(১) বিহেভিয়র থেরাপি

কোনো মানুষ যখন স্বাভাবিক আচরণ না করে অস্বাভাবিক আচরণ করে তখন তাকে স্বাভাবিক আচরণে ফেরাতে বিহেভিয়র থেরাপি খুবই কার্যকর ভূমিকা নেয় ।

বয়ঃসন্ধিক্ষণে (adolescence) অথবা প্রথম যৌবনে যদি দেখেন আপনার সন্তানের লেখাপড়ায়, খেলাধুলায়, কাজকর্মে অবনতি হচ্ছে। বাড়িতে লোকজন আত্মীয়বন্ধু এলে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চায় না। ঠিকমতো স্নান করে না। অপরিচ্ছন্ন থাকতে ভালোবাসে । চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে চায় না। স্নেহ-মমতা-শ্রদ্ধার প্রকাশ কমে যাচ্ছে—তবে বুঝবেন ওর কোনো একটা সমস্যা হচ্ছে। হয়তো ও ড্রাগ নিচ্ছে, সঙ্গে সমকামিতার শিকার বয়স্কা মহিলা যেমন বন্ধুর মা, মাসি, পিসি এমনকি মায়ের কথা ভেবে হস্তমৈথুন করে বা তাদের কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িত হয়ে পড়েছে। রোগী মেয়ে হলে একইভাবে ড্রাগ, সমকামিতা ও বিভিন্ন জনের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ ব্যাপারে বাবা-কাকা- মেসো কিছুই বাচ-বিচার করে না।

একদম গোড়ার দিকে যখনই দেখবেন বয়ঃসন্ধিক্ষণে কেউ অপরিচ্ছন্ন থাকছে, কাজকর্মে দ্রুত অবনতি হচ্ছে ওমনি ওকে নিয়ে যান সাইকোলজিস্টের কাছে। তিনিই পারবেন আচরণ পাল্টে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে।

বিহেভিয়র মেডিসিন প্রয়োগের জন্য কোনো কোনো থেরাপিস্ট অভিজ্ঞ সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে পাঠান।

 

(২) হিপনোথেরাপি

যখন সম্মোহন করে তারপর মনোরোগীকে প্রয়োজনীয় সাজেশন দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়, তখন সেই চিকিৎসা পদ্ধতিকে বলে হিপনোথেরাপি।

 

(৩) সাইকো-অ্যানালিটিক্যাল থেরাপি

যেসব সাইকোথেরাপি প্রচলিত আছে, তার প্রায় সবই মনোসমীক্ষণের উপর নির্ভর করে। মনোসমীক্ষণ মনোনচিকিৎসার পক্ষে অত্যন্ত কার্যকর। এই পদ্ধতিতে সাইকো- অ্যানালিটিক্যাল থেরাপির সাহায্যে একজন থেরাপিস্ট রোগীকে তার বর্তমান অবস্থা কারণগুলো বোঝাবেন, রোগী নিজের যুক্তি দিয়ে সমস্যাগুলো বুঝতে পারবেন। এমনটা হলে রোগী সমস্যামুক্ত হয়ে যায় ।

 

(৪) গ্রুপ সাইকোথেরাপি

যুক্তিবাদী সমিতির কনফারেন্সে কল্লোল আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, সাহস বাড়ান যায় কী করে?

