শিমশোনের বিবাহ
১. শিমশোন তিম্না শহরের দিকে নেমে এল। সেখানে সে একজন পলেষ্টীয় নারীকে দেখতে পেল।
২. বাড়ি ফিরে শিমশোন তার পিতামাতাকে বলল, “আমি তিম্নায় একজন পলেষ্টীয় নারী দেখেছি। তোমরা তাকে আমার কাছে এনে দাও। আমি তাকে বিয়ে করতে চাই।”
৩. তার পিতামাতা বলল, “তুমি তো ইস্রায়েলের একজন মেয়েকে বিয়ে করতে পারো। পলেষ্টীয়দের মেয়েকে বিয়ে করতে তোমার এত ইচ্ছে কেন? এসব লোকদের সুন্নৎ পর্যন্ত হয়নি। শিমশোন এসব কথা শুনল না। সে বলল, “ঐ মেয়েটিকেই আমার জন্য এনে দাও! তাকেই শুধু আমি চাই!”
৪. (শিম্শোনের পিতামাতা তো জানত না, এটাই ছিল প্রভুর অভিপ্রায়। তিনি কিভাবে পলেষ্টীয়দের শায়েস্তা করা যায় সেই রাস্তাই খুঁজছিলেন। সে সময় ইস্রায়েলে ওদেরই রাজত্ব ছিল।)
৫. পিতামাতাকে নিয়ে শিমশোন তিম্না শহরে নেমে এল। শহরের কাছাকাছি দ্রাক্ষার ক্ষেত পর্যন্ত তারা চলে এল। সেখানে হঠাৎ একটা যুব সিংহ গর্জে উঠে শিমশোনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।
৬. প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে শিশোনের উপর নেমে এল। খালি হাতেই শিম্শোন সিংহটাকে ছিঁড়ে দু-টুকরো করে ফেলল। অনায়াসেই সে এটা করে ফেলল। একট৷ কচি পাঁঠাকে চিরে ফেলার মতই কাজটা যেন সহজ হয়ে গেল শিমশোনের কাছে। কিন্তু শিমশোন ঘটনাটি পিতামাতার কাছে বলল না।
৭. শিমশোন শহরে গিয়ে পলেষ্টীয় মেয়েটির সঙ্গে কথাবার্তা বলল। মেয়েটি তাকে খুশি করেছিল।
৮. কয়েকদিন পর শিমশোন ফিরে এসে ঐ পলেষ্টীয় মেয়েকে বিয়ে করতে এলে পথে মৃত সিংহটিকে সে দেখল। মৃত সিংহটির গায়ে মৌমাছিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বসে। কিছু মধুও হয়েছে।
৯. শিমশোন হাতে কিছুট৷ মধু তুলে নিল। মধু খেতে খেতে সে হাঁটতে লাগল। পিতামাতার কাছে এসে সে তাদেরও একটু মধু দিল। তারা সেই মধু খেল। কিন্তু শিশোন বলল না, সেই মধু মরা সিংহের গা থেকে পাওয়া।
১০. শিমশোনের পিতা পলেষ্টীয় মেয়েটিকে দেখতে গেল। এটাই ছিল প্রথা যে বর সে একট৷ ভোজসভা করবে। সেই অনুযায়ী শিম্শোন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে গেল।
১১. পলেষ্টীয়রা যখন দেখল শিমশোন এরকম একট৷ ভোজের ব্যবস্থা করছে তখন তারা ওর কাছে ৩০ জন পলেষ্টীয়কে পাঠাল।
১২. ঐ ৩০ জনকে শিমশোন বলল, “আমি তোমাদের একট৷ ধাঁধা বলতে চাই। এই আনন্দ অনুষ্ঠান সাতদিন ধরে চলবে। এর মধ্যে তোমাদের এই ধাঁধার উত্তর দিতে হবে। উত্তর দিতে পারলে আমি তোমাদের ৩০টি জামা আর ৩০টি কাপড় দেবো।
১৩. কিন্তু উত্তর না দিতে পারলে তোমরা আমাকে ৩০টি জামা আর ৩০টি কাপড় দেবে। ওরা বলল, “বল কি তোমার ধাঁধা, আমরা শুনব।”
১৪. শিমশোন তখন এই ধাঁধাটা বললোঃ খাদকের মধ্য থেকে খাদ্য কিছু জোটে, বলবান হতে মিষ্টি কিছু ওঠে।
১৫. ৩০ জন লোক তিনদিন ধরে মাথা ঘামাল, কিন্তু উত্তর আর দিতে পারলো না।
১৬. চতুর্থ দিনে তারা শিমশোনের স্ত্রীর কাছে এসে বলল, “তোমরা কি আমাদের নিঃস্ব করার জন্যে নেমন্তন্ন করেছ? তোমার স্বামীর কাছ থেকে কায়দা করে ধাঁধার উত্তরটা জেনে নাও। যদি উত্তর না বের করতে পার তাহলে আমরা তোমাকে আর তোমার বাপের বাড়ির সবাইকে পুড়িয়ে মেরে ফেলবো।
১৭. আর কোন উপায় না পেয়ে সে শিমশোনের কাছে গিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। সে বলল, “তুমি তো আমায় শুধু ঘৃণাই করো ! তুমি আমায় একটুও ভালবাস না ! তুমি আমার দেশের লোকেদের কাছে ধাঁধা বলেছ, কিন্তু কই আমাকে তো তুমি সেই ধাঁধার উত্তরটা বলো নি।” শিমশোন উত্তর দিল, “আমার মাতাপিতাকেও যখন উত্তরটা বলিনি, তোমাকে বলতে যাব কেন?”
১৮. অনুষ্ঠানের বাকি দিনগুলোয় শিমশোনের স্ত্রী কেঁদেই চলল। শেষ পর্যন্ত সপ্তম দিনে শিমশোন ধাঁধার উত্তরটি স্ত্রীকে বলেই ফেলল কারণ তার স্ত্রী এই নিয়ে তাকে বিরক্ত করছিল। তারপর তার স্ত্রী দেশের লোকেদের কাছে সেই উত্তরটি বলে দিল।
১৯. সুতরাং সাত দিনের দিন সূর্যাস্তের আগে পলেষ্টীয়রা উত্তরটা পেয়ে গেল। শিমশোনকে গিয়ে তারা বললঃ “মধুর চেয়ে মিষ্ট কি আছে? সিংহের চেয়ে বেশী শক্তিশালী কে?” তখন শিশোন বললঃ “যদি তোমরা আমার গরু সঙ্গে নিয়ে না চাষ করতে তোমরা আমার ধাঁধার সমাধান করতেই পারতে না।”
২০. শিম্শোন খুব রেগে গিয়েছিল। প্রভুর আত্মা প্রবল শক্তির সাথে তার ওপর নেমে এল। সে অস্কিলোন শহরে চলে গেল। সেখানে সে ৩০ জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল। তাদের মৃতদেহ থেকে সে সমস্ত পোশাক তুলে নিল, ধন দৌলত সরিয়ে নিল। তারপর যারা তার ধাঁধার উত্তর দিয়েছিল, তাদের সে সব বিলিয়ে দিল। এরপর সে পিতার বাড়িতে চলে গেল।
২১. স্ত্রীকে সে নিল না। বিয়ের জন্য একজন সেরা পাত্র তাকে ঘরে তুলেছিল।