিন্তাকে অঙ্কুরেই ধ্বংস করার লক্ষ্যে এবং রাজার যাবতীয় স্বৈরাচারী কার্যকলাপকে বৈধতা দানের জন্য তখন ইউরোপে অমানবিক ব্লাসফেমি আইনের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। চার্চের একমুখী বাধ্যতামূলক মতবাদ ও শিক্ষার বিরুদ্ধে যেই প্রশ্ন তুলতো তাকেই ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে পুড়িয়ে মারা হত। ১২১৫ সালে গঠিত ইনক্যুইজিশান আদালত এই কাজটিই করে। অসামান্য সাহসী দেশপ্রেমিক ফরাসী তরুণী জোন অব আর্ক নিজের বিবেকের নির্দেশ উপেক্ষা করে ধর্মযাজকদের এক তরফা রায়কে মেন নেননি, ফলে তাকে নির্মমভাবে বেঁধে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। ওইভাবেই হত্যা করা হয় ১৬০০ সালে বিজ্ঞানী ব্রুনোকে, এবং ব্রুনোর পর গ্যালিলিও-ও শিকার হন ওই ব্লাসফেমি আইনের, যদিও সুচতুর আপসকামিতার সাহায্যে তিনি কোন রকমে বেঁচে যান ! ধর্মকে ব্যক্তিগত কর্মের ঊর্ধ্বে তুলে তাকে রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কিত করলে নানা রকম বিপত্তির সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিরা তখন নিজেদের স্বার্থে ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় দেন এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষদের ধর্ম ও সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে বিভক্ত করে তাদের মধ্যে হিংসাত্মক ভেদবুদ্ধি জাগিয়ে তুলে রক্তাক্ত সংঘর্ষের পথ সুগম করেন। মধ্যযুগে এ অবস্থা সবচাইতে বেশি ক্রিয়াশীল ছিল, কিন্তু তারপরেও এটা অবলুপ্ত হয়নি, এবং আজও বহু স্থানে এর উপস্থিতি আমরা লক্ষ্য করি। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় ধর্ম রূপে একটি বিশেষ ধর্মের ঘোষণা ও স্বীকৃতি দান মধ্যযুগের দিকে মুখ ফেরানোরই সামিল। অবশ্য সাধারণভাবে বর্তমান বিশ্বে ধর্মকে এখন রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে আলাদা করেই দেখা হয়, প্রতিটি মানুষ যেন স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী তার ধর্মমত ও পথ অনুসরণ করতে পারে, অন্য কেউ যেন তাতে বাধা না দেয়, শুধু এটুকু সুনিশ্চিত করাই আজ রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
আমরা আজকের বাংলাদেশে দেখছি ধর্মের চরম অপব্যবহার। একদিকে কতিপয় রাজনীতিক দল ও ব্যক্তি ধর্মকে হাতিয়ার করে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে, অন্যদিকে মৌলবাদী ধর্মান্ধ কিছু গোষ্ঠী ও ব্যক্তি ফতোয়াবাজিসহ নানা কুকর্ম দাপটের সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে। সংগঠিত সম্প্রদায়ভিত্তিক এইসব তথাকথিত ধার্মিক মানুষেরা ধর্মের প্রাণকে হরণ করে নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আজ দেশকে অসহনীয় অবস্থায় নিয়ে এসেছে। অথচ ইতিহাস ও ঐতিহ্যগত দিক থেকে বাংলাদেশ একটি উদার ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী সংস্কৃতির দেশ । আমরা চণ্ডীদাস, লালন, হাসন রাজা, রমেশ শীল, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলেল ঐতিহ্যে লালিত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ও পরবর্তী পাকিস্তানি নয়া-ঔপনিবেশিক শাসন- শোষণের যুগে সুপরিকল্পিতভাবে ওই মানবতাবাদী চেতনা ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা হয়েছিল তখন অনেক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামাও হয়েছে ।
বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমাদের জীবনের বিশেষ গৌরবোজ্জ্বল দুটি ঘটনা হল ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধই চূড়ান্ত।
কিন্তু অনিবার্য মুক্তিযুদ্ধের দিকে আমরা এগিয়ে গেছি ধাপে ধাপে। অলীক রাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টির অল্প দিনের মধ্যেই এ অঞ্চলের মানুষ উপলব্ধি করে যে শুধু ধর্ম নিয়ে একটা জাতি গড়ে ওঠে না এবং দ্বিজাতিতত্ত্ব একটা অগ্রহণযোগ্য অসার তত্ত্ব।
