বাশনের লোকেদের সঙ্গে যুদ্ধ
১. আমরা ফিরেছিলাম এবং বাশবনের রাস্তা ধরে গিয়েছিলাম। ইদ্রিয়ীতে বাশবনের রাজা ওগ এবং তার সমস্ত লোকেরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে এসেছিল।
২. প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘ওগ সম্পর্কে ভীত হয়ো না। আমি স্থির করেছি যে তাকে আমি তোমাদের কাছে সমর্পণ করব। তার সমস্ত লোকেদের এবং তার দেশ আমি তোমাদের দেব। হিষবোনে যিনি শাসনকার্য চালাতেন সেই ইমোরীয় রাজা সীহোনকে তোমরা যেভাবে পরাজিত করেছিলে, ঠিক সেভাবেই তোমরা একেও পরাজিত করবে।’
৩. ‘সেই কারণে প্রভু আমাদের ঈশ্বর বাশনের রাজা ওগকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছিলেন। আমরা তাকে এবং তার সমস্ত লোকেদের পরাজিত করেছিলাম। তাদের আর কেউই বাকী ছিল না।
৪. সেই সময় ওগের অধিকারে যে সমস্ত শহর ছিল তার সবগুলোই আমরা অধিকার করেছিলাম। ওগের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব শহরগুলোই অধিকার করেছিলাম— এর মধ্যে ছিল বাশনের রাজা ওগের রাজ্য, অর্গোব নামক অঞ্চলের ৬০ টি শহর।
৫. এই সমস্ত শহরগুলো খুবই শক্তিশালী ছিল। তাদের দেওয়ালগুলি ছিল উঁচু, দরজ এবং দরজার ওপরে খিল ছিল খুব শক্ত। সেখানে আরও বহু এমন শহর ছিল যেগুলোর কোনো প্রাচীর ছিল না।
৬. “হিষবোনের রাজা সীহোনের শহরগুলিকে আমর৷ যেভাবে ধ্বংস করেছিলাম, সেভাবেই এদেরও ধ্বংস করেছিলাম। প্রত্যেকটি শহরকে এবং সেখানে বসবাসকারী সমস্ত লোকেদের এমনকি সমস্ত স্ত্রীলোকদের এবং শিশুদেরও আমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম।
৭. কিন্তু ওই সমস্ত শহরের সমস্ত গোরু এবং সমস্ত মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী আমরা নিজেদের জন্য রেখে দিয়েছিলাম।
৮. ‘সেই প্রকারে, আমরা দুজন ইমোরীয় রাজার কাছ থেকে তাদের দেশ অধিগ্রহণ করেছিলাম। যদন নদীর পূর্বদিকে অর্ণোন উপত্যকা থেকে মাউণ্ট হর্মোণ পর্বত পর্যন্ত দেশ আমরা অধিগ্রহণ করেছিলাম।
৯. (সীদোনের লোকের৷ হর্মোণ পর্বতকে বলে সিরিয়োণ, কিন্তু ইমোরীয়রা এটিকে বলতো সনীর।)
১০. উঁচু সমতলভূমির সমস্ত শহরগুলোকে এবং গিলিয়দ অধিগ্রহণ করেছিলাম। বাশনের সমস্ত অঞ্চল, সখা এবং ইন্দ্রিয়ী পর্যন্ত সমস্ত আমরা অধিকার করেছিলাম। সখা এবং ইদ্রিয়ী বাশনের রাজা ওগ-এর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।”
১১. (অবশিষ্ট রফায়ীয়দের মধ্যে কেবলমাত্র বাশনের রাজা ওগ ছিলেন। ওগ-এর খাট ছিল লোহা দিয়ে তৈরি। এটি ১৩ ফুটেরও বেশী লম্বা এবং ৬ ফুট চওড়া ছিল। খাটটি এখনও রব্বা শহরে আছে, যেখানে অম্মোন লোকেরা বাস করে।)
যৰ্দ্দন নদীর পূর্বদিকের দেশ
১২. “সেই কারণে আমরা সেই দেশ আমাদের জন্য অধিকার করেছিলাম। রূবেণ এবং গাদের পরিবারগোষ্ঠীদের আমি এই দেশের অংশ বিশেষ দান করেছিলাম। অর্ণোন উপত্যকার আরোয়ার নামক জায়গা থেকে গিলিয়দের পাতত দের পরে সানাম দেশ এবং এর অন্তর্গত সমস্ত শহর আমি তাদের প্রদান করেছিলাম।
যদ্দন নদীর পূর্ব দিকের দেশ
১৩. মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকাংশকে আমি গিলিয়দের অপর অর্ধেক এবং বাশনের সম্পূর্ণ অঞ্চল প্রদান করেছিলাম।” (বাশন ছিল ওগের রাজ্য। বাশনের কিছু অংশকে বলা হতে৷ অর্গোব। এটিকে রফায়ীয় দেশও বলা হতো।
১৪. মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর যায়ীর, অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল অধিগ্রহণ করেছিলেন। গশ্বরীয় লোকেদের এবং মাখাথীয় লোকেদের সীমানা পর্যন্ত সেই অঞ্চল বিস্তৃত ছিল। সেই অঞ্চলটি যায়ীর নামে অভিহিত হয়েছিল। সেই কারণে আজও লোকের৷ বাশনকে যায়ীরের শহর বলে।)
