“ক্ষেত্র-ফল” রচনা (২৭/৫/৬৫ – ২৩/৫/৬৭)
“কালিকষা” জানবার আবশ্যক নাই- এমন ধারণার লোক অল্পই আছে। আমাদের দেশের শতকরা প্রায় ৮০ জন মানুষই কৃষক এবং এদের প্রায় সকলেরই কিছু না কিছু চাষের জমি আছে। সুতরাং ভূমির পরিমাপ ও পরিমাণ সম্বন্ধে সকলেরই কিছু জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
শিল ও ব্যবসা ক্ষেত্রেও কালির আবশ্যক সর্বত্র। এক জন রাজমিস্ত্রীকে স্ত্রির করতে হয়, একটি ইমারত গঠন করতে কি পরিমাণ ইট, বালি, সিমেন্ট আবশ্যক হইতে পারে। ইহা এক প্রকার কালি। একজন কামারকে জানতে হয়- একটি নির্দিষ্ট নক্সার জিনিস তৈয়ার করতে কি পরিমাণ- সোনা, রূপা বা লোহা আবশ্যক হইবে। এক জন ব্যবসায়ীকে জানতে হয়- কত দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বিশিষ্ট একটি গুদামে বা পাত্রে কি পরিমাণ মাল রাখা যাবে ইত্যাদি। ইহারা সবই এক এক রকম কালি। বস্তুত এমন কোন কাজ নাই, যার কোন রকম কালি নাই। তবে নানাবিধ কাজের হিসাব-নিকাশ বা বরাদ্দের জন্য নানাবিধ কালির আবশ্যক।
বিভিন্ন প্রকার কালির জন্য বিভিন্ন প্রকার নিয়ম প্রচলিত আছে। কিন্তু এরূপ মেধাবী মানুষ অল্পই আছেন, যারা সকল রকম কালির সকল রকম নিয়ম স্মরণ রাখিতে পারেন। আবার প্রকৌশলীদের মত সুক্ষ্ম ও জটিল হিসাবাদিও সাধারণ মানুষ আয়ত্ব করিতে অক্ষম। এই উভয় সঙ্কট এড়িয়ে সাধারণ মানুষ যাতে নিত্য আবশ্যকীয় কালি সমূহের সাধারণ নিয়মাদি জানিতে ও বুঝিতে পারেন, তার জন্য এক খানা পুস্তক লেখার পরিকল্পনা আমার বহুদিন হতেই ছিল। অতি সাধারণ লেখা-পড়া জানা লোকও পুস্তক খানা দেখে যাতে স্বকার্য সাধন করিতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে উহা প্রণয়নের কাজে হাত দিলাম বিগত ২৭/৫/৬৫ তারিখে এবং উহা সমাপ্ত হ’ল ২৩/৫/৬৭ তারিখে।
পুস্তক খানার নাম রাখা হয়েছে- “সরল ক্ষেত্র-ফল” বা “কালিকষা”। উহার পান্ডুলিপি খানা ৮৬ পৃষ্ঠায় সমাপ্ত এবং পাঁচটি অধ্যায়ে বিভক্ত। উহাতে নিম্নলিখিত বিষয় সমূহ সংযোজিত হয়েছে।
প্রথম অধ্যায়
(ক্ষেত্র পরিচয়)
সরল রেখা
সমকোণ
সমতল
বৃত্ত বা চক্র
লম্ব
অতিভূজ
বৃত্তাভাস
চাপ
ত্রিভূজ
চতুর্ভুজ
বর্তুল
বর্তুলাভাস
সূচী
স্তম্ভ
ঘনক্ষেত্র
অঙ্গুরীয় ক্ষেত্র
বলয়
দ্বিতীয় অধ্যায়
বর্গ ও ঘন
(বর্গ পরিমাণ নির্ণয়ের নিয়মাবলী)
ত্রিভূজ ক্ষেত্র
চতুর্ভুজ ক্ষেত্র