উত্তরে বলেছিলাম, যারা ওয়াগন ব্রেকার, যারা সুপারি কিলার – তারা সাহসী, না ভিতু? কল্লোল—সাহসী।

আমি—ওরা তো সাহসী হয়েই জন্মায়নি। যে গ্রুপে বেশি সময় কাটাবে, সেই গ্রুপের ভালো-খারাপ দোষ-গুণ সবই ওদের প্রভাবিত করবে। সবই একটু একটু করে হয়ে ওঠার ব্যাপার।

তুমি যুক্তিবাদী সমিতির নানা কর্মকাণ্ডে নানা অ্যাকশনে যোগ দাও, দেখবে গ্রুপ সাইকোথেরাপির কল্যাণে তুমিও ভয়শূন্য একজন প্রতিবাদী সাম্যকামী মানুষ হয়ে উঠবে।

এক একটা গ্রুপের ছেলেমেয়েদের এক এক রকম সমস্যা অনুসারে ভাগ করে তারপর তাদের মধ্যে ব্যক্তিত্ব বৃদ্ধি, নেশাহীনতা ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে থেরাপি দিলে রোগীর সমস্যা ও পরনির্ভরতা কেটে যায় ৷

 

(৫) ফ্যামিলি থেরাপি

পরিবারের মধ্যে সমস্যা আছে। মানসিক সমস্যা। সমাধান করতে থেরাপিস্ট প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে কথা বলেন। আবার একসঙ্গেও কথা বলেন।

তারপর চেষ্টা করেন বোঝাবার মধ্য দিয়ে পরিবারের সবার সম্পর্ককে মজবুত করতে। বোঝাপড়া বাড়াতে।

সমস্যাগুলোর কারণ পরিবারের সদস্যদের বোঝাতে পারলে এবং উত্তরণের উপায় বাতলাতে পারলে সমস্যার সমাধানও হয় ।

 

(৬) কাপেল থেরাপি

বিয়ের পর কিছু দম্পতির মধ্যে বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে মনের গড়মিল হতে পারে। তার থেকে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। প্রাচীর তৈরি হতে পারে। দুই ভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশের কারণে এমনটা হতে পারে। দুজনে কতটা ছাড়বে, কতটা আপস করবে—বুঝতে হবে। দুজনে অনড় ও বিপরীত মেরুর হলে থেরাপিস্ট চাইবেন দুজন ডিভোর্স নিক।

অনেক সময় সেক্স অ্যাডজাস্টমেন্টের অভাবে মনের অমিল হয়, খিটিমিটি লেগেই থাকে। আবার মনের ও রুচির মিল না থাকলেও সেক্স অ্যাডজাস্টমেন্টের অভাব হতে পারে৷

ধ্বজভঙ্গ থাকলে পুরুষ যৌনসঙ্গমে সক্ষম হয় না। আবার নারী কামশীতল হলে যোনি স্ফীত হয় না এবং যোনিপথ পিচ্ছল হয় না। ফলে সঙ্গম কষ্টদায়ক ও আনন্দহীন হয়।

সাধারণভাবে ধ্বজভঙ্গ ও কামশীলতার শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি মানসিক কারণে হয়।

এর কারণ খুঁজে বার করতে পারলে কাপেল থেরাপি সার্থক হতে পারে ।

 

(৭) ব্রিফ সাইকোথেরাপি

আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রয়োজনে কম সময়ে সমস্যাক্লিষ্ট মানুষটির সমস্যা শোনেন থেরাপিস্ট এবং আন্তরিকতার সঙ্গে সমস্যা বিশ্লেষণ করে ক্লায়েন্টের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলেন। এইসব ক্লায়েন্টরা সাধারণভাবে কর্পোরেট হাউজের হোমরাচোমরা।

 

(৮) গ্রুপ পার্সোনালিটি থেরাপি

‘পার্সোনালিটি’ বা ‘ব্যক্তিত্ব’ হল একজন ব্যক্তি সম্পর্কে অন্যের ধারণা। ব্যক্তিত্বের বহিরঙ্গ হল পোশাক ক্যারি (বহন) করার ক্ষমতা, বাচনভঙ্গি, সুদর্শন, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ইত্যাদি ।

কিন্তু দেখতে খারাপ এমন উচ্চমেধার মানুষ প্রখর ব্যক্তিত্বের অধিকারী হবেনই। তাঁর জ্ঞান তাঁর ব্যক্তিত্বকে উজ্জ্বল করে।

