ইমাম হাফিজ আল্লামা ইমাদুদ্দীন আবুল ফিদা ইসমাঈল ইব্‌ন উমর ইব্‌ন কাছীর আল্‌ কারশী আল বসরী (রঃ) ৭০০ হিজরী মোতাবেক ১৩০০ খ্রীস্টাব্দে সিরিয়ার বসরা শহরে এক সভ্রান্ত শিক্ষিত পবিরারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতা শায়খ আবূ হাফস শিহাবুদ্দীন উমর (রঃ) সেখানকার ‘খতীবে আজম’ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাঁহার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা শায়খ আবদুল ওহাব (রঃ) সমসাময়িক কালের একজন খ্যাতনামা আলিম, হাদীসবেত্তা ও তাফসীরকার ছিলেন। তাঁহার দুই পুত্র যয়নুদ্দীন ও বদরুদ্দীন সেই যুগের প্রখ্যাত হাদীসবেত্তা ছিলেন। মোটকথা, তাঁহার গোটা পরিবারই ছিল সেকালের জ্ঞান জগতের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কস্বরূপ।

মাত্র তিন বৎসর বয়সে ৭০৩ হিজরীতে তিনি পিতৃহারা হন। তখন তাঁহার অগ্রজ শায়খ আবদুল ওহাব তাঁহার অভিভাবকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন। ৭০৬ হিজরীতে তাঁহার আগ্রহের সহিত বিদ্যার্জনের জন্য তিনি তৎকালীন শ্রেষ্ঠতম শিক্ষাকেন্দ্র বাগদাদে উপনীত হন। তাঁহার প্রাথমিক শিক্ষাপর্ব জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা শায়খ আবদুল ওহাবের কাছেই সম্পন্ন হয়। অতঃপর তিনি শায়খ বুরহানুদ্দীন ইব্‌ন আবদুর রহমান ফাযারী ও শায়খ কামালুদ্দীন ইব্‌ন কাযী শাহবার কাছে ফিকাহশাস্ত্র অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন। ইত্যবসরে তিনি শায়খ আবূ ইসহাক সিরাজীর ‘আত তাম্বীহ ফী ফুরুইস শাফেঈয়াহ’ ও আল্লামা ইব্‌ন হাজিব মালেকীর ‘মুখতাসার’ নামক গ্রন্থদ্বয় আদ্যোপান্ত কণ্ঠস্থ করেন। ইহা হইতেই তাঁহার অসাধারণ স্মৃতিশক্তির পরিচয় পাওয়া যায়।

খ্যাতনামা হাদীস শাস্ত্রবিদ ‘মুসনিদুদ দুনিয়া রিহলাতুল আফাক’ ইব্‌ন শাহনা হাজ্জারের কাছে তিনি হাদীস শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। হাদীস শাস্ত্রে তাঁহার অন্যান্য উস্তাদবৃন্দ হইতেছেনঃ বাহাউদ্দীন ইব্‌ন কাসিম ইবন মুজাফ্ফার ইব্‌ন আসাকির, শায়খুজ জাহির আফীফুদ্দীন ইসহাক ইব্‌ন ইয়াহিয়া আল আমিদী, ঈসা ইবনুল মুতইম, মুহাম্মদ ইব্‌ন যিয়াদ, বদরুদ্দীন মুহাম্মদ ইব্‌ন ইবরাহীম ইব্‌ন সুয়ায়দী, ইবনুর রাযী, হাফিজ জামালুদ্দীন ইউসুফ আল মিযী শাফেঈ, শায়খুল ইসলাম তকীউদ্দীন আহমদ ইব্‌ন তায়মিয়া আলহাররানী, আল্লামা হাফিজ কামালুদ্দীন যাহাবী ও আল্লামা ইমাদুদ্দীন মুহাম্মদ ইবনুস্ সিরাজী। তন্মধ্যে তিনি সর্বাধিক শিক্ষালাভ করেন ‘তাহযীবুল কামাল’ প্রণেতা সিরীয়ার মুহাদ্দিছ আল্লামা হাফিজ জামালুদ্দীন ইউসুফ ইব্‌ন আবদুর রহমান মিযী আশ্ শাফেঈ (রঃ) হইতে । পরবর্তীকালে তাঁহারই কন্যার সহিত তিনি পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। অতঃপর বেশ কিছুকাল তিনি শ্বশুরের সান্নিধ্যে থাকিয়া তাঁহার রচিত ‘তাহযীবুল কামাল’ ও অন্যান্য হাদীস সংকলন অত্যন্ত নিষ্ঠার সহিত গভীরভাবে অধ্যয়ন করেন। ফলে হাদীস শাস্ত্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁহার অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জিত হয়।

