হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে ধারাবাহিকভাবে হিশাম ইব্‌ন উরওয়া, যায়দ, রবী’ ইন ইয়াহিয়া ও ইমাম বুখারী বর্ণনা করিয়াছেনঃ একদা নবী করীম (সাঃ) একটি লোককে মসজিদে বসিয়া কুরআন মজীদ তিলাওয়াত করিতে শুনিয়া বলিলেন- ‘আল্লাহ্ তাহাকে রহম করুন। সে আমাকে অমুক সূরার অমুক অমুক আয়াত স্মরণ করাইয়া দিয়াছে।’ উক্ত হাদীস শুধু ইমাম বুখারী বর্ণনা করিয়াছেন। ইমাম মুসলিম উহা বর্ণনা করেন নাই। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে ধারাবাহিকভাবে হিশাম, ঈসা ইব্‌ন ইউনুস, মুহাম্মদ ইব্‌ন ইবায়দ ইব্‌ন মায়মুন ও ইমাম বুখারী বর্ণনা করিয়াছেনঃ পূর্ববর্তী হাদীসে বর্ণিত বাণীর সহিত নবী করীম (সাঃ) ইহাও বলিলেন— ‘আমি উহা ভুলিয়া গিয়াছিলাম।’ উক্ত রিওয়ায়েতও শুধু ইমাম বুখারী বর্ণনা করিয়াছেন ৷ উহা হিশাম হইতে আলী ইব্‌ন মুসহার এবং আবাদাহও বর্ণনা করিয়াছেন। ইমাম বুখারী উহা হিশাম হইতে উপরোক্ত দুই রাবী আলী ইব্‌ন মুসহার এবং আবাদার মাধ্যমে অন্যত্র বর্ণনা করিয়াছেন। ইমাম মুসলিম উহা হিশাম হইতে শুধু আবাদার মাধ্যমে বর্ণনা করিয়াছেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে ধারাবাহিকভাবে উরওয়াহ, হিশাম ইব্‌ন উরওয়াহ, আবূ উসামা, আহমদ ইব্‌ন আবূ রজা ও ইমাম বুখারী (রঃ) বর্ণনা করেনঃ

একদা নবী করীম (সাঃ) একটি লোককে রাত্রিতে একটি সূরা তিলাওয়াত করিতে শুনিয়া বলিলেন- ‘আল্লাহ্ তাহাকে দয়া করুন ! সে আমাকে অমুক আয়াত স্মরণ করাইয়া দিয়াছে। আমি উহা অমুক সূরা হইতে ভুলিয়া গিয়াছিলাম।’ ইমাম মুসলিম উহা উপরোক্ত রাবী আবূ উসামাহ হাম্মাদ ইব্‌ন উসামাহ হইতে উপরোক্ত অভিন্ন ঊর্ধ্বতন সনদাংশে এবং অন্যরূপ অধস্তন সনদাংশে বর্ণনা করিয়াছেন।(১)

১. উপরোক্ত হাদীস এবং তদনুরূপ অন্যান্য হাদীস দ্বারা ফকীহগণ প্রমাণ করেন যে, নবী করীম (সাঃ)-ও ভুলিয়া যাইতেন এবং তিনিও বিস্মৃতির কবলে পতিত হইতেন। তবে ফকীহগণ সর্বসম্মতভাবে বলেন যে, নবী করীম (সাঃ)-কে যে বিষয় লোকদের নিকট প্রচার ও তাবলীগ করিতে হইত, তাহা তিনি ভুলিয়া যাইতেন না এবং তাহা ভুলিয়া যাওয়া তাঁহার পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। দেখা যাইতেছে যে, কোন বিষয়কে গোপন করা নবী করীম (সাঃ)-এর পক্ষে যেমন অসম্ভব ছিল, তেমনি যে বিষয়ের প্রচার ও তাবলীগ তখনও সম্পন্ন হয় নাই, সেই বিষয় ভুলিয়া যাওয়া ও তাঁহার পক্ষে সেইরূপ অসম্ভব ছিল। যে ধরনের বিস্মৃতি নবী করীম (সাঃ)-এর পক্ষে সম্ভবপর ছিল না, উহা সম্ভবপর না থাকাই স্বাভাবিক ও যুক্তিসঙ্গত ছিল। কারণ, এইরূপ বিস্মৃতি সম্ভবপর হইলে রিসালাতের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হইত। তাই আল্লাহ্ তা'আলা তাঁহাকে ঐরূপ বিস্মৃতি হইতে রক্ষা করিয়াছেন। এই প্রসঙ্গে কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াতের তাৎপর্য বর্ণনাযোগ্য। আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ سَتْفْرِتْك فَلاً نَنْسى الأ مَاشاءً الله (অচিরেই আমি তোমাকে তিলাওয়াত শিখাইব। ফলত আল্লাহ্ যাহা চাহেন, তাহা ছাড়া কিছুই তুমি ভুলিয়া যাইবে না।) উপরোক্ত আয়াতের একটি তাৎপর্য এই যে, আয়াতের প্রথম দিকে আল্লাহ্ তা'আলা বলিতেছেন যে, তিনি নবী করীম (সাঃ)-কে কুরআন মজীদ তিলাওয়াত শিক্ষা দিবেন। উহার ফলে তিনি আর উহা ভুলিবেন না।

