কালি লিনাক্স রান করার পর প্রথম কাজটি-ই হল লিনাক্সের টার্মিনাল ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা, তা যাচাই করা। যেহেতু লিনাক্সের যাবতীয় কাজের নির্দেশ দেয়া হয় টার্মিনাল কমান্ড টাইপের মাধ্যমে, সেহেতু টার্মিনাল যদি ঠিকঠাক কাজ না করে, তাহলে লিনাক্স সেটাপ বৃথা। চলুন, আমরা টার্মিনালের কার্যক্ষমতা চেক করি এবং একই সাথে টার্মিনালে কমান্ড প্রয়োগ করা শিখি। কালি লিনাক্স হোম পেজের উপরের মেন্যু বারে কালো কালারের বক্সটি-ই হল টার্মিনালের আইকন। ওখানে ক্লিক করলেই টার্মিনাল ওপেন হয়ে যাবে। নিচের পিকচার ফলো করুনঃ
টার্মিনাল আইকনে ক্লিক করলে নিচের পিকচারের মত একটি টেবিল দেখতে পাবেন, যেখানে নীল কালারে লেখা Kali. আপনি যেহেতু লিনাক্স-কে ইউজ তথা ব্যবহার করছেন, সেহেতু আপনি লিনাক্স ইউজার তথা লিনাক্স ব্যবহারকারী। এই প্রসেসের মাধ্যমে আপনি যে কাজ-ই করুন না কেন, সেখানে লিনাক্সের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কাজেই আপনি সর্বেসর্বা হয়ে এখানে কিছুই করতে পারবেন না। সীমাবদ্ধতার কারণে আপনাকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হতে হবে। কাজেই, লিনাক্সের এই কাজ সীমাবদ্ধতাপূর্ণ ইউজার তথা ব্যবহারকারীকে লোকাল ইউজারও বলা যেতে পারে।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় প্রসেসটি হল এমন একটি প্রসেস, যেখানে আপনি-ই আপনার লিনাক্সের সর্বেসর্বা। এখানে সীমাবদ্ধতা বলে কোন শব্দ নেই। যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন। এই প্রসেসকে বলা হয় রুট ইউজার।
আপনি যদি লিনাক্সের সীমাবদ্ধতার ভিতরে থেকেই হ্যাকিং প্র্যাকটিস করতে চান, সেক্ষেত্রে এটাই বেস্ট। অন্যথা যদি আপনি নিজেই সর্বেসর্বা হয়ে প্র্যাকটিস করতে চান, তাহলে টার্মিনালে কমান্ড টাইপ করুন sudo su এবং এন্টার প্রেস করুন। নিচের পিকচার ফলো করুনঃ
কিবোর্ড থেকে এন্টার প্রেস করার সাথে সাথে দেখুন লাল কালারের root@kali -তে পরিবর্তিত হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, লোকাল ইউজার টার্মিনালে নীল কালারের ডলারের সিম্বল ছিল, কিন্তু sudo su কমান্ডের মাধ্যমে লোকাল ইউজার থেকে রুট ইউজারে পরিবর্তিত হওয়ার ফলে নীল কালারের ডলার সিম্বলের স্থলে লাল কালারের হ্যাস সিম্বল রয়েছে। অন্যদিকে সবুজ কালারের /home/kali দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, আমি এখন কালি লিনাক্সের home ডাইরেকটরীর মধ্যে থাকা kali ডাইরেকটরীতে অবস্থান করে কাজ করছি। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে আপনি যাকে ফোল্ডার বলতেন, লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে উক্ত ফোল্ডারকে বলা হয় ডাইরেক্টরী। আপনি চাইলে এই অবস্থান চেঞ্জ করে অন্য কোন অবস্থানে যেতে পারবেন, সেটা পর্যায়ক্রমে দেখানো হবে।
টার্মিনাল ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা, অর্থাৎ আপনার কমান্ড ফলো করে কাজ সম্পন্ন করছে কিনা, তা কিছু কমান্ড প্রয়োগের মাধ্যমে পরীক্ষা করা যাক।
আমরা টার্মিনালকে প্রশ্ন করি যে, আমি কে? তো কমান্ড করুনঃ who am i এবং এন্টার প্রেস করুন। এরপর দেখুন লিনাক্স উত্তর দিয়েছে Kali অর্থাৎ আপনি এখন কালি লিনাক্স ইউজার। এবং বামপাশে কমান্ডের তারিখ এবং সময় দেখাচ্ছে। নিচের পিকচার ফলো করুনঃ
এরপর আমরা লিনাক্সের নিকট হতে বর্তমান তারিখ জানতে চাইলে, দেখা যাক ঠিকঠাক জবাব দিতে পারে কিনা। তারিখ জানতে টার্মিনালে কমান্ড দিনঃ date এবং এন্টার প্রেস করুন। নিচে দেখতে পাচ্ছেন আজকের তারিখ এবং সময়। নিচের পিকচার ফলো করুনঃ
