জন্ডিস হলে রোগীরা যেমন মালা পড়তে দৌড়ান, তেমনই অনেকে দৌড়োন জন্ডিস ধোয়াতে।
ওঝা বা গুণীন জন্ডিস রোগীর শরীরে মন্ত্র পড়ে হাত বুলিয়ে জলে হাত ধুতেই মন্ত্র শক্তির প্রভাবে জল হলুদ রং ধারণ করতে থাকে। আপনি যদি ভেবে থাকেন ‘রামবাবু’ বা ‘শ্যামবাবু’ যে কেউ রোগীর গায়ে হাত বুলিয়ে জলে হাত ধুলেই জল জন্ডিসের বিষ ধারণ করে হলুদ বর্ণ ধারণ করবে তবে ভুল করবেন। এমন একটা অদ্ভুত ঘটনা দেখার পর অনেক বিজ্ঞান পড়া মানুষ যদি মন্ত্র-তন্ত্র বা আদিবাসীদের তুক-তাক, ঝাড়ফুঁকে বিশ্বাস স্থাপন করে ফেলেন, তবে অবাক হবো না। আমাদের যুক্তিতে কোনও কিছুর ব্যাখ্যা খুঁজে না পেলে অহংবোধে ধরে নেই, এর কোনও ব্যাখ্যা থাক্যা সম্ভব নয়, অর্থাৎ ব্যাখ্যার অতীত, অলৌকিক। আমরা অনেক সময়ই বিস্মিত হই, আমার জ্ঞানের বাইরের কোন কারণ দ্বারাই এমন কাজটি ঘটা সম্ভব।
প্রসঙ্গে ফেরা যাক। বাস্তবে অনেক সময় দেখা যায় রোগী একটু একটু ভালো হচ্ছেন। জন্ডিস-ধোয়া গুণীনের নাম ও পসার বাড়ে। কেন সারে, এই প্রসঙ্গের আবার অবতারণা করা অপ্রয়োজনীয়, কারণ জন্ডিসের মালা নিয়ে আলোচনাতে এই প্রসঙ্গে আমি এসেছিলাম। বরং এই প্রসঙ্গে আসি, কি করে জন্ডিস রোগীর গায়ে বোলান হাত ধুলে জল হলুদ হয়।
একটু কষ্ট করে আম ছাল বেটে রস তৈরি করুন। একটা পাত্রে জল নিয়ে তাতে চুন ফেলে রাখুন। ঘণ্টা কয়েক পরে যে পরিষ্কার চুন জল পাবেন সেটা একটা বাটিতে ছেঁকে স্রেফ জল বলে যার সামনেই হাজির করুন- সকলেই সাধারণ জল বলেই বিশ্বাস করবেন। হাতে ঘষুন আমগাছের রস। এবার একজন সুস্থ মানুষের গায়ে হাত বুলিয়ে হাতটা বাটির চুন জলে ধুতে থাকুন, দেখবেন সেই অবাক কান্ডটাই ঘটে যাচ্ছে- জল হলুদ হয়ে যাচ্ছে।
যে সব প্রচলিত তুক-তাক,
ঝাড়-ফুঁক বিষয়ে আমরা আলোচনা
করলাম, এর বাইরেও কিছু কিছু থেকে গেছে,
যেগুলো অপ্রধান বলে আলোচনায় আনিনি, অথবা
এমন কিছু কিছু তুক-তাক নিয়ে আলোচনা করলে ভাল
হতো, যেগুলোর বিষয়ে আমি এখনও কিছু শুনিনি
বলে আলোচনা করতে পারলাম না। সে সব তুক-তাক,
ঝাড়-ফুঁকের বিষয়ে বিস্তৃতভাবে জানিয়ে কেউ যদি
এর লৌকিক ব্যাখ্যা চান, নিশ্চয়ই দেব। এই
বিষয়ে আপনাদের কোনও অনুসন্ধানে
প্রয়োজনে আমার এবং আমাদের
সমিতির সমস্ত রকম সহযোগিতার
প্রতিশ্রুতি রইলো। শুধু
অনুরোধ, চিঠি জবাবী খাম
সহ পাঠাবেন।
“অলৌকিক নয়,লৌকিক- ২য় খন্ড ” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ
♦ কিছু কথাঃ যুক্তিবাদ প্রসঙ্গে
একঃ ভূতের ভর
♦ ভূতের ভরঃ বিভিন্ন ধরন ও ব্যাখ্যা