শায়খুল ইসলাম ইমাম ইব্‌ন তায়মিয়া (রঃ)-এর সান্নিধ্যেও তিনি বেশ কিছুকাল অধ্যয়নরত ছিলেন। তাঁহার নিকট তিনি বিভিন্ন জ্ঞানে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তাহা ছাড়া মিসরের ইমাম আবুল ফাতাহ দারুসী, ইমাম আলী ওয়ানী ও ইমাম ইউসুফ খুতনী তাঁহাকে মুহাদ্দিস হিসাবে স্বীকৃতি দানপূর্বক হাদীস শাস্ত্র অধ্যাপনার অনুমতি প্রদান করেন।

মোটকথা, মুসলিম জাহানের তৎকালীন সেরা মুহাদ্দিস, মুফাস্সির ও ফকীহবৃন্দের নিকট হইতে বিপুল অনুসন্ধিৎসা ও ঐকান্তিক নিষ্ঠার সহিত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে তিনি নিজকে সমগ্র মুসলিম জাহানের অপ্রতিদ্বন্দ্বী ইমামের গৌরবময় আসন অধিষ্ঠিত করেন। হাদীস, তাফসীর, ফিকাহ ছাড়াও তিনি আরবী ভাষা, সাহিত্য ও ইসলামের ইতিহাসে অশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। এক কথায় উপরোক্ত পাঁচটি বিষয়ে সম্মানে পারদর্শীতার ক্ষেত্রে তাঁহার সমকক্ষ ব্যক্তিত্ব খুবই বিরল। হাদীস শাস্ত্রে তো তিনি ‘হুফ্‌ফাজুল হাদীস’-এর মর্যাদায় ভূষিত হইয়াছিলেন। তেমনি আরবী ভাষার তিনি একজন খ্যাতিমান কবি ছিলেন।

ইমাম ইব্‌ন কাছীর সম্পর্কে বিভিন্ন মনীষী অত্যন্ত উঁচু ধারণা পোষণ করিতেন। তাঁহাদের কয়েকজনের অভিমত নিম্নে প্রদত্ত হইলঃ

আল্লামা হাফিজ জালালুদ্দীন সুয়ূতী বলেনঃ

“হাফিজ জামালুদ্দীন মিযীর সান্নিধ্যে দীর্ঘদিন অবস্থান করিয়া তিনি হাদীস শাস্ত্রে বিশেষ ব্যুৎপত্তি ও অশেষ পারদর্শীতা অর্জন করেন।”

প্রখ্যাত ইতিহাসকার আল্লামা আবুল মাহাসীন জামালুদ্দীন ইউসুফ বলেনঃ

“হাদীস, তাফসীর, ফিকাহ, আরবী ভাষা ও আরবী সাহিত্যে তাঁহার অসাধারণ পাণ্ডিত্য ছিল।”

হাফিজ আবুল মাহাসিন হুসায়নী দামেশকী বলেনঃ

“ফিকাহ শাস্ত্র, তাফসীর, সাহিত্য ও ব্যাকরণে তিনি বিপুল পারদর্শীতা লাভ করেন ও হাদীস শাস্ত্রের ‘রিজাল’ ও ‘ইলাল’ প্রসঙ্গে তাঁহার অন্তর্দৃষ্টি ছিল অত্যন্ত সুতীক্ষ্ম ও সুগভীর।” হাফিজ যয়নুদ্দীন ইরাকী বলেনঃ

