আমি তখন দমদম পার্ক-এ থাকি। ভারতবিখ্যাত এক সাধক মহারাজের শিষ্য ছিলেন আমার এক প্রতিবেশী। তাঁর কাছে অনেকদিনই তাঁর গুরুদেবের অনেক অলৌকিক কাহিনি শুনেছি। দেশে-বিদেশে সাধক-মহারাজের প্রচুর নাম, প্রচুর ভক্ত। তাই, বিভিন্ন ভক্তদের সন্তুষ্ট করতে কোন  জায়গাতেই একনাগাড়ে বেশিদিন থাকতে পারেন না। আমার প্রতিবেশো ভদ্রলোককে ধরলাম, এইবার মহারাজ কলকাতায় এলে তাঁকে দর্শনের ব্যবস্থা করে দেবেন। সেই সঙ্গে দয়া করে এমন ব্যবস্থা করে দেবেন যাতে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়।

প্রতিবেশী জানতেন, আমি সাধু-সন্তদের কাছে যাই। তাই, ভক্তজন অনুমান করে আমায় ভরসা দিলেন মহারাজ কলকাতায় এলেই একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।

একদিন বহু প্রতিক্ষিত সেই সুযোগ পেলাম। প্রতিবেশী ভদ্রলোকের সঙ্গে গেলাম সেই বিখ্যাত মহারাজ দর্শনে। গুরুদেব তাঁর কিছু নিকটতম শীর্ষদের নিয়ে উঠেছিলেন দক্ষিণ কলকাতারই এক প্রাসাদে। একদিন প্রতিবেশী বললেন, আজ আমাকে গুরুদেবের অলৌকিক ধ্যান দর্শন করাবেন। এই দৃশ্য সব শিষ্যরাও দেখার সুযোগ পান না। সেই দিক থেকে আমি মহাভাগ্যবান। ধ্যানের সময় মহারাজের শরীর থেকে হাতখানেক উঁচুতে শূন্যে ভেসে থাকে।

নির্দিষ্ট সময়ের ধ্যান-কক্ষের বাইরের বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। ধ্যানের সময় মহারাজের শরীর মেঝে থেকে হাতখানেক উঁচুতে শূন্যে ভেসে থাকে।

একসময় প্রতীক্ষার অবসান হল, একজন শীর্ষ কক্ষের ভারী দরজাটা একটু একটু করে খুলে দিলেন। আমাদের বারান্দার আলো নিভে গেল। ভিতরটা জ্যোৎস্নার মতো নরম আলোয় ভেসে যাচ্ছে। শান্তদর্শন গুরুদেব নিমীলিত চোখে পদ্মাসনে স্থির। তিনি বসে আছেন শূন্যে, মাটি থেকে প্রায় দেড় ফুট উঁচুতে। তাঁর পেছনে গাঢ় রঙ্গের ভারী ভেলভেটের পর্দা।

বেরিয়ে এলাম চুপচাপ। অলৌকিক কিছুই দেখতে পেলাম না। ভারত বিখ্যাত মহারাজ যা দেখালেন, ম্যাজিকের পরিভাষায় তাকে বলে ‘ব্ল্যাক আর্ট’। গুরুদেবের পিছনের এই গাঢ় রঙ্গের পর্দাটাই আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল-

সাধক মহারাজের এই ধ্যানে শূন্যে ভেসে থাকার পিছনে কোন অলৌকিকত্ব নেই। এটা স্রেফ ব্ল্যাক-আর্টের খেলা। এই ব্ল্যাক-আর্ট এর সাহায্যে জাদুকরেরা কোন রমণীকে শূন্যে ভাসিয়ে রাখেন, হাতিকে করেন অদৃশ্য, আবার শূন্য থেকে আমদানী করেন জিপগাড়ি।

ব্ল্যাক আর্টের আবিষ্কারক ম্যাক্স আউজিঙ্গার (Max Auzinger)। জার্মানির নাগরিক এই ভদ্রলোক পেশায় নাট্য পরিচালক। তাঁর ব্ল্যাক-আর্ট পদ্ধতি আবিষ্কারের কাহিনি দারূন মজার।

তাঁর পরিচালিত একটা নাটকের প্রথম অভিনয় রজনী। বিশেষ এক উত্তেজক দৃশ্য তখন অভিনীত হচ্ছে। পিতা অবাধ্য কন্যাকে একটা প্রায় অন্ধকার ঘরে বন্দি করে রেখেছেন। কন্ধকার ঘরটার ভয়াবহতা ফুটিয়ে তুলতে পরিচালক ম্যাক্স মঞ্চের