টেনশনে ভোগা মানুষ ব্যক্তিত্বহীন হবেন—যতই বহিরঙ্গে চাকচিক্য থাকুক।

এমনি হাজারো উদাহরণসহ পার্সোনালিটি বাড়াবার ক্লাসকে বলা হয় গ্রুপ পার্সোনালিটি থেরাপি ।

বর্তমানে আরো নানা ধরনের সাইকোথেরাপি চালু হয়েছে।

পর্ব- একঃ উঠে আসা নানা প্রশ্ন

অধ্যায়ঃ এক

♦ সম্মোহন

অধ্যায়ঃ দুই

♦ জন্তুদের সম্মোহন করা ব্যাপারটা কি?

অধ্যায়ঃ তিন

♦ ফোটো-সম্মোহন কি সম্ভব?

অধ্যায়ঃ চার

♦ গণ-সম্মোহনের সাহায্যে কি ট্রেন ভ্যানিশ করা যায়?

অধ্যায়ঃ পাঁচ

♦ সম্মোহন করে পূর্বজন্মে নিয়ে যাওয়া যায়?

অধ্যায়ঃ ছয়

♦ জন্মান্তর ও সম্মোহন

অধ্যায়ঃ সাত

♦ সম্মোহন ও নার্কো টেস্ট

অধ্যায়ঃ আট

♦ সম্মোহন করে কথা বলানো যায় ?

অধ্যায়ঃ নয়

♦ প্ল্যানচেটে যে আত্মা আনা হয়, তা কি স্বসম্মোহন বা সম্মোহনের প্রতিক্রিয়া ?

পর্ব- দুইঃ সম্মোহনের ইতিহাস ও নানা মানসিক রোগ

অধ্যায়ঃ এক

♦ সম্মোহনের বিজ্ঞান হয়ে ওঠার ইতিহাস

অধ্যায়ঃ দুই

♦ মনোরোগ, সম্মোহন জানতে মগজের কাজ জানা জরুরি

অধ্যায়ঃ তিন

♦ মানসিক রোগের রকমফের

অধ্যায়ঃ চার

♦ Hysterical neurosis – Conversion type

অধ্যায়ঃ চার

♦ সাইকোসিস (Psychosis) উন্মাদ

অধ্যায়ঃ পাঁচ

♦ দেহ-মনজনিত অসুখ (Psycho-somatic disorder)

পর্ব- তিনঃ মনোবিদ ও মনোরোগ চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি

অধ্যায়ঃ এক

♦ মনোবিদ (Psychologist) ) মনোরোগ চিকিৎসক (Phychiatrist)

অধ্যায়ঃ দুই

♦ প্রধান কয়েকটি সাইকোথেরাপি নিয়ে আলোচনায় যাব

অধ্যায়ঃ তিন

♦ টেনশন

অধ্যায়ঃ চার

♦ রিল্যাকসেশান পদ্ধতি

অধ্যায়ঃ পাঁচ

♦ যৌনতা এবং যৌন-সমস্যা

অধ্যায়ঃ ছয়

♦ ‘যোগ’ মস্তিষ্ক-চর্চা বিরোধী এক স্থবীর তত্ত্ব

পর্ব- চারঃ বিভিন্ন রোগের সম্মোহনের সাজেশন পদ্ধতি

অধ্যায়ঃ এক

♦ সম্মোহন চিকিৎসা এবং…

অধ্যায়ঃ দুই

♦ রোগীকে সাজেশন দেওয়ার পদ্ধতি

অধ্যায়ঃ তিন

♦ রকমারি রোগ, রকমারি সাজেশন

অধ্যায়ঃ চার

♦ প্রাচীন আমল থেকেই মানসিক রোগ মানেই অশুভ শক্তির কালো হাত

“সম্মোহনের A to Z” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ

⇒ মন্তব্য করুন⇐

error: Content is protected !!