হাদীসের ‘মতন’ ও ইতিহাস শাস্ত্রে সবচাইতে প্রজ্ঞাবান হইলেন ইমাম ইব্‌ন কাছীর।”

শায়খ মুহাম্মদ আবদুর রায্যাক হামযাহ বলেনঃ

“ইমাম ইব্‌ন কাছীর সমগ্র জীবনব্যাপী জ্ঞান সাধনায় নিয়োজিত ছিলেন। এই জ্ঞানার্জন ও গ্রন্থ প্রণয়নে তিনি প্রচুর পরিশ্রম ব্যয় করেন।

হাফিজ শামসুদ্দীন যাহাবী বলেনঃ

“ইমাম ইব্‌ন কাছীর একাধারে খ্যাতনামা মুফতী, মুহাদ্দিস, ফিকাহ শাস্ত্রবিদ, তাফসীর ও বিজ্ঞান শাস্ত্রে পারদর্শী ব্যক্তি ছিলেন। হাদীসের মতন সম্পর্কে তাঁহার জ্ঞান ছিল অপরিমেয়।”

হাফিজ হুসায়নী বলেনঃ

“তিনি হাদীসের অনন্য হাফিজ, প্রখ্যাত ইমাম, অসাধারণ বাগ্মী ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন।”

আল্লামা শায়েখ ইবনুল ইমাদ হাম্বলী বলেনঃ

“ইমাম ইব্‌ন কাছীর হাদীসের শ্রেষ্ঠতম হাফিজ ছিলেন।”

হাফিজ ইবন হুজ্জী বলেনঃ

“আমাদের জ্ঞাত মুহাদ্দিসকুলের মধ্যে তিনি হাদীসের মতনের স্মৃতিস্থকরণে, রিজাল শাস্ত্রজ্ঞানে ও হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি নিরূপণে সর্বাধিক বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ ছিলেন।”

আল্লামা হাফিজ নাসীরুদ্দীন আদ্ দামেশকী বলেনঃ

“আল্লামা হাফিজ ইব্‌ন কাছীর ছিলেন মুহাদ্দিসগণের ভরসাস্থল, ইতিহাসকারদের অবলম্বন ও তাফসীরকারদের গৌরবোন্নত পতাকা।’

হাফিজ ইব্‌ন হাজার আস্কালানী বলেনঃ

“হাদীসের মতন ও রিজাল শাস্ত্রের পঠন-পাঠন ও অধ্যয়নে তিনি অহর্নিশ মশগুল থাকিতেন। তাঁহার উপস্থিত বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল। তদুপরি তিনি ছিলেন অত্যন্ত রসিকতাপ্রিয়। জীবদ্দশায়ই তাঁহার গ্রন্থরাজি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।’

মোটকথা, ইমাম ইব্‌ন কাছীর গ্রন্থ রচনা, অধ্যাপনা ও ফতওয়া প্রদানের মহান দায়িত্বে তাঁহার সমগ্র জীবন নিয়োজিত করেন। তাঁহার মহামান্য উস্তাদ আল্লামা হাফিজ শামসুদ্দীন যাহাবীর ইন্তেকালের পর তিনি দামেশকের শ্রেষ্ঠ শিক্ষায়তনদ্বয়ে একই সঙ্গে হাদীস অধ্যাপনার দায়িত্ব পালন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত পরহেযগার ও ইবাদতগুযায় ছিলেন। ঘন্টার পর ঘণ্টা ধরিয়া তিনি সালাত, তিলাওয়াত ও যিকির-আযকারে মশগুল থাকিতেন। তাহা ছাড়া তিনি ছিলেন সদা প্রফুল্ল, সদালাপী ও সচ্চরিত্র ব্যক্তি। আলাপ আলোচনায় তিনি মূল্যবান রসালো উপমা ব্যবহার করিতেন। হাফিজ ইব্‌ন হাজার আস্কলানী তাঁহাকে ‘উত্তম রসিক’ বলিয়া আখ্যায়িত করেন।

