মরিয়ম মারা গেলেন

১. ইস্রায়েলের লোকেরা প্রথম মাসে সীন মরুভূমিতে পৌছালে।। প্রথমে তারা কাদেশে পৌঁছাল, সেখানে মরিয়ম মারা গেলেন এবং তাকে সেখানেই কবর দেওয়া হয়েছিল।

মোশি ভুল করলেন

২. সেই জায়গায় লোকেদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জল ছিল না, সুতরাং মোশি এবং হারোণের কাছে অভিযোগ করার জন্যে লোকেরা এক জায়গায় মিলিত হয়েছিল।

৩. লোকেরা মোশির সঙ্গে তর্ক করে বলল, “এও হলে ভাল হতো যদি আমরা আমাদের ভাইদের মতে৷ প্রভুর সামনে মারা যেতাম। 

৪. আপনি কেন প্রভুর লোকেদের এই মরুভূমিতে নিয়ে এসেছিলেন? আপনার ইচ্ছে কি এটাই আমাদের এবং আমাদের সঙ্গে থাক৷ পশুদের এখানেই মৃত্যু হোক?

৫. আপনি কেন আমাদের মিশর থেকে এই খারাপ জায়গায় নিয়ে এসেছেন? এখানে কোনো শস্য নেই। এখানে কোনো ডুমুর, দ্রাক্ষা অথবাঁ ডালিম ফল নেই এবং পানের জন্য কোনো জলও নেই।”

৬. সুতরাং মোশি এবং হারোণ লোকেদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে গেলেন। তার৷ মাটিতে উপুড় হয়ে পড়লে প্রভুর মহিমা তাদের সামনে প্রকাশিত হল।

৭. প্রভু মোশিকে বললেন,

৮. ‘হাঁটার বিশেষ লাঠিটি নিয়ে এসো। হারোণ এবং লোকেদের নিয়ে সেই শিলার সামনে এসো। সবার সামনে ঐ শিলাকে বলো, তখন ঐ শিলা থেকে জল প্রবাহিত হবে। তুমি সেই জল লোকেদের এবং তাদের পশুদের দিতে পারবে।”

৯. লাঠিটি পবিত্র তাঁবুতে প্রভুর সামনে ছিল। প্ৰভু যেভাবে বলেছিলেন, মোশি সেইভাবেই লাঠিটি নিয়ে এলেন।

১০. মোশি এবং হারোণ শিলার সামনে সমস্ত লোকেদের সমবেত হতে বললেন। তখন মোশি বললেন, “তোমরা সকল সময়েই অভিযোগ করছ। এখন আমার কথা শোনো। আমরা কি তোমাদের জন্য এই শিলা থেকে জল বের করবো।

১১. এরপর মোশি তার হাত তুললেন এবং শিলাতে দুবার আঘাত করলেন। শিলা থেকে জল বেরোতে শুরু করল। লোকেরা এবং তাদের পশুরা জল পান করল।

১২. কিন্তু প্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “ইস্রায়েলের সব লোকের সাক্ষাতে তুমি আমার প্রতি সম্মান দেখাওনি। তুমি ইস্রায়েলের লোকেদের দেখাওনি যে জল বের করার ক্ষমতা আমার থেকেই এসেছে। তুমি লোকেদের দেখাওনি যে তুমি আমার প্রতি বিশ্বাস রেখেছো। আমি ঐসব লোকেদের সেই দেশটি দেব যে দেশটি আমি তাদের দেব বলে শপথ করেছিলাম, কিন্তু তুমি তাদের সেই দেশে নিয়ে যেতে নেতৃত্ব দেবে না!”

১৩. এই জায়গাটিকে বল৷ হতো মরীবার জল। এটিই সেই জায়গা যেখানে ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর সঙ্গে বিবাদ করেছিল এবং এটিই সেই জায়গা যেখানে প্রভু তাদের দেখিয়েছিলেন যে তিনি পবিত্র।

ইদোম ইস্রায়েলকে যেতে বাধা দিল

১৪. কাদেশে থাকাকালীন মোশি ইদোমীয় রাজার কাছে বার্তাসহ কয়েকজন লোককে পাঠালেন। বার্তায় বল৷ ছিল: “আপনার ভাইয়েরা অর্থাৎ ইস্রায়েলের লোকেরা, আপনাকে বলছে: আমাদের যে সব সমস্যা আছে সে সম্পর্কে আপনি সবই জানেন।

