নিস্তারপর্ব

১. “তোমরা আবীব মাসকে মনে রাখবে। সেই সময় তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান দেখানোর জন্যে নিস্তারপর্ব উদযাপন করবে, কারণ সেই মাসে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর মিশর থেকে তোমাদের রাত্রে বের করে নিয়ে এসেছিলেন। 

২. প্রভু তার নাম বাস করার জন্যে যে জায়গা পছন্দ করবেন তোমরা অবশ্যই সেই জায়গায় যাবে। সেখানে তোমাদের পশুপাল থেকে পশু নিয়ে তা তোমরা নিস্তারপর্বের বলি হিসাবে প্রভুকে উৎসর্গ করবে।

৩. এই বলির সঙ্গে খামিরযুক্ত কোন রুটি খাবে না। তোমর৷ সাতদিন খামিরবিহীন রুটি খাবে। এই রুটিকে বল৷ হয় ‘দুঃখাবস্থার রুটি।’ মিশরে তোমাদের যেসব সমস্যা ছিল সেগুলো মনে করতে এটি সাহায্য করবে। মনে করে দেখ কতো তাড়াতাড়ি তোমাদের সেই দেশ ত্যাগ করতে হয়েছিল। মিশর থেকে যেদিন তোমরা বেরিয়ে এসেছিলে সেদিনের কথাা তোমরা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন মনে রাখবে।

৪. দেশের কোথাও কোনও বাড়িতে সাত দিন ধরে অবশ্যই খামির থাকবে না। এছাড়া প্রথম দিন সন্ধ্যাবেলায় তোমরা যত মাংস উৎসর্গ করবে সেগুলো অবশ্যই সকালের আগে খেয়ে নিতে হবে।

৫. “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যে শহরগুলো দিয়েছেন, সেখানে কোথাও তোমরা অবশ্যই নিস্তারপর্বের পশু উৎসর্গ করবে না।

৬. তোমরা কেবলমাত্র সেই স্থানেই নিস্তারপর্বের পশু উৎসর্গ করবে যেটিকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তাঁর নাম বাস করার জন্য মনোনীত করবেন। যে সময় সূর্য অস্ত যায়, সেই সন্ধ্যাবেলায় তোমরা অবশ্যই নিস্তারপর্বের পশু উৎসর্গ করবে। ঈশ্বর যে ঋতুতে তোমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন সেই ঋতুতেই এটা করবে।

৭. প্রভু তোমাদের ঈশ্বর যে জায়গ৷ পছন্দ করবেন সেই জায়গায় তোমরা অবশ্যই নিস্তারপর্বের মাংস রান্না করবে এবং সেটি খাবে। এরপর সকালে তোমরা বাড়ীতে ফিরে যেতে পার।

৮. এইদিন তোমরা নিশ্চয়ই খামিরবিহীন রুটি খাবে। সপ্তম দিনে তোমরা অবশ্যই কোনো কাজ করবে না। এই দিন প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান দেখানোর জন্য লোকেরা এক বিশেষ সভায় এসে একত্রিত হবে।

সপ্তাহের উৎসব (ফসল কাটার)

৯. “যেদিন থেকে তোমর৷ শস্য কাটা শুরু করেছিলে সেই দিন থেকে তোমরা সাত সপ্তাহ গোনো।

১০. তারপর প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের জন্য সপ্তাহের উৎসব উদ্‌যাপন করো। তোমরা যা নিয়ে আসতে চাও সেইরকম কোনো বিশেষ উপহার নিয়ে এসে এটি করো। প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের কতখানি আশীর্বাদ করেছেন সেটা চিন্তা করে স্থির করবে তোমরা কতটা দেবে।

