শ্লোকঃ ৫৫
মৎকর্মকৃন্নৎপরমো মদ্ভক্তঃ সঙ্গবর্জিতঃ ।
নির্বৈরঃ সর্বভূতেষু যঃ স মামেতি পাণ্ডব ॥ ৫৫ ॥
মংকর্মকৃৎ— আমার কর্মে যুক্ত; মৎপরমঃ- মৎপরায়ণ, মদ্ভক্তঃ – আমাতে ভক্তিযুক্ত; সঙ্গবর্জিতঃ—জড় বিষয়ে আসক্তি রহিত, নির্বেরঃ শত্রুভাব রহিত; সর্বভূতেষু — সর্ব জীবের প্রতি; যঃ—যিনি; সঃ—তিনি; মাম্—আমাকে; এতি— লাভ করেন; পাণ্ডব হে পাণ্ডুপুত্র।
গীতার গান
আমার সন্তোষ লাগি কর সব কর্ম
নিত্য যুক্ত মোর ভক্ত সে পরম ধর্ম ৷৷
তার কোন শত্রু নাই সর্বভূত মাঝে
সেই মোর শুদ্ধ ভক্ত থাকে মোর কাছে ৷।
অনুবাদঃ হে অর্জুন। যিনি আমার অকৈতব সেবা করেন, আনার প্রতি নিষ্ঠাপরায়ণ, আমার ভক্ত, জড় বিষয়ে আসক্তি রহিত এবং সমস্ত প্রাণীর প্রতি শত্রুভাব রহিত, তিনিই, আমাকে লাভ করেন।
তাৎপর্যঃ কেউ যদি চিৎ-জগতের কৃষ্ণলোকে সমস্ত ঈশ্বরের পরম ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে অন্তরঙ্গভাবে যুক্ত হতে চান, তা হলে তাঁকে এই বিধি অনুশীলন করতেই হবে, যা পরমেশ্বর ভগবান নিজেই বলে দিয়েছেন। তাই, এই শ্লোকটিকে ভগবদ্গীতার নির্যাস বলে মনে করা হয়। ভগবদ্গীতা এমনই একটি শাস্ত্রগ্রন্থ, যা বন্ধ জীবদের সঠিক পথে পরিচালিত করে। এই সমস্ত বদ্ধ জীব পারমার্থিক জীবনের যথার্থ লক্ষ্য সম্বন্ধে বিস্মৃত হয়ে প্রকৃতির উপরে প্রভুত্ব করবার উদ্দেশ্যে জড় জগতে নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছে। ভগবদ্গীতার উদ্দেশ্য হচ্ছে কিভাবে আমরা দিবা জীবন লাভ করতে পারি এবং পরমেশ্বর ভগবানের সঙ্গে আমাদের নিত্য সম্ব হৃদয়ঙ্গম করতে পারি তা প্রদর্শন করা এবং কিভাবে আমরা ভগবানের কাছে ফিরে যেতে পারি, সেই সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া। এখানে এই শ্লোকে স্পষ্টভাবে যথার্থ পদ্ধতির ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যার দ্বারা আমরা পারমার্থিক ক্রিয়াকলাপ – ভক্তিযোগে সাফল্য লাভ করতে পারি।
আমাদের সমস্ত শক্তি সর্বতোভাবে কৃষ্ণভাবনাময় কার্যকলাপে রূপান্তরিত করা উচিত। ভক্তিরসামৃতসিন্ধু গ্রন্থে (পূর্ব ২/২৫৫) বলা হয়েছে—
অনাসক্তস্য বিষয়ান যথার্হমুপযুঞ্জতঃ ।
নিবন্ধঃ কৃষ্ণসম্বন্ধে যুক্তং বৈরাগ্যমুচ্যতে ।।
শ্রীকৃষ্ণের সম্বন্ধযুক্ত ছাড়া অন্য কোন রকম কাজ করাই উচিত নয়। এই ধরনের কাজকে বলা হয় কৃষ্ণকর্ম। আমরা নানা রকমের কাজকর্মে লিপ্ত হতে পারি, কিন্তু সেই কর্মফল ভোগ করার প্রতি আমাদের আসক্ত হওয়া উচিত নয়। আমাদের সমস্ত কর্মের ফল তাঁকেই অর্পণ করা উচিত। যেমন, কেউ ব্যবসায়ে লিপ্ত থাকতে পারেন, কিন্তু তাঁর সেই কার্যকলাপ কৃষ্ণভাবনামৃতে রূপান্তরিত করতে হলে, তাঁকে শ্রীকৃষ্ণের জন্য ব্যবসা করতে হবে। শ্রীকৃষ্ণ যদি সেই ব্যবসায়ের মালিক হন, তা হলে সেই ব্যবসায়ের সমস্ত লাভের ভোক্তা হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। কোন ব্যবসায়ীর যদি লক্ষ লক্ষ টাকা থাকে এবং তিনি যদি তা শ্রীকৃষ্ণকে দান করতে চান, তা হলে তিনি তা করতে পারেন। এটিই হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের