এলোমেলোভাবে মনে যখন প্রশ্ন উদয় হইতেছিল, তখন তাহা লিখিয়া রাখিতেছিলাম, পুস্তক প্রণয়নের জন্য নহে, স্মরণার্থে। ওগুলি আমাকে ভাসাইতেছিল অকুল চিন্তা-সাগরে এবং আমি ভাসিয়া যইতেছিলাম ধর্মজগতের বাহিরে।

১৩৫৮ সালের ১২ই জৈষ্ঠ। বরিশালের তদানীন্তন ল-ইয়ার ম্যাজিস্ট্রেট ও তবলিগ জামাতের আমির জনাব এফ. করিম. সাহেব আমাকে তাঁহার জামাতভূক্ত করার মানসে সদলে হঠাৎ তসরিফ নিলেন আমার বাড়ীতে। তিনি আমাকে তাঁহার জামাতভূক্তির অনুরোধ জানাইলে আমি তাঁহাকে বলিলাম যে ধর্মজগতে এরুপ কতগুলো নীতি, প্রথা, সংস্কার ইত্যাদি এবং ঘটনার বিবরণ প্রচলিত আছে, যাহা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নহে এবং ওগুলি দর্শন ও বিজ্ঞান এই তিনটি মতবাদের সমন্বয় সাধনের উদ্দেশ্যে চিন্তা করিতে যাইয়া আমার মনে কতগুলি প্রশ্নের উদয় হইয়াছে এবং হইতেছে। আমি এগুলো সমাধানে অক্ষম হইয়া এক বিভ্রান্তির আঁধার কূপ হইতে উদ্ধার করিতে পারিলে আমি আপনার জামাতভূক্ত হইতে পারি। জনাব করিম সাহেব আমার প্রশ্নগুলি কি, তাহা জানিতে চাহিলে আমি আমার প্রশ্নের একখানা তালিকা (যাহা অত্র পুস্তকের ‘সূচীপত্র’ রুপে লিখিত আছে সেই রূপেই) তাঁহাকে প্রদান করিলাম। তিনি উহা পাঠ করিলেন এবং সঙ্গে লইয়া চলিয়া গেলেন, আর বলিয়া গেলেন – “কিছুদিন বাদে এর জওয়াব পাবেন”।

করিম সাহেবকে প্রদত্ত তালিকার প্রশ্নের ব্যাখ্যা ছিল না। ফৌজদারী মামলার জবাবদিহি করিবার উদ্দেশ্যে আমাকে প্রশ্নগুলির কিছু ব্যাখ্যা লিখিতে হয়। সেই ব্যাখ্যা লিখাই হইল এই পুস্তক রচনার মূল উৎস। নির্দোষ প্রমাণে মামলা চূড়ান্ত হইলে ঐগুলিকে আমি পুস্তক আকারে গ্রন্হিত করিলাম। গ্রন্হনায় আমাকে উৎসাহিত ও সহযোগিতা দান করিয়াছিল স্নেহাস্পদ মো. ইয়াছিন আলী সিকদার।

এই পুস্তকখানার সম্পাদনা সম্পর্কে নানাবিধ উপদেশ, ভ্রম সংশোধন, এলোমেলো প্রশ্নগুলিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও শ্রেণীবিভাগ করিয়াছেন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক কাজী গোলাম কাদির সাহেব।

এই পুস্তকখানার সম্পাদনা শেষ হইয়াছিল বিগত ১৩৫৮ সালে। কিন্তু নানা কারণে এযাবত প্রকাশ করা সম্ভব হয় নাই। বর্তমানে ইহার কোন কোন কালের অংশের কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করিয়া প্রকাশ করা হইল। বর্ধিত অংশের ভ্রমাদি সংশোধনের শ্রম স্বীকার করিয়াছেন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক মুহাম্মদ শামসুল হক সাহেব এবং প্রকাশনায় আর্থিক সাহায্যপ্রদান করিয়াছেন মাননীয় অধ্যাপক শরফুদ্দিন রেজা হাই সাহেব। এতদকারণে সহযোগীদের নিকট আমি চিরকৃতজ্ঞ।

বিনীত
গ্রন্থাকার
লামচরি, বরিশাল
২০ শ্রাবণ, ১৩৮০

“আরজ আলী মাতুব্বর” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ

⇒অভিযোগ বা মন্তব্য⇐

কিছু স্মৃতি, কিছু কথা

নিবেদন

অধ্যায়ঃ সত্যের সন্ধান

দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা

প্রথম সংস্করণের ভূমিকা

মূলকথাঃ প্রশ্নের কারন

প্রথম প্রস্তাবঃ আত্মা বিষয়ক

দ্বিতীয় প্রস্তাবঃ ঈশ্বর বিষয়ক

তৃতীয় প্রস্তাবঃ পরকাল বিষয়ক

চতুর্থ প্রস্তাবঃ ধর্ম বিষয়ক

পঞ্চম প্রস্তাবঃ প্রকৃতি বিষয়ক

ষষ্ঠ প্রস্তাবঃ বিবিধ

উপসংহার

টীকা

অধ্যায়ঃ অনুমান

ভূমিকা

রাবনের প্রতিভা

ফেরাউনের কীর্তি

ভগবানের মৃত্যু

আধুনিক দেবতত্ত্ব

মে’রাজ

শয়তানের জবানবন্দি

সমাপ্তি

অধ্যায়ঃ স্মরণিকা

লামচরি গ্রামের অবস্থান ও পরিবেশ

লাইব্রেরী ও সমাধি নির্মাণ

লাইব্রেরী উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও ৭৯ সালের বৃত্তি দান

উদ্বোধনী ভাষণ

মানব কল্যাণের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত

১৯৮০ সালের বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠান

পুস্তক প্রদান অনুষ্ঠান

পুস্তক প্রদান অনুষ্ঠানের ভাষণ

অবহেলিত একটি প্রতিভার স্বীকৃতি বাকেরগঞ্জ জিলা পরিষদ কর্তৃক বিশেষ পুরস্কার দান

বার্ষিক অধিবেশন ও ৮১ সালের বৃত্তিপ্রদান

আরজ মঞ্জিল পাবলিক লাইব্রেরীর দানপত্র সংক্রান্ত দলিলসমূহের অনুলিপি

স্মৃতিমালা

কেন আমার মৃতদেহ মেডিক্যালে দান করছি

বেদ-এর অবদান

অসমাপ্ত পান্ডুলিপি

ভাবি প্রশ্ন

না বুঝের প্রশ্ন

টুকুটাকি

অধ্যায়ঃ আমার জীবনদর্শন

প্রস্তাবনা

জগত সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত ধারণা

জীবন সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত ধারণা

সমাজ সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত ধারণা

বিভিন্ন আলোকচিত্র

হস্তাক্ষরে লেখা চিঠি

নির্ঘণ্ট

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x