♦ গুরুর আত্মার খপ্পরে জনৈকা শিক্ষিকা
♦ প্রেমিকের আত্মা ও এক অধ্যাপিকা
ভূতে পাওয়া যখন ম্যানিয়াস ডিপ্রেসিভ
♦ সবার সামনে ভূত শাড়ি করে ফালা
♦ গ্রামে ফিরলেই ফিরে আসে ভূতটা
♦ একটি আত্মার অভিশাপ ও ক্যারেটে মাস্টার
দুইঃ পত্র পত্রিকার খবরে ভূত
♦ ট্যাক্সিতে ভূতের একটি সত্যি কাহিনী ও এক সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক
♦ এক সত্যি ভূতের কাহিনী ও এক বিজ্ঞানী
♦ বেলঘরিয়ার গ্রীন পার্কে ভূতুরে বাড়িতে ঘড়ি ভেসে বেড়ায় শূন্যে
♦ দমদমের কাচ-ভাঙ্গা হল্লাবাজ-ভূত
তিনঃ যে ভূতুরে চ্যালেঞ্জের মুখে বিপদে পড়েছিলাম
চারঃ ভূতুরে চিকিৎসা
♦ ফিলিপিনো ফেইথ হিলার ও ভূতুরে অস্ত্রোপচার
♦ ফেইথ হিলার ও জাদুকর পি.সি. সরকার (জুনিয়র)
♦ পরকাল থেকে আসা বিদেহী ডাক্তার
♦ বিদেহী ডাক্তার দ্বারা আরোগ্য লাভ
♦ ডাইনী সম্রাজ্ঞী ঈপ্সিতার ভূতুরে চিকিৎসা
পাঁচঃ ভূতুরে তান্ত্রিক
♦ গৌতম ভারতী ও তাঁর ভূতুরে ফটোসম্মোহন
♦ ভূতুরে সম্মোহনে মনের মত বিয়েঃ কাজী সিদ্দীকির চ্যালেঞ্জ
ছয়ঃ ডাইনি ও আদিবাসী সমাজ
বাঁকুড়া জেলা হ্যান্ডবুক, ১৯৫১ থেকে
♦ ডাইনি, জানগুরু প্রথার বিরুদ্ধে কি করা উচিৎ
♦ ডাইনি হত্যা বন্ধে যে সব পরিকল্পনা এখুনি সরকারের গ্রহণ করা উচিৎ
♦ জানগুরুদের অলৌকিক ক্ষমতার রহস্য সন্ধানে
সাতঃ আদিবাসী সমাজের তুক-তাক, ঝাড়- ফুঁক
♦ ‘বিষ-পাথর’ ও ‘হাত চালান’এ বিষ নামান
আটঃ ঈশ্বরের ভর
♦ ঈশ্বরের ভর কখনো মানসিক রোগ, কখনো অভিনয়
♦ কল্যাণী ঘোষপাড়ায় সতীমা’ইয়ের মেলায় ভর
♦ হাড়োয়ার উমা সতীমার মন্দিরে গণ-ভর
♦ আর একটি হিস্টিরিয়া ভরের দৃষ্টান্ত
♦ একই অঙ্গে সোম-শুক্কুর ‘বাবা’ ও মা’য়ের ভর
♦ অবাক মেয়ে মৌসুমী’র মধ্যে সরস্বতীর অধিষ্ঠান (?) ও প্রডিজি প্রসঙ্গঃ
♦ প্রডিজি কি? ও কিছু বিস্ময়কর শিশু প্রতিভা
♦ বংশগতি বা জিন প্রসঙ্গে কিছু কথা
♦ বিস্ময়কর স্মৃতি নিয়ে দু-চার কথা
♦ দুর্বল স্মৃতি বলে কিছু নেই, ঘাটতি শুধু স্মরণে
♦ মানবগুণ বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশের প্রভাব
♦ মানবগুণ বিকাশে পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব-জীবনে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব-জীবনে আর্থ-সামাজিক পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব জীবনে সমাজ-সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রভাব
♦ অবাক মেয়ে মৌসুমীর রহস্য সন্ধানে
♦ বক্সিংয়ের কিংবদন্তী মহম্মদ আলি শূন্যে ভাসেন আল্লা-বিশ্বাসে!