প্রাচীন উপাসনা-ধর্মমতগুলোকে ধর্মগুরুরা ‘ধর্ম-দর্শন’ (Philosophy of Religion) বলে প্রচার চালাচ্ছেন।
‘দর্শন” বলতে যা বুঝি (প্রথম ও তৃতীয় অধ্যায়ে দর্শন-এর সংজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করেছি) তাতে কোনও প্রাচীন উপাসনা-ধর্মকেই আমরা দর্শন বলতে পারি না । প্রাচীন বৈদিক যুগের উপাসনা-ধর্মকেও আমরা একই কারণে ‘দর্শন’ বলতে পারি না ।
কিছু ধূর্ত অথবা মূর্খ ‘দর্শন’-এর সংজ্ঞাকে ধোঁয়াশায় ঢেকে উপাসনা-
ধর্মকে ‘দর্শন’ বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। যতদিন দেশবাসীদের
মধ্যে অজ্ঞানতা থাকবে, ততদিন ‘ধর্ম-দর্শন’ নামের
‘হাঁসজারু’টিও দিব্বি বেঁচে থাকবে।
স্কুলের প্রচলিত শিক্ষা অজ্ঞানতা দূর করে ভাবলে ভুল হবে। স্কুলে পুরাণের নানা দেব-দেবীদের গল্প, মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষার আঁটোসাটো পরিবেশ, ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে বাইবেলের প্রচার আর স্কুল জীবনের বাইরের পরিবেশে বিজ্ঞান বিরোধী কুসংস্কার ছোটবেলা থেকেই এমন আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে যে উত্তরণের পথ খুঁজে পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়ে।
ফলে বিশাল সংখ্যক উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যেও দেখা যায় যুক্তিবিন্যাসের অভাব। এটা ভারতীয় উচ্চশিক্ষিতদের একটা বড় অসুখ। পরিবেশগত ভাবে জন্ম থেকে ভক্তি ও বিশ্বাসকে এত বেশি করে জীবনে গ্রহণ করেছে যে, মুহূর্তে বিজ্ঞানের প্রাথমিক শিক্ষাটুকু ভুলে গিয়ে রাহু-কেতু-তুক-তাক্-বশীকরণ-ঝাড়ফুক-মন্ত্রতন্ত্র ইত্যাদির কাছে আত্মসমর্পণ করতে একটুও লজ্জিত হয় না। এটা শুধু আমাদের দেশের সমস্যা নয়, পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর সমস্যা।
কথায় কথায় ইউরোপ আমেরিকাকে আমরা যতই গাল পাড়ি শিক্ষায়-সংস্কৃতিতে এগিয়ে থাকা এ’সব দেশের সাধারণ মানুষ আবেগ সর্বস্বতার কাছে যুক্তিবুদ্ধি হারিয়ে ফেলে না। আমাদের গাল পাড়াটা অনেক সময়ই হীনমন্যতাবোধের পরিচয় বহন করে।
“অলৌকিক নয়,লৌকিক- ৫ম খন্ড ” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ
অধ্যায়ঃ এক
ধর্মঃ সংজ্ঞায় গোলমাল
অধ্যায়ঃ দুই
উপাসনা ধর্মঃ প্রাচীন মত
♦ উপাসনা- ধর্মের (religion) উৎপত্তি
♦ একঃ দৈব-প্রত্যাদেশ বা অপৌরুষেয় প্রত্যাদেশ
♦ দুইঃ ঈশ্বরে বিশ্বাস; সহজাত প্রবৃত্তি
♦ তিনঃ ধর্মীয় আচরণ বাদে ঈশ্বর বিশ্বাস
♦ আধুনিক নাস্তিক্যবাদ ‘মার্কসবাদ’
অধ্যায়ঃ তিন
‘সমকালীন যুক্তিবাদ’ নাস্তিক্যবাদের সঙ্গে বাড়তি কিছু
♦ ‘সমকালীন যুক্তিবাদ’ চির নতুন
♦ তোমার আমার দুই চেতনার ভালো-খারাপ
♦ মারাদোনার পায়ের জাদু ও যুক্তিবাদ
♦ প্রেমের রহস্যময়তা ও যুক্তিবাদ
♦ ‘ঈশ্বরে বিশ্বাস’, ‘বিজ্ঞানের বিশ্বাস’ : আকাশ-পাতাল
অধ্যায়ঃ চার
উপাসনা ধর্মঃ আধুনিক মত
♦ উপাসনা-ধর্ম : নৃতত্ত্ব ও সমাজতত্ত্বের দৃষ্টিতে
অধ্যায়ঃ পাঁচ
ভারতবর্ষের জাদু সংস্কৃতি
♦ আদিম উপজাতি, আধুনিক উপজাতিঃ একই কথা
♦ ধর্মীয় জাদু বিশ্বাস ও ম্যাজিক শোঃ দুই পৃথিবী
অধ্যায়ঃ ছয়
তন্ত্রের প্রথম ধাপ যোগ, তারপর…
অধ্যায়ঃ সাত
বৈদিক সাহিত্য, জাদু-বিশ্বাস, যজ্ঞে যৌনাচার
♦ সত্য খোঁজে মুক্তমন, হিসেব কষে ভন্ড
♦ বৈদিক সাহিত্যের গপ্পো ও দুই ডাক্তার
♦ বৈদিক সাহিত্যে জাদু-বিশ্বাস, যজ্ঞের নামে যৌনাচার
অধ্যায়ঃ আট
হিন্দু উপাসনা-ধর্মে তন্ত্র
অধ্যায়ঃ নয়
শক্তিধর্মে তন্ত্র
অধ্যায়ঃ দশ
রেইকি গ্রাণ্ডমাষ্টার, ফেং শুই ক্ষমতার দাবিদার, জ্যোতিষী ও অলৌকিক ক্ষমতার দাবিদারদের প্রতি