চ্যাং লি সু ছদ্মনামের আড়ালে উইলিয়াম এলসওয়ার্থ রবিনসন

তিন দিকের দেওয়াল কালো মখমলের পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। মেয়েটিকে উদ্ধার করতে উপরের গবাক্ষ দিয়ে নেমে এলো এক টেলিফোন-কালো নিগ্রো ক্রীতদাস। নায়িকার এমন নাটকীয় মুক্তিক্ষণে দর্শকদের উত্তেজনায় ও হাততালিতে ফেটে পড়ার কথা। কিন্তু কই? দর্শকদের মধ্যে ঘটনায় কোন প্রতিফলন তো নেই? ব্যাপারটা বুঝতে ম্যাক্স দ্রুত মঞ্চ থেকে নেমে এলেন দর্শকদের কাছে। এবার মঞ্চের দিকে তাকাতেই কারণটা তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল। স্বল্পলোকিত মঞ্চে কালো নিগ্রো ক্রীতদাস কালো মখমলের পর্দার সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছে যে, ওকে দেখাই যাচ্ছে না। সঙ্গে সঙ্গে ম্যাক্স-এর মাথায় এলো ব্ল্যাক-আর্টের মূল তত্ত্ব। গাঢ় রঙ্গের পর্দা টাঙ্গিয়ে সেই ধরনের গাঢ় রঙ্গের যে কোন কিছু সামনে রাখলে তা দেখা যায় না। এই একই নিয়মে গাঢ় রঙ্গের পর্দার সামনে গাঢ় রঙ্গের একটা দেড়ফুট উঁচু আসনে বসে থাকা গুরুদেবকেও ভক্তরাও শূন্যে ভাসমান দেখেন।

প্রায় একই সঙ্গে ব্ল্যাক আর্টের খেলা দর্শকদের সামনে হাজির করেন মার্কিন জাদুকর উইলিয়াম এলসওয়ার্থ রবিনসন (William ellsworth Robinson), যিনি চিন্তা ছদ্মবেশে চ্যাং লিং সু নামেই জাদুর জগতে পরিচিত এবং বরেণ্য হয়েছিলেন।

ভূমিকা

কিছু কথা

নতুন ‘কিছু কথা’

১. অধ্যায়ঃ এক

১.১ প্রস্তাবনা

১.২ মানুষ ও দেবতা

১.৩ যুক্তিবাদী, মুক্তচিন্তার সেইসব মানুষ

১.৪ আমরা কোথায় আছি

২. অধ্যায়ঃ দুই

২.১ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞান

২.২ শাসক শ্রেণির স্বার্থে কুসংস্কার পুষ্ট হচ্ছে

৩. অধ্যায়ঃ তিন

৩.১ ব্রক্ষ্মচারী বাবা

৩.২ বিখ্যাত মহারাজের শূন্যে ভাসা

৩.৩ ব্ল্যাক আর্ট ছাড়া সাধিকার শূন্যে ভাসা

৩.৪ লাঠিতে হাতকে বিশ্রাম দিয়ে শূন্যে ভাসা

৩.৫ বেদে-বেদেনীদের শূন্যে ভাসা

৩.৬ মন্ত্রে যজ্ঞের আগুন জ্বলে

৩.৭ সাঁই বাবাঃ সাঁইবাবার অলৌকিক ঘড়ি-রহস্য

৩.৮ কেন এমন হয়

৩.৯ সাঁইবাবার ছবিতে জ্যোতি

৩.১০ সাঁইবাবার বিভূতি

৩.১১ শূন্য থেকে হার আনলেন ও হার মানলেন সাঁই

৩.১২ সাঁইবাবার চ্যালেঞ্জঃ পেটে হবে মোহর!

