ইস্রায়েলের লোকেরা মরুভূমিতে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরেছিল

১. “তারপর প্রভু আমাকে যা করতে বলেছিলেন, সেই অনুসারে আমরা সূফ সাগরে যাওয়ার রাস্তা দিয়ে মরুভূমিতে ফিরে গিয়েছিলাম। সেয়ীর পর্বতমালাকে চক্রাকারে বেষ্টন করে আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ করেছিলাম।

২. তখন প্রভু আমাকে বলেছিলেন,

৩. এই পর্বতমালাকে ঘিরে তোমরা বহুদিন ধরে ভ্রমণ করেছ। উত্তর দিকে ঘুরে যাও।

৪. লোকেদের এই কথাগুলো বলঃ তোমরা সেয়ীর দেশের মধ্য দিয়ে যাবে। এই দেশটি তোমাদের আত্মীয় এষৌ-এর উত্তরপুরুষের। তারা তোমাদের ভয় পাবে। তাই তোমরা সাবধান হবে।

৫. তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো না। তাদের দেশের কোনো অংশই আমি তোমাদের দেবো না— এমন কি এর এক ফুট পরিমাণও নয়। কারণ আমি এষৌকে সেয়ীরের পার্বত্য প্রদেশটি তার নিজের দেশ হিসাবে দিয়েছি।

৬. তোমরা তাদের কাছ থেকে টাক৷ দিয়ে খাবার কিনে খাবে এবং জল কিনে পান করবে।

৭. মনে রাখবে যে তোমরা যা করেছো তার প্রত্যেকটি কাজে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন। এই বৃহৎ মরুভূমির মধ্য দিয়ে তোমাদের হাঁটার খবর তিনি জানেন। এই ৪০ বছর ধরে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে আছেন। তাই তোমাদের কোন কিছুরই অভাব হয়নি।’

৮. ‘সেই কারণে আমা৷ সেয়ারে বসবাসকারী এষৌ-এর লোকেদের অর্থাৎ আমাদের আত্মীয়দের সামনে দিয়ে চলে গেলাম। যৰ্দ্দন উপত্যকা থেকে এলৎ এবং ইৎসিয়োন গেবরের শহরে যাওয়ার রাস্তা ত্যাগ করে আমরা মোয়াবের মরুভূমিতে যাওয়ার রাস্তার দিকে ঘুরেছিলাম।

আর্-এ ইস্রায়েল

৯. “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘মোয়াবে লোকেদের কষ্ট দিও না, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করো না, তাদের দেশের কোনো অংশই আমি তোমাদের দেবো না। তারা লোটের উত্তরপুরুষ এবং আমিই তাদের আর্ শহর দান করেছিলাম।””

১০. অতীতে, আর্-এ এমীয় লোকেরা বাস করতো। তারা খুব শক্তিশালী ছিল এবং সেখানে তাদের সংখ্যাও ছিল প্রচুর। অনাকীয় লোকেদের মতো তারা উচ্চতায় ছিল বেশ লম্বা।

১১. অনাকীয় ছিল রফায়ীয় লোকেদেরই অংশ বিশেষ। লোকেরা ভেবেছিল যে এমীয়রাও রফায়ীয়; কিন্তু মোয়াবে লোকেরা তাদের এমীয় বলত।

১২. আগে সেয়ীরে হোরীয় লোকেরাও থাকত, কিন্তু এষৌ-এর লোকেরা হোরীয়দের তাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তাদের ধ্বংস করে দেশেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিল। ইস্রায়েলের লোকেরাও ঠিক এইরকমটাই করেছিল, প্রভু তাদের যে দেশ দিয়েছিলেন সেই দেশের লোকেদের প্রতি এই একই কাজ করেছিল।)

১৩. “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘এখন তোমরা সেরদ উপত্যকার অপর পাশে যাও।’ সেই কারণে আমরা সেরদ উপত্যকা পার করেছিলাম।

১৪. “কাদেশ বৰ্ণেয় ত্যাগের পর থেকে সেরদ উপত্যকা অতিক্রম করা পর্যন্ত মাঝখানে ৩৮ বছরের ব্যবধান ছিল। এই সময়ের মধ্যে আমাদের শিবিরেরর সব পুরুষ যোদ্ধার। ই মার গিয়েছিল। প্ৰভু তেমনই শপথ করেছিলেন।

১৫. শিবিরের মধ্যে তাদের সকলের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত প্রভু তাদের বিরুদ্ধে ছিলেন।

১৬. “আমাদের সমস্ত যোদ্ধারা মারা যাওয়ার পর,

১৭. প্রভু আমাকে এই কথা বলেছিলেন,

১৮. ‘আজ তোমরা অবশ্যই আর্-এ সীমান্ত পার করবে এবং মোয়াবে প্ৰবেশ করবে।

১৯. “তোমরা অম্মোনীয়দের কাছে উপস্থিত হলে তাদের বিরক্ত করবে না। তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো না, কারণ আমি তাদের দেশ তোমাদের দান করবো না ৷ কারণ তারা লোটের উত্তরপুরুষ এবং আমিই তাদের ওই দেশ দিয়েছি।””

২০. (সেই দেশ রফায়ীয়ের দেশ বলেও পরিচিত। অতীতে রফায়ীয় লোকেরা সেখানে বাস করতো। অম্মোনের লোকেরা তাদের সম্মীয় বলে ডাকত।