জন্য কর্ম। নিজের ইন্দ্রিয়-তৃপ্তির জন্য বড় বড় প্রাসাদ তৈরি না করে, তিনি শ্রীকৃষ্ণের জন্য সুন্দর একটি মন্দির তৈরি করতে পারেন। তিনি সেই মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণের শ্রীবিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন এবং শ্রীবিগ্রহের সেবা-পূজার আয়োজন করতে পারেন এবং ভগবদ্ভক্তি সংক্রান্ত প্রামাণিক গ্রন্থাবলীতে সেই সম্বন্ধে বর্ণনা দেওয়া আছে। এই সমস্তই হচ্ছে কৃষ্ণকর্ম। কর্মফলের প্রতি আসক্ত না হয়ে শ্রীকৃষ্ণকে সেই ফল অর্পণ করা উচিত। খাদ্যদ্রব্য শ্রীকৃষ্ণকে অর্পণ করে ভগবানের প্রসাদরূপে তা গ্রহণ করা উচিত। কেউ যদি শ্রীকৃষ্ণের জন্য একটি বিরাট বাড়ি তৈরি করে দেন এবং সেখানে শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ স্থাপন করেন, তা হলে সেখানে বসবাস করতেও কোন বাধা নেই, তবে মনে রাখতে হবে যে, শ্রীকৃষ্ণই বাড়িটির মালিক। এই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত। কেউ যদি শ্রীকৃষ্ণের মন্দির নির্মাণ না করতে পারেন, তা হলেও তিনি শ্রীকৃষ্ণের মন্দির মার্জন করার কাজে নিজেকে নিযুক্ত করতে পারেন। সেটিও কৃষ্ণকর্ম। আমরা একটি বাগান করতে পারি। যারই এক ফালি জমি আছে—ভারতবর্ষে সকলেরই, এমন কি নিতান্ত গরিব লোকেরও কিছু না কিছু জমি আছে, সেই জমিতে বাগান করে তার ফুল শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করতে পারি। আমরা তুলসী বৃক্ষ রোপণ করতে পারি, কারণ তুলসীর পাতা, তুলসীর মঞ্জুরী ভগবানের সেবার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভগবদ্গীতায় শ্রীকৃষ্ণ তা অনুমোদন করেছেন। পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ম্। তিনি বলেছেন যে, কেউ যদি পত্র, পুষ্প, কল অথবা একটু জল ভক্তি সহকারে তাঁকে অর্পণ করেন, তা হলে তিনি থ্রীত হন। এই ‘পত্র’ বলতে তুলসী পত্রকেই উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং আমরা তুলসী বৃক্ষ রোপণ করতে পারি এবং তাতে জল দিতে পারি। এভাবেই অত্যন্ত পরিত্র যে মানুষ, তিনিও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত হতে পারেন। এগুলি শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত হবার কয়েকটি দৃষ্টান্ত।
মৎপরমঃ কথাটি তাকেই উল্লেখ করে, যিনি শ্রীকৃষ্ণের পরম ধামে তাঁর সঙ্গ লাভ করাটাই জীবনের পরম ধর্ম বলে মনে করেন। এই ধরনের মানুষ চন্দ্ৰলোক, সূর্যলোক, স্বর্গলোক অথবা এমন কি এই ব্রহ্মাণ্ডের সর্বোচ্চ লোক ব্রহ্মলোকেও উন্নীত হবার আকাঙ্ক্ষা করেন না। এই সবের প্রতি তাঁর কোনই আকর্ষণ নেই। তাঁর একমাত্র বাসনা হচ্ছে অপ্রাকৃত জগতের চিদাকাশে প্রবিষ্ট হওয়া। আর এমন কি সেই অপ্রাকৃত জগতের চিদাকাশে দেদীপ্যমান ব্রহ্মজ্যোতিতে লীন হয়ে যেতেও তিনি চান না। কারণ তাঁর একমাত্র বাসনা হচ্ছে অপ্রাকৃত জগতের সর্বোচ্চ গ্রহলোক শ্ৰীকৃষ্ণলোক বা গোলোক বৃন্দাবনে প্রবেশ করা। সেই গ্রহলোক সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণভাবে অবগত, তাই তিনি আর অন্য কিছুর জন্য