বহুভুজ ক্ষেত্র
বৃত্ত ক্ষেত্র
অঙ্গুরীয় ক্ষেত্র
বৃত্তভাস ক্ষেত্র
চাপক্ষেত্র
বর্তুলের পৃষ্ঠ দেশের বর্গ পরিমাণ
সূচীর পৃষ্ঠ দেশের বর্গ পরিমাণ
স্তম্ভের পৃষ্ঠ দেশের বর্গ পরিমাণ
বলয়ের পৃষ্ঠ দেশের বর্গ পরিমাণ
(ঘন পরিমাণ নির্ণয়ের নিয়মাবলী)
চতুর্ভুজ ক্ষেত্র
ত্রিভূজ ক্ষেত্র
সূচীর ঘন পরিমাণ
বর্তুলের ঘন পরিমাণ
স্তম্ভের ঘন পরিমাণ
কূপের ঘন পরিমাণ
তৃতীয় অধ্যায়
(বর্গ পরিমাণ ও স্থানীয় এককের সম্মিলন)
(বর্গনল) বিঘা
(বর্গনল) কালি
(বর্গ হাত) বিঘা
(বর্গ হাত) কালি
(বর্গ হাত) একর
(বর্গ ফুট) বিঘা
(বর্গ ফুট) কালি
(বর্গ ফুট) একর
(বর্গ লিংক) বিঘা
(বর্গ লিংক) কালি
(বর্গ লিংক) একর
(ঘন পরিমাণ ও স্থানীয় এককের সম্মিলন)
ঘন হাত
ঘন ফুট
(একাবলী)
রৈখিক পরিমাপের একাবলী
স্থানীয় এককের একাবলী
বর্গ পরিমাপের একাবলী
ঘন পরিমাপের একাবলী
বর্গ ও ঘন পরিমাণকে স্থানীয় এককে পরিণত নিয়ম।
চতুর্থ অধ্যায়
(আর্যার সাহায্যে ক্ষেত্রফল নির্ণয়)
কড়া ও কালি কালি
একর = শতাংশ কালি
বিঘা-কাঠা কালি
মাটি কালি (বড় কুয়া)
মাটি-কালি ছোট কুয়া
পঞ্চম অধ্যায়
গড় নির্ণয়
(একর-শতাংশের সহিত স্থানীয় মাপের সম্মিলনী) বিঘা
(একর- শতাংশের সহিত স্থানীয় মাপের সম্মিলনী) কালি
অনির্দিষ্ট-রাশি নির্ণয়
আপেক্ষিক গুরুত্ব
ঘন পরিমাণ হইতে ওজন নির্ণয়
মিশ্রিত দুই পদার্থের
প্রত্যেকের ওজন নির্ণয়
আলোচ্য পুস্তকের পান্ডুলিপি খানা বরিশাল ব্রজ মোহন মহাবিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক শ্রদ্ধেয় সুখেন্দু সেন মহাশয় পাঠ করে উহার ভ্রমাদি সংশোধনের প্রয়াস পেয়েছেন (৯/৯/৬৭)। অর্থাভাবে পুস্তক খানা প্রকাশ করা সম্ভব হয় নাই। উহার দুখানা পান্ডুলিপি আমার “গ্রন্থমালা” এ রক্ষিত আছে।
ভিখারীর আত্মকাহিনী- প্রথম খন্ড
♦ চর পূর্বাভাস ও জন্ম (১১৫৮-১৩০৭)
♦ উচ্চ শিক্ষার প্রচেষ্টা (১৩৩৫)
ভিখারীর আত্মকাহিনী- দ্বিতীয় খন্ড
♦ মোসলেম সমিতিঃ স্কুল প্রতিষ্ঠা ও শিক্ষকতা (১৩৩৬-১৩৪১)
♦ ইঞ্জিনিয়ারিং শিখার উদ্যোগ ও মাতৃবিয়োগ (১৩৩৯)
♦ ভিখারীর আত্মকাহিনী- তৃতীয় খন্ড
♦ বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরীর শিক্ষা
♦ অধ্যাপক কাজী গোলাম কাদিরের সান্নিধ্যে
♦ ভিখারীর আত্মকাহিনী- পঞ্চম খন্ড
“আরজ আলী মাতুব্বর” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