যোষেফ দুটি স্বপ্নের ব্যাখ্যা করলেন
১. পরে ফরৌণের দুই ভৃত্য ফরৌণের প্রতি কিছু অন্যায় কাজ করল। এই ভৃত্যেরা ছিল তার রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী।
২. ফরৌণ প্রধান রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারীর উপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন।
৩. তাই ফরৌণ তাদের যোষেফের সাথে একই কারাগারে রাখলেন। পোটীফর, ফরৌণের কারারক্ষকদের প্রধান সেই কারাগারের দায়িত্বে ছিলেন।
৪. প্রধান কারারক্ষক সেই দুই বন্দীকে যোষেফের পরিচর্যার অধীনে রাখলেন। সেই দুইজন লোকই কিছু সময় সেই কারাগারে রইল।
৫. একদিন রাত্রে দুই বন্দীই স্বপ্ন দেখল। (এই দুই বন্দী ছিল মিশরের রাজার রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী।) প্রত্যেক বন্দীই ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্ন দেখল এবং প্রতিটি স্বপ্নের নিজস্ব অর্থ ছিল।
৬. পরের দিন সকালে যোষেফ তাদের কাছে গিয়ে দেখলেন যে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ।
৭. যোষেফ জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের এত বিষন্ন দেখাচ্ছে কেন?”
৮. লোক দুটি উত্তর করল, “গত রাতে আমরা স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু স্বপ্নের অর্থ বুঝছি না। সেই স্বপ্নের অর্থ বলার বা তা বুঝিযে দেবার কেউ নেই।” যোষেফ তাদের বললেন, “ঈশ্বরই একজন যিনি বোঝেন ও স্বপ্নের অর্থ বলতে পারেন। তাই আমার অনুরোধ, তোমাদের স্বপ্নগুলো বল।”
দ্রাক্ষারস পরিবেশকের স্বপ্ন
৯. সুতরাং দ্রাক্ষারস পরিবেশক যোষেফকে তার স্বপ্ন বলল, “আমি স্বপ্নে একটা দ্রাক্ষালতা দেখলাম।
১০. সেই লতায় তিনটে শাখা ছিল। আমি দেখলাম শাখাগুলিতে ফুল হল এবং দ্রাক্ষা ফলল।
১১. আমি ফরৌণের পানপাত্র ধরেছিলাম, তাই সেই দ্রাক্ষাগুলোকে সেই কাপে নিংড়ে নিলাম। তারপর সেই পানপাত্র ফরৌণকে দিলাম।”
১২. তখন যোষেফ বললেন, “সেই স্বপ্নের অর্থ আমি তোমায় বলছি। তিনটি শাখার অর্থ তিন দিন।
১৩. তিন দিন শেষ হবার আগেই ফরৌণ তোমায় ক্ষমা করে আবার তোমাকে কাজে বহাল করবেন। তুমি ফরৌণের জন্য আগে যে কাজ করতে তাই-ই করবে।
১৪. কিন্তু তুমি ছাড়া পেলে আমায় স্মরণ কর। আমার প্রতি দয়া কর। ফরৌণকে আমার সম্বন্ধে বল যাতে আমি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে পারি।
১৫. আমাকে জোর করে আমার নিজের জায়গা, ইব্রীয়দের দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারাগারে থাকার মত কোন অন্যায়ই আমি করি নি।”
রুটিওয়ালার স্বপ্ন
১৬. রুটিওয়ালা দেখল অন্য ভৃত্যের স্বপ্নটা ভাল। তখন সে যোষেফকে বলল, “আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি। দেখলাম আমার মাথায় রুটির তিনটে ঝুড়ি রয়েছে।
১৭. উপরের ঝুড়িতে সব রকমের সেঁকা খাবার ছিল। সেই খাবার রাজার জন্য ছিল কিন্তু পাখীরা ঐ খাবার খেতে লাগল।”
১৮. যোষেফ বললেন, “আমি তোমাকে স্বপ্নের অর্থ বলছি। তিনটে ঝুড়ির অর্থ তিন দিন।
১৯. তিন দিনের মধ্যে রাজা তোমাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেবেন। তিনি তোমার শিরশ্ছেদ করে একটা বাঁশের মাথায় ঝুলিয়ে দেবেন। আর পাখীরা তোমার দেহের মাংস খাবে।”
যোষেফের কথা মনে রইল না
২০. তৃতীয় দিনটা ছিল ফরৌণের জন্ম দিন। ফরৌণ তাঁর সব দাসদের জন্য ভোজের আয়োজন করলেন। সেই সময়ে ফরৌণ রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন।
২১. ফরৌণ পানপাত্র বাহককে মুক্তি দিয়ে পুনরায় তাকে তার কাজে নিয়েগ করলেন। আর সেই পানপাত্র বাহক আবার ফরৌণের হাতে পানপাত্র দিতে লাগল।
২২. কিন্তু ফরৌণ রুটিওয়ালাকে ফাঁসি দিলেন। যোষেফ যেমনটি বলেছিলেন সেরকম ভাবেই সব ঘটনা ঘটল।
২৩. কিন্তু সেই পানপাত্র বাহকদের যোষেফকে সাহায্য করার কথা মনে রইল না। সে যোষেফের বিষয় ফরৌণকে কিছুই বলল না, যোষেফের কথা ভুলে গেল।