যিহুদা ও তামর
১. সেই সময় যিহূদা তার ভাইদের ছেড়ে হীরা নামে একটি লোকের সঙ্গে বাস করতে গেল। হীরা ছিলেন অদুল্লমীয় শহরের লোক।
২. সেখানে যিহূদা এক কনানীয় স্ত্রীলোককে দেখতে পেয়ে তাকে বিয়ে করল। মেয়েটির পিতার নাম ছিল শূয়।
৩. কনানীয় মেয়েটি একটি পুত্রের জন্ম দিয়ে তার নাম রাখল এর।
৪. পরে সে আরেকটি পুত্রের জন্ম দিয়ে তার নাম রাখল ওনন।
৫. পরে তার শেলা নামে আরেকটি পুত্র হল। তৃতীয় পুত্রের জন্মের সময় যিহূদা কষীবে বাস করছিল।
৬. যিহূদা তামর নামে এক কন্যাকে এনে তার সঙ্গে প্রথম পুত্র এরের বিয়ে দিল।
৭. কিন্তু এর অনেক মন্দ কাজ করায় প্রভু তার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাকে হত্যা করলেন।
৮. তখন যিহূদা এরের ভাই ওননকে বলল, “যাও তোমার মৃত ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে শয়ন কর। তার স্বামী হও। নিজের ভাই এরের জন্য বংশ উৎপন্ন কর।”
৯. ওনন বুঝল মিলনের ফলে সন্তান-সন্ততি হলে তা তার হবে না। ওনন তাই যৌন সঙ্গম করল। সে তার শরীরের অভ্য়ন্তরে বীর্য ত্যাগ করল না।
১০. এই কাজে প্রভু ক্রুদ্ধ হলেন এবং ওননকেও মেরে ফেললেন।
১১. তখন যিহূদা তার বৌমা তামরকে বলল, “যাও, তোমার পিতার বাড়ী ফিরে যাও। যে পর্যন্ত না আমার ছোট পুত্র শেলা বড় হয় সে পর্যন্ত বিয়ে না করে সেখানেই থাক।” যিহূদা আসলে ভয় পেয়েছিলেন, ভেবেছিলেন অন্য ভাইদের মতো হয়তো শেলাও মারা যাবে। তামর তার পিতার বাড়ী ফিরে গেল।
১২. পরে যিহূদার স্ত্রী, শূয়ের কন্যার মৃত্যু হল। শোকের সময় গেলে যিহূদা তার অদুল্লমীয় বন্ধু হীরার সাথে মেষদের লোম ছাঁটতে তিম্নায গেল।
১৩. তামর জানতে পারল য়ে তার শ্বশুর তিম্নায় তার মেষদের লোম ছাঁটতে যাচ্ছেন।
১৪. তামর বিধবা বলে যে কাপড় পরত তা খুলে ফেলে অন্য কাপড় পরল ও তার মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকল। তারপর সে তিম্নার কাছে অবস্থিত ঐনয়িম শহরের দিকে যে রাস্তা চলে গেছে তার ধারে বসল। তামর জানত যে যিহূদার ছোট পুত্র শেলা এখন বড় হয়েছে কিন্তু তবু শেলার সাথে তার বিয়ে দেবার কোন পরিকল্পনাই যিহূদা করে নি।
১৫. যিহূদা সেই পথে যেতে যেতে তাকে দেখে ভাবল বোধ হয় বেশ্যা। (বেশ্যার মত তার মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকা ছিল।)
১৬. যিহূদা তার কাছে গিয়ে বলল, “এস আমার সাথে শোও।” (যিহূদা জানত না যে এই ছিল তামর, তার পুত্রবধূ।)সে বলল, “আমায় কত দেবেন?”