আগ্রহী নন। মদ্ভক্তঃ কথাটির মাধ্যমে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, তিনি সর্বতোভাবে ভগবানের ভক্তিযুক্ত সেবায় নিয়োজিত থাকেন, বিশেষ করে নববিধা ভক্তি শ্রবণ, কীর্তন, স্মরণ, অর্ডন, পাদসেবন, বন্দন, দাস্য, সখ্য ও আত্মনিবেদনের মাধ্যমে। যে কেউই ভক্তিযোগের এই নয়টি পন্থা অথবা আটটি অথবা সাতটি অথবা যে কোন একটির সেবায় যুক্ত হতে পারেন, এবং তাঁর ফলে অবশ্যই তিনি সিদ্ধি লাভ করতে পারেন।
সঙ্গবর্জিতঃ কথাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কৃষ্ণবিমুখ মানুষের সঙ্গ ত্যগ করা উচিত। ভগবৎ-বিদ্বেষী নাস্তিকেরাই কেবল কৃষ্ণবিমুখ নয়, যারা ফলাশ্রিত কর্ম ও জল্পনা-কল্পনাপ্রসূত জ্ঞানের প্রতি আসক্ত, তারাও কৃষ্ণবিমুখ। সুতরাং, ভক্তিরসামৃতসিন্ধুতে (পূর্ব ১/১১) শুদ্ধ ভক্তির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে—
অন্যাভিলাষিতাশূন্যং জ্ঞানকর্মাদ্যনাবৃতম্ ।
আনুকূল্যেন কৃষ্ণানুশীলং ভক্তিরুশুনা ॥
এই শ্লোকে শ্রীল রূপ গোস্বামী স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন যে, কেউ যদি শুদ্ধ ভক্তি অনুশীলন করতে চান, তাঁকে সমস্ত জড়-জাগতিক কলুষ থেকে মুক্ত হতে হবে। তাঁকে অবশ্যই সকাম কর্ম ও মানসিক জল্পনা-কল্পনার প্রতি আসক্তচিত্ত ব্যক্তির সঙ্গ থেকে মুক্ত হতে হবে। যখন কেউ এই প্রকার অবাঞ্ছিত সঙ্গ ও জড়-জাগতিক বাসনার কলুষ থেকে মুক্ত হন, তখন তিনি অনুকূলভাবে কৃষ্ণবিজ্ঞান অনুশীলন করেন। তাকেই বলা হয় শুদ্ধ ভক্তি। আনুকুলাসা সঙ্কল্পঃ প্রাতিকুলাসা বর্জনম্ (হরিভক্তিবিলাস ১১/৬৭৬)। শ্রীকৃষ্ণের কথা চিন্তা করতে হবে, কৃষ্ণসেবার যা অনুকূল তা সংকল্প করতে হবে এবং কৃষ্ণসেবার যা প্রতিকূল তা বর্জন করতে হবে। কংস ছিল শ্রীকৃষ্ণের শত্রু। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময় থেকেই কংস কতভাবে শ্রীকৃষ্ণকে হত্যা করবার পরিকল্পনা করত। কিন্তু যেহেতু সে শ্রীকৃষ্ণকে হত্যা করতে পারত না, তাই সে সব সময় শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা করত। এভাবেই খেতে, বসতে, শুতে সব সময় সে কৃষ্ণভাবনাময় হয়ে থাকত। কিন্তু তার সেই কৃষ্ণভাবনা অনুকূল ছিল না এবং তাই যদিও সে দিনের মধ্যে চব্বিশ ঘন্টাই শ্রীকৃষ্ণের কথা চিন্তা করত, তা সত্ত্বেও তাকে অসুর বলে গণ্য করা হত এবং অবশেষে শ্রীকৃষ্ণ তাকে হত্যা করেছিলেন। অবশ্য শ্রীকৃষ্ণের হাতে মৃত্যু হলে সঙ্গে সঙ্গে তার মুক্তি লাভ হয়। কিন্তু শুদ্ধ ভক্তের সেটি কামা নয়। শুদ্ধ ভক্ত মুক্তি চান না, এমন কি তিনি সর্বোচ্চলোক গোলোক বৃন্দাবনেও যেতে চান না। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে যেখানেই তিনি থাকুন না কেন, তিনি যেন সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণের সেবা করে যেতে পারেন।