হযরত আবদুল্লাহ্ (ইবন মাসউদ) হইতে ধারাবাহিকভাবে আবূ ওয়ায়েল, মানসূর, সুফিয়ান, আবূ নাঈম ও ইমাম বুখারী বর্ণনা করেনঃ নবী করীম (সাঃ) বলিয়াছেন- ‘কোন ব্যক্তির ইহা বলা বড়ই বেমানান যে, ‘আমি কুরআন মজীদের অমুক অমুক আয়াত বা সূরা ভুলিয়া গিয়াছি। বরং সে তো উহা (অবহেলাভরে) বিস্মৃত হইয়াছে।’ ইমাম মুসলিম এবং ইমাম নাসাঈও উহা উপরোক্ত রাবী মানসূর হইতে উপরোক্ত অভিন্ন ঊর্ধ্বতন সনদাংশে এবং বিভিন্নরূপ অধস্তন সনদাংশে বর্ণনা করিয়াছেন । ইতিপূর্বে এতদসম্বন্ধে বিস্তারিতরূপে আলোচনা

(চলমান) যদিও অন্যেরা উহা ভুলিয়া যাইতে পারে; তথাপি আল্লাহ্ তা'আলা তাঁহাকে উহার বিস্মৃতি হইতে রক্ষা করিবেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা যদি নবী করীম (সা)-এর স্মৃতি হইতে কুরআন মজীদ ভিন্ন অন্য কিছু ভুলাইয়া দিতে চাহেন, তবে উহা তিনি ভুলিয়া যাইতে পারেন। আর আল্লাহ্ তা'আলা যে এইরূপ বিস্মৃতি চাহিবেনই, উহা দ্বারা তেমন কথা বুঝা যায় না। তিনি এইরূপ বিস্মৃতি চাহিতেও পারেন, না চাহিতে ও পারেন। অনুরূপভাবে আল্লাহ্ তা'আলা অন্যত্র হযরত ইব্রাহীম (আ)-এর উক্তি উদ্ধৃত করিয়াছেন। হযরত ইবরাহীম (আ) বলিয়াছিলেনঃ وَلَا أَخَافُ مَا تُشْرِكُونَ بِه إِلا أَنْ يَشَاء رَبِّي شَيْئًا - (আর তোমরা যাহাদিগকে তাঁহার শরীক ঠাওরাও, আমি তাহাদিগকে ডরাই না। কিন্তু আমার প্রতিপালক যদি কোন কিছু আমার ব্যাপারে চাহেন (তবে উহা স্বতন্ত্র কথা)। উপরোক্ত আয়াতদ্বয়ে 'কিন্তু' শব্দের পর উল্লেখিত বাক্য দ্বারা যে ব্যতিক্রমের বিষয় বর্ণিত হইয়াছে, উহা পূর্ববাক্যে বর্ণিত নেতিবাচক বিষয়ের সম-শ্রেণীভুক্ত নহে। এই ধরনের ব্যতিক্রম প্রকাশ আরবী ব্যাকরণ শাস্ত্রে استتناء منقطع - ইসতেছনায়ে মুনকাতি) নামে পরিচিত। পূর্ব বিষয় হইতে ভিন্ন শ্রেণীর বিষয়কে ব্যতিক্রমমূলক বিষয় হিসাবে إلا শব্দ সহযোগে পরবর্তী বাক্যে প্রকাশ করা হয়। এইরূপ ব্যতিক্রম প্রকাশের একটি বৈশিষ্ট্য থাকে । উহা এই যে, যেহেতু (إلا -কিন্তু)' শব্দের পর উল্লেখিত বস্তু বা বিষয়টি উহার পূর্বে উল্লেখিত বস্তু বা বিষয়ের সমশ্রেণীভুক্ত বস্তু বা বিষয় হইতে পারে না, তাই ব্যতিক্রম প্রকাশ ব্যতিরেকেই উভয় শ্রেণীর বস্তু বা বিষয়ের প্রতি প্রযোজ্য বক্তব্যও পৃথক এবং স্বতন্ত্র থাকে। তথাপি পূর্ব বাক্য দৃঢ়তর করিবার উদ্দেশ্যেই বাক্যে এইরূপ ব্যতিক্রম প্রকাশ ঘটিয়া থাকে। পূর্বোক্ত আয়াতদ্বয়ের ব্যাখ্যা বুঝিবার জন্যেও আরবী বাগধারা সম্পর্কিত উপরোক্ত সূক্ষ্ম কথাটি মনে রাখিতে হইবে। প্রসিদ্ধ আরবী ব্যাকরণ শাস্ত্রবিদ ফররা বলেন- উপরোক্ত আয়াতদ্বয় ও অনুরূপ আয়াতে 'কিন্তু' সহযোগে 'সৃষ্ট' বাক্যদ্বারা প্রকৃতপক্ষে কোনরূপ ব্যতিক্রমই প্রকাশ করা হয় নাই; বরং উহা শুধু বরকত হিসাবে উল্লেখিত হইয়াছে। ফররার মতে বস্তুত আল্লাহ্ তা'আলা নবী করীম (সাঃ)-কে কুরআন মজীদের কোন আয়াত আদৌ ভুলাইয়া দেন নাই। একদল ফকীহ ও মুহাক্কিক বলেন- 'তুমি ভুলিয়া যাইবে না' এই কথার তাৎপর্য এই যে, 'তুমি উহার আমল ভুলিয়া যাইবে না।' আর আলোচ্য হাদীসে যে বিস্মৃতির কথা উল্লেখিত হইয়াছে, উহা ছিল ইতিপূর্বে প্রচারিত বিষয়ের বিস্মৃতি ৷ এই টীকাকার বলিতেছে, আলোচ্য হাদীসে যে বিস্মৃতির কথা উল্লেখিত হইয়াছে, উহা ছিল সাময়িক বিস্মৃতি। উক্ত সাময়িক বিস্মৃতির পর নবী করীম (সাঃ) বিস্মৃত আয়াতগুলিসহ সম্পূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করিতে পারিতেন। অথবা বলা যায়, আলোচ্য হাদীসসমূহ গ্রহণযোগ্য নহে; বরং উহা প্রত্যাখ্যাতও বটে। ইমাম বুখারীর নিকট যদিও উহার সনদ সহীহ, তথাপি বলা যায়, ইমাম বুখারী (রঃ) সহ সকল হাদীস শাস্ত্রবিদই রাবীদের সম্বন্ধে তাহাদের নিকট পরিজ্ঞাত বাহ্য তথ্যাদির ভিত্তিতে রাবীদিগকে সত্যবাদী বা মিথ্যাবাদী, স্মৃতিধর বা বিস্মৃতিপরায়ণ মনে করেন। স্বীকার করি, তাহাদের এইরূপ মনে করা সাধারণত সঠিক ও নির্ভুল ধরিয়া লওয়া যায়। তবে যে ক্ষেত্রে রাবীদের বর্ণনা কুরআন মজীদের বর্ণনার বিরোধী হয়, সে ক্ষেত্রে রাবীদের বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নহে, গ্রহণযোগ্য হইতে পারে না। উল্লেখ্য যে, আলোচ্য হাদীসগুলি শুধু ইমাম বুখারীই বর্ণনা করিয়াছেন। আরও উল্লেখ্য যে, হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত হয়, কুরআন মজীদ ভুলিয়া যাওয়া কবীরা গুনাহ্।