আল্লামা ইমাম ইবন তায়মিয়ার শাগরিদ দীর্ঘদিনের সান্নিধ্যের কারণে ইমাম ইব্‌ন কাছীর মাসআলা-মাসায়েলের ব্যাপারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁহারই অনুসারী ছিলেন। এমনকি তালাকের মাসআলায়ও তিনি তাঁহার অনুসারী হন। ফলে তাঁহাকেও ভীষণ বিপদ ও কঠিন নির্যাতনের শিকার হইতে হয়।

অপরিসীম অধ্যয়নের কারণে শেষ বয়সে তিনি অন্ধ হইয়া পড়েন। অতঃপর ৭৭৪ হিজরী মোতাবেক ১৩৭২ খ্রীস্টাব্দের ২৬শে শা’বান রোজ বৃহস্পতিবার তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজিউন।)

তাঁহার মৃত্যুর পর তাঁহার সুযোগ্য দুই পুত্র যথাক্রমে যয়নুদ্দীন আবদুর রহমান আল কারশী ও বদরুদ্দীন আবুল বাকা মুহম্মদ আল-কারশী মুসলিম জাহানে জ্ঞানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। আল্লামা ইমাম ইব্‌ন কাছীরের রচিত অমূল্য গ্রন্থরাজির কতিপয়ের তালিকা নিম্নে প্রদত্ত হইল ৷

১। আত তাকমিলাতু ফী মা’রিফাতিস সিকাতি ওয়ায যুআফা ওয়াল মুজাহিল। ইহা রিজাল শাস্ত্রের (বর্ণনাকারী বিশ্লেষণ বিদ্যা) একখানি নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ। গ্রন্থখানি পাঁচখণ্ডে সমাপ্ত হইয়াছে ৷ এই গ্রন্থে আবদুর রহমান মিযীর ‘তাহযীবুল কামাল’ ও শামসুদ্দীন যাহাবীর ‘মীযানুল ই’তিদাল’ গ্রন্থের সমন্বয় ঘটিয়াছে।

২। আল হায়্যু ওয়াস সুনানু ফী আহাদীছিল মাসানীদে ওয়াস সুনান। গ্রন্থখানি ‘জামিউল মাসানীদ’ নামে খ্যাত। এই গ্রন্থে মুসনাদে আহমদ ইব্‌ন হাম্বল, মুসনাদে বাযযার, মুসনাদে আবূ ইয়ালা, মুসনাদে ইব্‌ন আবি শায়বা ও সিহাহ সিত্তার রিওয়ায়েতসমূহ বিভিন্ন অধ্যায়ে ও পরিচ্ছেদে সুন্দরভাবে বিন্যস্ত করা হইয়াছে।

৩। তাবাকাতুশ শাফিঈয়্যা- এই গ্রন্থে শাফিঈ ফিকাহবিদগণের বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ হইয়াছে।

৪। মানাকীবুশ শাফিঈ— এই গ্রন্থে ইমাম শাফেঈ (র)-এর জীবনালেখ্য ও কর্মধারা বর্ণিত হইয়াছে।

৫। তাখরীজু আহাদীসে আদিল্লাতিত তাম্বীহ।

৬। তাখরীজু আহাদীসে মুখতাসার ইবনিল হাজিব।

৭। শারহু সহীহিল বুখারী- বুখারী শরীফের এই ভাষ্য তিনি অসমাপ্ত রাখিয়া যান। ইহাতে শুধু প্রথমাংশের ভাষ্য বিদ্যমান।

