সত্তর দশকের অগ্নিস্রাবী রাজনৈতিক পথ-পরিক্রমার শেষ পর্বে কালবেলার নায়ক অনিমেষ আশা করেছিল তার পুত্র অর্ক তার সমাজতান্ত্রিক আদর্শের নিশানটি শক্ত হাতে বহন করে নিয়ে চলবে। কিন্তু সমকালীন অন্তঃসারহীন কুটিল রাজনীতি এবং পঙ্কিল সমাজব্যবস্থা অর্ককে করে তুলেছিল অন্ধকার অসামাজিক রাজত্বের প্রতিনিধি। কিন্তু যেহেতু তার বক্তব্যের মধ্যে ছিল অনিমেষের সুস্থ আশীর্বাদ এবং তার মা মাধবীলতার দৃঢ়তা ও পবিত্রতার সংমিশ্রিত উপাদান, সেই হেতু তার বোধোদয় ঘটতে বিলম্ব হয়নি। একে ভিন্ন মানসিকতায় সে আহ্বান শুনেছিল চিরকালীন মানবতার। একদিকে সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক দল এবং অপরদিকে সুবিধাবাদী সমাজব্যবস্থার যূপকাষ্ঠে নিষ্পেষিত ও নিপীড়িত কিছু মানুষকে একত্র করে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল নতুন করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। তাদের সামনে তুলে ধরেছিল আগামী পৃথিবীর সুন্দরতম এক মানচিত্র। কিন্তু ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দল ও সমাজ অর্ককে অর্গলবদ্ধ করে সেই পবিত্র পৃথিবীর স্বপ্নটি ভেঙ্গে চুরমার করতে দ্বিধা করেনি। কিন্তু অর্ক – যার অপর নাম সূর্য – তার আবির্ভাবকে কি চিরকালের মতো রুদ্ধ করে রাখা যায়?

কালপুরুষ উপন্যাসের সমাপ্তিতে সে মানবতার আহ্বানের প্রতিধ্বনি স্পষ্টতর।

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x