ঈশ্বর ইস্রায়েলকে আশ্বাস দিলেন

১. ইস্রায়েল মিশর দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন। প্রথমে তিনি বের্-শেবাতে গেলেন। সেখানে ইস্রায়েল তাঁর পিতা ইসহাকের ঈশ্বরের উপাসনা করলেন এবং বলি দিলেন।

২. রাত্রে ঈশ্বর স্বপ্নে যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন। ঈশ্বর বললেন, “যাকোব, যাকোব।”ইস্রায়েল উত্তর দিলেন, “এই যে আমি।”

৩. তখন ঈশ্বর বললেন, “আমি ঈশ্বর, তোমার পিতার ঈশ্বর! মিশরে যেতে ভয় কোর না। মিশরে আমি তোমাকে এক মহাজাতিতে পরিণত করব।

ইস্রায়েল মিশরে গেলেন

৪. আমি তোমার সঙ্গে মিশরে যাব আর তোমাকে সেখান থেকে ফিরিযে আনব। তুমি মিশরে মারা যাবে কিন্তু যোষেফ তোমার সঙ্গে থাকবে। তুমি মারা গেলে যোষেফই তার নিজের হাত দিয়ে তোমার চোখ বুজিযে দেবে।”

৫. তারপর যাকোব বের্-শেবা ছেড়ে মিশরের দিকে যাত্রা করলেন। ইস্রায়েলের পুত্ররা নিজেদের পিতা যাকোবকে এবং প্রত্যেকে নিজের পুত্র কন্যা ও স্ত্রীদের নিয়ে মিশরে চললেন। ফরৌণ যে মালবাহী গাড়ীগুলো পাঠিয়েছিলেন সেইগুলো করেই তাঁরা গেলেন।

৬. তাঁরা তাঁদের পশুপাল এবং কনান দেশে তাদের যা যা ছিল সব নিয়ে চললেন। সুতরাং ইস্রায়েল মিশরে তার সমস্ত সন্তান এবং তাদের পরিবার নিয়েই গেলেন।

৭. তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর পুত্ররা এবং নাতিরা, তাঁর কন্যারা এবং নাতনিরা। সুতরাং তাঁর সমস্ত পরিবার তাঁর সাথে মিশরে গেলেন।

যাকোবের পরিবার

৮. ইস্রায়েলের পুত্ররা এবং তার বংশধররা যারা তাঁর সঙ্গে মিশরে গিয়েছিলেন তাদের নামগুলি এই: রূবেণ ছিলেন জ্যেষ্ঠ পুত্র।

৯. রূবেণের পুত্ররা ছিলেন হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মি।

১০. শিমিয়োনের পুত্ররা ছিলেন যিমূয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর এছাড়া শৌল। (শৌলের মা ছিলেন একজন কনানীয় স্ত্রীলোক।)

১১. লেবীর পুত্ররা ছিলেন গের্শোন, কহাৎ ও মরারি।

১২. যিহূদার পুত্ররা হলেন এর, ওনন, শেলা, পেরস ও সেরহ। (এর  ওনন কনান দেশেই মারা গিয়েছিল।) পেরসের পুত্ররা হলেন হিষ্রোণ ও হামূল।

১৩. ইষাখরের পুত্ররা হলেন তোলয়, পুয়, যোব ও শিম্রোণ।

১৪. সবূলূনের পুত্ররা হলেন সেরদ, এলোন ও মহলোল।

১৫. রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন এনারা ছিলেন যাকোব ও লেয়ার সন্তানগণ। পদ্দম-অরামে লেয়ার এই সন্তানরা জন্মেছিল। তার দীনা নামে একটি কন্যাও ছিল। তার পরিবারে মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৩ জন।

১৬. গাদের পুত্ররা ছিলেন সিফিয়োন, হগি, শূনী, ইষবোন, এরি, অরোদী ও অরেলী।

১৭. আশেরের পুত্ররা ছিলেন যিম্না, যিশবা, যিশবি, বরিয় এবং তাদের বোন সেরহ। বরিয়ের পুত্ররা অর্থাৎ হেবর ও মল্কীয়েলও ছিলেন।