৮। আল-আহকামুল কবীর- অনুশাসন সম্পর্কিত হাদীসগুলির বিশদ আলোচনা সম্বলিত এই গ্রন্থটিও ‘কিতাবুল হজ্জ’ পর্যন্ত লিখার পর অসমাপ্ত থাকিয়া যায়।

৯। ইখতিসারু উলূমিল হাদীস- ইহা আল্লামা ইবনুস সালাহ রচিত ‘উলূমুল হাদীস’ নামক উসূলে হাদীস গ্রন্থের সংক্ষিপ্তসার। ইহার সহিত গ্রন্থকার অনেক মূল্যবান জ্ঞাতব্য বিষয় সংযোজন করার ফলে দেশ-বিদেশে ইহার অশেষ জনপ্রিয়তা সৃষ্টি হয়। ইহার মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৫২।

১০। মুসনাদুশ শায়খাইন- ইহাতে হযরত আবূ বকর (রাঃ) ও হযরত উমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত হাদীসসমূহ সংকলিত হইয়াছে।

১১। আস্ সীরাতুন নববিয়াহ- ইহা রাসূল (সাঃ)-এর একটি বৃহদায়তন জীবনালেখ্য।

১২। আল-ফসূল ফী ইখতিসারি সীরাতির রাসূল- ইহা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য।

১৩। কিতাবুল মুকাদ্দিমাত।

১৪। মুখতাসার কিতাবুল মাদখাল লেইমাম বায়হাকী- ইহা ইমাম বায়হাকীর ‘কিতাবুল মাদখাল’-এর সংক্ষিপ্তসার।

১৫। রিসালাতুল ইজতিহাদ ফী তালাবিল জিহাদ- খ্রীস্টানদের আয়াস দুর্গ অবরোধের সময়ে জিহাদ সম্পর্কিত এই গ্রন্থটি তিনি লিপিবদ্ধ করেন।

১৬। রিসালা ফী ফাযায়েলিল কুরআন- ইহা তাফসীর ইব্‌ন কাছীরের পরিশিষ্ট হিসাবে লিখিত হইয়াছে।

১৭। মুসনাদে ইমাম আহমদ ইব্‌ন হাম্বল- ইহাতে বর্ণমালার ক্রম অনুসারে ইমাম আহমদ ইবন হাম্বলের বিখ্যাত মুসনাদ সংকলনের হাদীসসমূহ বিন্যস্ত করা হইয়াছে। পরন্তু ইমাম তাবারানীর ‘মু’জাম’ ও আবূ ইয়ালার ‘মুসনাদ’-এর হাদীসগুলিও ইহাতে সংযোজিত হইয়াছে।

১৮। আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া- এই ইতিহাস গ্রন্থটি ইমাম ইব্‌ন কাছীরের অত্যন্ত জনপ্রিয় এক অমর সৃষ্টি। ইহাতে সৃষ্টির শুরু হইতে ঘটিত ও ভবিষ্যতে ঘটিতব্য সকল ঘটনা সবিস্তারে বর্ণিত হইয়াছে। প্রথমে অতীতের নবী-রাসূল ও উম্মতসমূহের বর্ণনা এবং পরে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর জীবন বৃত্তান্ত লিপিবদ্ধ হইয়াছে। অবশেষে খুলাফায়ে রাশেদীন হইতে তাঁহার সমসাময়িক কাল পর্যন্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক তত্ত্ব ও তথ্য সবিস্তারে বর্ণিত হইয়াছে। পরিশেষে কিয়ামতের আলামতসমূহ ও পরকালের ঘটনাবলী দলীল প্রমাণের ভিত্তিতে অতি সুন্দরভাবে বিবৃত হইয়াছে। বিশেষত ইহার সীরাতুন্নবী অধ্যায়টি অত্যন্ত চমৎকারভাবে উপস্থাপিত হইয়াছে।

১৯। তাফসীরুল কুরআনিল করীম। ইহাই ‘তাফসীরে ইব্‌ন কাছীর’ নামে খ্যাত ৷

error: Content is protected !!