১১. প্ৰভু তাঁর বিশেষ বাড়ীর জন্যে যে জায়গা পছন্দ করবেন সেখানে যাও। সেখানে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে তোমরা এবং তোমাদের লোকেরা একত্রে আনন্দ উপভোগ করবে। তোমাদের সমস্ত লোককে তোমাদের সঙ্গে নাও— তোমাদের পুত্রদের, তোমাদের কন্যাদের এবং তোমাদের সমস্ত সেবকদের। এছাড়া তোমাদের শহরগুলোতে বসবাসকারী দৈবীয়দের, বিদেশীদের, অনাথদের এবং বিধবাদেরও নিয়ে এসো।

১২. মনে রাখবে তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে। সুতরাং এই বিধিগুলো৷ মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক থাকবে।

কুটীর উৎসব

১৩. ‘শস্য মাড়ানোর জায়গা থেকে শস্য সংগ্রহ করার পর এবং দ্রাক্ষা মাড়ার জায়গা থেকে দ্রাক্ষারস সংগ্রহ করার সাতদিন পরে তোমরা অবশ্যই কুটীর উৎসব উদযাপন করবে।

১৪. এই উৎসবে তোমরা সকলে আনন্দ উপভোগ করো—তোমরা তোমাদের ছেলেরা, তোমাদের মেয়েরা, তোমাদের সমস্ত সেবকরা এবং তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়রা, বিদেশীরা, অনাথেরা এবং বিধবার।

১৫. প্রভু যে স্থান পছন্দ করবেন সেই বিশেষ স্থানে তোমরা সাতদিন ধরে এই উৎসব উদযাপন করবে। তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য তোমরা এটি কর। শস্য সংগ্রহ এবং সমস্ত কাজে যেহেতু প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করবেন তাই তোমরা খুব আনন্দ করবে।

১৬. “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর যে স্থান পছন্দ করবেন সেই বিশেষ স্থানে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে বছরে তিনবার তোমাদের পুরুষরা অবশ্যই আসবে। খামিরবিহীন রুটি তৈরির উৎসব, সপ্তাহের উৎসব এবং কুটীর উৎসবের জন্যও তারা আসবে। প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসা প্রত্যেক ব্যক্তি অবশ্যই উপহার নিয়ে আসবে, খালি হাতে আসবে না।

১৭. প্রত্যেক ব্যক্তি যতটা পারবে ততট৷ অবশ্যই দেবে। প্রভু তাকে কতটা দিয়েছেন সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সে স্থির করবে সে ঈশ্বরকে কতট৷ দেবে।

লোকেদের জন্য বিচারক এবং পদস্থ কর্মচারীগণ

১৮. “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, যে শহরগুলো তোমাদের দিতে চলেছেন তার প্রত্যেকটিতে তোমরা অবশ্যই বিচারকদের এবং উচ্চপদাধিকারী ব্যক্তিদের নিয়োগ করবে। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী অবশ্যই এটি করবে এবং লোকেদের বিচারের সময় এরা অবশ্যই পক্ষপাতহীন হবে।

১৯. “তোমরা অবশ্যই অন্যায় বিচার করবে না এবং সবসময় পক্ষপাতহীন হবে। রায় দেওয়ার সময় মন পরিবর্তনের জন্য কারও কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করবে না। অর্থ অনেক জ্ঞাণী লোককেও অন্ধ করে দেয় এবং একজন ভালে৷ লোকে যা বলবে তাও পরিবর্তন করে দেয়।

২০. সততা এবং পক্ষপাতহীনতা! সব সময় সৎ এবং পক্ষপাতহীন থাকার জন্য তোমাদের অবশ্যই খুব কঠোর চেষ্টা করতে হবে! তাহলেই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে তোমর৷ থাকতে পারবে এবং রাখতে পারবে।

ঈশ্বর মূর্ত্তি ঘৃণা করেন

২১. “তোমর৷ প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের জন্য নির্মিত বেদীর পাশে দেবী আশেরাকে সম্মান করার জন্য কোনোও কাঠের স্তম্ভ স্থাপন করবে না।

২২. এবং মূর্ত্তি পূজার জন্য তোমর৷ কোনোও বিশেষ পাথর স্থাপন করবে না। প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, ওই জিনিসগুলোকে ঘৃণা করেন।

error: Content is protected !!