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এদেশের মানুষের মনে ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনাকে দৃঢ় করে তুলেছিল। স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশে আমরা তাই স্বাভাবিকভাবেই ধর্মনিরপেক্ষতাকে পেলাম আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল নীতি রূপে। সংবিধানে আরও তিনটি জাতীয় মূল নীতির কথা লিপিবদ্ধ হল : জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। কিন্তু দেশের কিছু প্রতিক্রিয়াশীল স্বার্থপর কুচক্রী ব্যক্তি এই নীতিগুলি আন্তরিকভাবে মেনে নিতে পারেনি। বস্তুতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেই তারা আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করতে পারেনি। তারা একটা প্রতিবিপ্লব সংগঠিত করার জন্য সুযোগের অপেক্ষা করছিল। সেই কাজটি তারা করল ১৯৭৫-এর আগস্টে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে।
জাতির পিতাকে হত্যা করার পর থেকে দেশকে সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের সকল ইতিবাচক মূল্যবোধে বর্জিত করার অপচেষ্টা চলছে। যে বাঙালিত্বের চেতনা স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রেরণার উৎস ছিল (স্মরণ করুন এই সব স্লোগান : জেগেছে জেগেছে বাঙালি, অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা, জয় বাংলা) তাকে ধূসর, ম্লান ও অর্থহীন করার লক্ষ্যে আমদানি করা হল উদ্ভট বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের তত্ত্ব, যা প্রকৃত পক্ষে মুসলিম সাম্প্রদায়িক ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদেরই ছদ্মবেশী রূপ। ধর্মনিরপেক্ষতা সরাসরি নির্বাসিত হল সংবিধান থেকে। প্রথমে জেনারেল জিয়ার, তারপর জেনারেল এরশাদের এবং তারপর খালেদা জিয়ার সরকার বাঙালিত্বের চেতনাকে ধ্বংস করতে, ধর্মান্ধতাকে প্রশ্রয় দিতে, অর্থনীতির ক্ষেত্রে ধনীকে আরও ধনী ও দরিদ্রকে আরও দরিদ্র করার প্রক্রিয়া এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আচার আচরণকে ছলেবলে কৌশলে নস্যাৎ করে স্বৈরাচারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার কাজে সোৎসাহে ব্ৰতী হল। আজ বাংলাদেশের চতুর্দিকে মৌলবাদ ও ধর্মান্ধতার বিকাশ ঘটে চলেছে ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায়। মৌলবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার অপরিহার্য সঙ্গী হিসেবে আমরা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থানে আজ দেখতে পাই নিষ্ঠুর পেশীশক্তি এবং হিংস্র সহিংসতার অবিশ্বাস্য বিস্তার। স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি তাদের রাজনৈতিক দল ও ছাত্রসংগঠন নিয়ে আজ সন্ত্রাসকে একটা সংস্কৃতি ও জীবন দর্শনে পরিণত করেছে। অতি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে হত্যা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে। ছিনতাই রাহাজানি ধর্ষণ সম্পদ ধ্বংস ইত্যাদির কথা নাই বললাম। অথচ সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন। প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ক্ষমতায় আবারো দীর্ঘকাল থেকে বাংলাদেশকে একটি মধ্যযুগীয় থিওক্র্যাটিক রাষ্ট্রে পাকাপাকিভাবে রূপান্তরিত করার জন্য তারা বদ্ধপরিকর। কিন্তু এটা কিছুতেই হতে দেয়া চলে না । মুক্তিযুদ্ধে বিপুল ত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ মানবিকতার জয় ধ্বজা উড়িয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, তাকে ধর্মান্ধতার ঘূর্ণিঝড়ে কিছুতেই ছিন্নভিন্ন হতে দেয়া চলবে না। একদা যে সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিসমূহ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধিতা করেছিল, যারা আমাদের জাতীয়তাবাদের অন্যতম উৎস বাঙালি সংস্কৃতিকে কখনো অন্তর থেকে স্বীকার করে নেয়নি, সর্বদা যারা তাকে একটি বিজাতীয় হিন্দু সংস্কৃতিরূপেই দেখেছে সেই প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিবিপ্লবী