১৮. যাকোবের এই পুত্ররা ছিলেন তার স্ত্রী দাসী সিল্পার। (সিল্পাই সেই দাসী যাকে লাবন তার কন্যা লেয়ার সাথে দিয়েছিলেন।) তার পরিবারের মোট সদস্য ছিলেন ১৬ জন।

১৯. বিন্যামীনও যাকোবের সঙ্গে ছিলেন। বিন্যামীন ছিলেন যাকোব ও রাহেলের পুত্র। (যোষেফও রাহেলের পুত্র। কিন্তু যোষেফ ইতিমধ্যে মিশরে ছিলেন।)

২০. মিশরে যোষেফের দুই পুত্র হয়। তাদের নাম মনঃশি ও ইফ্রয়িম। (যোষেফের স্ত্রীর নাম ছিল আসমৎ। তিনি ছিলেন ওন শহরের যাজক পোটীফর এর কন্যা।

২১. বিন্যামীনের পুত্ররা হল বেলা, বেখর, অসবেল, গেরা, নামন, এহী, রোশ, মুপ্পীম, হুপ্পীম ও অর্দ।

২২. এনারা ছিলেন যাকোব ও তার স্ত্রী রাহেলের সন্তান। পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ১৪ জন।

২৩. দানের পুত্র ছিলেন হূশীম।

২৪. নপ্তালির পুত্র ছিলেন যহসিযেল, গূনি, যেৎসর ও শিল্লেম।

২৫. এঁরা ছিলেন যাকোব ও বিলহার সন্তান। (বিলহা-ই সেই দাসী যাকে লাবন তার কন্যা রাহেলের সাথে পাঠিয়েছিলেন।) এই পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল সাত।

২৬. সরাসরি যাকোব হতে উৎপন্ন উত্তরপুরুষদের মোট ৬৬জন তার সঙ্গে মিশরে গিয়েছিলেন। (এই সংখ্যার মধ্যে যাকোবের পুত্রদের স্ত্রীদের গণনা করা হয় নি।)

২৭. আবার যোষেফেরও দুই সন্তান ছিলেন যারা মিশরে জন্মেছিলেন। সুতরাং মিশরে যাকোবের পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা হল ৭০ জন।

ইস্রায়েল মিশরে পৌঁছালেন

২৮. যোষেফের সঙ্গে কথা বলার জন্য যাকোব যিহূদাকে তাঁর আগে পাঠালেন। এর পরে যাকোব এবং তাঁর পুত্ররা গোশন প্রদেশে পৌঁছোলেন। যিহূদা গোশন প্রদেশে যোষেফের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন। যাকোব এবং তাঁর পরিবারের লোকজন এরপর সেই প্রদেশে পৌঁছালেন।

২৯. যোষেফ যখন শুনলেন যে তাঁর পিতা আসছেন তখন তিনি রথ প্রস্তুত করে গোশন প্রদেশে তাঁর পিতা ইস্রায়েলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। যোষেফ তাঁর পিতাকে দেখে গলা জড়িয়ে ধরে বহুক্ষণ কাঁদলেন।

৩০. তখন ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “এখন আমি শান্তিতে মরতে পারব। আমি তোমার মুখ দেখলাম এবং জানলাম যে তুমি এখনও জীবিত।”

৩১. যোষেফ তাঁর ভাইদের এবং পিতার পরিবারের বাকীদের বললেন, “আমি ফরৌণকে বলতে যাচ্ছি যে তোমরা এখানে এসেছ। আমি ফরৌণকে বলব, ‘আমার ভাইরা এবং পিতার পরিবারের বাকী সবাই কনান দেশ ছেড়ে এখানে আমার কাছে এসেছেন।

৩২. পরিবারের সবাই মেষপালক। তারা বরাবরই মেষপাল ও গো-পাল রেখে থাকেন। তারা তাদের পশু ও আর যা কিছু তাদের ছিল সবই তাদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।

৩৩. ফরৌণ তোমাদের ডাকলে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমরা কি কাজ কর?’

৩৪. তোমরা তাকে বলবে, ‘আমরা মেষপালক। সারাজীবন ধরেই আমরা মেষ পালন করে আসছি। আমাদের আগে আমাদের পিতৃপুরুষরা মেষপালক ছিলেন।’ ফরৌণ তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকতে দেবেন। মিশরীয়রা মেষপালকদের পছন্দ করেন না, সেইজন্য তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকাটাই ভাল হবে।”

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x