৩.১৩ ছবি থেকে ছাই

৩.১৪ শূন্য থেকে হিরের আংটি

৩.১৫ কৃষ্ণ অবতার কিট্টি

৩.১৬ যে সাধকরা একই সময়ে একাধিক স্থানে হাজির ছিলেন

৩.১৭ অতিন্দ্রীয় ক্ষমতার তান্ত্রিক ও সন্ন্যাসীরা

৩.১৮ কামদেবপুরের ফকিরবাবা

৩.১৯ আগরতলার ফুলবাবা

৩.২০ অবতারদের নিজদেহে রোগ গ্রহণ

৩.২১ বিশ্বাসে অসুখ সারে

৩.২২ ফুঁ বাবা

৩.২৩ ডাব বাবা

৩.২৫ ডাইনি সম্রাজ্ঞী ইপ্সিতা

৩.২৬ বকনা গরুর অলৌকিক দুধ ও মেহবেব আলি

৩.২৭ বাবা তারক ভোলার মন্দির ও শ্রীশ্রীবাসুদেব

৩.২৮ যোগে বৃষ্টি আনলেন শিববাল যোগী

৩.২৯ চন্দননগরে সাধুর মৃতকে প্রাণ-দান

৩.৩০ ভগবান শ্রীসদানন্দ দেবঠাকুর

৩.৩১ আগুনে হাঁটার অলৌকিক ঘটনা

৪. অধ্যায়ঃ চার

৪.১ সম্মোহন-আত্মসম্মোহন

৪.২ সম্মোহনের ইতিহাস, নানা মত

৪.৩ পাভলভ ফ্রয়েড

৪.৪ সম্মোহন নিয়ে কিছু কথা

৪.৫ ঘুম ও সম্মোহন

৫. অধ্যায় পাঁচ

৫.১ সমব্যথী চিহ্নের মহাপুরুষ

৬. অধ্যায়ঃ ছয়

৬.১ হিস্টিরিয়া, গণ-হিস্টিরিয়া, আত্ম-সম্মোহন, নির্দেশ

৬.২ ফোটো-সম্মোহন কি সম্ভব?

৭. অধ্যায়ঃ সাত

৭.১ সম্মোহন কিভাবে সম্ভব?

৭.২ সম্মোহনে আত্মা এলো ‘সানন্দা’য়

৭.৩ সম্মোহন নিয়ে নানা ভুল ধারণা

৭.৪ প্রাক-সম্মোহন প্রস্তুতি

৮. অধ্যায়ঃ আট

৮.১ Illusion (ভ্রান্ত অনুভূতি)

৮.২ Hallucination (অলীক বিশ্বাস)

৮.৩ Delusion মোহ, অন্ধ ভ্রান্ত ধারণা

৮.৪ Paranoia (প্যারানইয়া)

৯. অধ্যায়ঃ নয়

৯.১ আদ্যা’মা রহস্য

৯.২ ধর্মের নামে লোক ঠকাবার উপদেশ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে

৯.৩ সোমনাথ মন্দিরের অলৌকিক রহস্য

৯.৪ প্রাচীন মিশরের ধর্মস্থান রহস্য

৯.৫ কলকাতায় জীবন্ত শীতলাদেবী ও মা দুর্গা

৯.৬ কলকাতায় জীবন্ত দুর্গা

৯.৭ খেজুরতলার মাটি সারায় যত রোগ

৯.৮ পক্ষিতীর্থমের অমর পাখি

৯.৯ যে গাছ কাটা যায় না

৯.১০ গাইঘাটার অলৌকিক কালী

৯.১১ যে পাথর শূন্যে ভাসে

৯.১২ অলৌকিক প্রদীপে মৃত বাঁচে

৯.১৩ বার্মুডা ট্র্যাঙ্গেল রহস্য

১০. অধ্যায়ঃ দশ

১০.১ পরামনোবিদ্যা

১১. অধ্যায়ঃ এগারো

১১.১ দূরচিন্তা

১১.২ ডুবোজাহাজে টেলিপ্যাথির পরীক্ষা

১১.৩ টেলিপ্যাথির সাহায্যে নোটের নম্বর বলা

১১.৪ টেলিফোনে টেলিপ্যাথিঃ আয়োজক লন্ডনের ‘সানডে মিরর’

