যাত্রীরা রাত্তিরে হতে এল খেয়া পার,

বজ্রেরি তূর্যে এ গর্জেছে কে আবার?

প্রলয়েরি আহ্বান ধ্বনিল কে বিষাণে!

ঝন্‌ঝা ও ঘন দেয়া স্বনিল রে ঈশানে!

নাচে পাপ-সিন্ধুতে তুঙ্গ তরঙ্গ!

মৃত্যুর মহানিশা রুদ্র উলঙ্গ!

নিঃশেষে নিশাচর গ্রাসে মহাবিশ্বে,

ত্রাসে কাঁপে তরণীর পাপী যত নিঃস্বে।

তমসাবৃতা ঘোরা ‘কিয়ামত’ রাত্রি,

খেয়া-পারে আশা নাই ডুবিল রে যাত্রী!

দমকি দমকি দেয়া হাঁকে কাঁপে দামিনী,

শিঙ্গার হুঙ্কারে থরথর যামিনী!

লঙ্ঘি এ সিন্ধুরে প্রলয়ের নৃত্যে

ওগো কার তরী ধায় নির্ভীক চিত্তে–

অবহেলি জলধির ভৈরব গর্জন

প্রলয়ের ডঙ্কার ওঙ্কার তর্জন!

পুণ্য-পথের এ যে যাত্রীরা নিষ্পাপ,

ধর্মেরি বর্মে সু-রক্ষিত দিল্ সাফ!

নহে এরা শঙ্কিত বজ্র নিপাতেও

কাণ্ডারী আহ্‌মদ তরী ভরা পাথেয়।

আবুবকর উস্‌মান উমর আলি হায়দর

দাঁড়ি যে এ তরণীর, নাই ওরে নাই ডর!

কাণ্ডারী এ তরীর পাকা মাঝি মাল্লা,

দাঁড়ি-মুখে সারি-গান –লা-শরিক আল্লাহ!

‘শাফায়ত’-পাল-বাঁধা তরণীর মাস্তুল,

‘জান্নাত্’ হতে ফেলে হুরি রাশ্ রাশ্ ফুল।

শিরে নত স্নেহ-আঁখি মঙ্গল দাত্রী,

গাও জোরে সারি-গান ও-পারের যাত্রী।

বৃথা ত্রাসে প্রলয়ের সিন্ধু ও দেয়া-ভার,

ঐ হলো পুণ্যের যাত্রীরা খেয়া পার।

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x