কৃষ্ণভক্ত সকলেরই বন্ধু ভাবাপন্ন হন। তাই এখানে বলা হয়েছে যে, তাঁর কোন শত্রু নেই (নির্বেরঃ)। এটি কেমনভাবে হয় ? কৃষ্ণভাবনাময় ভক্ত জানেন যে, কৃষ্ণভক্তিই কেবল মানব-জীবনের সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে পারে। তিনি নিজেই ব্যক্তিগতভাবে সেই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তাই তিনি মানব-সমাজে কৃষ্ণভাবনার এই পন্থা প্রচলন করতে চান। নিজের জীবন বিপন্ন করে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করার বহু দৃষ্টান্ত ইতিহাসে আছে। তার একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত যিশুখ্রিস্ট। ভগবৎ-বিদ্বেষীরা তাঁকে ক্রুশে বিদ্ধ করেছিল। কিন্তু তিনি তাঁর জীবন দিয়ে ভগবানের বাণী প্রচার করেছিলেন। আমাদের অবশ্য কখনই মনে করা উচিত নয় যে, যিশুখ্রিস্টকে হত্যা করা হয়েছিল। ভগবানের ভক্তের কখনই বিনাশ হয় না। ভারতবর্ষেও তেমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে, যেমন ঠাকুর হরিদাস ও প্রহ্লাদ মহারাজ। এঁরা কেন এভাবে নিজেদের জীবন বিপন্ন করেছিলেন? কারণ, তারা কৃষ্ণভাবনার অমৃত বিতরণ করতে চেয়েছিলেন এবং তা ছিল কষ্টসাধ্য। কৃষ্ণভক্ত জানেন যে, শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর নিত্য সম্পর্কের কথা ভুলে যাওয়ার ফলেই মানুষ এই জগতে নানা রকম দুঃখকষ্ট ভোগ করছে। সুতরাং, মানব-সমাজে তাঁর শ্রেষ্ঠ উপকার হচ্ছে প্রতিবেশী মানুষকে সব রকম জড় জাগতিক সমস্যাগুলির হাত থেকে মুক্তি দেওয়া। এভাবেই ভগবানের শুদ্ধ ভক্ত ভগবানের সেবা করে চলেন। এখন আমরা অনুমান করতে পারি যে, ভগবানের যে সমস্ত ভক্ত সব রকমের ঝুঁকি নিয়ে ভগবানের সেবা করে চলেন, তাঁদের প্রতি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কতই না কৃপাময় । তাই এটি নিশ্চিত যে, এই প্রকার ব্যক্তিরা দেহ ত্যাগ করার পরে ভগবানের পরম বামে ফিরে যান।
এই অধ্যায়ের সংক্ষিপ্তসার হচ্ছে যে, শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ, যা হচ্ছে একটি অস্থায়ী প্রকাশ এবং কালরূপে যা সব কিছুই গ্রাস করে এবং এমন কি চতুর্ভু-ই সবই শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক প্রদর্শিত হয়েছে। এর থেকে আমরা বুঝঝতে পারি যে, এই সমস্ত প্রকাশের আদি উৎস হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। এমন নয় যে, আদি বিশ্বরূপ অথবা শ্রীবিষ্ণুর থেকে শ্রীকৃষ্ণের প্রকাশ হয়। শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন সমস্ত রূপের আদি উৎস। শত সহস্র বিষ্ণু আছেন, কিন্তু ভক্তের কাছে শ্রীকৃষ্ণের দ্বিভুজ শ্যামসুন্দর আদিরূপ ছাড়া আর কোন রূপেরই গুরুত্ব নেই। ব্রহ্মসংহিতায় বলা হয়েছে যে, প্রেম ও ভক্তি সহকারে যাঁরা শ্রীকৃষ্ণের শ্যামসুন্দর রূপের প্রতি ঐকান্তিকভাবে আসত, তারা সর্বদাই তাঁকে হৃদয়ে অবলোকন করেন এবং এ ছাড়া তাঁরা আর কিছুই দেখতে পান না। তাই, আমাদের বুঝা উচিত, এই একাদশ অধ্যায়ের তাৎপর্য হচ্ছে যে, ভগবানের শ্রীকৃষ্ণরূপই হচ্ছে পরম ও গুরুত্বপূর্ণ রূপ।
ভক্তিবেদান্ত কহে শ্রীগীতার গান ।
শুনে যদি শুদ্ধ ভক্ত কৃষ্ণগত প্ৰাণ ॥
ইতি—’বিশ্বরূপ-দর্শন-যোগ’ নামক শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার একাদশ অধ্যায়ের ভর্তি তাৎপর্য সমাপ্ত।