২১. সেখানে বহু সমসুম্মীয় ছিল এবং তারা ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী। অনাকীয় লোকেদের মতে৷ তারা উচ্চতায় লম্বা ছিল। কিন্তু সমসুম্মীয়দের ধ্বংস করতে প্রভু অম্মোন লোকেদের সাহায্য করেছিলেন। অম্মোন লোকেরা সেই দেশ অধিগ্রহণ করে সেখানেই বাস করছে।

২২. এষৌ এর লোকেদের জন্য ঈশ্বর এই একই কাজ করেছিলেন। অতীতে হোরীয় লোকেরা সেয়ীরে (ইদোম) বাস করত; কিন্তু এষৌ এর লোকেরা হোরীয়দের ধ্বংস করে আজ পর্যন্ত এষৌর উত্তরপুরুষ সেখানেই বাস করছে। গুপ্তোরীয় এর কিছু সংখ্যক লোকের জন্যও ঈশ্বর এই একই কাজ করেছিলেন। ঘসার চতুর্দিকের শহরে অববীয় লোকেরা বাস করত। কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক 

২৩. কপ্তোরীয় থেকে এসে অব্বীয়দের ধ্বংস করেছিল। ক্রিট্ থেকে আগত ওই সকল লোকেরা সেই দেশ অধিগ্রহণ করে সেখানেই বাস করল।)

ইমোরীয় লোকেদের সঙ্গে যুদ্ধ

২৪. “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘অর্ণোন উপত্যক৷ অতিক্রম করে যাওয়ার জন্য তৈরি হও। হিবোনে ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে পরাজিত করতে আমি তোমাদের সাহায্য করবো। তার দেশ অধিগ্রহণ করতে আমি তোমাদের সাহায্য করবে।। সুতরাং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হও এবং তার দেশ অধিগ্রহণ করে।

২৫. আজ আমি সমস্ত জায়গার সকল লোকের মধ্যে তোমাদের সম্পর্কে ভীতির সঞ্চার করবো। তারা তোমাদের খবর জেনে ভয়ে আতঙ্কিত এবং কম্পিত হবে।’

২৬. “কদেমোৎ-এর মরুভূমিতে থাকাকালীন আমি হিবোনের রাজা সীহোনের কাছে কয়েকজন দূত পাঠিয়েছিলাম। দূতেরা সীহোনকে শান্তির প্রস্তাব দিয়ে বলেছিল, 

২৭. ‘আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন। আমরা রাস্তায়ই থাকবো। আমরা রাস্তার ডানদিক অথবা বামদিক কোনোদিকেই ঘুরব না।

২৮. আমা৷ আপনাদের কাছ থেকে খাবার ও জল রূপো দিয়ে কিনে খাব। আমরা শুধুমাত্র আপনার দেশের মধ্য দিয়ে পদব্রজে ভ্রমণ করতে চাই।

২৯. প্রভু আমাদের ঈশ্বর যে দেশ দিচ্ছেন, যৰ্দ্দন নদী অতিক্রম করে সেই দেশে পৌঁছোনো পর্যন্ত আমাদের আপনার দেশের মধ্য দিয়ে যেতে দিন। সেয়ীরে বসবাসকারী এষৌয় লোকেরা এবং আর্-এ বসবাসকারী মোয়াবীয় লোকেরা তাদের দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিয়েছেন।’

৩০. “কিন্তু সীহোন, হিবোনের রাজা, আমাদের তার দেশের মধ্য দিয়ে যেতে দেন নি। কারণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তার মন কঠিন ও একগুঁয়ে করলেন যেন তিনি তাকে তোমাদের হাতে সমর্পন করেন, যেমন আজ পর্যন্ত রয়েছে।

৩১. “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি রাজা সীহোন এবং তার দেশ তোমাদের দিচ্ছি। এখন যাও তার দেশ অধিগ্রহণ করো।’

৩২. “এরপর যহস নামক স্থানে রাজা সীহোন এবং তার সমস্ত লোকেরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে এসেছিল।

৩৩. কিন্তু প্রভু আমাদের ঈশ্বর সীহোনকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। আমরা রাজা সীহোন, তার পুত্রদের এবং তার সমস্ত লোকেদের পরাজিত করেছিলাম।

৩৪. “সেই সময় রাজা সীহোনের সব শহরগুলোই আমরা অধিকার করেছিলাম। প্রত্যেক শহরের সমস্ত লোকেদের সকল পুরুষদের, স্ত্রীলোকদের এবং ছোটো ছোটো শিশুদের আমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম। আমরা কাউকেই জীবিত ছেড়ে দিই নি।

৩৫. ওই সমস্ত শহরগুলো থেকে আমরা কেবলমাত্র গবাদিপশু এবং মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী নিয়েছিলাম। “অর্ণোন উপত্যকার ধারের অরোয়ের নামে একটি শহরকে এবং ওই উপত্যকার মাঝখানের আরেকটি শহরকে আমরা পরাজিত করেছিলাম।

৩৬. অর্ণোন উপত্যকা এবং গিলিয়দের মাঝখানের সমস্ত শহরগুলোকে পরাজিত করতে প্রভু আমাদের সাহায্য করেছিলেন। আমাদের কাছে কোনো শহরই খুব শক্তিশালী ছিল না।

৩৭. ”কিন্তু অম্মোনের লোকেদের অধিকারভুক্ত দেশের কাছে তোমরা যাও নি। যব্বোক নদীর উপকূলে অথবা পার্বত্য অঞ্চলের শহরগুলোর কাছেও তোমরা যাও নি। তোমরা সেই সমস্ত স্থানে যাও নি যেখানে যেতে প্রভু আমাদের ঈশ্বর নিষেধ করেছিলেন।

error: Content is protected !!