চক্রবাক

‘চক্রবাক’ প্রথম সংস্করণ ১৩৩৬ সালে প্রকাশিত হয়। প্রকাশক : শ্রীগোপালদাস মজুমদার; ডি. এম. লাইব্রেরি, ৬১, কর্ণওয়ালিস স্ট্রিট, কলিকাতা। প্রবাসী প্রেস, ৯১নং আপার সার্কুলার রোড, কলিকাতা হইতে শ্ৰীসজনীকান্ত দাস কর্তৃক মুদ্রিত। মূল্য ১॥০ ।

‘চক্রবাক’ কাব্যে ‘উৎসর্গ” ও গোড়ার শিরোনাম-হীন কবিতাটি ছাড়া এই ২১টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত হইয়াছিল : ১. তোমারে পড়িছে মনে, ২. বাদল-রাতের পাখি, ৩. স্তব্ধরাতে, ৪. বাতায়ন-পাশে গুবাক তরুর সারি, ৫. কর্ণফুলী, ৬. শীতের সিন্ধু, ৭. পথচারী, ৮. মিলন-মোহনায়, ৯. গানের আড়াল, ১০. ভীরু, ১১. এ মোর অহঙ্কার, ১২. তুমি মোরে ভুলিয়াছ, ১৩. হিংসাতুর, ১৪. বর্ষা-বিদায়, ১৫. সাজিয়াছি বর মৃত্যুর উৎসবে, ১৬. অপরাধ শুধু মনে থাক, ১৭. আড়াল, ১৮. নদীপারের মেয়ে, ১৯. ১৪০০ সাল, ২০. চক্রবাক ও ২১. কুহেলিকা। ‘ভীরু’ ও ‘এ মোর অহঙ্কার’ ‘জিঞ্জীর’ কাব্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। ‘এ মোর অহংকার’ কবিতাটিতে ১৩টি স্তবক; কিন্তু ‘চক্রবাক’ কাব্যে উহার ৬ষ্ঠ স্তবক বৰ্জিত হইয়াছিল।

‘তোমারে পড়িছে মনে’ ১৩৩৫ ভাদ্রের ও ‘স্তব্ধ রাতে’ ১৩৩৫ মাঘের ‘ধূপছায়া’য় প্রকাশিত হয়।

“বাতায়ন-পাশে গুবাক তরুর সারি’ ১৩৩৫ চৈত্রের কালিকলমে প্রকাশিত হয়। উহা রচনার স্থান ও তারিখ : ‘চট্টগ্রাম, ২৪–১-২৯’।

‘কর্ণফুলী’ সাপ্তাহিক আত্মশক্তিতে, ‘পথচারী’ ১৩৩৬ জ্যৈষ্ঠের উপাসনায় এবং ‘গানের আড়াল’ ১৩৩৫ অগ্রহায়ণ-পৌষের ধূপছায়ায় প্রকাশিত হয়।

‘তুমি মোরে ভুলিয়াছ’ ১৩৩৫ বৈশাখের সওগাতে ‘রহস্যময়ী’ শিরোনামে প্রকাশিত হইয়াছিল। এ-সম্পর্কে কবি কলিকাতা হইতে ৩১-৩-১৯২৮ তারিখের এক পত্রে ঢাকায় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন সাহেবকে লিখেন :

“আমি আবার বিষ্যুৎত্বার কলকাতা ফিরে আসব। সেদিন সন্ধ্যায় Broadcasting-এ আমার গান গাইতে হবে। … আমি বিষ্যুত্বারে দুটো গান ও আমার নতুন কবিতা ‘রহস্যময়ী’ আবৃত্তি করব। ‘রহস্যময়ী’ চৈত্রের সওগাতে বেরুবে। ওর ‘তুমি মোরে ভুলিয়াছ’ নামটা বদলে ‘রহস্যময়ী’ করেছি।”

– [ নজরুল-জীবনে প্রেমের এক অধ্যায়, ৬৩ পৃ. ]

‘হিংসাতুর’ ১৩৩৫ জ্যৈষ্ঠের সওগাতে প্রকাশিত হয়। উহা রচনার স্থান ও তারিখ : ‘কলিকাতা, ২৯-৩-২৮’। এই কবিতাটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াই কবি তাহার প্রথমা (পরিত্যক্তা) পত্নীকে কলিকাতা হইতে ১-৭-৩৭ইং তারিখের এক পত্রের শেষে P.S. (পুনশ্চ) দিয়া লিখেন :

“আমার ‘চক্রবাক’ নামক কবিতা-পুস্তকের কবিতাগুলো পড়েছ? তোমার বহু অভিযোগের উত্তর পাবে তাতে। তোমার কোনো পুস্তকে আমার সম্বন্ধে কটূক্তি ছিল।”

— [ নজরুল-রচনা-সম্ভার, প্রথম সংস্করণ, ২৩৮ পৃ. ]

‘বর্ষা-বিদায়’ ১৩৩৫ ভাদ্রের সওগাতে, ‘সাজিয়াছি বর মৃত্যুর উৎসবে’ ১৩৩৫ বৈশাখের প্রগতিতে, ‘আড়াল’ ১৩৩৬ আষাঢ়ের কল্লোলে এবং ‘নদীপারের মেয়ে’ ১৩৩৫ বৈশাখের কালিকলমে প্রকাশিত হয়।

‘১৪০০ সাল’ ১৩৩৪ আষাঢ়ের কল্লোলে ‘আজি হতে শতবর্ষ আগে’ শিরোনামে প্রকাশিত হইয়াছিল। কল্লোল হইতে উহা ১৩৩৪ আষাঢ়ের নওরোজে উদ্ধৃত হইয়াছিল।

‘কুহেলিকা’ ১৩৩৫ মাঘের মোয়াজ্জিনে বাহির হয়।

 

পুনশ্চ

চক্রবাক ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে প্রকাশিত হয়। পৃষ্ঠা ৪+৭৮; মূল্য দেড় টাকা ।

১৯২৯ সালের জানুয়ারিতে নজরুল ইসলাম আবার চট্টগ্রামে আসেন এবং তামাকুমণ্ডিতে অবস্থান করেন। এ-সময়ে চক্রবাকের সূচনা-কবিতা (“ওগো ও চক্রবাকী”) ‘বাদল-রাতের পাখি”, ‘স্তব্ধ-রাতে’, ‘বাতায়ন-পাশে গুবাক তরুর সারি’, ‘কর্ণফুলী’, ‘শীতের সিন্ধু’ এবং অন্যান্য গ্রন্থভুক্ত আরো কবিতা ও গান রচিত হয়। অধ্যাপিকা সেলিনা বাহার জামানের কাছে রক্ষিত পাণ্ডুলিপিতে দেখা যায়। ‘শীতের সিন্ধু’ কবিতাটি ‘সিন্ধু—চতুর্থ তরঙ্গ’ রূপে রচিত হয়। মনে হয়, ছন্দের পার্থক্যের কারণে পরে কবি এর ভিন্ন নাম দেন।

[ তথ্যসূত্র : আবদুল কাদির সম্পাদিত ও বাংলা একাডেমী প্রকাশিত ‘নজরুল-রচনাবলী’র নতুন সংস্করণ থেকে। ]

error: Content is protected !!