একটি মানুষের শিশু বয়স থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত মানবিক গুণের ক্রমবিকাশের বিষয়ে উন্নততর দেশগুলোতে বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ওইসব দেশের মনোবিজ্ঞানী ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এখন স্বীকার করেই নিয়েছেন- মানুষের বংশগতি সূত্রে প্রাপ্ত অধিকাংশ বৈশিষ্ট্যই পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত। সেই কারণে “মানবিক গুণের বিকাশে কার প্রভাব বেশি- বংশগতি অথবা পরিবেশ?” এই জাতীয় শিরোনামের বিতর্কে ওসব দেশের বিজ্ঞানীরা আজকাল আর অবতীর্ণ হন না, এককালে যেমনটি হতেন। তবে এখনও এদেশের বহু চিকিৎসা বিজ্ঞানী বংশগতিকে অত্যধিক বা চূড়ান্ত গুরুত্ব দিতে গিয়ে আধুনিক বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যে সব তথ্য সংগ্রহ করেছেন তাকেই অস্বীকার করে বসেন, নাকচ করে দেন। এমনটা কারণ সম্ভবত, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজ-খবর না রাখা, এক সময় বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করার পর প্রতিষ্ঠা পেতেই নিশ্চল হয়ে যাওয়া।
বিজ্ঞানীরা কিন্তু বর্তমানে এই সিদ্ধান্তে পৌঁচেছেন, বিগত বহু হাজার বছরের মধ্যে মানুষের শারীরবৃত্তিক কোনও উল্লখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি।
এই কম্পিউটার যুগের
আধুনিক সমাজের মানব শিশুর
সঙ্গে বিশ হাজার বছর আগের ভাষাহীন,
কাঁচামাংসভোজী সমাজের মানব শিশুর
মধ্যে জিনগত বিশেষ কোনও
পার্থক্য ছিল না।
অর্থাৎ সেই আদিম যুগের মানব শিশুকে এ-যুগের অতি উন্নততর বিজ্ঞানে অগ্রবর্তী কোনও সমাজে বড় করতে পারলে, ওই আদিম যুগের শিশুটি আধুনিকতম উন্নত সমাজের গড় মানুষদের মতই বিদ্যে-বুদ্ধির অধিকারী হতো। হয়তো গবেষণা করত মহাকাশ নিয়ে অথবা সুপারকম্পিউটার নিয়ে, অর্থাৎ অনুকুল পরিবেশে শিশুকাল থেকে বেড়ে ওঠার সুযোগ পেলে এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকান দেশের নিরন্ন, হতদরিদ্র, মূর্খ মানুষগুলোও হতে পারে ইউরোপ, আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র বা জাপানের উন্নত প্রযুক্তি বিদ্যার মধ্যে গড়ে ওঠা মানুষগুলোর সমকক্ষ। অবশ্য ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের জন্য স্বাতন্ত্র্যতা নিশ্চয়ই থাকতো, যেমনটি এখনও থাকে।
বর্ণপ্রাধাণ্য, জাতিপ্রাধান্য, পুরুষপ্রাধান্য বজায় রাখতে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এক ধরনের প্রচার চালানো হয়, উন্নত দেশের উন্নতির মূলে রয়েছে তাদের বর্ণের, তাদের জাতির মেধাগত, বুদ্ধিগত উৎকর্ষতা ও বৈশিষ্ট্য। পুরুষরাও একইভাবে প্রচার করে নারীর চেয়ে তাদের মেধাগত, বুদ্ধিগত উৎকর্ষতার। বুদ্ধি মাপের নামে বুদ্ধ্যাংককে কাজে লাগিয়ে অনেক সাদা-চামড়াই প্রমাণ করতে চায় কালো চামড়ার তুলনায় তাদের মেধা ও বুদ্ধির উৎকর্ষতা। আবারও বলি এ যুগের বিজ্ঞানীরা কিন্তু যে বংশগতির তথ্য হাজির করেছেন, তাকে স্বীকার করলে বলতেই হয়, অনুকূল সুযোগ সুবিধে না পাওয়ার দরুনই নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষগুলো অনুকূলতার সুযোগ পাওয়া মানুষের মত মানবিক গুণগুলোকে বিকশিত করার সুযোগ পায়নি।
এ কথাও সত্যি সামান্য অনুশীলনেই কিন্তু বুদ্ধ্যাংক প্রচুর বাড়ানো সম্ভব- প্রজ্ঞা বা মেধাকে আদৌ না বাড়িয়েই।