১৫. ‘আমি মাখীরকে গিলিয়দ প্রদান করেছিলাম।
১৬. “এবং রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীকে এবং গাদ-এর পরিবারগোষ্ঠীকে আমি সেই দেশ প্রদান করেছিলাম, যেটি গিলিয়দে শুরু হয়েছে। এই দেশটি অর্ণোন উপত্যকা৷ থেকে যব্বোক নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। উপত্যকাটির মধ্যাঞ্চল হল একটি সীমানা। যব্বোক নদীটি হল অম্মোনীয় লোকেদের সীমানা।
১৭. মরুভূমির কাছের যদ্দন নদী ছিল তাদের পশ্চিম সীমানা। এই অঞ্চলের উত্তরে গালিল হ্রদ এবং দক্ষিণে রয়েছে মৃতের সমুদ্র (লবণ সমুদ্র)। এটি পূর্বদিকের পিগার পাহাড়গুলির নীচে অবস্থিত।
১৮. “সেই সময়, আমি তোমাদের এই আদেশ দিয়েছিলাম: ‘প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যদ্দন নদীর পূর্বদিকের দেশ বাস করার জন্য দিয়েছেন। কিন্তু এখন তোমাদের যোদ্ধার৷ অবশ্যই তাদের অস্ত্র তুলে নেবে এবং অন্যান্য ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীকে নদী অতিক্রম করার কাজে নেতৃত্ব দেবে।
১৯. “তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের সন্তানরা এবং তোমাদের সমস্ত গবাদিপশু (আমি জানি তোমাদের অনেক গবাদিপশু আছে) অবশ্যই এই শহরগুলিতে থাকবে, যেট৷ আমি তোমাদের দিয়েছি।
২০. কিন্তু তোমরা অবশ্যই তোমাদের ইস্রায়েলীয় আত্মীয়বর্গকে সাহায্য করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার৷ যৰ্দ্দন নদীর অপর পারে তাদের প্রভুর দেওয়া দেশ অধিগ্রহণ করে। প্রভু তাদের সেখানে শান্তি দেওয়া পর্যন্ত তাদের সাহায্য করে।, ঠিক যেমন তিনি এখানে তোমাদের জন্য করেছিলেন। এরপর আমি তোমাদের যে দেশ দিয়েছি সেখানে ফিরে আসতে পার।’
২১. “তখন আমি যিহোশূয়কে বলেছিলাম, ‘প্রভু তোমাদের ঈশ্বর এই দুজন রাজার কি দশা করেছেন সেটা তুমি স্বচক্ষে দেখেছ। তুমি যে রাজ্যেই প্রবেশ করবে, সেখানেই ঈশ্বর এই একই কাজ করবেন।
২২. এই সকল দেশের রাজাদের ভয় পেও না, কারণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন।’
মোশি কনানে প্রবেশের অনুমতি পেলেন না
২৩. “এরপর আমার বিশেষ কিছু করার জন্য আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম। আমি বলেছিলাম,
২৪. ‘প্রভু আমার মনিব, আমি তোমার সেবক। আমি জানি যে তুমি তোমার চমৎকারিত্বের এবং শক্তির সামান্য অংশই আমাকে দেখিয়েছ। তুমি যে মহৎ এবং শক্তিসম্পন্ন কাজ করেছ, তেমন কাজ করতে পারে এমন কোনো ঈশ্বর স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে নেই।
২৫. কৃপা করে আমাকে যদ্দন নদী পার হতে এবং সেই উত্তম দেশ প্রত্যক্ষ করতে দাও। আমাকে সুন্দর পার্বত্য দেশ এবং লিবানোন দর্শন করতে দাও।’
২৬. “কিন্তু তোমাদের জন্য প্রভু আমার ওপরে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তিনি আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিলেন। প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘এটাই যথেষ্ট! এই প্রসঙ্গে আর কোনে৷ কথা বোলো না।
২৭. ”পিসগা পর্বতের সর্বোচ্চ শিখরে যাও। এর পশ্চিম দিক, উত্তর দিক, দক্ষিণ দিক এবং পূর্বদিক প্রত্যক্ষ কর। তুমি এই সব চোখে দেখতে পাবে, কিন্তু কখনই যৰ্দ্দন নদী অতিক্রম করতে পারবে না।
২৮. তুমি অবশ্যই যিহোশূয়কে নির্দেশ দেবে। তুমি অবশ্যই তাকে উৎসাহিত করবে এবং তাকে সবল করবে। কারণ যৰ্দ্দন নদী অতিক্রম করার কাজে যিহোশূয় লোকেদের নেতৃত্ব দেবে। তুমি কেবল দেশটি দেখতে পাবে, কিন্তু যিহোশূয় তাদের ওই দেশে নিয়ে যাবে। সে তাদের ওই দেশটির অধিগ্রহণে এবং সেখানে বাস করতে সাহায্য করবে।
২৯. “সেই কারণে, বৈৎ-পিয়োরের অপর দিকের উপত্যকাতেই আমর৷ থেকেছিলাম।”