করা হইয়াছে। উক্ত হাদীস এবং উহার পরবর্তী হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কুরআন মজীদকে স্মৃতিতে ধরিয়া রাখিবার জন্যে কেহ যথোপযুক্ত চেষ্টা ও সাধনা করিবার পরও যদি সে উহা ভুলিয়া যায়, তবে তজ্জন্য সে দায়ী বা গুনাহগার হইবে না।

হযরত ইব্‌ন মাসউদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসে কুরআন মজীদের তিলাওয়াত ভুলিয়া যাইবার কথা প্রকাশ করিবার সঠিক ভাষা ও আদব শিক্ষা দেওয়া হইয়াছে। কেহ কুরআন মজীদের কোন আয়াত বা সূরার তিলাওয়াত ভুলিয়া গেলে সে যেন না বলে— ‘আমি অমুক আয়াত বা সূরা ভুলিয়া গিয়াছি।’ বরং সে যেন বলে- ‘আমাকে ভুলাইয়া দেওয়া হইয়াছে।’ কারণ, النسيان (ভুলিয়া যাওয়া) প্রকৃতপক্ষে বান্দার ক্রিয়া নহে। তবে ভুলিয়া যাইবার কারণ বান্দাই ঘটাইয়া থাকে। ভুলিয়া যাইবার কারণ হইতেছে— অবহেলা, যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়া ও পুনঃপুনঃ তিলাওয়াত না করা ৷

আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়। উহা এই যে, কুরআন মজীদের তিলাওয়াত ভুলিয়া যাইবার কথা প্রকাশ করিবার জন্যে ‘আল্লাহ্ আমাকে ভুলাইয়া দিয়াছেন’ বলা সমীচীন নহে; বরং ‘আমাকে ভুলাইয়া দেওয়া হইয়াছে’ বলা সমীচীন।