রাশিয়ার শিক্ষাসংক্রান্ত আকাদেমির (Pedagogical Acedemy)-র পূর্ণ সদস্য এ পেট্টোভস্কি (A. Petrovosky)-র পঠিত প্রবন্ধ থেকে জানতে পারছি- স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগেই শিশুদের অনেক বিষয়ে বিশেষ শিক্ষাদানের কার্যক্রম রাশিয়ায় গ্রহণ করা হয়েছে যাতে বিস্ময়কর শিশু প্রতিভা সৃষ্টি করা যায়। দু-সপ্তাহের শিশুকে সাঁতার সেখান হচ্ছে, স্কুলে ঢোকার আগেই তিন মিটার স্প্রিং বোর্ড থেকে ডাইভিং শিখছে। অনুকূল সুযোগ অনেককেই বহুদূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যায়। অনেকে প্রতিভাকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করে পরিণত বয়সে।
পরিবেশকে আমরা প্রাথমিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি। একঃ প্রাকৃতিক পরিবেশ, দুইঃ সামাজিক পরিবেশ। মানব জীবনকে এই দুই পরিবেশই প্রভাবিত করে।
“অলৌকিক নয়,লৌকিক- ২য় খন্ড ” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ
♦ কিছু কথাঃ যুক্তিবাদ প্রসঙ্গে
একঃ ভূতের ভর
♦ ভূতের ভরঃ বিভিন্ন ধরন ও ব্যাখ্যা
♦ গুরুর আত্মার খপ্পরে জনৈকা শিক্ষিকা
♦ প্রেমিকের আত্মা ও এক অধ্যাপিকা
ভূতে পাওয়া যখন ম্যানিয়াস ডিপ্রেসিভ
♦ সবার সামনে ভূত শাড়ি করে ফালা
♦ গ্রামে ফিরলেই ফিরে আসে ভূতটা
♦ একটি আত্মার অভিশাপ ও ক্যারেটে মাস্টার
দুইঃ পত্র পত্রিকার খবরে ভূত
♦ ট্যাক্সিতে ভূতের একটি সত্যি কাহিনী ও এক সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক
♦ এক সত্যি ভূতের কাহিনী ও এক বিজ্ঞানী
♦ বেলঘরিয়ার গ্রীন পার্কে ভূতুরে বাড়িতে ঘড়ি ভেসে বেড়ায় শূন্যে
♦ দমদমের কাচ-ভাঙ্গা হল্লাবাজ-ভূত
তিনঃ যে ভূতুরে চ্যালেঞ্জের মুখে বিপদে পড়েছিলাম
চারঃ ভূতুরে চিকিৎসা
♦ ফিলিপিনো ফেইথ হিলার ও ভূতুরে অস্ত্রোপচার
♦ ফেইথ হিলার ও জাদুকর পি.সি. সরকার (জুনিয়র)
♦ পরকাল থেকে আসা বিদেহী ডাক্তার
♦ বিদেহী ডাক্তার দ্বারা আরোগ্য লাভ
♦ ডাইনী সম্রাজ্ঞী ঈপ্সিতার ভূতুরে চিকিৎসা
পাঁচঃ ভূতুরে তান্ত্রিক
♦ গৌতম ভারতী ও তাঁর ভূতুরে ফটোসম্মোহন
♦ ভূতুরে সম্মোহনে মনের মত বিয়েঃ কাজী সিদ্দীকির চ্যালেঞ্জ
ছয়ঃ ডাইনি ও আদিবাসী সমাজ
বাঁকুড়া জেলা হ্যান্ডবুক, ১৯৫১ থেকে
♦ ডাইনি, জানগুরু প্রথার বিরুদ্ধে কি করা উচিৎ
♦ ডাইনি হত্যা বন্ধে যে সব পরিকল্পনা এখুনি সরকারের গ্রহণ করা উচিৎ
♦ জানগুরুদের অলৌকিক ক্ষমতার রহস্য সন্ধানে
সাতঃ আদিবাসী সমাজের তুক-তাক, ঝাড়- ফুঁক
♦ ‘বিষ-পাথর’ ও ‘হাত চালান’এ বিষ নামান
আটঃ ঈশ্বরের ভর
♦ ঈশ্বরের ভর কখনো মানসিক রোগ, কখনো অভিনয়
♦ কল্যাণী ঘোষপাড়ায় সতীমা’ইয়ের মেলায় ভর
♦ হাড়োয়ার উমা সতীমার মন্দিরে গণ-ভর
♦ আর একটি হিস্টিরিয়া ভরের দৃষ্টান্ত
♦ একই অঙ্গে সোম-শুক্কুর ‘বাবা’ ও মা’য়ের ভর
♦ অবাক মেয়ে মৌসুমী’র মধ্যে সরস্বতীর অধিষ্ঠান (?) ও প্রডিজি প্রসঙ্গঃ
♦ প্রডিজি কি? ও কিছু বিস্ময়কর শিশু প্রতিভা
♦ বংশগতি বা জিন প্রসঙ্গে কিছু কথা
♦ বিস্ময়কর স্মৃতি নিয়ে দু-চার কথা
♦ দুর্বল স্মৃতি বলে কিছু নেই, ঘাটতি শুধু স্মরণে
♦ মানবগুণ বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশের প্রভাব
♦ মানবগুণ বিকাশে পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব-জীবনে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব-জীবনে আর্থ-সামাজিক পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব জীবনে সমাজ-সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রভাব
♦ অবাক মেয়ে মৌসুমীর রহস্য সন্ধানে
♦ বক্সিংয়ের কিংবদন্তী মহম্মদ আলি শূন্যে ভাসেন আল্লা-বিশ্বাসে!