১৫. বহু বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা মিশরে গিয়েছিলেন এবং আমরা সেখানে বহু বছর বাস করেছিলাম। মিশরের লোকেরা আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি নিষ্ঠুর ছিলেন।

১৬. “কিন্তু আমর৷ প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছিলাম। প্রভু আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন এবং আমাদের সাহায্যের জন্যে একজন দূত পাঠিয়েছিলেন। প্রভু আমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছেন। এখন আমরা আপনার দেশের প্রান্তে কাদেশে আছি।

১৭. দয়া করে আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন। আমরা কোনো শস্যক্ষেত অথবা কোনো দ্রাক্ষাক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাবো না। আমরা আপনাদের কোনো জলাশয় থেকে জল পান করবো না। আমরা রাজপথ বরাবর যাতায়াত করবো। আমর৷ ঐ রাস্তা সময়েই ডানদিকে অথবা বাঁ দিকে যাবো না। যতক্ষন পর্যন্ত আমরা আপনার দেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই রাস্তার ওপরই থাকবো।”

১৮. কিন্তু ইদোমীয় রাজা উত্তর দিলেন, “তোমরা আমার দেশের মধ্য দিয়ে যেতে পারবে না। তোমরা আমার দেশের মধ্য দিয়ে যাবার চেষ্টা করলে আমরা তরবারি নিয়ে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবো।”

১৯. ইস্রায়েলের লোকেরা উত্তর দিল, “আমরা প্রধান রাস্তা দিয়ে যাবো। যদি আমাদের পশুরা আপনাদের কোনো জল পান করে, আমরা তার জন্য মূল্য দেবো। আমরা কেবলমাত্র আপনার দেশের মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে যেতে চাই। আর কিছু নয়।”

২০. কিন্তু ইদোম আবার উত্তর দিল, “আমরা তোমাদের আমাদের দেশের মধ্য দিয়ে আসার অনুমতি দেবো না।” এরপর ইদোমীয় রাজা এক বিশাল এবং শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী জড়ো করল এবং ইস্রায়েলের লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য গেল।

২১. ইদোমীয় রাজা তার দেশের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েলের লোকেদের যাওয়া নিষেধ করল। তাই ইস্রায়েলের লোকেরা ঘুরে অন্য পথে গেল।

হারোণ মারা গেলেন

২২. ইস্রায়েলের লোকেরা কাদেশ থেকে হোর পর্বতের দিকে যাত্রা করল। হোর পর্বত ছিল ইদোম সীমানার কাছে। এখানেই প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন,

২৪. ‘হারোণের মৃত্যুর সময় হয়েছে এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছে যাওয়ার সময় হয়েছে। যে দেশটা আমি ইস্রায়েলের লোকেদের দেব বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম, হারোণ সেই দেশে প্রবেশ করবে না। মোশি, আমি একথা তোমাকেও বললাম, কারণ তুমি এবং হারোণ দুজনেই মরীবার জলের ধারে দেওয়া আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করেছিলে।

২৫. “এখন হারোণ এবং তার পুত্র ইলীয়াসরকে হোর পর্বতের ওপরে নিয়ে এসো।

২৬. হারোণের বিশেষ বস্ত্ৰ তার কাছ থেকে নিয়ে এসো এবং সেই বস্ত্রাদি তার পুত্র ইলীয়াসরকে পরিয়ে দাও। সেখানে পর্বতের ওপরে হারোণের মৃত্যু হবে। সে তার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে।

২৭. মোশি প্রভুর আজ্ঞা পালন করলেন। মোশি, হারোণ এবং ইলীয়াসর হোর পর্বতের ওপরে গেলেন এবং ইস্রায়েলের সকল লোকেরা তাদের সেখানে যেতে দেখল।

২৮. মোশি হারোণের বিশেষ পোশাক খুলে নিলেন এবং হারোণের পুত্র ইলীয়াসরকে সেই সব পোশাক পরিয়ে দিলেন। এরপর পর্বতের চূড়ায় হারোণ মারা গেলে মোশি এবং ইলীয়াসর পর্বত থেকে নেমে এলেন।

২৯. ইস্রায়েলের সকল লোক হারোণের মৃত্যুর খবর জানল। এই কারণে ইস্রায়েলের প্রত্যেক ব্যক্তি ৩০ দিন শোক পালন করল।

error: Content is protected !!