শক্তিসমূহই নিজেদের হীন স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে মিথ্যাচার, ইতিহাস বিকৃতিকরণ, ভণ্ডামি ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে সর্বব্যাপী ধ্বংস ও বিরোধের বীজ বপন করে চলেছে। এর বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম চালিয়ে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক প্রগতিশীল রাষ্ট্ররূপে গড়ে তুলতে হবে, যেখানে ধর্ম হবে মানুষের জন্য, সর্বমানুষের কল্যাণের জন্য, যেখানে মানুষ হবে না ধর্মের নামে স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার, মানুষ হবে না মৌলবাদী ধর্মান্ধদের হাতের পুতুল । আমরা বাংলাদেশকে একটি যথার্থ অসাম্প্রদায়িক মানুষের দেশ হিসেবে দেখতে চাই । অসাম্প্রদায়িক মানুষ যান্ত্রিকভাবে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা পালনকে গুরুত্ব দেয় না, সে গুরুত্ব দেয় মানুষের ধর্মকে, যে ধর্মে মানুষের হৃদয়ই হচ্ছে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যে হৃদয় সম্পর্কে নজরুল বলেছেন-
‘এইখানে এসে লুটাইয়া পড়ে সকল রাজমুকুট
এই হৃদয়ই সেই নীলাচল, কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন,
বুদ্ধগয়া এ, জেরুজালেম এ, মদিনা, কাবাভবন,
মসজিদ এই, মন্দির এই, গির্জা এই হৃদয়।’
আমাদের মনে পড়ে টমাস পেইনের (১৭৩৭-১৮০৯) কথা। কত আগে তিনি লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি অদ্বিতীয় ঈশ্বরে, তার বেশি কিছু নয়- আমি বিশ্বাস করি মানুষের সাম্যে, এবং বিশ্বাস করি যে ন্যায়বিচার, মমতা, দয়া দাক্ষিণ্য এবং আমাদের সঙ্গী মানুষদের সুখী করার প্রয়াসের মধ্যেই ধর্মীয় কর্তব্যসমূহ নিহিত- আমার হৃদয়ই আমার চার্চ’ ।
এটাই মানুষের ধর্ম। সত্যিকার ধর্ম। একজন মানুষ যখন তার নিজস্ব সম্প্রদায়ভিত্তিক ধর্ম পালনের সঙ্গে সঙ্গে এই মানবধর্মও পালন করে তখনই ধর্ম হয়ে ওঠে মানুষের জন্য ।
মানবধর্মকে উপেক্ষা করে শুধু সম্প্রদায়ভিত্তিক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করলে মানুষ আর যথার্থ মানুষ হয়ে ওঠে না, তখন আর আমরা মানুষের জন্য ধর্মের কথা ভাবি না, ভাবি যে ধর্মের জন্যই বুঝি মানুষ বিজ্ঞান বাংলাদেশের দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের মনের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা সুদৃঢ়ভাবে প্রোথিত করা অত্যাবশ্যক। যত দ্রুত ও স্পষ্টভাবে সে উপলব্ধি করবে যে মানুষের জন্যই ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়, দেশ তত দ্রুত রাহুমুক্ত হবে।
প্রথম অধ্যায়ঃ যুক্তিবাদ মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্কতা
♦ মন্দের যুক্তি ও ঈশ্বরের অস্তিত্ব
♦ বিজ্ঞান মনস্কতা ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজনির্মাণ
♦ ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইন নিয়ে কূটকচাল
♦ ব্রুনোর আত্মত্যাগ ও যুক্তিবাদ
♦ ইহজাগতিকতা ও আরজ আলী মাতুব্বর- একজন যুক্তিবাদী দার্শনিক
♦ বাংলাদেশে চেতনা-মুক্তির লড়াই
♦ ইসলাম যেভাবে নিজের পথ থেকে সরে গেছে
♦ বিজ্ঞান, বিজ্ঞানমনস্কতা বনাম কোরানিক বিজ্ঞান
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ ধর্ম ও নৈতিকতা
♦ জীবিত ইসলামের মৃত গৌরবের কথা
♦ রামায়ণ কাহিনীর ঐতিহাসিকতা একটি একাডেমিক আলোচনা
♦ মানবতাভিত্তিক সংবিধান এবং অমানবিক বিধান
♦ ধর্মের উপযোগিতাঃ জনৈক বিবর্তনবাদীর দৃষ্টিতে
♦ ধর্মরাষ্ট্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম
♦ মানুষের জন্য ধর্ম, না ধর্মের জন্য মানুষ?
♦ বিজ্ঞান কি উপাসনা-ধর্মের প্রতিদ্বন্দ্বী
তৃতীয় অধ্যায়ঃ অন্যান্য প্রসঙ্গ
♦ হাইপেশিয়াঃ এক বিস্মৃতপ্ৰায় গণিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান
♦ শাশ্বত এথেন্সের নারী ও তার বিপর্যস্ত ধারাবাহিকতা
“স্বতন্ত্র ভাবনাঃ মুক্তচিন্তা ও বুদ্ধির মুক্তি” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