১৩৩৭ সালে “ঢ্যাং জাল” বুনা শিক্ষা করি রাজাপুর মৌজার (পানি ঘাটা) নিবাসী কদম আলী হাং এবং ঢ্যাং জাল দেখে। তাঁর জালখানা ছিল ছোট বড় চারি একার ফাঁসের বোনা বারো খন্ডে সমাপ্ত; মাপ ৩৫ X ৩২ হাত। আমি ঐ জালখানা দেখে ওর একটা নকশা এঁকে ও প্রত্যেক প্রকার ফাঁসের সংখ্যা ও মান লিখে আনলাম। অতঃপর জাল পাতবার কায়দা কানুন জেনে নিলাম এবং বাড়িতে এসে সূতা কিনে আনলাম। সূতা পাকাবার যন্ত্রপাতি যথা- চরকা, বাতাই, লগি- ইত্যাদি আমার প্রস্তুত ছিল। সূতা পাকিয়ে জালখানা (৩২ X ৩০ হাত) বুনা শেষ করতে (চার-পাঁচ জন লোকের) সময় লাগল প্রায় দুমাস, সূতা লাগে ৫৫ মোরা। (উক্ত জালখানা দ্বারা প্রায় চার বছর প্রচুর মৎস্য শিকার করে ১৩৪০ সালে বিক্রি করেছিলাম পচিশ টাকা। অতঃপর ঐরূপ আর একখানা ঢ্যাং জাল বুনেছিলাম – সালে এবং তদ্বারা মৎস্য শিকার করেছিলাম প্রায় চার বছর।)

মৎস্য শিকারের আর একটি উত্তম শ্রেণীর যন্ত্র “ধর্মজাল”। ওটা বুনা আমি শিক্ষা করেছি চরমোনাই নিবাসী অছিমউদ্দিন হাং এর বাড়িতে গিয়ে, তাঁর জামাতা কাজেম আলী কাজী সাবের নিকট হ’তে। তিনি আমাকে “ধর্ম জাল বুনিয়ে বা কোন পুরোনো জাল দেখাতে পারেননি। তবে তিনি বোনার প্রণালীসমূহ  বলে দিচ্ছেন এবং তাঁর কথার ভিত্তিতে পরে আমি “ধর্মজাল” বুনেছিলাম। কিন্তু এ জালখানা বোনায় আমি গতানুগতিক পন্থা গ্রহণ করিনি। জাল খানার গঠন ছিল বহুলাংশে আমার নিজ কল্পিত এবং উহা পাতবার কায়দা আমি করেছিলাম সম্পূর্ণ অভিনব। আমার এ জালে মৎস্য ধরা পড়েছে এ জাতীয় অন্যান্য জালের চেয়ে বহু গুন বেশী। … সাল হতে আমি বহুবার ঐ ধরণের জাল বুনেছি এবং এখন পর্যন্ত আমি ঐ ধরণের জালে মৎস্য শিকার করছি।

আমি বিভিন্ন সময়ে নিম্ন লিখিত জাল গুলো নিজ হাতে বয়ন করে মৎস্য শিকার করেছি।

ঝাকী জাল             ধর্ম জাল

খুটুনী জাল            ছাট জাল

খোট জাল            বাধা জাল

সামুলা জাল        কাফাই জাল

ঢ্যাং জাল            মইয়া জাল

এছাড়া প্রস্তুত ও ব্যবহার করেছি – বেড়-গড়া, চাই-চাড়োয়া ইত্যাদি, বরশী ব্যবহার করেছি খুবই অল্প।

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x