টার্মিনালে একটানা কমান্ড এবং কমান্ডের রেজাল্ট দেখতে দেখতে অনেক লেখা জমে হিজিবিজি অবস্থা হয়ে গেছে। কাজেই টার্মিনালকে পূর্বের মতো ফ্রেশ করতে কমান্ড দিতে হবে clear এবং এন্টার প্রেস করুন। সাথে সাথে টার্মিনালের সমস্ত কিছু মুছে টার্মিনাল পূর্বের মতো ফ্রেস হয়ে যাবে।
এখানে বলে রাখা ভালো যে, টার্মিনালে ধারাবাহিকভাবে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার ক্ষেত্রে টার্মিনালের পূর্বোক্ত কমান্ড বা রেজাল্ট মুছে ফেলাটা জরুরি নয়। এতে কোন প্রকার প্রভাব ফেলবে না। এটা নেহাতই আপনার ইচ্ছার ব্যাপার।
এবার আমরা লিনাক্সের নিকটে ক্যালেন্ডার দেখতে চাই, তো এর জন্য কমান্ড দিনঃ cal এবং এন্টার প্রেস করুন। cal হচ্ছে callender এর সংক্ষিপ্ত রূপ। কমান্ডটি দেয়ায় যদি ক্যালেন্ডার না আসে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার লিনাক্সে ক্যালেন্ডার ইন্সটল করা নেই, সেক্ষেত্রে নিচের পিকচারের মত দেখতে পাবেন, Do you want to install it? (N/y) অর্থাৎ আপনি ক্যালেন্ডার ইন্সটল করতে চান কিনা। যদি না চাই, সেক্ষেত্রে N টাইপ করে এন্টার করলেই ইন্সটল হবে না। অন্যথা যদি ইন্সটল করতে চান, সেক্ষেত্রে y টাইপ করে এন্টার প্রেস করলেই ইন্সটল হওয়া শুরু হবে, যদি আপনার লিনাক্সে নেট কানেকশন থাকে। ইংরেজি N -মূলত No এর সংক্ষিপ্ত রূপ এবং Y -মূলত Yes এর সংক্ষিপ্ত রূপ। আমি যেহেতু ক্যালেন্ডার চাই, সেহেতু ইন্সটল করার জন্য Y কমান্ড দিয়ে এন্টার প্রেস করেছি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ক্যালেন্ডার ইন্সটল এবং সেটাপ হয়ে যাবে।
ক্যালনেন্ডার ইন্সটল ও সেটাপ সম্পন্ন হয়ে গেলে পুনরায় পূর্বের মত ক্যালেন্ডার দেখার জন্য কমান্ড দিনঃ cal এবং এন্টার প্রেস করুন। এবার দেখতে পাবেন বর্তমান ক্যালেন্ডার।
আপনি যদি অতীতের কোন ক্যালেন্ডার দেখতে চান, সেক্ষত্রেও মুহূর্তের মধ্যেই লিনাক্স আপনাকে অতীতের যে কোন ক্যালেন্ডার দেখাতে সক্ষম। যেমন আপনি যদি দেখতে চান যে, ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর কি বার ছিল? সেক্ষেত্রে আপনাকে কমান্ড দিতে হবেঃ cal 12 1971 এবং এন্টার প্রেস করুন।
কমান্ডের ব্যাখ্যাঃ
cal ⇒ ক্যালেন্ডার (callender) এর সংক্ষিপ্ত রূপ,
12 ⇒ ১২ নং মাস তথা ডিসেম্বর মাস,
1971 ⇒ ১৯৭১ সাল।
নিচের পিকচারে দেখতে পাচ্ছেন December 1971 সালের ক্যালেন্ডার এবং ১৬ তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার।
অতীতের যে কোন ক্যালেন্ডারের মতো ভবিষ্যতেরও যে কোন সালের ক্যালেন্ডার দেখা সম্ভব এক ক্লিকেই। মনে করুন, আমি ২০৮২ সালের ডিসেম্বর মাসের ক্যালেন্ডার দেখতে চাই, সেক্ষেত্রে কমান্ড দিনঃ cal 12 2082 এবং এন্টার প্রেস করুন।
কমান্ডের ব্যাখ্যাঃ
cal ⇒ ক্যালেন্ডার (callender) এর সংক্ষিপ্ত রূপ,
12 ⇒ ১২ নং মাস তথা ডিসেম্বর মাস,
2082 ⇒ ২০৮২ সাল।
নিচের পিকচারে দেখতে পাচ্ছেন, ২০৮২ সালের ডিসেম্বর মাসের ক্যালেন্ডার।
লিনাক্সের যে কোন ধরণের কাজ শুরুর পূর্বেই লিনাক্সে আপডেট এবং আপগ্রেড করা জরুরি। অন্যথা আপনার লিনাক্স যদি পুরাতন কোন ভার্সনের হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে নানা রকম জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। সে সমস্ত জটিলতা এরাতে লিনাক্সকে সম্পূর্ণ নতুন ভার্সনে পরিবর্তিত করতে হবে। কিভাবে লিনাক্সের পুরাতন ভার্সন থেকে নতুন ভার্সনে আপডেট এবং আপগ্রেড করতে হয়, তা পরবর্তীতে আলোচিত হবে। সে পর্যন্ত পূর্বের কমান্ডগুলো বারংবার প্র্যাকটিস করতে থাকুন। অন্যথা কিছুই মনে রাখতে পারবেন না।