১১.৫ পরীক্ষক হিসেবে কারা ছিল

১১.৬ পরীক্ষা কেমন হল

১১.৭ টেলিফোন টেলিপ্যাথির আর এক আকর্ষণীয় ঘটনা

১১.৮ এমিল উদ্যা ও রবেয়ার উদ্যা’র টেলিপ্যাথি

১১.৯ অতীন্দ্রিয় ইউরি গেলারকে নিয়ে ‘নেচার’ (Nature)-এর রিপোর্ট

১১.১০ আই আই টি-তে টেলিপ্যাথি দেখালেন দীপক রাও

১১.১১ তবু প্রমাণ করা যায় তেলিপ্যাথি আছে

১২. অধ্যায়ঃ বার

১২.১ ভবিষ্যৎ দৃষ্টি

১২.২ নায়াগ্রা জলপ্রপাত ভেঙ্গে পড়ার ভবিষ্যদ্বাণী

১৩. অধ্যায়ঃ তের

১৩.১ অতীন্দ্রিয় অনুভূতি

১৩.২ সাধু-সন্ন্যাসীদের অতীন্দ্রিয় দৃষ্টি

১৩.৩ ইউরি গেলারের অতীন্দ্রিয় দৃষ্টি

১৪. অধ্যায়ঃ চোদ্দ

১৪.১ মানসিক শক্তি

১৪.২ মানসিক শক্তিতে রেলগাড়ি থামানো

১৪.৩ খড়্গপুরের সেই পীর

১৪.৪ স্টীমার বন্ধ করেছিলেন পি.সি. সরকার

১৪.৫ সাধুজির স্টীমার খাওয়া

১৪.৬ লিফট ও কেবল-কার দাঁড় করিয়েছিলেন ইউরি গেলার

১৪.৭ মানসিক শক্তি দিয়ে গেলারের চামচ বাঁকানো

১৪.৮ ধাতু বাঁকার আসল রহস্য

১৪.৯ ‘নিউ সায়েন্টিস্ট’ –এর পরীক্ষায় ইউরি এলেন না

১৪.১০ এক ঝলকে ইউরি

১৫. অধ্যায়ঃ পনের

১৫.১ যোগ সমাধিতে নাড়ি-বন্ধ

১৫.২ জলের তলায় বারো ঘণ্টা

১৫.৩ শরীর থেকে বিদ্যুৎ

১৬. অধ্যায়ঃ ষোল

১৬.১ অধ্যায়ঃ ভাববাদ বনাম যুক্তিবাদ বা বস্তুবাদ

১৬.২ মুক্ত চিন্তার বিরোধী ‘মনু সংহিতা’

১৬.৩ আধ্যাত্মবাদ ও যুক্তিবাদের চোখের আত্মা

১৬.৪ আত্মা, পরলোক ও জন্মান্তর বিষয়ে স্বামী অভেদানন্দ

১৬.৫ স্বামী বিবেকানন্দের চোখে আত্মা

১৬.৬ আত্মা নিয়ে আরও কিছু বিশিষ্ট ভাববাদীর মত

১৬.৭ আত্মা প্রসঙ্গে চার্বাক বা লোকায়ত দর্শন

১৭. অধ্যায়ঃ সতের

১৭.১ জাতিস্মররা হয় মানসিক রোগী, নয় প্রতারক

১৮. অধ্যায়ঃ আঠারো

১৮.১ জাতিস্মর তদন্ত-১: দোলনচাঁপা

১৮.২ জাতিস্মর তদন্ত ২: জ্ঞানতিলক

১৮.৩ জাতিস্মর তদন্ত ৩: ফ্রান্সিস পুনর্জন্ম

১৮.৪ জাতিস্মর তদন্ত ৪: সুনীল দত্ত সাক্সেনা

১৮.৫ জাতিস্মর তদন্ত ৫: প্রদীপ

১৮.৬ জাতিস্মর তদন্ত ৬: কলকাতায় জাতিস্মর

১৯. অধ্যায়ঃ ঊনিশ

১৯.১ প্ল্যানচেট বা প্রেত বৈঠক

১৯.১ মিডিয়াম বনাম জাদুকর

১৯.২ উনিশ শতকের দুই সেরা মিডিয়া ও দুই জাদুকর

১৯.৩ প্ল্যানচেটের ওপর আঘাত হেনেছিল যে বই

১৯.৪ স্বামী অভেদানন্দ ও প্রেত-বৈঠক

১৯.৫ বন্ধনমুক্তির খেলায় ভারতীয় জাদুকর

১৯.৬ রবীন্দ্রনাথের প্ল্যানচেট-চর্চা

১৯.৭ আমার দেখা প্ল্যানচেট

২০. অধ্যায়ঃ বিশ

২০.১ অলৌকিক শক্তিধরদের প্রতি চ্যালেঞ্জ

“অলৌকিক নয়,লৌকিক- ১ম খন্ড ” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ

⇒অভিযোগ বা মন্তব্য⇐

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x