অবশ্য বান্দাকেও কখন কখন ভুলিয়া যাওয়া ক্রিয়ার কর্তা বানানো হইয়া থাকে। তবে উহা আলংকারিক প্রয়োগ বৈ কিছু নহে। প্রকৃতপক্ষে ‘ভুলিয়া যাওয়া’ ক্রিয়ার কর্তা বান্দা নহে। নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা বান্দাকে ভুলিয়া যাওয়া ক্রিয়ার কর্তা বানাইয়াছেনঃ واذكر ربك اذا سيت (আর তুমি যখন ভুলিয়া যাও, তখন স্বীয় প্রভুকে স্মরণ কর। ভুলিয়া যাওয়ার কারণ হইতেছে— অবহেলা, ঔদাসীন্য ইত্যাদি। উহা একটি গুনাহ্ বটে। আর উক্ত কারণের সংঘটক বা কর্তা হইতেছে বান্দা। আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা ‘ভুলিয়া যাওয়া’ ক্রিয়ার কর্তা বাহ্যত বান্দাকে বানাইলেও তিনি প্রকৃতপক্ষে বান্দার অবহেলা ইত্যাদি অপরাধকে উহার কর্তা বলিয়া বুঝাইয়াছেন।(১) আয়াতের তাৎপর্য এই যে, অবহেলারূপ অপরাধের কারণে তুমি যখন ভুলিয়া যাও, তখন স্বীয় প্রভুকে স্মরণ কর। প্রভুর স্মরণে অপরাধ মাফ হইয়া যাইবে। কারণ নেক কাজে গুনাহ্ মাফ হইয়া যায়। অপরাধ মাফ হইয়া যাইবার পর বিস্তৃত বিষয় পুনরায় স্মরণে আসিবে। আল্লাহ্ই সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী।

১. ইমাম ইব্‌ন কাছীর (রঃ) আলোচ্য হাদীসের যে ব্যাখ্যা বর্ণনা করিয়াছেন, এবং প্রসঙ্গত বান্দাকে ভুলিয়া যাওয়া ক্রিয়ার কর্তা বানাইবার বৈধতা-অবৈধতা সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছেন, তাহাকে সম্পূর্ণ নির্ভুল ও অভ্রান্ত বলিয়া মানিয়া লওয়া সুকঠিন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ স্বীয় অবহেলা ও গাফলতির দরুণ কুরআন মজীদের তিলাওয়াত ভুলিয়া যায়। এইরূপ ভুলিয়া যাওয়ার জন্যে আল্লাহ্ বা অন্য কেহ দায়ী নহে; উহার জন্যে বরং সে নিজেই দায়ী ও গুনাগার। এইরূপ ব্যক্তি আর যাহাই হউক, অবুঝ শিশুর ন্যায়। নিরপরাধ নহে। তাই আমি যদি বলি, 'আমি ভুলিয়া গিয়াছি' ও ভুলিয়া যাইবার জন্যে আমি দায়ী বা গুনাহ্গার নহি' তবে সে আরেকটি অপরাধে অপরাধী হইবে। অবশ্য এইরূপ ক্ষেত্রে যদি সে অপরাধী মনে লজ্জিত হইয়া বলে, 'আমিই ভুলিয়া গিয়াছি' তবে উহা অন্যায় হইবে না, হইতে পারে না। কিন্তু অপরাধী মনে নিজের অপরাধকে লজ্জা ও বিনয়ের সহিত প্রকাশ করিবার অধিকতর সঙ্গত ও উপযোগী ভাষা হইতেছে এইঃ 'আমি অবহেলাভরে আমাকে ভুলাইয়া দিয়াছি।' তাই আলোচ্য হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলিয়াছেন- কাহারও পক্ষে ‘আমি ভুলিয়া গিয়াছি' বলা বড়ই বেমানান; বরং (আমি ভুলাইয়া দিয়াছি বলাই মানানসই)। কারণ, সে নিজেই তো নিজকে ভুলাইয়া দিয়াছে। ইহাই উক্ত হাদীসের সঠিক ও প্রকৃত তাৎপর্য । অতপর বলা যায়, বান্দা কখনও النسيان (ভুলিয়া যাওয়া) ক্রিয়ার প্রকৃত কর্তাও হইতে পারে। কারণ, সে নিজের অবহেলায় অথবা অনিচ্ছায় যে কোন কারণেই ভুলিয়া যাইতে পারে, ভুলিয়া যায়ও। কুরআন মজীদে একাধিক স্থানে আল্লাহ তা’আলা বান্দাকে النسيان ক্রিয়ার কর্তা বানাইয়াছেন।
error: Content is protected !!