১৯৬৮-৬৯ সাল নাগাদ আমাদের কলকাতার বুকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত রোড ও রূপনারায়ণ নন্দন লেন-এর মোড়ে শীতলা মন্দিরের শীতলামূর্তি হঠাৎ জীবন্ত হয়ে উঠলেন। মায়ের চোখ দিয়ে ঝড়তে লাগল জল, মা কাঁদছেন। অন্ধ ভক্তের অভাব হল না। প্রণামীর টাকায় ঘন-ঘন থালা ভরে উঠতে লাগল। শহর কলকাতায় ঘটনাটা এতোই উত্তেজনা, ধর্মোন্মাদনার সৃষ্টি করেছিল যে, পত্রিকাতেও খবর বেরিয়ে গেল। কিছু যুক্তিবাদী অনুসন্ধিৎসু লোক কার্যের পেছনে কারণটা খুঁজে বার করার চেষ্টা করতেই মা শীতলার পুরোহিত ব্যবসা গোটালো।
গত শতকের ন’য়ের দশকের গোড়ায় দক্ষিণ কলকাতা হরিশ মুখার্জি রোডের ২৩ পল্লীর দুর্গাপুজো নিয়ে কলকাতা তথা সারা বাংলাদেশে কম হৈ-চৈ হয়নি। দুর্গাঠাকুর বিসর্জন দিতে গিয়ে দেখা গেল মা কাঁদছেন। মা বিদায় নিতে কাঁদছেন, অতএব বিসর্জন হয় কি করে? বিসর্জন বন্ধ রইল। সারা শহর তোলপাড়, পত্রিকায় খবর পড়ে ঈশ্বরে ও অলৌকিকে বিশ্বাসীরা নতুন প্রেরণা পেলেন। কলিযুগেও তবে আবার মায়ের আবির্ভাব হল।
প্রতিদিনই কাতারে কাতারে লোকের ভিড়। মা দুর্গার চোখের জল আর শুকোয় না, বিসর্জনও হয় না। একটু একটু করে রহস্যের পর্দা উঠল, ব্যাপারটা নাকি পুরোপুরি জমি দখলের চক্রান্ত। উদ্দেশ্য, বেদখল জমিতে পাকাপাকি একটা মন্দির তৈরি। ঘটনাটা ফাঁস হতেও অলৌকিক খেলা সাঙ্গ করে মা দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হল।