১৭. যিহূদা উত্তর করল, “আমার পশুপাল থেকে তোমার জন্য একটা বাচ্চা ছাগল পাঠিয়ে দেব।”সে বলল, “ঠিক আছে। কিন্তু ছাগলটা পৌঁছাবার আগে আমার কাছে কিছু বন্ধক রাখুন।”
১৮. যিহূদা জিজ্ঞেস করল, “তোমাকে যে ছাগল পাঠাব তার প্রমাণ হিসাবে তুমি আমার কাছে কি চাও?”তামর বলল, “চিঠিতে মারবার তোমার ঐ মোহর, ও তার সুতো এবং হাঁটার ছড়িটাও আমায় দাও।” যিহূদা তাকে ঐ জিনিসগুলো দিল। তারপর যিহূদা ও তামর সহবাস করলে তামর গর্ভবতী হল।
১৯. তামর ঘরে ফিরে মুখের ওড়নাটা খুলে ফেলে বিধবার সাজে সাজল।
২০. পরে যিহূদা তার বন্ধু হীরাকে এনয়িমে পাঠাল সেই বেশ্যাকে ছাগলটা দিতে। যিহূদা হীরাকে আরও বলল যেন সে তার কাছে থেকে সেই মোহর ও ছড়িটা নিয়ে আসে। কিন্তু হীরা তাকে খুঁজে পেল না।
২১. হীরা ঐনয়িম শহরের লোকদের জিজ্ঞাসা করল, “রাস্তার ধারে বসে থাকা বেশ্যাটা কোথায়?”লোকে উত্তর দিল, “এখানে কখনই কোন বেশ্যা ছিল না তো।”
২২. তাই যিহূদার বন্ধু ফিরে এসে বলল, “সেই স্ত্রীলোককে খুঁজে পেলাম না। সেখানকার লোকজন বলল সেখানে কোন বেশ্যা কখনই ছিল না।”
২৩. তাই যিহূদা বলল, “সেইসব জিনিস তার কাছেই থাকুক। আমি চাই না যে লোক আমাদের নিয়ে হাসে। আমি ছাগলটা তাকে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু খুঁজে পেলাম না। এটাই যথেষ্ট।”
তামর গর্ভবতী হল
২৪. তিন মাস পরে কেউ একজন যিহূদাকে বলল, “তোমার পুত্রবধু তামর বেশ্যার কাজ করেছে আর এখন সে গর্ভবতী হয়েছে।”তখন যিহূদা বলল, “তাকে বাইরে নিয়ে এসে পুড়িয়ে দাও।”
২৫. সেই লোকটি তামরকে হত্যা করতে এলে সে তার শ্বশুরকে এক খবর পাঠাল। তামর বলল, “যে লোকটি আমায় গর্ভবতী করেছে এই জিনিসগুলি তার। এই জিনিসগুলির দিকে দেখ। এগুলো কার? এই মোহর ও সুতো কার? এই ছড়িটা কার?”
২৬. যিহূদা সেই জিনিসগুলো চিনতে পেরে বলল, “সেই ঠিক। আমারই ভুল হয়েছে। আমি আমার পুত্র শেলাকে দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেও তাকে দিই নি।” এরপর যিহূদা কিন্তু তার সাথে আর সহবাস করল না।
২৭. তামরের প্রসবের সময় উপস্থিত হলে তারা দেখল তার যমজ সন্তান হতে চলেছে।
২৮. প্রসবের সময় একটা বাচ্চা তার হাত বের করলে ধাইমা তার হাতে একটা লাল সুতো বাঁধল আর বলল, “এই বাচ্চাটা আগে জন্মাবে।”
২৯. কিন্তু বাচ্চাটা তার হাত গুটিয়ে নিলে অন্য বাচ্চাটা প্রথমে জন্মাল। তাই সেই ধাইমা বলল, “তুমি প্রথমে ঠেলে বেরিয়ে আসতে পেরেছ!” তাই তারা তার নাম পেরস রাখল।
৩০. এরপর অন্য শিশুটির জন্ম হল, যার হাতে লাল সুতো বাধা ছিল। তারা এর নাম রাখল সেরহ।